Breaking News

কিভাবে ডায়েট করলে ওজন কমবে? | ৭ দিনে ৬ কেজি ওজন কমানোর উপায়? | ৩ দিনে ৬ কেজি ওজন কমানোর উপায়?



ওজন একবার বেড়ে গেলে কমানো বেশ কষ্টসাধ্য। বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন ওজন কমানোর বিষয়টি পুরোপুরি শারীরিক। ব্যায়াম এবং কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওজন কমানো যাত্রাটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্ভর করে মানসিক কৌশল ও দৃঢ়তার ওপর।

স্থূলতা বা মোটা হওয়া যে কারুর জন্য কষ্টকর ও বিরক্তিকর হয়। কেউ চায় না তার মোটা, ভারী শরীর হোক। কারণ এটিআপনার ব্যক্তি সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয়।স্থূলতা শুধুমাত্র সৌন্দর্য কমায় না, বরং শরীরকে রোগের বাসস্থান করে তোলে। একটি ভাল ব্যক্তিত্বর পরিচয় একটি সুস্থ শরীর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। ব্যস্ত লাইফস্টাইলের কারণে, আজকাল প্রত্যেকে তাদের ফিটনেসের বিশেষ যত্ন নিতে পারে না। আপনি নিজের কাজে তখনই নৈপূর্ণতা আনতে পারবেন যখন আপনি শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকবেন।

অতিরিক্ত ওজন নিয়ে যারা দুশ্চিন্তায় আছেন তাদের বেশিরভাগই নানা কসরতের পাশাপাশি বিভিন্ন ডায়েট অনুসরণ করে থাকেন। তবে না জেনে বুঝে কখনো ডায়েট অনুসরণ করা উচিত নয়। যেকোনো ডায়েট মানার আগে অবশ্যই সেটি আপনার শরীরের জন্য উপযোগী কি না তা যাচাই করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার জন্য কোনটি প্রযোজ্য আগে সেটি জানুন। জানলে অবাক হবেন, শুধু শরীরচর্চা নয় বরং সাধারণ কিছু নিয়ম মেনেও আপনি খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন

নিচের কিছু নিয়ম মেনে আপনি ৭ দিনে ৬ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেনঃ

সকালের খাবারে মেনু:

  • সকালের খাবার অবশ্যই খেতে হবে সকাল ৮-৯টার মধ্যে।
  • সেদ্ধ ডিম ১ টি সাদা অংশ (৫২ ক্যালরি)
  • এক বাটি জাম্বুরা( জুস করে বা এমনি খেতে পারেন) (৯৬ ক্যালরি)
  • ২ টি রুটি (২১০ ক্যালরি) – ভেজিটেবল সুপ (১৫০ ক্যালরি)

সকাল ১১টায় খাবারে মেনু:

  • সকালে আবার হাল্কা নাস্তা করুন ১১-১১:৩০ এর মধ্যে।
  • এক কাপ গ্রিন টি চিনি ছাড়া (কোন ক্যালরি নেই)
  • একটি আপেল (৮১ ক্যালরি)/একটি কমলা (৮৬ ক্যালরি)

দুপুর ২টায় খাবারে মেনু:

  • অবশ্যই ১:৩০- ২টার মধ্যে খাবার খাবেন।
  • ভাত ১ কাপ (২১৬ ক্যালরি) / ২ টি রুটি (২১০ ক্যালরি)
  • ১ বাটি মিক্স্ড ভেজিটেবল (৮৫ ক্যালরি)
  • ১ কাপ ডাল (২২০ ক্যালরি) / এক টুকরা মাছ (১৪২ ক্যালরি)

বিকেল ৫টায় খাবারের মেনু:

  • অবশ্যই ৪:৩০-৫টার মধ্যে খাবার খাবেন।
  • এক কাপ গ্রিন টি (চিনি ছাড়া)
  • ২ টি ক্রিম ছাড়া বিস্কিট (৩০ ক্যালরি)
সন্ধা ৭টায় খাবারের মেনু:
  • অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ৭টা ওভার যেন না হয়।
  • ডাবের পানি (৪৬ ক্যালরি)  অথবা ৮-১০ টি পেস্তা বাদাম (৭০ক্যালরি)

রাত ৮:৩০ টায় খাবারের মেনু:

  • ভাত ১ কাপ (২১৬ ক্যালরি) /২ টি রুটি (২১০ ক্যালরি)
  • ১ কাপ সালাদ (৫০ ক্যালরি)
  • ১ কাপ সবজি (৮৫ ক্যালরি) / আধা কাপ টক দই (৬৫ ক্যালরি)
এই হলো সারাদিনের ১৫০০ ক্যালরির একটি ডায়েট চার্ট। মনে রাখবেন শুধু ডায়েট করলেই ওজন কমেনা সাথে শারিরিক ব্যামও প্রয়োজন। অবশ্যই ডায়েটের পাশাপাশি শারীরিক ব্যাম করবেন। আশাকরি এই ডাইট অনুষরণ করে ও হালকা ব্যাম করে আপনি ৭ দিনে প্রায় ৬ কেজি ওজন কমাতে পারবেন।

মাত্র ১৫ দিনেই ১০ কেজি ওজন কমানো টিপস

গরম পনি পান করুন: প্রতিদিন সকালে বাসি পেটে হালকা গরম পানি পান করুন ওজন কমাতে লেবু-মধু-গরম পানির উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন। তবে শুধু হালকা গরম পানি পান করেও কিন্তু ওজন কমানো সম্ভব। গরম পানি শরীরের টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া গরম পানি অস্বাস্থ্যকর ডায়েটের ফলে শরীরে যে বাড়তি মেদ জমে তা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে।

৭-৮ ঘন্টা ঘুম: ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন ওজন কমানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুম। অবাক করা হলেও এটি প্রমাণিত। গবেষণা দেখা যায়, ঘুমের অভাব মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। ফলে ওজনও বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। এতে আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।

বেশি বেশি মৌসুমি ফল খাবেন: বেশি বেশি মৌসুমী ফল খাবেন হক সেটা কম দামি বা বেশি দামি। খাবারের তালিকায় মৌসুমি ফল বেশি রাখুন। শাকসবজির পাশাপাশি বাদাম, কুমড়ার বীজ, মৌসুমি ফল খান। ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ পেটও ভরিয়ে রাখে ফল। ফলে বারবার খেয়ে ওজন বাড়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন খুব সহজেই।

আঁশবহুল খাবার খাবেন: আঁশ আছে এমন সব খাবার যেমন ডাল, শাক, সবজি, ঢেঁকি ছাঁটা চাল, গমের আটার রুটি, টকফল বেশি খেতে হবে। বেশি বেশি ক্রুসিফেরাস ভেজিটেবিল (যেমন পাতা কপি, ফুল কপি) শিম জাতীয় সবজি, টমেটো, গাজর, পাতাযুক্ত শাক, মশুর ডাল, বাদাম খেতে হবে।

চিনিযুক্ত ও ডুবোতেলের খাবার পরিহার করা: ওজন কমানোর ডায়েট করার সময় চিনি যুক্ত খাবার, বেশি তেলে ভাজা পোড়া খাবার, মিষ্টি জাতীয় পানীয়, ট্রান্স ফ্যাট যুক্ত খাবার, প্রানিজ ফ্যাট, রিফাইন্ড করা বা চকচকে সাদা ময়দার তৈরি খাবার, মধু বা সিরাপ জাতীয় খাবার, মিষ্টি জাতীয় শুকনা ফল এবং প্রক্রিয়া জাত করা স্নাক ফুড, স্টার্চ যুক্ত সবজি (যেমন- আলু, ভুট্টা, মিষ্টি আলু) কখনই খাবেন না।

খাবারে তেল কম খাওয়া: খাবারে তেলের পরিমাণ একদম কমিয়ে ফেলতে হবে। রান্নায় যতটুকু তেল না দিলেই নয়, ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করতে হবে।

বেশি বেশি পানি পান করা: সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার পর কমপক্ষে ২ গ্লাস পানি পান করে নিবেন, আর সারাদিন তো অবশ্যই বেশি বেশি পানি পান করবেনই।

ছোট একটি ডায়েট চার্ট মেনে চলতে পারেন।
সকাল: দুধ ছাড়া চা বা কফি, দুটো আটার রুটি, এক বাটি সবজি সিদ্ধ, এক বাটি কাঁচা শসা। শসা ওজন কমাতে জাদুর মতো কাজ করে।
মধ্যদুপুর: একটি ডিমের সাদা অংশ ও টক জাতীয় ফল।
দুপুর: ৫০-৭০ গ্রাম চালের ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল এক বাটি। এক বাটি সবজি ও শাক, শসার সালাদ, এক বাটি ডাল এবং ২৫০ গ্রাম টক দই।
বিকাল: দুধ ছাড়া চা বা কফি, মুড়ি বা বিস্কুট দুটি বা এক বাটি মুজিলি।
রাত: আটার রুটি দুইটা, এক বাটি সবুজ তরকারি, এক বাটি ডাল, টকদই দিয়ে এক বাটি সালাদ।
ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্য সম্মত ডায়েট এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো এবং দৈনিক ৪০ – ৪৫ মিনিট হাটাহাটি বা ব্যায়াম করা দরকার। ওজন কমানোর গতিকে ত্বরান্বিত করার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমানো দরকার, কারণ পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের মেটাবোলিজম বাড়িয়ে দেয়।

১ মাসেই ৫ কেজি ওজন কমানোর জন্য কিছু টিপস

  • প্রতিদিন সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের পূর্বে ২ গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন।
  • সকালে খালি পেটে এক টুকরা লেবু এবং আধা চা চমচ মধু হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
  • সবজির লিস্টে ব্রোকলি, লেটুস, পালং শাক এবং অন্যন্য সবুজ সবজি রাখার চেষ্টা করুন।
  • রেগুলার সালাদের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এটি ক্যালরি বার্ণ করতে খুবই উপকারী।
  • রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে খেয়ে ফেলুন। আশা করি পোস্টটি দ্বারা আপনারা উপকৃত হবেন।
অনেক সময় কোনো কোনো খাবার দেখে খাওয়ার ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ডায়েট পরিকল্পনা ভেঙে সেই খাবারটি খেয়ে ফেলা হয়। তারপর মনে হয়, খেয়েই যখন ফেলেছি আবার খাই। অথবা এটা যখন খেয়েছি, ওটাও খাই। কারণ পরিকল্পনা তো ভেঙেই গেছে। এ কাজটি করা যাবে না। একবার-দুবার যদি ভুল করে খেয়েও ফেলেন, শুধরে নেবেন নিজেকে। আবার ওজন কমানোর রুটিনেই ফিরে যাবেন।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com