প্রতিশ্রুতি ও বিয়ে
একদিন, আকাশের পরিবার নীতার পরিবারকে তাদের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু নীতার বাবা-মা একটি ধনী পরিবারের ছেলে, রোহিতের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে। রোহিত ছিল শহরের ছেলে, যে আকাশের চেয়ে বেশি শিক্ষিত এবং অর্থসম্পন্ন। নীতা কষ্টে ছিল, কিন্তু তার পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে সে কিছুই বলতে পারল না।
নীতা আকাশকে জানাতে গিয়ে বলল, “আমার বাবা-মা রোহিতের সাথে আমার বিয়ের কথা ভাবছেন। আমি কিছু করতে পারছি না।” আকাশের হৃদয়ে যেন ছুরির আঘাত লাগল। “কিন্তু আমরা তো কথা দিয়েছিলাম,” সে বলল, “আমরা একে অপরকে ভালোবাসি।”
“আমি জানি, আকাশ। কিন্তু পরিবারকে অস্বীকার করা সহজ নয়। তারা আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত,” নীতা বলল। আকাশের চোখে পানি এসে গেল। সে জানত, নীতা তার জীবনসঙ্গী হতে পারবে না।
বিয়ে দিন ঘনিয়ে আসতে লাগল। আকাশের মন অস্থির ছিল। সে ভাবতে লাগল, নীতাকে সে ভুলে যাবে কি না। কিন্তু যতই দিন যায়, নীতার স্মৃতি তার মনে আরো গভীরভাবে গেঁথে যাচ্ছিল। একদিন, আকাশ তার স্কুলের পুরনো বন্ধু রাহুলের সাথে দেখা করতে গেল। রাহুল একজন কবি এবং জীবন নিয়ে চিন্তা করে। আকাশ রাহুলকে বলল, “আমি নীতাকে হারাচ্ছি। আমি তাকে ভুলতে পারছি না।”
রাহুল বলল, “একবার হারানোর পর, তাকে ভুলে যাওয়া সহজ নয়। তবে তুমি নিজেকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। তাকে সুখী দেখতে হলে, তোমার নিজেকে সামলে নিতে হবে।”
আকাশ কিছুটা আশ্বস্ত হলো, কিন্তু কিছুদিন পর নীতা ও রোহিতের বিয়ের দিন এসে পৌঁছাল। গ্রামের সবাই সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছে। নীতা খুব সুন্দর হয়ে উঠেছিল, তার সাদা শাড়িতে সজ্জিত। আকাশ পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। তার মনে হচ্ছিল, তার হৃদয় টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
বিয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নীতা যখন রোহিতের হাত ধরতে চলল, তখন আকাশ আর ধরে রাখতে পারল না। সে চিৎকার করে বলল, “নীরা!” পুরো অনুষ্ঠানে স্তব্ধতা নেমে এল। নীতা অবাক হয়ে তাকাল। আকাশ সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল, “আমরা কথা দিয়েছিলাম। তুমি কি আমার দিকে একবার তাকাতে পারবে না?”
নীতা চোখে পানি নিয়ে বলল, “আমি জানি, আকাশ। কিন্তু আমি আমার পরিবারের জন্য কিছু করতে পারছি না। তারা আমাকে রোহিতের সাথে বিয়ে দিতে চাইছে।”
আকাশ বলল, “তুমি কি আসলেই সুখী হবে?” নীতা কিছুক্ষণ নীরব ছিল। তারপর বলল, “আমি চাই, তুমি আমাকে আমার সিদ্ধান্ত নিতে দাও। আমি তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমি পরিবারের সম্মান ভঙ্গ করতে পারব না।”
আকাশের হৃদয়ে তীব্র যন্ত্রণার ঢেউ উঠল। সে জানত, নীতা তার ভালোবাসা, তবে সেই ভালোবাসা তাকে মুক্তি দিতে পারবে না।
বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। আকাশের চোখে কান্না ছিল, কিন্তু সে কিছু বলতে পারল না। নীতা যখন রোহিতের হাত ধরে দাঁড়িয়ে, তখন আকাশ পিছনে সরে গেল। সে আর একবারও তার দিকে তাকাতে পারল না।
বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। আকাশের চোখে কান্না ছিল, কিন্তু সে কিছু বলতে পারল না। নীতা যখন রোহিতের হাত ধরে দাঁড়িয়ে, তখন আকাশ পিছনে সরে গেল। সে আর একবারও তার দিকে তাকাতে পারল না।
বিয়ের পর, নীতা শহরে চলে গেল। কিন্তু আকাশের মনে তার স্মৃতি আটকে ছিল। সে প্রতিদিন নীতাকে মনে করত। সেও চেষ্টা করল নিজেকে কাজে ডুবিয়ে রাখতে, কিন্তু কিছুতেই তাকে ভুলতে পারল না।
কিছুদিন পর, আকাশের কাছে একটি চিঠি এল। চিঠিতে নীতা লিখেছে, “আকাশ, আমি তোমার কথা প্রতিদিন মনে করি। কিন্তু আমার সংসার, পরিবার এবং সম্মান—সব কিছু নিয়ে আমাকে ভাবতে হচ্ছে। আমি আশা করি, তুমি আমাকে ভুলে যাবে।”
আকাশ চোখের জল মুছে লিখল, “নীতা, তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আমি তোমাকে ভুলব না। তবে তোমার সুখ আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমি তোমার পাশে নেই, কিন্তু আমি তোমার সুখের জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত।”
সময়ের সাথে সাথে, আকাশ ও নীতার জীবন এগিয়ে চলল। নীতা চেষ্টা করল নতুন জীবন গড়তে, তবে মাঝে মাঝে তার হৃদয়ে আকাশের কথা এসে পড়ত। একদিন, নীতা রোহিতের সাথে একটি পার্টিতে গিয়েছিল। সেখানে সে হঠাৎ আকাশকে দেখে ফেলে। আকাশ তাকে দেখে মনোযোগ হারিয়ে ফেলল।
“আকাশ!” নীতা বলল, “তুমি এখানে কিভাবে?”
“আমি কিছু কাজ নিয়ে এখানে এসেছি। তুমি কেমন আছ?”
আকাশের মুখের হাসি ছিল কষ্টে ভরা।
“আমি ভালো আছি। রোহিতও আমাকে অনেক সাহায্য করছে,” নীতা বলল।
“আমি ভালো আছি। রোহিতও আমাকে অনেক সাহায্য করছে,” নীতা বলল।
কিন্তু আকাশ বুঝতে পারল, তার কথায় কিছুটা কষ্ট আছে।
“এটা ভালো। তুমি সুখী হও, সেটাই আমার প্রার্থনা,” আকাশ বলল।
“তুমি?” নীতা জানতে চাইল।
“আমি চেষ্টা করছি, নীতা। তবে মাঝে মাঝে মনে পড়ে তোমার কথা,” আকাশ জানাল।
নীতা চোখের জল মুছতে চেষ্টা করল। “আমাদের মধ্যে যা হয়েছিল, তা মুছে যাবে না।
“এটা ভালো। তুমি সুখী হও, সেটাই আমার প্রার্থনা,” আকাশ বলল।
“তুমি?” নীতা জানতে চাইল।
“আমি চেষ্টা করছি, নীতা। তবে মাঝে মাঝে মনে পড়ে তোমার কথা,” আকাশ জানাল।
নীতা চোখের জল মুছতে চেষ্টা করল। “আমাদের মধ্যে যা হয়েছিল, তা মুছে যাবে না।
কিন্তু আমাদের পথ আলাদা।”
“হ্যাঁ, আমি জানি। তবে আমাদের স্মৃতিগুলো সবসময় থাকবে,” আকাশ বলল।
বিকেলের সূর্য ডুবতে শুরু করল, আর তাদের দুজনের মধ্যে নীরবতা নেমে এল।
“হ্যাঁ, আমি জানি। তবে আমাদের স্মৃতিগুলো সবসময় থাকবে,” আকাশ বলল।
বিকেলের সূর্য ডুবতে শুরু করল, আর তাদের দুজনের মধ্যে নীরবতা নেমে এল।
তাদের মধ্যে একটি গভীর অনুভূতি ছিল, তবে বাস্তবতা দুজনকে আলাদা রেখেছিল।
দিনগুলো কাটতে লাগল। নীতা রোহিতের সাথে তার সংসার গড়তে লাগল,
দিনগুলো কাটতে লাগল। নীতা রোহিতের সাথে তার সংসার গড়তে লাগল,
আর আকাশ নতুন উদ্দেশ্যে নিজের জীবনকে সাজাতে লাগল।
তবে তাদের হৃদয়ের গভীরে এক বিশেষ জায়গা ছিল, যা কখনো ভোলা সম্ভব ছিল না।
শেষ পর্যন্ত, জীবন চলতে থাকে। নীতা ও আকাশ একে অপরের ভালোবাসা ও স্মৃতি নিয়ে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করল। তাদের প্রেমের গল্প শেষ হলেও, সেই ভালোবাসা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তাদেরকে নতুন ভাবে স্মরণ করিয়ে দেবে।
এভাবে, প্রতিশ্রুতি ও ভালোবাসা কখনো মুছে যায় না; বরং জীবনকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শেখায়।
<> সমাপ্ত <>
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com