Breaking News

রঙিলা বউ । পর্ব - ০৬


ওকেহ স্যার,ভুল হয়ে গেছে আমার।
আজকের পর আর কোনোদিন আপনার বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবো না।
মাফ করে দিবেন আমাকে।বলে কান্না করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে যায়!
মায়ার,এমন ধারা আচরণ দেখে জায়গার মধ্যে"থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি"!
মায়ার হটাৎ কি হলো!এমন উদ্ভট আচরণ করেছে কেনো সে!
আমাকে কলঙ্কের দাগ দিয়ে,সে নিজেও আমার কলঙ্কে জড়াচ্ছে।
ধ্যাঁত কিছুই মাথায় ঢুকছে না।কাজের মহিলাকে ডাক দিয়ে বল্লাম ঘর পরিষ্কার করতে।
আর আমি রুমে চলে গেলাম।আজকে আর স্কুলে যাওয়া হবে না।
রুমে গিয়ে শুয়ে আছি।একটু পর আম্মু আসে।
তোদের দুজনের জীবনটাই নষ্ট করে দিলাম আমি।জানিনা ভুলের মাশুল কি করে দিব আমি!
আম্মু বাদ দাও এখন এসব কথা।আর যা হয়েছে ভুলে যাও।বাকি সামনে কিছু হলে,সেটা দেখা যাবে।
ওকেহ খেতে চল।খাবারের সময় হয়ে এসেছে প্রায়।
আচ্ছা যাও আসছি।আর মায়া কোথায়?
নিচে তো দেখলাম না।হয়তো ছাদে গেছে।

আচ্ছা তুমি খাবার রেডি করো।আমি ওকে নিয়ে আসছি।
আম্মু চলে গেলো।
আমি রুম থেকে বের হয়ে ছাদে চলে গেলাম, মায়াকে আনার জন্য।
এই তুমি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করছো?
কোনো জওয়াব নাই।
কথা বলছো না কেনো?
হটাৎ এই ফোফানির আওয়াজ কানে আসলো।মনে হচ্ছে যেনো কেউ কান্না করছে।
মায়ার কাছে যেতেই দেখতে পেলাম,সে ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কান্না করছে!
এই মায়া,তুমি কান্না করছো কেনো?
সেটা আপনার জানতে হবে না।
আমার জানতে হবে না মানি?
এটা কেমন ধরনের কথা বললে তুমি?
যা বলেছি শুনতেই পেয়েছেন।তাও আবার কথা বলছেন কেনো?
কি আমায় মেরে মন ভরেনি আপনার?আরো মারতে ইচ্ছে হচ্ছে আমাকে?
তাহলে এক কাজ করেন।আমাকে ধরে ছাদ থেকে ফেলে দেন।তাহলেই হয়ে যাবে।
--মায়ার কথা শুনে ভিতরে কেমন যেনো মোচড় দিয়ে উঠলো!আল্লাহ,কি বলছে সে!
আবার খারাপ ও লাগছে খুব।ওকে মারায় হয়তো খুব ব্যথা পেয়েছে সে।হাত গুলো কেমন ফুলে ফলে আছে।মেয়েটার কান্না দেখে যেনো নিজেরই কান্না চলে আসবে মতন অবস্থা।আর কথা না বাড়িয়ে ঠুসস করে টান নিয়ে মায়াকে নিজের বুকে নিয়ে নিলাম।এই মেয়ে এত পাগলি কেনো তুমি হা?
--আমাকে মেরে আপনার মন শান্তি হয়নি তাইনা?

যে আমাকে আবার পাগল বলছেন?
--ও আল্লাহ,তুমি আমায় তুলে নাও।
মায়ার কথা শুনে হাসবো না কাঁদবো,তা ভেবে উঠতে পারছি না।নাহ,মেয়েটাকে শান্ত করা উচিৎ।
ঠোঁট জোড়া একদম ওর ঠোঁটের কাছে নিয়ে গেলাম।তারপর ওর ঠোঁট জোড়ায় ডুবিয়ে দিলাম নিজের ঠোঁট জোড়া।মায়া আমার পিঠে খামচে ধরেছে।মনে হয় যেনো চামড়া ভেদ করে নখ গুলো ঢুকিয়ে দেবে।বেশ কিছুক্ষণ পর মায়াকে ছেড়ে দিলাম।সে তো রেগে মেগে আগুন।
--স্যার আপনি আমার সাথে এসব কি করেন?
আর তার থেকে বড় কথা,আপনি না ইশিতা না কি,ঐ শাঁখচুন্নি টাকে বিয়ে করবেন।তাহলে আমায় কাছে টানছেন কেনো?
--ওটা তো ছয়মাস পর করবো।যখন তোমার সাথে আমার ডিভোর্স হবে,তখন ইশিতাকে বিয়ে করবো।
কিন্তু এখন তো তুমিই আছো।আর আজকে কেমন যেনো তোমাকে বউ বউ লাগছে।তাই আর লোভ সামলাতে পারিনি।ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়েছি তোমার ঠোঁটে।
--একদম বাজে কাজ করছেন আপনি এটা।
অন্য কাউকে বিয়ে করবেন বলে ভরসা দিলেন।

কিন্তু কাছে টানছেন অন্য মেয়েকে।আপনার মতন খারাপ লোক আর একটাও দেখিনি।আমি আপনার সাথে আর কোনোদিন কথা বলবো না।
--আচ্ছা বলতে হবে না।এখন খেতে চলো।বলে মায়াকে কোলে তুলে নিলাম।কোলে নিয়ে মায়ার কপালে কয়েকটা চুমুও একে দিয়েছি।কিন্তু সে কিছুই বলেনি।আর আমিও কেমন যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছি।কি সব করছি আমি,তা নিজেও জানি না।যেই মেয়েকে বউ হিসেবেই মানি না।সেই মেয়ের উপরেই স্বামীত্ব ফলাচ্ছি।আসলেই আমার নজর খারাপ।মায়াকে নিচে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিলাম।
আম্মু হা হয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে!
--সূর্য মনে হচ্ছে উল্টো দিশা ধরে উঠেছে আজ।
বউকে কোলে করে নিচে নামানো হচ্ছে।
--আম্মু,এমনিতেই ওকে কোলে নিয়েছি।
এ ছাড়া কিছুই না

--এমনি হোক আর যাই হোক,কোলে তো নিয়েছিস।
--আম্মু,একদম মিথ্যা কথা বলছে উনি।অনেক কিছুই করেছে উনি আমার সাথে।
আমাকে জোর করে কোলে নিয়ে চুমুও খেয়েছে।আপনি উনাকে কিছু বলেন।
মায়ার কথা শুনে আকাশের আম্মু থতমত খেয়ে যায়!কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না!
--আরে বউমা,স্বামী স্ত্রীকে এমন একটু আকটু আদর করেই।তা নিয়ে এত মন খারাপ করার কি আছে।
--স্বামী না ছাই।আস্তো একটা জঙ্গলধারী হনুমান!
--আচ্ছা থাক হয়েছে হয়েছে।এবার বকবক না করে খেয়ে নে তোরা।
--খেয়ে দেয়ে মায়াকে নিয়ে উপরে চলে আসলাম।
জানিনা কেনো জানি মেয়েটার উপরে অধিকার খাটাতে ইচ্ছে করছে খুব।
কেমন যেনো খুব কাছের মনে হচ্ছে মেয়েটাকে।
যেমন ভাবা তেমন কাজ।মনকে সায় দিলাম।না হয় মনের কথা মনে চেপে রাখলে,
ভিতরেই বিস্ফরণ হবে।মায়া তুমি একটু শুয়ে রেস্ট নাও।
--না আমি ঘুমাবো না।আপনি ঘুমান।
--না ঘুমালে কিন্তু আবার ঠোঁটে পাপ্পি দেওয়া শুরু করবো।
--না না,আমি ঘুমাচ্ছি।তবে তার আগে একটা কথা বলে নেই।আপনি অনেক খারাপ একটা মানুষ।হাজারটা খারাপ স্বভাব আপনার ভিতরে বসবাস করে।
--হা আমি খারাপ।যাও সেটা মেনে নিলাম।এবার ঘুমিয়ে বিশ্রাম নাও।
অনেক ধকল গেছে তোমার উপরে।

শুয়ে আছি।কিন্তু ঘুম আসছে না।মাথার ভিতরে খালি একটা জিনিস এই ঘুরপাক খাচ্ছে।
যে মানুষটাকে আমি স্যারের চোখে দেখতাম,
সেই মানুষটাকে নিয়ে এখন অন্য রকম ফিল কেনো হচ্ছে!
মানুষটা যখন আমায় খাছে টানে,মুহূর্তের মধ্যেই যেনো সমস্ত সম্পর্ক গুলিয়ে যায় আমার।
মানুষটা যে আমার স্যার।সেটাই তখন মাথায় কাজ করে না।
মনে হয় যেনো মানুষটা খালি আমার।উনার সমস্ত কিছুই আমার।
আমিই একমাত্র নারী,যে কিনা উনার লাইফে থাকবো।
কেউ আর আসতে পারবেনা উনার দুনিয়ায়।
আজ নিয়ে পরপর দু'বার,মানুষটা আমার ঠোঁট জোড়ায় উষ্ণ ছোঁয়া দিয়েছে।
এতেই মনটা ছটফট করছে উনার জন্য।যখন আরো কাছে টানবে,
তখন কি ভাবে সম্পর্কের বাঁধন টিকিয়ে রাখবো আমি।
নাহ,আর কিছু ভাবতে পারছি না আমি।

যে করেই হোক,উনার থেকে দূরে সরে যাবো আমি।
না হয় ছাত্রী আর শিক্ষকের সম্পর্কটা যে,এসবের মাঝে গুলিয়ে যাবে।
অন্যদিকে আকাশের মনেও অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছে।
--মায়ার উপরে কেমন যেনো একটা ভালোবাসা জন্ম নিয়ে ফেলেছে।
ইচ্ছে হয় ওকে সারাজীবন নিজের করে রাখি।ও যেনো আমার জন্যই দুনিয়ায় এসেছে।
একবার কি চেষ্টা করে দেখবো ওর সাথে মানিয়ে নেওয়ার।নাহ,করেই দেখি।
বিফল হলে অন্য উপায় বের করে নেব।কিন্তু এখন শুধু ওকে নিয়েই ভাববো।
যাই এবার গিয়ে দেখি মায়া ঘুমিয়েছে কিনা।
ওকে তো ঘুমোতে বললাম।মায়ার কাছে গিয়ে দেখি কোনো সারা শব্দ নাই।
তার মানে ঘুমিয়ে পড়েছে।ওর ঘুমন্ত চেহারাটা দেখে ভিতরে একটা নতুন রেষ জন্ম নিলো।
ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোতে আমারো খুব ইচ্ছে করছে।ভাবনাটাকে বাস্তব রূপ দিলাম।
আস্তে করে গিয়ে খাটে শুয়ে পরলাম।তারপর ওর তলপেটে পেঁচিয়ে ধরে ওকে নিজের
 বাহুডোরে নিয়ে নিলাম।মায়াও আমাকে জড়িয়ে ধরেছে।

হয়তোবা সেটা ঘুমের ঘোরে।মায়ার চুল গুলো বাতাশে উড়ে এসে মুখে পড়ছে।
চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে দিয়ে ঘাড়ের মধ্যে কয়েকরাশ চুমু একে দিলাম।
মায়া ঘুমের মধ্যেই নড়ে উঠছে।আর আমায় আরো শক্ত করে আঁকড়ে ধরছে।
জানিনা এ বন্ধন কতদিন থাকবে।জানিনা কতদিন থাকবে তোমায় জড়িয়ে ধরার অধিকার।
তবে আমি সারাজীবন এ বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে চাই।
আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই,কোনো এক মায়া নামক ছাত্রীর ভালোবাসায়।
আকাশের চিন্তা ভাবনার বাহিরেও যে অনেক কিছু ঘটতে চলেছে।
তার কোনো আভাস ও সে পায়নি।
সুখ,দুঃখ এই দু'টো জিনিস যে পরিবর্তন করে করে আসে।
আকাশ খানিকক্ষণের জন্য সেটা ভুলেই গেছে।
হয়তো এত ভালোবাসার পরেও মায়াকে হারাতে হবে তার....

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com