Breaking News

জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫২



পুলিশ কমিশনার,আদিত্যর মা মিসেস খাঁনকে ফোন করে বললো-ম্যাডাম
আমরা জানি আপনারা শহরের গণ্যমান্য ব্যাক্তি
তাছাড়া মিষ্টার আদিত্যও একজন নামকরা বিজনেসম্যান
আর এ কারনেই আমরা এখনো মিষ্টার আদিত্যকে এরেষ্ট করিনি,,,
আপনি প্লিজ একটু মিষ্টার আদিত্যকে বুঝিয়ে দেবেনে,,,
মিষ্টার আদিত্য যেনো এখন থেকে,মিস জয়ার কাছ থেকে দূরে থাকেন...
মিসেস খাঁন-ঠিকাছে,আমি ওকে বলে দেবো...
আদিত্য সেই মুহূর্তেই নিজের বাড়িতে ফিরে এলো,,,
মিসেস খাঁন আদিত্যকে দেখে বললেন-বাবুই...???
এসব আমি কি শুনছি...

জয়ার পরিবার নাকি তোর নামে থানায় FIR করেছে...???
সেইসাথে নাকি তোকে জয়ার কাছ থেকে, কমপক্ষে ৫০ ফিট দূরে থাকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে...???
আদিত্য-হে Mom,,,
তুমি ঠিকই শুনেছো,,,
কিন্তু যতই পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করুক না কেনো,,,
আমি জয়ার কাছে যাবোই...
মিসেস খাঁন-বাবুই...???
কেনো এমন করছিস তুই...???
কি হয়েছে তোর...???
তুই কি জয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিস নাকি...???
আদিত্য চুপ করে রইলো...
মিসেস খাঁন-দেখ,তুই যদি সত্যিই জয়াকে ভালোবেসে থাকিস,,,
আর নিজের ভুলটা বুঝতে পারিস,,,
তাহলে সেটা জয়ার পরিবারের সাথে শান্তিতে বসে,জানিয়ে দে,,,
Sorry বলে দে জয়াকে...

এভাবে ওদের সাথে অশান্তি করার কি দরকার আছে...???
আদিত্য-Mom Please...
অন্য সবার মত আমাকেও তুমি সবকিছু একই ভাবে করতে বলো না,,,
আমি আদিত্য খাঁন,,,
তাই অন্য সবার থেকে আমার বলার ধরণটাও আলাদাই হবে...
এটা বলে আদিত্য উপরে নিজের ঘরে চলে গেলো...
রাতে,জয়া নিজের ঘরে বসে খুশির সাথে গল্প করছিলো,,,
খুশি আদিত্যকে নিয়েই কথা বলছিলো...
খুশি-তুই যাই বলিস দিদি,,,
দুলাভাই কিন্তু ফিল্মের হিরোদের মতই, তোকে কাল ওদের হাত থেকে বাঁচিয়েছে...
কথাটা শেষ হতে না হতেই,আদিত্যর ফোন এলো,,,
খুশি-দেখ দিদি,নাম নিতেই দুলাভাই তোকে ফোন করেছে,,,
নে কথা বল...

জয়া পেটে হাত দিয়ে ধরে খুশির থেকে একটু আড়ালে বারান্দায় চলে এলো,,,
তারপর জয়া আদিত্যর ফোন রিসিভ করলো...
জয়া-হ্যালো...???
আদিত্য-এখন কেমন আছো...???
জয়া-অনেকটা ভালো...
কেনো ফোন করেছো বলো...???
আদিত্য-তুমি কি একটু কষ্ট করে নীচে আসতে পারবে...???
জয়া-কেনো...???
আদিত্য-তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তাই...
জয়া-কিইইইহ...???

তুমি আবারও আমাদের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকা শুরু করেছো...???
আদিত্য-প্লিজ আসো না একটু...???
জয়া-তুমি কি ভুলে গেছো যে,বড় মামি তোমার বিরুদ্ধে FIR করেছে...???
আমার থেকে তোমাকে কমপক্ষে ৫০ ফিট দূরে থাকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে...???
আদিত্য-ওসব আমি মানবো না,,,
তুমি প্লিজ একটু নীচে আসো...
জয়া-বড় মামি দেখলে আর রক্ষে থাকবে না,,,
নির্ঘাত তোমাকে আজ পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেবে...
আদিত্য-আমি ওইসব জানি না,,,
আমি শুধু এটাই জানি যে,আমি তোমাকে দেখবো ব্যস...
জয়া-আর ঝামেলা করো না,,,
বাড়ি ফিরে যাও প্লিজ...
আদিত্য-না,তোমাকে না দেখে আমি এখান থেকে কোথাথাও যাবো না...
জয়া-ঠিকাছে,আমি বারান্দায় আসছি,,,
তুমি বারান্দা থেকেই আমাকে দেখে চলে যাও...
আদিত্য-ওসব হবে না,,,

নীচে আসো তুমি প্লিজ,,,
নাহলে কিন্তু আমিই তোমার কাছে চলে আসবো...
জয়া-না,না...
ঠিকাছে আমি আসছি,তুমি দাঁড়াও...
জয়া ফোনে কথা বলতে বলতেই,নীচে দরজার কাছে নেমে এলো...
তারপর জয়া দরজার বাইরে বেড়িয়ে ফোনেই বললো-ব্যস,এখান থেকেই আমাকে দেখে চলে যাও...
আদিত্য-তুমিও কি আমার কাছ থেকে ৫০ ফিট দূরে থাকতে চাইছো নাকি...???
জয়া-হে চাইছি,কারন এটাই আমাদের জন্য ভালো হবে,,,
দেখো আদিত্য,আমি আর কোনো অশান্তি চাই না,,,
তুমি প্লিজ চলে যাও এখান থেকে...
আদিত্য-জয়া প্লিজ..

আমার তোমাকে কিছু বলার আছে...
জয়া-যা বলার ফোনেই বলো...
আদিত্য-ফোনে নয়,আমি তোমার সামনা সামনি গিয়ে এই কথা গুলো বলতে চাই প্লিজ...
জয়া-প্লিজ,তুমি এখান থেকে তারাতারি চলে যাও,,,
মহল্লার লোকজন তোমাকে এখানে দেখলে ক্ষেপে যাবে আবার...
আদিত্য-মহল্লার লোকদেরকে আমি ভয় পাই নাকি...???
জয়া-হে,তুমি তো কাউকেই ভয় পাওনা...
এইজন্যই তো মহল্লার সব লোকের দোকানপাট এভাবে ভেঙে দিয়েছো,,,
আমার পরিবার নাহয় ফুড ট্রাকের বিজনেস শুরু করেছে,,,
কিন্তু মহল্লার সব লোক তো আর আমাদের মত,বিজনেস শুরু করতে পারেনি...
একবারও ভেবে দেখেছো যে,মহল্লার লোকদের কি হবে...???
ওরা কি খাবে,ওদের সংসার কিভাবে চলবে...???
জয়া লাইনটা কেটে বাড়ির ভেতরে চলে গেলো...
জয়ার কথাগুলো শুনে আদিত্যর খুব খারাপ লাগলো,,,
আদিত্যও নিজের বাড়িতে ফিরে গেলো...

পরেরদিন,,,
সকালে হইহুল্লোড় শুনে,জয়া আর তার পরিবার বাড়ির বাইরে এসে দেখলো,,,
আদিত্য,মহল্লার সবাইকে দোকান ভাঙার ক্ষতিপূরণ বাবদ চেক দিচ্ছে...
রাজন,সবার হাতে চেক তুলে দিচ্ছে,,,
মহল্লার লোকজন চেক পেয়ে খুব আনন্দিত হলো,,,
জয়া আর তার পরিবারকে দেখামাত্রই,,,
আদিত্য,রাজনকে বললো-রাজন...???
মিষ্টার মেহরাব & মিষ্টার সোরাব,ওনাদের দুজনকে দুটো চেক দিয়ে দাও...
জবাবে মিষ্টার সোরাব বললো-আমাদের কোনো দরকার নেই ওই চেকের,,,
চলে যাও এখান থেকে...
আদিত্য জয়ার দিকে তাঁকালো,,,

সেটা দেখেই মিসেস মেহরাব,জয়াকে হাত ধরে টেনে বাড়ির ভেতরে নিয়ে চলে গেলেন...
আদিত্য এরপর রেস্টুরেন্টে চলে গেলো,,,
এদিকে মিসেস মেহরাব,জয়াকে বললেন-তুই এখন থেকে আর বাড়ির বাইরে যাবি না,,,
ফূড ট্রাক,আমরা সবাই মিলে সামলাবো,,,
তুই মায়ের সাথে বাড়িতেই থাক জয়া...
মিষ্টার মেহরাব-কিন্তু জয়ার হাতের রান্না ছাড়া ফুড ট্রাক চলবে কিভাবে...???
জয়া-বড় মামা...???
আমি না গেলেও,বাড়িতে বসেই কিছু খাবার রান্না করে টিফিন-ক্যারিতে ভরে রেখেছি,,,
তোমরা ওগুলোই নিয়ে যাও...
জয়া টিফিন-ক্যারি গুলো মিসেস মেহরাবের হাতে দিলো,,,
মিসেস মেহরাব-জয়া...???
তুই কিন্তু বাড়ির বাইরে এক পা-ও যাবি না,,,
আর সাবধানে থাকিস,,,

আসছি আমরা...
সবাই চলে গেলো,,,
বাড়িতে শুধু জয়া আর তার নানি রইলো...
এদিকে রেস্টুরেন্টের সামনে বসে আদিত্য,জয়া আসার অপেক্ষায় ছিলো,,,
কিন্তু আদিত্য দেখলো জয়া বাদে,তার পরিবারের সবাই এসেছে ফুড ট্রাকের সামনে...
মিসেস মেহরাবও,আদিত্যক
ে রেস্টুরেন্টের সামনে দেখে আশস্ত হলেন,,,
আদিত্য,ফুড ট্রাকের কাছে এসে বললো-কি ব্যাপার...???
আজ কি জয়া ম্যাডাম আসেনি নাকি...???
মিসেস মেহরাব,একটা কাগজ আদিত্যর হাতে দিলো...
আদিত্য-কি এটা..

মিসেস মেহরাব-জয়ার থেকে ৫০ ফিট দূরে থাকার রেস্ট্রিকশন অডার্র...!!!
তোর তো আমাদের ভাষা বুঝতে কষ্ট হয়,,,
তাই এই নে,,,
কাগজের ভাষাতেই তোকে সব বুঝিয়ে দিলাম...
আদিত্য চমকে উঠে বললো-আন্টি...???
যতই রেস্ট্রিকশন অডার্র নিয়ে আসুন না কেনো,,,
আমি আজ জয়ার সাথে যেভাবেই হোক দেখা করে কথা বলবোই,,,
পারলে আপনি আটকাবেন...
মিসেস মেহরাব-আমিও দেখবো,তুই কিভাবে আজ জয়ার সাথে কথা বলিস...
আদিত্য-দেখা যাক তাহলে...

এটা বলে আদিত্য নিজের রেস্টুরেন্টে ফিরে আসলো,,,
মিসেস মেহরাব,জয়াকে আবারও ফোন করে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করে দিলেন...
জয়ার পরিবারের সবাই কাস্টমার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলো...
আদিত্য বুঝতে পারলো,জয়াকে বাড়িতেই রেখে এসেছে এরা,,,
তাই আদিত্য,রাজনকে পাঠিয়ে দিলো,,,
জয়ার বাড়ির সামনে নজর রাখার জন্য...
আর জয়া বাড়ি থেকে বের হলেই,ফোন করে জানাতেও বলে দিলো,,,
এদিকে জয়ার নানি এসে,জয়াকে বললেন-জয়া...???
তুই আজ আমাকে একটা সত্যি করে কথা বলবি...???
জয়া-কি কথা

নানি-তুই কি আদিত্যকে ভালোবাসিস...???
দেখ,আমার কাছে সত্যি কথাটাই বলবি,,,
বড় বৌমার ভয়ে কোনো কিছু লুকাবি না কিন্তু...
জয়া-আমি কারো ভয়ে এইসব করছি না,,,
আমি নিজের ইচ্ছাতেই এসব করছি...
নানি-তাহলে তুই আদিত্যকে ভালোবাসিস না...???
জয়া চুপ করে রইলো...
নানি-কি রে চুপ করে আছিস কেনো...???
বল,তুই কি আদিত্যকে ভালোবাসিস না...???
জয়া-না,ভালোবাসি না...!!!
নানি-তুই আমার কাছে কেনো মিথ্যে বলছিস...???
তুই তো আগে আদিত্যকে খুব ভালোবাসতিস...???
জয়া-হে,আমি আদিত্যকে আগে ভালোবাসতাম এটা ঠিক,,,
কিন্তু ও আমার সাথে যা যা করেছে,,,

এর জন্য আমি হয়তো ওকে আর কোনো দিনও ক্ষমা করতে পারবো না...
নানি-আচ্ছা,বাদ দে এসব,,,
ঘরে এভাবে বসে না থেকে,,,
চল,আমরা দুজন মিলে হলে গিয়ে সিনেমা দেখে আসি...???
জয়া-কিইইহ...???
কি বলছো এসব...???
বড় মামি জানলে,কি হবে বুঝতে পারছো...???
বড় মামি বারবার বাইরে যেতে নিষেধ করে দিয়েছে,,,
আমি যেতে পারবো না...
নানি-ঠিকাছে,তুই না গেলে,আমি একাই সিনেমা দেখতে যাবো...
জয়া-নানু মনি...???

তুমি কি ভুলে গেছো যে তোমার শরীরটা খারাপ...???
আর এই বয়সে তুমি হলে যাবে সিনেমা দেখতে...???
নানি-চুপ কর,,,
তোরা যদি এই বয়সে এভাবে ঘরে বসে থাকতে পারিস,,,
তো আমার মত হলে কি করবি...???
আর সিনেমা দেখতে গেলে,আমার শরীর মন দুটোই ভালো হয়ে যাবে,চল...
জয়া-কিন্তু আদিত্য...???
নানি-দাঁড়া ফোন করে জিজ্ঞেস করছি,আদিত্য রেস্টুরেন্টে আছে কি না...
জয়ার নানি,তার বড় ছেলেকে ফোন দিয়ে বললেন-তোদের সামনে কি আদিত্য আছে...???
মিষ্টার মেহরাব-হে,আছে তো,কেনো...???

জয়ার নানি-এমনি জিজ্ঞেস করলাম,আচ্ছা রাখছি...
ফোন কেটে দিয়ে জয়ার নানি,জয়াকে বললেন-আদিত্য রেস্টুরেন্টেই আছে,,,
আর কোনো চিন্তা নেই,,,
চল আমরা দুজন এই ফাঁকে সিনেমা দেখে আসি...
অনিচ্ছা সত্যেও জয়া তার নানিকে নিয়ে সিনেমা দেখতে বের হলো,,,
রাজন জয়াকে বাড়ির বাইরে বেরুতে দেখেই,,,
আদিত্যকে খবরটা ফোন করে জানালো...
সিনেমা হলে গিয়ে জয়া দেখলো,সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে আজ...
তবুও অনেক রিকুয়েস্ট করে জয়া দুটো টিকেট কেটে হলের ভেতরে গেলো,,,
জয়া আর তার নানি হলের ভেতরে ঢুকে দেখলো,,,
সব সিট খালি,একটা লোকও নেই হলে...

জয়া অবাক হয়ে বললো-আশ্চর্য,ওন
ারা বললেন সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে,,,
অথচ এখানে একটা লোকও নেই...???
নানি-সেটাই তো খুব ভালো হয়েছে,,,
তুই আর আমি একাই দুজন মিলে সিনেমা দেখবো,,,
আয় বস এখানে...
জয়া আর তার নানি সিটে বসতেই বিগ স্ক্রিনে সিনেমা শুরু হলো,,,
কিন্তু এ কি...???

স্ক্রিনের সামনে আদিত্য এসে বললো,,,
আজ আপনাদের দেখাবো এক অন্য রকম একটা সিনেমার মতই কিন্তু বাস্তব গল্প,,,
খুব সাধারণ একটা মেয়ে ছিলো জয়া,,,
যার স্বপ্ন ছিলো সেরা রাধুনি হওয়া...
সিনেমার বদলে এসব কি দেখাচ্ছে...???
জয়া অবাক হয়ে দেখলো,,,
জয়া আর আদিত্যর প্রথম পরিচয়,সেই রান্নার প্রতিযোগিতা থেকে সবকিছু দেখানো হচ্ছে,,,
আদিত্য বলতে লাগলো-জয়া তার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য "সুপার কুক হান্ট" প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়...
সেখানে তার দেখা হয় এক অহংকারী,বদ মেজাজী,রাগী স্বভাবের একটা ছেলে আদিত্যর সাথে,,,
জয়া সবাইকে ভালোবেসে খুব তারাতারি আপন করে নিতে জানতো,,,
কিন্তু আদিত্য ছিলো ঠিক তার বিপরীত...

তারা দুজন দুজনকে দেখতেই পারতো না,,,
খুব ঝগড়া হতো দুজনের মধ্যে...
কিন্তু আদিত্য তার নিজের সার্থ পূরণ করার জন্য,,,
জয়াকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখায়,,,
কিন্তু বিয়ের আসর থেকে আদিত্য হঠাৎ করে পালিয়ে যায়,,,
আর জয়ার সব স্বপ্ন,আশা-আকাংখা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়....!!!
জয়া এগুলো দেখে আর সহ্য করতে পারলো না,,,
তাই সে আদিত্যকে থামিয়ে দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো-Stop it...!!!!
তারপর জয়া,নানিকে নিয়ে হল থেকে বেড়িয়ে বাড়িতে চলে এলো...
জয়ার বাড়িতে সবাই জেনে গেলো ঘটনাটা,,,
তারা জয়া আর তার নানিকে অনেক বকা-ঝকা করলো...
মিসেস মেহরাব-মা...

আপনি তো বাড়ির গুরুজন হোন,,,
আপনি কি করে জয়াকে নিয়ে সিনেমা দেখতে হলে চলে গেলেন...???
জয়ার নানি-আহ,তোমরা এটা নিয়ে এত কথা বাড়াচ্ছো কেনো...???
মিষ্টার সোরাব-মা...???
তুমি তো জানতে যে,ওই আদিত্য জয়ার সাথে কথা বলার জন্য একটা না একটা সুযোগ খুঁজবেই,,,
তারপরও তুমি কিভাবে জয়াকে নিয়ে বাইরে গেলে...???
জয়ার নানি মনে মনে বললো-এই জন্যই তো জয়াকে নিয়ে গিয়ে ছিলাম...
মিসেস মেহরাব-যা হবার তা হয়ে গেছে,,,
এরপর আর যেনো এসব না হয়,,,
সে ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে...
সবাই যার যার ঘরে চলে গেলো...
পরেরদিন,,,

মিসেস মেহরাব সবাইকে বললেন-আমি ঠিক করেছি,,,
আমাদের ফুড ট্রাকের লোকেশন পালটে অন্য জায়গায় নিয়ে যাবো...
মিষ্টার সোরাব-ভাবি...???
আপনি একদম ঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন,,,
ওই আদিত্যর রেস্টুরেন্টের সামনে আমরা আর থাকবো না...
মিসেস মেহরাব-কিন্তু ফুড ট্রাকের লোকেশন পালটানোর জন্য,,,
আমাদের তো খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অফিসে যেতে হবে...???
মিষ্টার সোরাব-তাহলে আর দেরি কেনো...???
আজই আমরা সবাই মিলে ওখানে যাবো...
মিসেস মেহরাব-হে,জয়াকে একা বাড়িতে রাখা ঠিক হবে না,,,
ওই আদিত্যকে দিয়ে একটুও বিশ্বাস নেই কোনো,,,
জয়াকেও আমাদের সাথে নিয়ে যাবো...
মিষ্টার সোরাব-একদম ঠিক কথা,,,

জয়া আমাদের সাথে থাকলে,,,
ওই আদিত্য কিচ্ছু করতে পারবে না...
জয়াকে নিয়ে তারপর জয়ার পরিবারের সবাই বের হলো বাড়ি থেকে,,,
খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার জন্য সবাই একটা দোতলা বাসে উঠলো,,,
কন্টাক্টর সবাইকেকে উপর তলায় যেতে বললো,,,
জয়ার পরিবার দোতলায় উঠছিলো সিড়ি দিয়ে,,,
জয়াও উঠছিলো...
কিন্তু কন্টাক্টর জয়াকে ডেকে বললো-ম্যাডাম আপনার ফোন ফেলে রেখে গেছেন...
জয়া ফোনটা নেওয়ার জন্য আবার সিড়ি দিয়ে নীচে নামতেই,,,
বাসের উপর তলার দরজা বন্ধ হয়ে গেলো...
জয়া-এটা তো আমার ফোন নয়...
কন্টাক্টর-জানি ম্যাডাম,,,
এটা আপনার ফোন নয়,,,

এটা আসলে আমারই ফোন...
জয়া-কিইইইহ...???
তাহলে আপনি আমাকে কেনো এভাবে ডাকলেন...???
পেছন থেকে আদিত্য এসে বললো-আমিই তোমাকে এখানে আনার জন্য ডাকতে বলেছি...
জয়া তাঁকিয়ে দেখলো,,,
পুরো বাস খালি,,,
আর রঙ বেরংয়ের ফুল-বেলুন দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে...
জয়া অবাক হয়ে বললো-তুমি এখানে...???
আর এসব কি...???
আদিত্য-হে,কাল আমার তোমাকে পুরো কথা বলা শেষ হয়নি,,,
এই জন্যই আমি এই বাসটা পুরো বুক করে নিয়েছি,,,
যাতে তোমার সাথে একান্তে কিছু কথা বলতে পারি...
জয়া-কেনো এইসব করছো তুমি...???
আদিত্য-সব বলছি,,,

যেদিন তুমি আমার বাড়ি থেকে চলে গেলে,,,
সেদিন থেকে আমি ফিল করতে পারলাম যে,,,
২৪ ঘন্টা আমার চোখের সামনে তোমাকে না দেখলে,,,
আমার আর চলবে না...
আদিত্য,তারপর হাটু মুড়ে বসে জয়ার হাত ধরে বললো-i love you জয়া...!!!
আমি জানি যে,আমি তোমার সাথে যা যা করেছি,,,
সেগুলো ভুল করেছি...
আমি আমার সব ভুলের জন্য,তোমার কাছে ক্ষমা চাই,,,
আমি এটাও জানি যে,,,

আমি খুবই খারাপ,অহংকারী,সার্থপর একটা মানুষ ছিলাম...
কিন্তু,তুমি আমার ভালো-মন্দ সবকিছুকেই মেনে নিয়ে আমাকে ভালোবেসে ছিলে,,,
তোমার সেই ভালোবাসাই আজ আমাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে,,,
আমি আর আগের আদিত্য নেই...!!!
তুমি আমাকে ভালোবাসতে শিখেয়েছো...
জয়া হাত তালি দিয়ে বললো-বাহ,অসাধারণ তোমার অভিনয়...!!!
তুমি আমার সাথে যা যা করেছো,,,
সেগুলো আমি কক্ষনো আর ভুলতে পারবো না...
জয়ার কথা গুলো শুনে আদিত্য চমকে উঠলো...
জয়া-কি বললে যেনো...???

তুমি আমাকে ভালোবাসো তাইনা...???
আসলে কি জানো...???
তোমার সাথে কাটানো একেকটা মুহূর্ত,
হয় স্বপ্নের মত খুব সুখের হয়,,,
নয়তো খুবই দুঃখের-কষ্টের হয়...
& ইউ মিষ্টার আদিত্য খাঁন,,,
তোমার যখন যা মনে হয়,তুমি তাই করো...
তোমার এখন এটা মনে হয়েছে,,,
তাই এভাবে পুরো বাস বুক করে সাজিয়ে আমাকে প্রপোজ করছো,,,
কে জানে একটু পর হয়তো তোমার মনটা বদলে যাবে,,,
আর তুমি আমাকে বলে দেবে হয়তো যে,,,
এই সবকিছু তোমার একটা বিজনেস ছিলো...
কারন,তুমি তো একজন বড় সাকসেসফুল বিজনেসম্যান তাইনা...???
আদিত্য-

প্লিজ তুমি আমার কথাটা বিশ্বাস করো,,,
আমি তোমাকে সত্যিই অনেক ভালোবাসি...!!!
জয়া- বিশ্বাস...???
তাও আবার তোমাকে...???
Sorry,,,আমি তোমাকে বিশ্বাস করিনা...
আর জানো তো,ভালোবাসার মূল ভিত্তিই হচ্ছে বিশ্বাস...!!!
যেখানে আমি তোমাকে আর বিশ্বাসই করতে পারি না,,,
সেখানে আমি তোমাকে আর কিভাবে ভালোবাসবো বলো...???
তাই দয়া করে আর এসব করো না প্লিজ...
জয়া এটা বলে,বাস থেকে নেমে গেলো,,,

আদিত্য কন্টাক্টরকে উপরের দরজা খুলে দিতে বলে,বাড়িতে চলে গেলো,,,
জয়ার পরিবার উপর থেকে নেমে এসে জয়াকে ডাকতে লাগলো...
তারপর বাস থেকে সবাই নেমে জয়াকে দেখতে পেলো,,,
মিসেস মেহরাব-জয়া...???
এই সবকিছু ওই আদিত্যর কাজ তাইনা...???
আদিত্য তো সব সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে দেখছি,,,
এক্ষুনি এটার একটা বন্দোবস্ত করতে হবে আমাকে...
তোমরা জয়াকে নিয়ে বাড়ি চলে যাও,,,
আমি থানায় যাচ্ছি

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com