Breaking News

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া । রমজানের ফজিলত সমূহ

রোজার আরবি নিয়ত

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ

নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।  

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতারের দোয়া

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার প্রতিপালক, আমি তাকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। নবী কমির (সা.) বলেন, অতএব উভয়ের সুপারিশই গৃহীত হবে। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ তারগিব, হাদিস : ৯৬৯)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রোজা ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ কোনোদিন সিয়াম পালন করলে তার মুখ থেকে যেন অশ্লীল কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে অথবা ঝগড়ায় প্ররোচিত করতে চায় সে যেন বলে, আমি রোজা পালনকারী। (সহিহ বুখারি : ১৮৯৪, সহিহ মুসলিম : ১১৫১)

হজরত আবু সাইদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে বান্দা আল্লাহর পথে একদিন মাত্র রোজা রাখবে, সেই বান্দাকে বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের পথ পরিমাণ দূরত্বে রাখবেন। (বুখারি, হাদিস : ২৮৪০)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও পর্যালোচনাসহ রমজান মাসের রোজা পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুণাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৮, সহিহ মুসলিম : ৭৬০)

হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, জান্নাতের একটি দরজা আছে, একে রাইয়ান বলা হয়। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র রোজা পালনকারী ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ এই পথে প্রবেশ করবে না।

দোয়া কবুলের মাস: রমজান মুমিনের দোয়া কবুলের মাস। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ বাদশা, রোজা পালনকারী—যতক্ষণ না সে ইফতার করে এবং মজলুম।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৯৮)

রোজাদারের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা: যারা রোজা রাখে, আল্লাহ ভালোবাসেন। নিচের হাদিসে সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, অবশ্যই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৪)

রমজানে গুনাহ মাফ হয়: মহান আল্লাহ রমজান মাসে মুমিনের পাপ মার্জনা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এক জুমা থেকে অন্য জুমা এবং উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহর জন্য কাফফারা হয়ে যায়, যদি সে কবিরা গুনাহয় লিপ্ত না হয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৩৮)

রোজাদারের জন্য বিশেষ পুরস্কার: প্রতিটি নেক আমলের পুরস্কার আছে। তবে রোজাদারের জন্য আল্লাহ বিশেষ পুরস্কার রেখেছেন। হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদমসন্তানের প্রতিটি আমল তার জন্য, কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা তা আমার জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দেব।' (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৪)

রমজান ক্ষমার মাস: আল্লাহ রোজাদারকে ক্ষমা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করা হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০১)

মুমিনের খুশির মাস: রমজান হলো মুমিনের আনন্দের মাস। মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজাদারের জন্য আছে দুটি আনন্দ। এক আনন্দ হলো যখন সে ইফতার করে, আরেক আনন্দ হলো, যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে মিলিত হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৯২)

জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস: রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ প্রতিদিন ইফতারের সময় কতিপয় বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন এবং তা প্রতি রাতেই হয়ে থাকে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৩)

রোজাদারের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা: সাহাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামের একটি দরজা আছে। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন শুধু রোজা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৯৬)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com