Breaking News

Māwsynrām Meghalaya World’s Wettest Place | North East India


Northeast Rain: চেরাপুঞ্জি এবং মৌসিনরামে (Mawsynram Rainfall) দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়। কিন্তু এই দু'জায়গাতেই এই মরশুমে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর এবং মেঘালয় (Meghalaya) প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবারে ১৯৯৫ সালের পরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে Cherrapunji (Sohra) এলাকায়। আর ১৯৬৬ সালের পরে সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে Mawsynram এলাকায়।

মেঘালয়, যার অর্থ “মেঘের আবাস”, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি অত্যাশ্চর্য স্থান। এই রাজ্যের সবচেয়ে বর্ষণমুখর স্থান মৌসিনরাম, যা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বর্ষণের জন্য পরিচিত। এখানে প্রতি বছর গড়ে ১১,৪০০ মিমি (৩৭ ফুট) বৃষ্টি হয়। মৌসিনরাম এমন একটি স্থান যেখানে প্রকৃতির অফুরন্ত সৌন্দর্য এবং বৃষ্টির রেকর্ড স্থাপন করা হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বর্ষণমুখর স্থান: মৌসিনরামের ইতিহাসে অনেক রেকর্ড রয়েছে। ২০২২ সালে, এই গ্রামটি ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড গড়ে, যা ৩ ফুটেরও বেশি। এটি দিল্লির এক বছরের বৃষ্টির চেয়েও বেশি। মাওসিনরাম এমন একটি স্থান যেখানে বৃষ্টির কথা ভাবলে মনে হয়, এটি যেন এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা।

গ্রামের জীবনযাত্রা: মৌসিনরামের উচ্চতা ৪,৬০০ ফুট এবং এখানকার মানুষের প্রধান সম্প্রদায় হল খাসি। তাদের সংস্কৃতি এবং ভাষা ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে আলাদা। স্থানীয়দের সাথে কথা বললে আপনি তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ: আমি যখন গ্রামের রাস্তায় হাঁটছিলাম, তখন এক যুবক আমার সাথে কথা বলার সুযোগ পেল। তিনি জানালেন, এখানে বৃষ্টি কখনো থামে না। বর্ষাকালে এটি মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকে। মেঘের কারণে, স্থানীয়রা প্রায়ই অদৃশ্য হয়ে যায় এবং হঠাৎ করে উপস্থিত হয়।

বৃষ্টির সময়কাল: বৃষ্টির সময়ে, স্থানীয়রা বিশেষ ধরনের বাঁশের ছাতা ব্যবহার করে, যা হাত দিয়ে ধরতে হয় না। এই ছাতাটির নাম "কুনুপ" এবং এটি কৃষিকাজের জন্য খুবই উপযোগী।

মৌসিনরাম আবহাওয়া:

মৌসিনরামে বৃষ্টি এতটাই প্রচুর যে এটি স্থানীয় জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। এখানে বৃষ্টি হওয়ার সময়, স্থানীয়রা তাদের কাজ চালিয়ে যায়। তারা অপেক্ষা করে না বরং বৃষ্টির মধ্যেই কাজ করে।

খাসি সংস্কৃতি: মৌসিনরামের খাসি সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনযাত্রা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তাদের খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতি এবং ভাষা সবকিছুই অনন্য। স্থানীয় খাবারগুলো সাধারণত মাংস এবং সবজি দিয়ে তৈরি হয়।

স্থানীয় শিল্প এবং হস্তশিল্প: স্থানীয়রা বিভিন্ন ধরনের শিল্প এবং হস্তশিল্প তৈরি করে। তাদের তৈরি বাঁশের কাজ এবং অন্যান্য হস্তশিল্প খুবই জনপ্রিয়।

বৃষ্টির কারণ: মৌসিনরামে বৃষ্টির প্রধান কারণ হল মৌসুমি বাতাস। এই বাতাস বঙ্গোপসাগর থেকে আসে এবং খাসি পাহাড়ের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রচুর জলবাষ্প নিয়ে আসে, যা এখানে বৃষ্টিতে রূপান্তরিত হয়।

প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সৌন্দর্য: মৌসিনরামে প্রকৃতির সৌন্দর্য চমৎকার। এখানে অনেক সুন্দর দৃশ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। মেঘের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া পাহাড়গুলি এবং সবুজ প্রকৃতি পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

স্কুল এবং শিক্ষা ব্যবস্থা: মৌসিনরামে অনেক স্কুল রয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা বর্ষাকালে ক্লাসরুমে গান গায়। স্থানীয়রা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয় এবং শিশুদের জন্য ভালো শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করে।

সংস্কৃতি এবং ধর্ম: মৌসিনরামের অধিকাংশ মানুষ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। এখানে অনেক সুন্দর গির্জা রয়েছে যা স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ।

পর্যটকদের জন্য তথ্য: মৌসিনরাম একটি মিষ্টি এবং শান্তিপূর্ণ স্থান। এখানে পর্যটকদের জন্য অনেক কিছু করার আছে। স্থানীয় সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এই স্থানটি অবশ্যই ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।

মৌসিনরাম সত্যিই একটি বিশেষ স্থান, যেখানে বৃষ্টির রাজত্ব এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য মিলিত হয়েছে। এখানে আসলে আপনি একটি অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন। তাই, যদি কোনোদিন আপনার মৌসিনরাম ভ্রমণের সুযোগ হয়, তাহলে তা মিস করবেন না।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com