Breaking News

বিষাক্ত ভালোবাসা । পর্ব - ০১

সারা রাত নেশা করে, বেঘোরে ঘুমাচ্ছে আবির।
হঠাৎ বাইরের সোরগোল, চিৎকার চেচামেচির আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
শোয়া থেকে উঠবে, এমন সময় তার মনে হচ্ছে তার উপর কেউ, ভারী কিছু রেখেছে।
সেদিকে খেয়াল করতেই, দেখতে পায় একটা মেয়ে তার বুকের উপর শুয়ে ঘুমাচ্ছে।
আশ্চের্যের বিষয় হলো উভয়ের শরীরেই কাপড়ের ছিটে ফোটাও নেই।
আবির সজোরে ধাক্কা দিয়ে মেয়েটিকে নিজের উপর থেকে সরিয়ে দেয়।
দু' হাত মাথায় দিয়ে চিন্তা করে, কালকে রাতের ঘটনা, অতপর মনে পরতেই বাঁকা হাসে।
এতো জোরে ধাক্কা দিয়েছে আবির যে মেয়েটি ফ্লোরে পরে যায়।
হঠাৎ আক্রমণে তনু তাল সামলাতে না পেরে টেবিলের কোনায় বারি খেয়ে ফ্লোরে পরে, 
উচ্চ আওয়াজে বলে "হাউ ডেয়ার ইউ!
আপনার সাহস কি করে হয়? এই তনু মির্জার গায়ে হাত তোলার।
আবির ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,এই মিস নিজের দিকে একবার তাকান।
শতহোক আমি একজন ছেলে মানুষ নিজেকে আর কতখন কন্ট্রোল করতে পারবো?
এতো হট কিছু চোখের সামনে থাকলে মন তো বাজে কিছু চাইবে।

তনু নিজের দিকে তাকিয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে,চাদর টেনে নিজের শরীর ঢেকে নেয়।
নিজের অবস্থা দেখে ঝিম মেরে বসে ভাবতে থাকে..
সে এখানে এই অবস্থায় কি করে এলো?
কাল রাতে ইমন এর সাথে ব্রেকআপ করে, বারে গিয়েছিল ইফতির সাথে দেখা করতে। 
তারপর কি হলো কিছুই মনে আসছে না, দু' হাতে মাথা চেপে ধরে মনে করার চেষ্টা করছে।
"বারে এসে একটা সফ ড্রিংক নিয়েছিল তনু, তারপর আর কিছুই মনে পরছে না তনুর।
আবির সাওয়ার নিয়ে, বের হয়ে তনুকে বলে "এই মিস , তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসুন।
এখোনো অনেক নাটক বাকি।
আবির কি বলছে তনু কিছুই বুঝতে পারছে না।
তনু, আবিরকে বললো আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন! আমি এখানে কি ভাবে এসেছি?
আর আপনার সাথে এই অবস্থায় এখানে কেনো? আপনি আমার সাথে কি করেছেন?
আবির সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বলে, টাকা কি কম হয়ে গেল নাকি?
টাকা আরো লাগলে বলতে পারেন, বাড়িয়ে দেব।

তবুও এই সব ফালতু প্রশ্ন করে আমার টাইম ওয়েস্ট করবেন না।
আবিরের কথা শুনে তনুর মাথায় রক্ত উঠে গেল, 
কোন রকম চাদরটা গায়ে জরিয়ে আবিরের কলার চেপে ধরে বলে,
আমার মান, সম্মান, ইজ্জত সব শেষ করে টাকার গরম দেখানো হচ্ছে?
"কেনো করলেন এমন? আমি আমার বাবা মা কে মুখ দেখাবো কি করে?
তনুর কথা শুনে আবির হা হয়ে যায়।
"কি বলে এই মেয়ে। নিজে টাকার জন্য আসলো আবার নিজেই সম্মানের কথা বলে?
আবির নিজের কলার, তনুর হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,
একদম বারাবাড়ি করবেন না।
আপনাদের মতো মেয়েদের আমার চেনা আছে।
সামান্য কয়টা টাকার জন্য নিজেকে বিক্রি করে দিয়ে, আবার ইজ্জত এর কথা বলে।
আপনার সৌভাগ্য যে আবির চৌধুরী আপনার সাথে বেড সেয়ার করেছে।
এই আবির চৌধুরীর এক ইশারায় মেয়েদের লাইন লেগে যায়।
সো নিজেকে ঠিক করুন, আর নিজের চরিত্রকেও ঠিক করুন।
আবির বিছানার দিকে একপলক তাকিয়ে বলে
(বিছানার চাদরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ)
" বাই দা ওয়ে, আপনি এই প্রফেশনে নতুন মনে হয়?
"তা কিসেরে অভাবে এই প্রফেশন বেছে নিলেন?
দেখতে তো ভদ্র ঘরের মেয়ে বলেই মনে হয়।
আবিরের কথা শুনে তনুর মাথায় রক্ত উঠে গেছে।

কিছু সময় চুপ থেকে ভাবছে। "এই ছেলে কখন থেকে আবল তাবল বকছে।
তনুকে চুপ থাকতে দেখে,আবির বলে এখন তো ভালো ফেমেলির মেয়েরাও এসব করে বেরায়।
"সো ড্রামা বন্ধ করে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে আসুন!
তনু নিজের নামে এতো বাজে কথা সহ্য করতে না পেরে।
হাতের সামনে থাকা ফ্লাওয়ার বাসটা তুলে নিয়ে আবিরের সামনে এগিয়ে এসে বলে,
আর একটাও বাজে কথা বললে, মেরই ফেলবো আপনাকে। " অসভ্য বাজে লোক।
আবির তনুর হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলে, সহ্য করছি দেখে মাথায় চরে বসেছেনে।
আবির, তনুর হাত ধরে টেনে ওয়াশরুম নিয়ে এসে তনুকে বাথটবে ফেলে দিয়ে বলে, 
চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে আসুন।
আর হ্যাঁ এখানে যে লাল শাড়িটা আছে, এটাই পড়বেন।
যদি দশ মিনিটের বেশী টাইম ওয়েস্ট করেন তো, আমি এসে আপনাকে ফ্রেশ করাবো।
"যদি আমার হাতে ফ্রেশ হতে না চান তো, "হারিআপ!
তবে আপনি চাইলে আমি রাজী আছি।
যা দেখার কাল রাতেই তো দেখা হয়ে গেছে, নতুন করে আর লজ্জা পাওয়ার কি আছে।
এক চোখ টিপে বলে।
তনু" বিরবির করে বলে অসভ্য লোক একটা।
আগে ফ্রেশ হয়ে আসি।

তারপর দেখাচ্ছি, এই তনিমা মির্জা কি জিনিস?
তনু আর কোন কথা না বলে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে, শাওয়ার এর নিচে দাঁড়ায়! পনির ফোটা শরীরে পরতেই শরীরে বিভিন্ন অংশ জ্বলে উঠে।
গায়ের চাদরটা সরিয়ে আয়নায় তাকাতেই,নিজের শরীরে ক্ষতগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে যায়।
এসব চিহ্ন দেখে তনুর বুঝতে বাকি নেই তার সাথে কি হয়েছে।
নিজেকে নিজে ধিক্কার জানায় তনু,
এতোদিনের আগলে রাখা তার সতীত্ব এক রাতেই শেষ করে দিলো।
অথচ ইমনের সাথে তিন বছরের রিলেশন কোনদিন ইমনকে জড়িয়ে পর্যন্ত ধরেনি।
ইমন যখনি কাছে আসতে চাইতো, তনু সব সময় বলতো এসব বিয়ের পর।
এসব ভেবে তনুর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে।
ফ্রেশ হয়ে কোনরকম শাড়ি পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে।
"কেননা তনু শাড়ি পরতে পারে না!
তনু কে দেখে আবিরের যেন হুঁশ নেই। আবির এক ধ্যানে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে।
তনুকে দেখে মনে হচ্ছে সদ্য ফোটা গোলাপ ফুল,
যা বৃষ্টিতে ভিজে নিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে কয়েকগুন।
তনুর চুল দিয়ে টপটপ করে মুক্ত দানার মতো,পানি ঝরছে।
ফর্সা শরীরে অনেকটাই বিদ্যমান, গোলাপি ঠোঁট জোড়া তিরতির করে কাঁপছে।
আবির ধিরে ধিরে তনুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তনু, এক'পা এক' পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে।

হঠাৎ দেয়ালের সাথে তনুর পিঠ ঠেকে যায়,
তনু সরে আসতে চাইলে আবির দেয়ালের দু' পাশে হাত রেখে,
তনুকে আটকে দেয়, নেশা ভরা চোখে আবির তনুর দিকে তাকিয়ে আছে।
আবির আস্তে আস্তে তনুর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায়।
তনুর বুকের ভিতর দ্রিম দ্রিম শব্দ হচ্ছে, এতো দ্রুত হার্টবিট ওটা নাম করছে, 
যেন তনু,এখন মরেই যাবে।
ভয়ে তনু চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়।
চোখ বন্ধ করতেই, তনুর চোখের সামনে ইমন এর মুখটা ভেসে উঠে।
তিন বছরের রিলেশনশিপ, এক নিমিষেই শেষ করে দিল।
আদৌও ইমন কি তাকে ভালোবেসে ছিল?
"ইমনের কথা মনে হতেই তনু হুট করে চোখ খুলে ফেলে!
তনুর চোখ দিয়ে দু' এক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পরলো।
এই মূহুর্তে আবিরের মনে হচ্ছে তনুর চোখ দিয়ে মুক্তোর দানা ঝরছে,
কেউ কাদঁলে যে তাকে এতো সুন্দর লাগতে পারে আবিরের জানা ছিলো না।
শরীরে বিদ্যমান অংশ গুলোতে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে, যা আবিরকে আরো নেশা তুর করে তুলছে।
আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের দিকে ফিরেও তাকায় নি আবির।
তনুই প্রথম মেয়ে যাকে আবির বেড পার্টনার করেছে।
অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবির তনুর দিকে।
মনে মনে ভাবছে এই মেয়ে সত্যি এতো সুন্দর?

নাকি আমার ভ্রম?
দুধে আলতা গায়ের রঙ, কোমরের নিচ পর্যন্ত লম্বা ঘন চুল, টানাটানা চোখ,
গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট, নিচের ঠোঁটের ডান পাশে একটা কালো কুচ কুচে তিল,
যা তনুর সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এতোখন আবির একা তাকিয়ে তাকলেও এবার তনুও আবিরের চোখে চোখ রাখে।
তবে তনুর চোখ এই মূহুর্তে অনূভুতি শুন্য।
তনুর চোখে রয়েছে একরাশ লজ্জা, ভয়,ও সামনে থাকা ব্যক্তিটির জন্য ঘৃর্না।
আবির আর তনুর চার চোখের মিলন হচ্ছে।
একজনের চোখে দুঃখ,তো অন্যজনের চোখে নেশা।
আবির নিজের মধ্যে নেই। তনুর গোলাপি ঠোঁট জোড়া তাকে তীব্র ভাবে টানছে....

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com