Breaking News

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার বিস্তারিত তুলে ধরা হলো



খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয়, চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ দশমিক ৮ গ্রাম ফাইবার। এছাড়াও খেজুরের রয়েছে আরও অনেক পুষ্টি উপাদান। উদাহরণস্বরূপ খুরমা খেজুর।

সুস্বাদু এবং বেশ পরিচিত একটি ফল খেজুর। রোজার মাসে ইফতারে খেজুর রাখেন প্রায় সবাই। প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেলস যেমন কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি উপাদানসমৃদ্ধ এই খেজুর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই শুধু রমজান মাস নয়, সারা বছরই খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখা যেতে পারে।

খেজুরের উপকারিতাঃ

পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল। এতে ভিটামিন বি, নিয়াসিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, এবং ফলেটের মতো ভিটামিন রয়েছে। এছাড়াও এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, এবং আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিনারেলও রয়েছে। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।  

শক্তি বৃদ্ধি খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, এবং সুক্রোজ রয়েছে। এই প্রাকৃতিক চিনি গুলো শরীরে দ্রুত শক্তি প্রদান করে। যারা শারীরিক পরিশ্রম করেন বা যাদের কাজের জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়, তাদের জন্য খেজুর একটি আদর্শ খাবার।  

পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং খাবারের পুষ্টি উপাদানগুলি ভালোভাবে শোষিত হয়। 

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের একটি প্রধান কারণ। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও, খেজুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ খেজুরে আয়রন রয়েছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। যারা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন, তাদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর হয় এবং শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালিত হয়।

হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস। এই উপাদানগুলো হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত খেজুর খেলে হাড় মজবুত হয় এবং দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। যারা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ ভুগছেন, তাদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী।

ওজন নিয়ন্ত্রণ যদিও খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে, তবুও এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা খাবার হজমে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কমায়। এছাড়াও, খেজুরে ক্যালোরির পরিমাণ কম হওয়ায় এটি ডায়েটের জন্য উপযুক্ত।

ত্বকের স্বাস্থ্য খেজুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বকের সজীবতা বজায় রাখে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা গুলো কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেজুর খেলে ত্বক উজ্জ্বল এবং কোমল থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগ থেকে রক্ষা করে। যারা নিয়মিত খেজুর খান, তারা সাধারণ ঠান্ডা, কাশি এবং অন্যান্য সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকেন।

চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন বি, যা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমায়। নিয়মিত খেজুর খেলে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং চুল সজীব ও উজ্জ্বল থাকে।

চোখের স্বাস্থ্য খেজুরে রয়েছে ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন রাতকানা, চোখের শুষ্কতা এবং চোখের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।

লিভারের কার্যকারিতা উন্নতি খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি লিভারের টক্সিন দূর করে এবং লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য খেজুর একটি উপকারী খাদ্য।

গর্ভাবস্থায় উপকারী গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। খেজুর গর্ভাবস্থায় শক্তি বাড়ায় এবং গর্ভধারণের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়: খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকায় এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ছাত্রছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভালো থাকে। তাই বেশি বয়সে স্মৃতিশক্তি লোপ করতে না চাইলে বয়স ৩০ হলেই খেজুর খেতে শুরু করে দিন।  

কর্মশক্তি বাড়ায়: প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বয়স বৃদ্ধির কারণে ঝিমুনি ভাব দেখা দিলে প্রতিদিন ৩টি খেজুর খান। তাহলেই আর ক্লান্তি আপনাকে ঘিরে ধরতে পারবে না।  

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি: যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এ ছাড়া গলাব্যথা, বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডায় খেজুর উপকারী। খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ায় বেশ উপকারী। ভেজানো খেজুর খেলে বিষক্রিয়ায় দ্রুত কাজ করে। এ ছাড়া নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাসে বৃদ্ধি পায় শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও।  

দৃষ্টিশক্তি প্রখর: খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। যেমন: বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫। এ ছাড়া ভিটামিন এ১ এবং সিসহ নানা ভিটামিনের পাওয়ার হাইস বলতে পারেন খেজুরকে। এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই বেশি বয়সে চোখের সমস্যা তাড়াতাড়ি আনতে না চাইলে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

মজবুত পেশি: বয়সের সঙ্গে দেখা দেয় পেশির নানান জটিলতা। আর এই পেশি জটিলতা এড়াতে ভালো কাজ করে প্রোটিন। খেজুর প্রোটিন সমৃদ্ধ। তাই এটি আমাদের পেশি ভালো রাখতে সহায়তা করে এবং শরীরের জন্য অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।  

হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস: বয়স বাড়ার সঙ্গে বাড়ে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও। এই ঝুঁকি কমাতে পারে খেজুর। খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম, যা হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর শরীরের খারাপ ধরনের কোলেস্টেরল কমায় (এলডিএল) এবং ভালো কোলেস্টেরলের (এইচডিএল) পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।  

হিমোগ্লোবিনের সামঞ্জস্যতা বজায়: খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এই আয়রন শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দিলে বা হিমোগ্লোবিনের কমতি হলে খেজুর খাওয়া শুরু করুন। এর ফলে শরীরের আয়রনের মাত্রা বজায় থাকবে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক হবে এবং রক্তের কোষ উৎপন্ন হবে।  

পরিপাকে সহায়তা: তিরিশের কোঠায় হজমশক্তি আমাদের কমতে শুরু করে। তাই এ সময় খেজুর খাওয়ার অভ্যাসে আপনার হজমশক্তি বাড়বে। কারণ, অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে খেজুর বেশ সহায়ক। খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে খেজুর। একই সঙ্গে খেজুরের মিষ্টতা চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

হাড়ের সুরক্ষায়:  ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, যা হাড়কে মজবুত করে। সেই সঙ্গে মাড়ির স্বাস্থ্যও সুরক্ষিত রাখে।  

ত্বকের যত্ন: বয়সের ছাপ প্রথমে ত্বকেই ধরা পড়ে। তাই ত্বকের যত্নে খেজুর কাজে লাগাতে পারেন। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায়। ত্বকের নানা সমস্যা থেকেও খেজুর মুক্তি দেয়। ত্বকের বলি রেখা নিয়ন্ত্রণ করতেও খেজুর সিদ্ধহস্ত। এ ছাড়া ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব ও হরমোনের সমস্যা কমাতে খেজুর কার্যকর।

সারাদিন রোজা থাকার ফলে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায় এবং তীব্র ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। ইফতারে খেজুর খেলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হয়।
শুরুতেই দুই-তিনটা খেজুর খেলে ক্ষুধার তীব্রতা কমে যায়। 

খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন বি। ভিটামিন বি৬ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। 

খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। 

নিয়মিত খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। খেজুরের লিউটেন এবং জিক্সাথিন নামক উপাদান চোখের রেটিনা ভালো রাখে। 

খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এটি অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে পারে। নিয়মিত খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়। 

দৈনিক আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগ পূরণে সক্ষম খেজুর। আয়রণসমৃদ্ধ  হওয়ায় খেজুর শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তস্বল্পতায় ভোগেন যারা তারা খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখতে পারেন। 

খেজুর থেকে প্রায় ২০-২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।

খেজুরে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। হাড় গঠনে, হাড়ের ক্ষয়রোধে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

খেজুরের অপকারিতাঃ
খেজুর যেমন শরীর পক্ষে উপকারী তেমন মনে রাখতে হবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। কারণ খেজুরে গ্লুকোজ আছে এবং সেটি খেতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।  

খেজুরে আছে পটাশিয়াম, যাদের শরীরে পটাশিয়াম বেশি তারা নিয়মিত খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে কাজ করুন। 

খেজুরের মতো শুকনো ফলে ছাঁচ থাকে তাই যাদের হাঁপানি আছে তাদের এড়িয়ে চলা।

পেটের সমস্যা: অনেকেই নিয়ম করে ড্রাই ফ্রুটস খান। আর ড্রাই ফ্রুটস হিসেবে খেজুর খুবই জনপ্রিয়। ড্রাই ফ্রুটসে যে খেজুর থাকে, তাতে সালফাইট দিয়ে জারিয়ে রাখা হয়। সালফাইট শরীরে গেলে পেটের সমস্যা দেখা দেয়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেজুর খেলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা ছাড়াও, পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে যা হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে অতিরিক্ত ফাইবার হিতে বিপরীত হতে পারে।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা পুষ্টিবিদরা বলছেন, খেজুর খেলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে খেজুর খেতে নিষেধ করেন চিকিৎসকরা। খেজুর খেলে দেখা দিতে পারে এলার্জিও। তাই যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তাদের খেজুর না খাওয়াই ভাল।

ত্বকের সমস্যা: খেজুর সংরক্ষণে সালফাইট নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এই সালফাইট শরীরের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর প্রভাবে ত্বকে র‌্যাশ, চুলাকানি, লাল হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।  

ওজন বেড়ে যেতে পারে, ওজন কমানোর ডায়েটে অনেকেই খেজুর রাখেন। কিন্তু মনে রাখবেন একটি খেজুরে ক্যালোরির পরিমাণ প্রায় ২.৮ গ্রাম। তাই অতিরিক্ত খেজুর ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই প্রতিদিন অন্তত চারটি করে খেজুর খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়।

WebMD-এর তথ্য বলছে, অতিরিক্ত খেজুর খেয়ে ফেললে কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে অ্যালার্জি। অপরদিকে, খেজুরে অতিরিক্ত সালফাইড থাকার কারণেও অ্যালার্জি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার পরে চোখে চুলকানি, অতিরিক্ত পানি পড়া এবং লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই যদি দেখেন যে খেজুর খাওয়ার পর অ্যালার্জি দেখা দিয়েছে তবে তা বাদ দিতে হবে।

খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষত্রে খেজুর গ্রহনে সতর্ক হওয়া উচিত।যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুর গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন এবং যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তার খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

খেজুর সম্বন্ধে কিছু সাধারন জিজ্ঞাসা

প্রতিদিন ২টা খেজুর খেলে কী হবে জানেন?

প্রতিদিন খেজুর খেলে কি হয় জেনে নিন
১. শক্তি পাবেন খেজুরের ৯৮ শতাংশই শর্করা।
২. কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে খেজুরে ফ্যাট নেই বললেই চলে।
৩. হজমের সমস্যা দূর হবে খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টি উপাদান আর আঁশ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে
৫. চোখ ভালো রাখবে

খালি পেটে খেজুর খেলে কি উপকার হয়?
১। প্রতিদিন খালি পেটে খেজুর খেলে মিলবে ১০ উপকার 
২। কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকবে 
৩। মস্তিষ্ক সতেজ থাকে 
৪। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে 
৫। হাড় মজবুত হবে 
৬। হাঁটুর ব্যথা দূর হবে 
৭। চোখের সমস্যা দূর করে 
৮। পুষ্টির ঘাটতি পূরণ 
৯। গর্ভবতী মা ও সন্তানের জন্য উপকারী

সেক্সে খেজুরের উপকারিতা কি কি?
১। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে  
২। যৌন অক্ষমতা এবং সন্তানহীনতার সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে খেজুর।
৩। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শারীরিক শক্তি ও যৌন শক্তির উদ্দিপনা।

খেজুর খেলে কি রক্ত বাড়ে?
১) খেজুর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। যাঁদের রক্তের হিমগ্লোবিনের মাত্রা কম রয়েছে, তাঁরা খেজুর খান। খেজুর থেকে রক্তাল্পতার রোগীদের শারীরিক শক্তিও বাড়বে। 
২) খেজুর শরীরে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে, যার ফলে রাতে ভাল ঘুম হয়।

দুধের সাথে খেজুর খেলে কি হয়?
যৌন শক্তি বাড়াতে রাতে কয়েকটি খেজুর দুধে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই দুধ পান করলে উপকার মেলে। খেজুর বেশি গঠন করতে সাহায্য করে এমনকি খেজুরে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ খেজুর অত্যন্ত উপকারী। যারা অ্যাসিডিটির মত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যৌনশক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সবচেয়ে ভালো খেজুর কোনটি?
খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মিশর এবং সৌদি আরবের খেজুর।

খেজুর খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়?
রোজ যদি খালি পেটে একটি করে খেজুর খেতে পারেন, ত্বকের বদল সহজেই চোখে পড়বে। খেজুর খেলে কী কী বদল আসবে ত্বকে, জেনে নিন। 
১। ব্রণ থেকে মুক্তি খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি৫, প্রোটিন, অ‍্যান্টিঅক্সিড‍্যান্টের মতো উপাদান, যা ব্রণর ঝুঁকি কমায়।
২। ট‍্যান আটকায় সানস্ক্রিন মাখার যাঁদের অভ‍্যাস নেই, খেজুর তাঁদের রক্ষাকবচ।
৩। ত্বক টান টান করে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com