Breaking News

শাবান মাসের রোযা ও শাবানের ফযীলত

উপরিউক্ত বর্ণনাসমূহ থেকে স্পষ্ট যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর দরবারে আমলনামা পেশ করা হবে―এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করে শাবান মাসে সর্বাধিক রোযা রাখতেন। তাই শাবান মাসে অন্যান্য নেক আমলের পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী রোযা রাখার চেষ্টা করা কর্তব্য। কিন্তু রোযা রাখবে শাবান মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত। হাদীসে রমযানের এক-দুই দিন আগে রোযা রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। (দ্র. সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯১৪)

লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানের ফযীলত

শাবান মাসের একটি ফযীলত হল, অর্ধ-শাবানের রাত। অর্থাৎ চৌদ্দ শাবান দিবাগত রাত। এ রাতের বিশেষ ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন―

يَطَّلِعُ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ.

আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন; অতঃপর তিনি তার সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, কেবল শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত (এই দুই শ্রেণিকে ক্ষমা করেন না)। ―সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৬৬৫; শুআবুল ঈমান, বাইহাকী ৩/৩৮২, হাদীস ৩৮৩৩

قال البيهقيوقد روينا هذا من أوجه، وفي ذلك دلالة على أن للحديث أصلا من حديث مكحول.

এই হাদীসটি নির্ভরযোগ্য ও আমলযোগ্য। ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম যাকীউদ্দীন মুনযিরী, যাইনুদ্দীন ইরাকী প্রমুখ হাদীস বিশারদ ইমামগণ হাদীসটিকে নির্ভরযোগ্য বলে মতামত দান করেছেন। (দ্র. সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৬৬৫; আততারগীব ওয়াত তারহীব ২/১১৮; শরহুল মাওয়াহেব ৭/৪১২)

এই হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী অর্ধ-শাবানের রাতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সবার জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। কেবল শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি এবং অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাই এই মাগফিরাত ও রহমত প্রাপ্ত হয়।

কোনো বিশেষ সময়ের ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফিরাতের ঘোষণা আসলে করণীয় হল, সেই সময়ে সকল গুনাহ থেকে বিরত থেকে নেক আমলের প্রতি যত্নবান হওয়া, যেন আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত হওয়া যায়।

এ হাদীস ও অন্যান্য হাদীসে মাগফিরাতের ঘোষণা থাকার কারণে বহু আগ থেকেই গুনাহ মুক্তির রাত হিসেবে এ রাতকে শবে বরাত তথা ‘মুক্তির রজনী’ নামে অভিহিত করা হয়। কাজেই এ রাতে গুনাহ মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা কাম্য। পাশাপাশি অধিক নেক আমল ও দুআ-ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহর মাগফিরাত ও রহমত প্রাপ্তির ঐকান্তিক চেষ্টা করাও কর্তব্য।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com