Breaking News

শীত থেকে রক্ষায় গরম পানি পান ভালো না ক্ষতিকর


অনেকেই শীত থেকে বাঁচতে হালকা গরম পানি খেয়ে থাকেন। এ অভ্যাস শরীরের জন্য ভালো না খারাপ তা হয়তো অনেকেরই অজানা। তাই আজ আপনাদের জানাবো শীতে গরম পান করার বিষয়টি বিশেষজ্ঞরা কীভাবে দেখছেন সে প্রসঙ্গে।

হালকা গরম পানির বিষয়ে ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশানে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা বলছে, শীত কিংবা গ্রীষ্মে গরম পানি খাওয়ার কোনো অপকারিতা নেই। বরং রয়েছে নানা উপকারিতা। তবে এর জন্য বেশি গরম পানি খাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র ঈষদুষ্ণ পানিতেই শরীরে ক্ষতি না হয়ে মিলবে হাজারো উপকারিতা।

শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক এমনকি গর্ভাবস্থাতেও এ উপকারিতা পাওয়া যায়। ডায়েটেশিয়ানদের মতে, নিয়মিত ঈষদুষ্ণ পানি খাওয়ার অভ্যাসে মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়, ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে, হজম শক্তি বাড়ে, বুকব্যথা এবং সর্দিকাশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। বন্ধ নাক খুলে যায়।

এদিকে সমস্যা হচ্ছে তৃষ্ণা বা পানি পিপাসা নিয়ে। পানি পিপাসা পেলে অনেকেই ঠান্ডার কারণে পানি পান করতে চান না। এ অভ্যাস ক্রমশ চলার ফলে পানিশূন্যতাসহ ছোট ছোট একাধিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য অনেকেই পানি পিপাসা পেলে গরম পানি পান করেন। এ নিয়ে আবার অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। শীতে গরম পানি পান করা ভালো না ক্ষতি, এমন প্রশ্নই সবার। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স কলকাতার প্রধান ডায়েটিশিয়ান মীনাক্ষী মজুমদার। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

গরম পানিতে গোসল করার উপকারিতা

শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ১৪ থেকে ২৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে, এ জন্য গোসলের জন্য ৩০-৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার পানিই সবচেয়ে উপযোগী। গোসলের এই পানিকে গরম না বলে উষ্ণ বলাটাই মনে হয় যথার্থ।

কতটুকু পান করতে হবে: শীতে ঠান্ডা থেকে মুক্তির জন্য অনেকেই সারাদিনই হালকা গরম পানি পান করেন। যা একদমই উচিত নয়। কেননা, সারাদিন গরম পানি পান করলে তা পেট ও অন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। তাই এক গ্লাসের বেশি হালকা গরম পানি করা ঠিক নয়। তবে কেউ চাইলে অল্প পরিমাণ করে সাধারণ পানি পান করতে পারেন।

রক্তসঞ্চালন বাড়ে: গরম পানি আমাদের শরীরের রক্তনালিকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে, এতে রক্তপ্রবাহ ভালো হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে: সকালে একগ্লাস হালকা গরম পানি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে, এমনটাই বলছে গবেষণা। নিয়মিত পান করলেই পাবেন উপকার। এক্ষেত্রে আরও বেশি কার্যকারিতার জন্য হালকা গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।

পেট পরিষ্কারে গরম পানি:  প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এক গ্লাস হালকা গরম পানি করলে বাওয়েল মুভমেন্ট বা মলের গতিবিধি বৃদ্ধি পায়। আবার যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্য রয়েছে, তারা এ জটিলতা থেকে মুক্তি পান। পাইলসের সমস্যা থাকলে নিয়মিত হালকা গরম পানি খেতে পারেন। এতে দারুণ উপকার পাবেন।

মাংসপেশি শিথিল করে: হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে মাংসপেশির সংকোচনভাব কমিয়ে পেশিকে শিথিল করে। এ জন্য যাঁরা শীতে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের শরীরচর্চার পরই গরম পানিতে গোসল বা বাষ্পায়িত গোসলের (স্টিম বাথ) পরামর্শ দেওয়া হয়। শরীরচর্চা বা ভারী কাজের পরপরই কোনোভাবেই ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না।

গরম পানিতে লেবু মেশালে কি উপকার মিলবে: এমন অনেকেই আছেন যারা ওজন কমানোর জন্য সকালে হালকা গরম পানির সঙ্গে লেবু মিশিয়ে থাকেন। তবে তাদের এই ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এভাবে লেবু মিশ্রিত পানি খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়ে থাকে। তাই গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে পরিত্রাণে হালকা গরম পানি নির্দ্বিধায় পান করতে পারেন।

সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে গরম পানি: ঋতু পরিবর্তনে জীবাণুর জন্য সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসুখ দেখা দেয়। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ হিসেবে হালকা গরম পানি পান করতে পারেন। এতে উপকার মিলবে। নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করলে বুক ও মাথায় জমে থাকা কফ নরম হয়ে বের হয়ে থাকে।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com