শালিকা যখন বউ । পর্ব - ০৯
অনিচ্ছা থাকা সত্যেও আমি ফোনটা রিসিভ করি। আর তখুনি নিশি বলরে শুরু করলো।
নিশিঃ আপনি কখন বাসাই আসবেন। আজকে আপনার তারাতারি আসার কথা তাহলে এত লেট করছেন কেন।(কেন যানি নিশির সব কথা আমার অসহ্য লাগছে)
আমিঃ এখন আমি অনেক ব্যাস্ত আছি আসি তাই আসতে লেট হবে।
নিশিঃ কিন্তু আপনি তো আমায় প্রমিজ করেছিলেন যে আজ তারাতারি বাসাই ফিরবেন।
আমিঃ আহ তুমি এত বেশি কথা বোলোছো কেন বললাম না আমি ব্যাস্ত আছি তারপরেও একি কথা বারবার বলে যাচ্ছ ( অনেক রেগে আর জোরে কথাটা বললাম এতে নিশি অনেক টাই ভয় পাই অপর পাশ থেকে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ আসছে অন্য সময় হলে হইতো আমি ওকে সান্তনা দিতাম কিন্তু এখন ওর কথা ভাবতেও আমার অসহ্য লাগছে)
নিশিঃ আচ্ছা ঠিক কিন্তু...(আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি ফোনটা কেটে দিই)
ফোন রেখে আমি চেয়ারে বসে পরি আর তখনি আমার চোখ যাই ছবি গুলোর দিকে।
কারন ছবির অপর পাশে একটা নম্বর লেখা ছিলো।
তাই আমি ওই নম্বরে ফোন দিই আর ফোনটা রিসিভ করে একজন ছেলে।
সে ফোনটি ধরে বলতে শুরু করে।
অপরঃ আরে মিস্টার রাজ এত তারাতারি ফোন করলেন যে।
আমিঃ কে আপনি আর আমাকে কেমন করে চিনলেন।
সেঃ আমি কে সেটা না হয় দেখা করেই আপনাকে বলবো।
আমিঃ আমি কোনো অচেনা লোকের সাথে দেখা করি না।
সেঃ আমি সেটা জানি মিস্টার রাজ।
তাই তো বলছিলাম যদি ছবি গুলোর ব্যাপারে জানতে চান তাহলে আমার সাথে দেখা করুন।
আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।
আমাকে তো জানতেই হবে এই ছবির ছেলেটা কে আর নিশির সাথেই বা তার কি সম্পর্ক।
তাই আমি সেই লোকটির সাথে দেখা করার জন্য রাজি হয়ে যাই।
আর সেই লোকটি আমাকে এক টা ঠিকানা দেয় তাই আমি দেরি না করে বেরিয়ে পরি।
আর কিছক্ষন এর মধ্যে সেখানে পৌছে যাই।
সেখানে পৌছানো মাত্র আমি লোকটি কে ফোন দিই। কিন্তু লোকটি ফোন ধরছে না। আমি বেশ কয়েক বার ফোন দিই কিন্তু প্রতিবারই ব্যার্থ হই।
আমি প্রায় ঘন্টা খানিক ধরে অপেক্ষা করছিলাম।
তখন কেউ একজন বলে উঠলো। অপেক্ষা করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি লোকটি আর কেউ নয় নিশির সাথে যার ছবি দেখেছিলাম এটিই সেই লোক।
তবুও আমি মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে বলি।
আমিঃ আমাকে এখানে ডাকার কারন কি। আর আপনিই বা কে।
সাজিদঃ আমি সাজিদ রহমান আমি আর নিশি একে অপর কে অনেক ভালোবাসি সেটা বলার জন্যই আপনাকে ডেকেছি।
লোকটির কথা শুনে আমার মাথা গরম হয়ে গেল তাই আমি রাগের মাথাই লোকটিকে মারতে শুরু করলাম এক সময় আমি একাই থেমে যাই। আর তাকে বলি।
আমিঃ আপনি যেটা বলছেন সেটা সত্যি এটা আমি কিভাবে বিলিভ করবো।
সাজিদঃ সে জন্যই তো আমি আপনাকে ছবি গুলো পাঠিয়েছি।
আর এখন বিলিভ করা আর না করা সেটা আপনার ব্যাপার।
(আমি কি বলবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। কারন ছবিতে নিশি আর সাজিদ কেই দেখা যাচ্ছে। তাই আর কথা না বারিয়ে লোকটি কে বললাম।)
আমিঃ নিশি যদি আপনাকে ভালোবাসে তাহলে সে আমাকে কেন বিয়ে করলো।
সাজিদঃ বিয়ে টা কিভাবে হয়েছে সেটা আপনি নিশ্চয় জানেন রাজ।
আমিঃ তাহলে নিশি কেন ৩মাস আমার সাথে থাকলো।
সাজিদঃ সেটার কারন আছে আর কারন টা হলো আপনার সম্পত্তি।
আর আপনারা যেদিন ঢাকায় যান সেদিন আমার আর নিশির পালানোর কথা ছিলো।
কিন্তু যখন আমরা জানতে পারলাম যে আপনি একজন সনামধন্য ব্যাবসায়ি।
তখন আমি আর নিশি আপনার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার প্লান বানাই।
লোকটির কথা শুনে আমার কষ্টে মাত্রাটা আরো বেরে গেল।
কারন প্রথমে টাকার জন্য ইশা আমার সাথে বেইমানী করলো আর এখম আমি যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি সেও আমার সাথে।
নাহ আর কিছু ভাবতে পারছি না। তাই আমি হোটেল থেকে বের হয়ে আসি।
আর আমার উকিল কে ফোন দিয়ে ডিভোর্স পেপার তৈরি করতে বলি তাই মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে।
উকিল এর কাছ থেকে ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত ১ বেজে যাই।
তাই আমি বাসার কাউকে বিরক্ত না করে আমার কাছে যে চাবি ছিলো সেটা দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে যাই। আর ভিতরে গিয়ে দেখি নিশি বসে বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে।
যেখানে আমার কষ্ট হওয়ার কথা সেখানে আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে।
তখম আমি নিশির কাছে গিয়ে বলি।
আমিঃ বাহ অভিনয় তো খুব ভালোই করতে যানো দেখছি( হাত তালি দিয়ে)
আমার এরকম আচকা কথা শুনে নিশি কিছুটা ভয় পেয়ে যাই।
পরে সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে।
নিশিঃ মানে আপনি কি বলতে চাইছেন।
আমিঃ আমি কি বলতে চাইছি সেটা বুঝতে পারছো না নাকি বোঝার চেষ্টা করছো না।
নিশিঃ কি বলছেন এসব। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।(আমার হাত ধরে)
আমিঃ Enough is Enough Nisi.. and don't touch me
নিশিঃplease Raj tall me what's happend with u..please tall me (কান্না করে)
আমিঃ আর কতো অভিনয় করবে নিশি আর কত।
নিশিঃ আমি অভিনয় করছি।
আমিঃ হ্যা তুমি অভিনয় করছো তার প্রমান এগুলো ( ছবি গুলা ওর দিকে ছুরে দিয়ে)
নিশি ছবি গুলো দেখে আরো কান্না শুরু করে দিলো আর আমাকে এসে জড়িয়ে ধরলো।
কিন্তু আমি এবার রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে নিশি কে সজোরে একটা চড় মারি।
(এই প্রথম আমি ওর গায়ে হাত তুললাম।)
আমিঃ তোকে না বললাম তুই আমাকে ছুবি না।
তাও কেন আমকে ছোয়ার চেষ্টা করছিস। আর এই নে তুই যার জন্য এত অভিনয় করেছিস।
আমার সমস্ত সম্পত্তি আমি তোর নামে লিখে দিয়েছি। আর আমাকেও মুক্তি দে।
তারপর আমি ওর দিকে ডিভোর্স পেপার আর সম্পত্তির পেপারস এগিয়ে দিই।
তখন নিশি বলে।
নিশিঃ বেশ আপনি যখন আমার থেকে মুক্তি চান তবে তাই হোক ( এই বলে নিশি ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেয়) আর শুনুন মিস্টার রাজ আপনার সম্পত্তির আমার কোনো প্রয়োজন নেই তাই এগুলো আপনার কাছেই রাখুন!
কথা গুলো বলে নিশি কান্না করতে করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।
আমার অনেক ইচ্ছা হচ্ছিল ওকে আটকাবার কিন্তু সেই অধিকার আর আমার নেই।
এখন নিশিকে ছাড়াই আমাকে থাকতে হবে।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com