Breaking News

জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫৯



মিসেস মেহরাবের ভাইকে দেখে,,,
জয়া আর আদিত্য নিজেদের সামলে নিলো...
আদিত্য তারপর মিসেস মিসেস মেহরাবের ভাইকে ডেকে বললো-আংকেল...???
আমি জয়াকে নিয়ে যেতে এসেছি...
জয়া ইততস্ত করে বললো-মামা...???
ওই আদিত্য...
মিসেস মেহরাবের ভাই-আর কিছু বলতে হবে না মা,,,
আমি সবই বুঝতে পেরেছি,,,
তবে আমার বোন যাই বলুক,,,
এই ছেলে কিন্তু সত্যিই তোকে খুব ভালোবাসে,,,
আর সেইজন্যেই তো,,,
তোকে খুঁজতে খুঁজতে এতদূর এসে পরেছে ও...
আদিত্য-আংকেল...???
আমরা তাহলে এখন রওনা দেই...???
অনেক দূর যেতে হবে তো...
মিসেস মেহরাবের ভাই-এখনই চলে যাবে তোমরা...???
একটু পরেই তো সন্ধ্যা হয়ে যাবে,,,
আজকের রাতটা এখানে থেকে,,,
তোমরা বড়ং কালই চলে যেও...
আদিত্য-না আংকেল,,,
আমি জয়াকে নিয়ে এক্ষুনি যেতে চাই,,,
জয়া...???

তোমার ব্যাগপত্র নিয়ে এসো যাও...
জয়া নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে এলো ভেতর থেকে,,,
তারপর মিসেস মেহরাবের ভাইকে বলে,,,
আদিত্য আর জয়া ঢাকায় আসার জন্য রওনা হলো...
আদিত্য আর জয়া গাড়িতে করে এয়ারপোর্টে যাচ্ছিলো,,,
কিন্তু পথে যেতে যেতে হঠাৎ করে অনেক বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো...
তাই গাড়ি থামিয়ে আদিত্য আর জয়া,,,
রাস্তার ধারে একটা খালি বাড়িতে আশ্রয় নিলো...
জয়া আর আদিত্যর দুজনের জামা-কাপড়ই,,,
বৃষ্টিতে খানিকটা ভিজে গেছে...
আদিত্য শরীর থেকে নিজের শার্টটা খুলে শুকাতে দিলো,,,
জয়া ভেজা শরীরে এখনও দাঁড়িয়ে আছে...
সেটা দেখে আদিত্য বললো-তোমার জামা-কাপড় পালটে ফেলো,,,
নইলে ঠান্ডা লেগে যাবে তো...
জয়া-না না,,,

আমি এখানে কিছুতেই তোমার সামনে জামা-কাপড় পালটাতে পারবো না...
আদিত্য-কেনো...???
জয়া-আমার খুব লজ্জা করবে...
আদিত্য মুচকি হেসে বললো-আমার কাছে তোমার কিসের এত লজ্জা শুনি...???
আদিত্য একটু একটু করে জয়ার দিকে এগিয়ে গেলো,,,
জয়া ভয়ে ভয়ে বললো-ভালো হবে না কিন্তু,,,
একদম কাছে আসার চেষ্টা করবে না,,,
আর কোনো রকম সুযোগ নেওয়ারও চেষ্টা করবে না...
আদিত্য-কেনো...???
আমাকে বিশ্বাস করো না তুমি...???
জয়া-তু..তু...তুমি আমার থেকে দূরে থাকো প্লিজ...
নাহলে কোনো ভুল করে ফেলবে...
আদিত্য-কেনো...???
আমাকে তুমি ভয় পাও নাকি...???
জয়া-ভ...ভ...ভয়ের কি আছে...???
আর আমি তোমাকে ভয় পাবো কেনো...???
আদিত্য-সত্যিই ভয় পাও না আমাকে...???
জয়া-নাহ,,,

এ..এ...একদমই ভয় পাই না...
আদিত্য-তাহলে এভাবে তোঁতলাচ্ছো কেনো...???
জয়া-ক...ক...কই...???
আদিত্য একটু দুষ্টুমি করে বললো-এসো তাহলে,,,
ভুলটা নাহয় আজ করেই ফেলি...???
জয়া-কি...কি..কিসের ভুল করবে...???
দেখো আদিত্য,,,
বাচ্চাদের মত কথা বলো না,,,
একটু বুঝতে চেষ্টা করো...
আদিত্য আংগুল দিয়ে জয়ার ঠোঁট দুটো চেঁপে ধরে বললো-বুঝতেই তো চাইছি তোমাকে,,,
দেখো,,,
বাইরে কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে,,,
এমন রোমান্টিক একটা পরিবেশে,,,
তুমি আর আমি একই ঘরে একসঙ্গে আছি,,,
অথচ কিছুই করবো না...???
জয়া চোখ দুটো বন্ধ করে দিয়ে বললো-দেখো আদিত্য...???
ভালো হবে না কিন্তু,,,
আমি কিন্তু কান্নাকাটি শুরু করে দেবো...
আদিত্য এই সুযোগে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,,,
জয়ার এই নিস্পাপ-ভয়ার্ত মুখটা দেখতে লাগলো...
একটু পরে জয়া চোখ খুলে দেখলো,,,
আদিত্য অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে তার দিকে...

জয়া সেটা দেখে আদিত্যকে বললো-কি দেখছো অমন করে...???
আদিত্য-তোমাকে দেখছি...
জয়া-আমাকে নতুন করে দেখার কি আছে...???
আদিত্য-তোমাকে যত দেখছি,,,
তত নতুন করে তোমাকে আবিষ্কার করছি...
আদিত্য তারপর জয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে বললো-জয়া...???
ভরসা রাখো আমার উপরে,,,
আমি এমন কোনো কাজই আর করবো না,,,
যাতে তুমি ভয় বা কষ্ট পাও আর...
জয়া আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে বললো-আমি জানি এটা...
ঘরের বাইরে থেকে হঠাৎ করে গাড়ির ড্রাইভার ডেকে বললো-স্যার...???
বৃষ্টি কমে গেছে,,,
বাইরে চলে আসুন...
আদিত্য তারপর শার্টটা গায়ে দিয়ে বললো-জয়া...???
আমি বাইরে যাচ্ছি,,,
তুমি চেঞ্জ করে নাও...
আদিত্য ঘরের বাইরে চলে গেলো,,,

আদিত্য এই ফাঁকে রাজনকে ফোন করে সব জানিয়ে বললো,,,
আরজেন্ট দুটো প্লেনের টিকিট কাটটে...
রাজন তাই করলো,,,
কিছুক্ষন পরে জয়াও বের হলো...
তারপর জয়া আর আদিত্য গাড়িতে গিয়ে বসলো,,,
গাড়ি চলে এলো সোজা এয়ারপোর্টে...
তারপর জয়া আর আদিত্য ফ্লাইটে করে চলে এলো ঢাকায়,,,
ঢাকার এয়ারপোর্টে আগে থেকেই রাজন গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ছিলো...
আদিত্য আর জয়া সেই গাড়িতে করে,,,
জয়ার মামার বাড়িতে চলে এলো...
বাড়িতে ঢুকতেই জয়া আর আদিত্যকে দেখে সবাই চমকে উঠলো,,,
আদিত্য মিসেস মেহরাবকে উদ্দেশ্যে করে বললো-আন্টি...???
বলে ছিলাম না আপনাকে,,,
যে আমি স্রেফ ২৪ ঘন্টার মধ্যে জয়াকে খুঁজে বের করবো...???
দেখুন,,,

এখনও ২৪ ঘন্টা হয়নি কিন্তু...
মিসেস মেহরাব রাগী চেহারায় আদিত্যর দিকে তাঁকালেন,,,
আদিত্য-আন্টি...???
আমি আরও একটা কথা বলে ছিলাম আপনাকে,,,
মনে আছে সেটা আপনার...???
Ok,আমিই মনে করিয়ে দিচ্ছি,,,
আমি এটাও বলে ছিলাম যে,,,
এরপর যখন আমি জয়াকে খুঁজে পাবো,,,
তখন থেকে জয়া শুধুমাত্র আমার সাথেই থাকবে...
আমি চাইলে সেটাও করতে পারতাম,,,
কিন্তু আমি জানি যে,,,
জয়া আপনাদের সবাইকে খুব ভালোবাসে...
ও চায় পরিবারের সবার ইচ্ছাতেই,,,
আমাদের দুজনের বিয়েটা হোক...!!!
আর সেজন্যেই,,,
আমি জয়াকে এ বাড়িতে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি...
তবে হে,,,

জয়া কিন্তু আমার আমানত স্বরুপ এখানে থাকবে,,,
যতক্ষণ পর্যন্ত না,,,
আমাদের বিয়েটা হচ্ছে...
কাল সকালে আপনারা সবাই আমাদের বাড়িতে চলে আসবেন,,,
বিয়ের পাকাপাকি কথা তখনই নাহয় সেরে নেওয়া যাবে,,,
আজ আসছি কেমন,,,
সবাই কাল অবশ্যই আসবেন কিন্তু...
আদিত্য নিজের বাড়িতে ফিরে গেলো,,,
মিসেস মেহরাবও রাগে গজগজ করতে করতে,,,
নিজের ঘরে চলে গেলেন...
এদিকে জয়া ফিরে এসেছে দেখে,,,
তার বাড়ির সবাই খুব হ্যাপি হলো...
নীলা আর খুশি,জয়াকে নিয়ে উপরে চলে গেলো,,,

পরেরদিন...
বিয়ের পাকাপাকি কথা বলার জন্য,,,
আর আদিত্যর বাড়িতে যাওয়ার জন্য,,,
জয়া আর তার পরিবার তৈরি হলো...
কিন্তু একমাত্র মিসেস মেহরাবই আদিত্যর বাড়িতে যাবেন না বলে,,,
নিজের ঘরের দরজা লাগিয়ে বসে রইলেন...
জয়া বড় মামিকে বাইরে থেকে অনেক বার ডাকলো,,,
কিন্তু মিসেস মেহরাব সাড়া দিলেন না...
মিষ্টার মেহরাব তারপর তার স্ত্রীকে ডেকে বললেন-কি গো...???
তুমি এখনও রাগ করে ঘরের ভেতরে বসে আছো...???
আদিত্যর বাড়িতে যাবে না...???
মিসেস মেহরাব ঘরের ভেতর থেকে জবাবে বললেন-তোমরা সবাই যখন ওই আদিত্যকে মেনে নিয়েছো,,,

তখন তোমরাই যাও ওই বাড়িতে,,,
আমি ওই আদিত্যকে মেনেও নেবো না,,,
আর ওখানে যাবোও না...
বড় মামির কথা গুলো শুনে জয়ার মুখটা মলিন হয়ে গেলো,,,
মিষ্টার মেহরাব সেটা দেখে বললেন-চল মা,,,
ওর জন্য আর অপেক্ষা করে কোনো লাভ নেই,,,
চল আমরাই চলে যাই...
মিসেস মেহরাবকে রেখেই বাড়ির সবাই,,,
জয়াকে নিয়ে আদিত্যর বাড়িতে চলে এলো...
আদিত্যর মা মিসেস খাঁন,,,
জয়ার পরিবারের সবাইকে অভর্থনা জানিয়ে,,,
বাড়ির ভেতরে নিয়ে এলেন...
মিসেস খাঁন-বসুন আপনারা...
রহমান কাকা সবার জন্য চা-নাস্তা দিয়ে গেলেন,,,
একটু পরেই আদিত্য উপর থেকে নীচে নেমে এলো...
তারপর আদিত্য সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করলো,,,
মিসেস খাঁন তার ছেলেকে বললেন-বাবুই...???
এরপর যেনো আর কখনো শুনিনা যে,,,
তুই আমার জয়া মাকে কোনো কষ্ট দিয়েছিস,,,
বা ওকে কোনো ভাবে জ্বালিয়েছিস...
যদি আমি শুনি,,,

তাহলে কিন্তু তোর কান মলে দেবো একদম...
মিসেস খাঁনের কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো,,,
কিন্তু আদিত্য খেয়াল করে দেখলো,,,
জয়ার মুখটা এখনও মলিন হয়ে আছে...
আদিত্য বুঝতে পারলো,,,
জয়া তার বড় মামির এখানে না আসার কথা ভেবেই,,,
মন খারাপ করে আছে...
মিসেস খাঁন তারপর জয়ার পরিবারের সাথে,,,
বিয়ে নিয়ে কথা-বার্তা বলতে লাগলো...
আদিত্য চুপচাপ,খুশির মোবাইলে একটা মেসেজ লিখে বললো-শালি সাহেবা...???
প্লিজ হেল্প করো একটু,,,
তোমার বোনকে যে করেই হোক,,,
একটু উপরে পাঠিয়ে দাও...
খুশি মেসেজটা পরে সাথে সাথে রিপ্লাই দিয়ে বললো-Ok দুলাভাই,,,
আমি এক্ষুনি দিদিকে উপরে পাঠিয়ে দিচ্ছি...
আদিত্য তারপর উপরে চলে গেলো,,,
খুশি ইশারায় জয়াকে একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বললো-দিদি...???
দুলাভাইয়ের কি যেনো একটা হয়েছে,,,
তুই শিগগিরই উপরে গিয়ে দেখ তো...
জয়া চমকে উঠে বললো-কিইইইহ...???
আদিত্যর কি হলো হঠাৎ করে...???
খুশি-দিদি...???

তুই যা না,,,
উপরে গিয়ে দেখ...
জয়া তারাতারি করে উপরে দৌড়ে চলে এলো,,,
তারপর আদিত্যকে দেখে জড়িয়ে ধরে বললো-কি হয়েছে তোমার...???
আদিত্য দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে বললো-আমার তো কিছুই হয়নি,,,
কিন্তু তোমার কি হয়েছে সেইটা বলো তো...???
জয়া-আমার আবার কি হবে...???
আদিত্য-তাহলে এভাবে মুখটা মলিন করে রেখেছো কেনো...???
কি হয়েছে...???
আমাকে খুলে বলো সব...???
জয়া-কই নাতো,,,
কিচ্ছু হয়নি...
আদিত্য-বুঝতে পেরেছি,,,
তোমার বড়ো মামি এখানে আসেনি বলে,,,
তাই তোমার মন খারাপ হয়েছে তাইতো...???
ঠিকাছে,,,

আমি আজ নিজে তোমাদের বাড়িতে গিয়ে,,,
তোমার বড় মামির সাথে কথা বলবো,,,
আর ওনাকে সব বুঝিয়ে বলে রাজি করাবো,,,
দরকার হলে ওনার কাছে ক্ষমাও চাইবো...
কি,হ্যাপি তো এবার...???
জয়া ইশারায় মাথা নাড়িয়ে হে বললো...
আদিত্য তারপর জয়ার হাতটা ধরে বললো-জয়া...???
অনেক কষ্ট করে,,,
অনেক বাঁধা পেরিয়ে,,,
আমি তোমাকে খুঁজে পেয়েছি,,,
তাই আমি তোমাকে আর কিছুতেই হারাতে পারবো না...
তোমাকে পাওয়ায় জন্য,,,
তোমার সুখের জন্য আমি সবকিছু করতে পারি....

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com