আমার পুতুল বউ । পর্ব - ০৪
ভাইয়া দেখেছো শয়তান দুটো পার্কের ভিতরে কি করছে?
যার যেটা ইচ্ছে করুক তাতে তোর কি? তুই ঘুরতে এসেছিস ঘুরবি, ফিরবি তারপর বাসায় ফিরে যাবি।
তা তো হয় না ভাইয়া। দেখো কি করি!
এই বলে পিচ্চিটা দৌড়ে সেই কপোত-কপোতীর কাছে গেল। আমি পিছন থেকে এত ডাকলাম কিন্তু আমার ডাকে সাড়া দিল না। না জানি কি কান্ড বাঁধিয়ে বসে পিচ্চিটা। আমার কোন কথাই শোনে না সব সময় শয়তানি করে। বড্ড বেশি দুষ্টু হয়েছে।
পুতুল একদম তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। পাকা বুড়িদের মতো কোমরে হাত দিয়ে বলতে লাগলো,,,
- ভাইয়া তুমি এখানে? আর আমার আপু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে!
পুতুলকে দেখে তারা দুজন একটু সরে হয়ে বসে। তারা পুতুলের কথায় অবাক হয়েছে বটে৷
ছেলেটি কিছু বলার আগেই মেয়েটি বলে উঠলো,
- তোমার আপু ওর(ছেলেটা) জন্য অপেক্ষা করছে কেন?
পুতুল কপট রাগে মেয়েটিকে উত্তর দেয়,,,
- এই মেয়েকে তুমি আমাদের শালী-দুলাভাইয়ের মাঝে কথা বলছো?
ছেলেটা শুধু বেকুবের মতো পুতুলের কাণ্ড দেখছে। কিছু যে বলবে সেই সুযোগও পাচ্ছে না।
এবার মেয়েটা চোখ গরম করে ছেলেটার দিকে তাকায় ছেলেটা তো ভয়ে শেষ ঢোক গিলতে লাগলো মেয়েটা ছেলেটার কলার ধরে বলে,,,
- কে এই মেয়েটা? আমার তো কোনো ছোট বোন নেই তাহলে তোকে দুলাভাই বলে ডাকছে কেন? সত্যি করে বল আর কার সাথে রিলেশন করিস?
ছেলেটার যায় যায় অবস্থা কোনরকমে মুখ খুলল,,,
- বিশ্বাস করো বাবু আমি আর কারো সাথে রিলেশন করি না।
- তাহলে এই মেয়েটা তোকে দুলাভাই বলছে কেন আর কোন মেয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করছে?
- আমি জানিনা কে এই মেয়েকে আর এটাও জানি না আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করছে।
তাদের কথার মাঝে পুতুল ডান হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলল,,,
- এই দুলাভাই তুমি মিথ্যে বলছো কেন? আমার আপুর সাথে এক বছর প্রেম করে এখন অন্য মেয়েকে নিয়ে ঘুরছ দাঁড়াও আপুকে গিয়ে বলছি।
এই বলে পুতুল সেখান থেকে আস্তে আস্তে কেটে পরলো৷ এরই মধ্যে মেয়েটা সাংঘাতিক ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলেছে। কি সাংঘাতিক মেয়ে মাইরি! এতোটুকু সময়ের মাঝে একটা সম্পর্কের বারোটা বাজিয়ে দিলো। পিচ্চিটা এমন ভাব নিয়ে আমার সামনে আসলো মনে হয় কত বড় একটা মিশন সাকসেস করে এসেছে৷ আমার সামনে এসে মুখে হাত দিয়ে মুখ টিপে হাসতে লাগল।
ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করি,,,
- এভাবে গাধার মতো হাসছিস কেন?
- ভাইয়া তুমি বলেছিলে না যে আমি কোন কাজের নয়! দেখেছো আজ কত বড় কাজ করলাম! সরকারের উচিৎ আমাকে একটা নোবেল দেওয়া।
বাঁধিয়ে দিয়ে আসলো মানুষের মধ্যে ঝগড়া আর সে বলছে কিনা কত বড় একটা কাজ করে আসলো আবার বড় মুখ করে নোবেল ও চায়। এমন বিচ্ছু শয়তান কখনো দেখিনি আমি।
পিচ্চির কথা শুনে ফিক করে হেসে দেই এটা দেখে সেই ছেলে মেয়ে দুটো আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। ছেলেটা মেয়েটাকে বলে,,,
- ওই দেখো ওরা দুজন হাসাহাসি করছে তারমানে তারা ইচ্ছা করে আমাদের মাঝে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিয়েছে।
এটা বলেই তারা দুজন আমাদের ধাওয়া করতে লাগলো আমাদের আর পায় কে! কোনরকমে পিচ্চিটার হাত ধরে দে দৌড়।
এই পিচ্চিটার জন্য কোথাও গিয়ে শান্তি নেই। কোন না কোন কান্ড ঘটাবেই। কোনরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে এসেছি।
এর কিছুদিন পর ঘরে বসে ফোনে গেমস খেলছিলাম। পিচ্চিটা কোথা থেকে যেন আসলো খুব সাজুগুজু করে। মনে হয় কোনো অনুষ্ঠানে যাবে।
- ভাইয়া দেখো তো আমাকে কেমন লাগছে?
আমি গেমের মধ্যেই মনোনিবেশ রেখে বললাম,,,
- অনেক সুন্দর লাগছে
- উফফ ফোনটা রাখো তো।
আমি ফোনটা পাশে রেখে পিচ্চিটার দিকে তাকালাম।
- আচ্ছা রাখলাম এবার বল কি বলবি?
- শুনেছ পাশের এলাকায় নাকি একটা মেয়ের বিয়ে!
- হ্যাঁ শুনেছি তার বিয়ে তাতে আমার কি আর তুই এত সুন্দর করে সেজেছিস কেন কোথাও যাবি নাকি?
- সেই বিয়ের বাড়িতে যাব বলেই তো সেজেছি।
পিচ্চিটার কথা শুনে আমার চোখ দুটো একদম রসগোল্লার মতো হয়ে গেল। বিনা দাওয়াতে কেউ কিভাবে বিয়ের বাড়িতে যায়?
- কিন্তু তারা তো আমাদের দাওয়াত করেনি বিনা দাওয়াতে কিভাবে যাবি?
- বিনা আমন্ত্রণে দাওয়াত খাওয়ার যে কি মজা তা তুমি বুঝবে না। এখন সুন্দর দেখে একটা পাঞ্জাবী পড়ে নাও তো।
কি সাংঘাতিক কাহিনী! বিনা আমন্ত্রণে নাকি দাওয়াত খেতে যাবে!
- আমি যেতে পারব না।
- ঠিক আছে না গেলে নাই। আমি একাই যাবো।
এই বলে পিচ্চিটা যেতে লাগলো।
- আচ্ছা ঠিক আছে দাঁড়া আমিও যাচ্ছি।
কখন কি বিপদ ঘটায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই তাই বাধ্য হলাম যেতে। কালো রঙের একটা পাঞ্জাবি পড়লাম তারপর দুজনে মিলে ঘর থেকে বের হলাম। ঘর থেকে বের হতে না হতেই মা এবং ছোট মা সামনে পরলো।
মা আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে বলে,,,
- কিরে তোরা কোথায় যাচ্ছিস এভাবে সাজুগুজু করে।
- বিয়ের দাওয়াত খেতে যাচ্ছি গো বড়'মা।
পিচ্চিটার কথা শুনে মা এবং ছোটমা দুজন দুজনার মুখের দিকে বেকুবের মতো তাকিয়ে রইল।
- কোথায়?
- পাশের এলাকায়।
- কিন্তু তারা তো আমাদের বিয়েতে দাওয়াত করেনি।
- তোমাদের দাওয়াত করেনি তো কি হয়েছে আমাকে তো পার্সোনালি দাওয়াত করেছে।
- কি বলিস এসব তুই কোথাকার কোন প্রেসিডেন্ট যে আমাদের দাওয়াত না করে তোকে দাওয়াত করবে তাও আবার পার্সোনালি?
- বড়'মা তুমি আমার মত একজন ভদ্র সমাজসেবককে এভাবে অপমান করতে পারো না আমার সম্মানে লাগে।
যেই মেয়েটা মানুষের মধ্যে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয় সে বলছে কিনা সে একজন ভদ্র সমাজসেবক। মানা যায় এগুলা! ইঁচড়েপাকা কি আর সাধে বলি?
মা এবং বড়মা আর আমাদের পথ আটকালো না। কারণ তারা জানে তারা তাদের পুতুলের সাথে কখনো কথায় পেরে উঠবে না।
পথে যেতে যেতে আমাদের কথোপকথন,,,
- ভাইয়া আমরা গিয়ে কি দিয়ে খাওয়া শুরু করব বলো তো? মুরগির রোস্ট নাকি গরুর কলিজার রোস্ট?
তুই কি দিয়ে খাওয়ার চিন্তা করছিস আর আমি চিন্তা করছি মাইর খাওয়ার। কথাটি আমি মনে মনেই বললাম।
- তাহলে এই মেয়েটা তোকে দুলাভাই বলছে কেন আর কোন মেয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করছে?
- আমি জানিনা কে এই মেয়েকে আর এটাও জানি না আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করছে।
তাদের কথার মাঝে পুতুল ডান হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলল,,,
- এই দুলাভাই তুমি মিথ্যে বলছো কেন? আমার আপুর সাথে এক বছর প্রেম করে এখন অন্য মেয়েকে নিয়ে ঘুরছ দাঁড়াও আপুকে গিয়ে বলছি।
এই বলে পুতুল সেখান থেকে আস্তে আস্তে কেটে পরলো৷ এরই মধ্যে মেয়েটা সাংঘাতিক ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলেছে। কি সাংঘাতিক মেয়ে মাইরি! এতোটুকু সময়ের মাঝে একটা সম্পর্কের বারোটা বাজিয়ে দিলো। পিচ্চিটা এমন ভাব নিয়ে আমার সামনে আসলো মনে হয় কত বড় একটা মিশন সাকসেস করে এসেছে৷ আমার সামনে এসে মুখে হাত দিয়ে মুখ টিপে হাসতে লাগল।
ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করি,,,
- এভাবে গাধার মতো হাসছিস কেন?
- ভাইয়া তুমি বলেছিলে না যে আমি কোন কাজের নয়! দেখেছো আজ কত বড় কাজ করলাম! সরকারের উচিৎ আমাকে একটা নোবেল দেওয়া।
বাঁধিয়ে দিয়ে আসলো মানুষের মধ্যে ঝগড়া আর সে বলছে কিনা কত বড় একটা কাজ করে আসলো আবার বড় মুখ করে নোবেল ও চায়। এমন বিচ্ছু শয়তান কখনো দেখিনি আমি।
পিচ্চির কথা শুনে ফিক করে হেসে দেই এটা দেখে সেই ছেলে মেয়ে দুটো আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। ছেলেটা মেয়েটাকে বলে,,,
- ওই দেখো ওরা দুজন হাসাহাসি করছে তারমানে তারা ইচ্ছা করে আমাদের মাঝে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিয়েছে।
এটা বলেই তারা দুজন আমাদের ধাওয়া করতে লাগলো আমাদের আর পায় কে! কোনরকমে পিচ্চিটার হাত ধরে দে দৌড়।
এই পিচ্চিটার জন্য কোথাও গিয়ে শান্তি নেই। কোন না কোন কান্ড ঘটাবেই। কোনরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে এসেছি।
এর কিছুদিন পর ঘরে বসে ফোনে গেমস খেলছিলাম। পিচ্চিটা কোথা থেকে যেন আসলো খুব সাজুগুজু করে। মনে হয় কোনো অনুষ্ঠানে যাবে।
- ভাইয়া দেখো তো আমাকে কেমন লাগছে?
আমি গেমের মধ্যেই মনোনিবেশ রেখে বললাম,,,
- অনেক সুন্দর লাগছে
- উফফ ফোনটা রাখো তো।
আমি ফোনটা পাশে রেখে পিচ্চিটার দিকে তাকালাম।
- আচ্ছা রাখলাম এবার বল কি বলবি?
- শুনেছ পাশের এলাকায় নাকি একটা মেয়ের বিয়ে!
- হ্যাঁ শুনেছি তার বিয়ে তাতে আমার কি আর তুই এত সুন্দর করে সেজেছিস কেন কোথাও যাবি নাকি?
- সেই বিয়ের বাড়িতে যাব বলেই তো সেজেছি।
পিচ্চিটার কথা শুনে আমার চোখ দুটো একদম রসগোল্লার মতো হয়ে গেল। বিনা দাওয়াতে কেউ কিভাবে বিয়ের বাড়িতে যায়?
- কিন্তু তারা তো আমাদের দাওয়াত করেনি বিনা দাওয়াতে কিভাবে যাবি?
- বিনা আমন্ত্রণে দাওয়াত খাওয়ার যে কি মজা তা তুমি বুঝবে না। এখন সুন্দর দেখে একটা পাঞ্জাবী পড়ে নাও তো।
কি সাংঘাতিক কাহিনী! বিনা আমন্ত্রণে নাকি দাওয়াত খেতে যাবে!
- আমি যেতে পারব না।
- ঠিক আছে না গেলে নাই। আমি একাই যাবো।
এই বলে পিচ্চিটা যেতে লাগলো।
- আচ্ছা ঠিক আছে দাঁড়া আমিও যাচ্ছি।
কখন কি বিপদ ঘটায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই তাই বাধ্য হলাম যেতে। কালো রঙের একটা পাঞ্জাবি পড়লাম তারপর দুজনে মিলে ঘর থেকে বের হলাম। ঘর থেকে বের হতে না হতেই মা এবং ছোট মা সামনে পরলো।
মা আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে বলে,,,
- কিরে তোরা কোথায় যাচ্ছিস এভাবে সাজুগুজু করে।
- বিয়ের দাওয়াত খেতে যাচ্ছি গো বড়'মা।
পিচ্চিটার কথা শুনে মা এবং ছোটমা দুজন দুজনার মুখের দিকে বেকুবের মতো তাকিয়ে রইল।
- কোথায়?
- পাশের এলাকায়।
- কিন্তু তারা তো আমাদের বিয়েতে দাওয়াত করেনি।
- তোমাদের দাওয়াত করেনি তো কি হয়েছে আমাকে তো পার্সোনালি দাওয়াত করেছে।
- কি বলিস এসব তুই কোথাকার কোন প্রেসিডেন্ট যে আমাদের দাওয়াত না করে তোকে দাওয়াত করবে তাও আবার পার্সোনালি?
- বড়'মা তুমি আমার মত একজন ভদ্র সমাজসেবককে এভাবে অপমান করতে পারো না আমার সম্মানে লাগে।
যেই মেয়েটা মানুষের মধ্যে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয় সে বলছে কিনা সে একজন ভদ্র সমাজসেবক। মানা যায় এগুলা! ইঁচড়েপাকা কি আর সাধে বলি?
মা এবং বড়মা আর আমাদের পথ আটকালো না। কারণ তারা জানে তারা তাদের পুতুলের সাথে কখনো কথায় পেরে উঠবে না।
পথে যেতে যেতে আমাদের কথোপকথন,,,
- ভাইয়া আমরা গিয়ে কি দিয়ে খাওয়া শুরু করব বলো তো? মুরগির রোস্ট নাকি গরুর কলিজার রোস্ট?
তুই কি দিয়ে খাওয়ার চিন্তা করছিস আর আমি চিন্তা করছি মাইর খাওয়ার। কথাটি আমি মনে মনেই বললাম।
- আগে গিয়ে দেখ খেতে দেয় কিনা তারপর ভাববি কি দিয়ে খাওয়া শুরু করবি। আর এসব কি আজগুবি খাবারের নাম বলছিস তুই গরুর কলিজার আবার কখনো রোস্ট হয়?
- তাহলে ওটাকে কি বলে?
- কলিজা ভুনা বলে?
- ওহ ওটাই।
আমাদের খেতে দেবে কিনা সেটাই জানা নেই আর সে কিনা কি দিয়ে খাওয়া শুরু করবে সেই চিন্তা করছে। আজ তো কপালে মাইর আছে বিনা দাওয়াতে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য।
- ভাইয়া কি বলছ অমন বিরবির করে?
- ভাবছি রে বুড়ি!
- কি ভাবছো?
- এটাই ভাবছি যে, চল্লিশ দিন পর আমাদের চল্লিশা কে খাবে? এবার কথা না বলে চুপচাপ চল।
পিচ্চিটা হয়তো আমার কথার মানে বুঝতে পারেনি তাই চুপচাপ হাঁটা ধরল।
আজ আমার প্রথম অভিজ্ঞতা হবে বিনা আমন্ত্রণে দাওয়াত খাওয়ার। না জানি কপালে কি আছে? পিচ্চিটা নিজেও মরবে আর আমাকেও মারবে। ভাগ্য করে পেয়েছিলাম এমন একটা পুতুল বউ যে সব সময় আমাকে বিপদে ফেলার চিন্তাভাবনা করে।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com