জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫৫
জয়া ঘরের ভেতর একা একা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,,,
আদিত্যকে এভাবে মার খেতে দেখে জয়ার খুব কষ্ট হয়েছে...
কিন্তু,এখন তার চেয়েও বেশি আদিত্যর জন্য জয়ার টেনশন হচ্ছে,,,
আদিত্য ঠিকমত বাড়িতে পৌঁছালো কিনা,,,
ডক্টর দেখিয়ে ওষুধ খেয়েছে কি না,,,
এসব চিন্তাই জয়ার মাথায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে...
খুশি এসে দেখলো,জয়া সারা ঘরে পায়চারি করছে আর কি যেনো ভাবছে,,,
খুশি তাই জয়াকে বললো-কি রে দিদি...???
এতো কি ভাবছিস তুই...???
বুঝেছি দুলাভাইয়ের কথাই ভাবছিস তুই তাইনা...???
জয়া থতমত খেয়ে বললো-কে বলেছে তোকে এসব...???
তুই না ইদানীং বড্ড পেঁকে গেছিস...
খুশি-দিদি...???
আমার কাছে লুকিয়ে কি লাভ বল তো...???
জয়া-কই,কি লুকাচ্ছি আমি আবার...???
খুশি-আমি জানি দিদি,,,
তুই দুলাভাইয়ের কথা ভেবেই এতো টেনশন করছিস...
জয়া-না,না,,,
আমি কেনো ওকে নিয়ে টেনশন করতে যাবো,আশ্চর্য...!!!
খুশি-হয়েছে,হয়েছে,,,
আমার সামনে আর নাটক করতে হবে না,,,
আচ্ছা দিদি,তুই তো দেখছি দুলাভাইয়ের চেয়েও বেশি জেদ করছিস,,,
তোরা দুজন কি কোনো কম্পিটিশন শুরু করেছিস নাকি যে,,,
দুজন দুজনের সাথে এত জেদাজিদি শুরু করেছিস...???
জয়া-জেদাজেদি আমি করছি...???
নাকি ও শুরু করেছে...???
খুশি-হয়েছে,,,
ভেতরে ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে যাবি,,,
তবু মুখ ফুটে কিচ্ছুটি বলবি না তাইনা...???
নে এবার ফোনটা নে,,,
আর দুলাভাইকে এক্ষুনি ফোন কর...
খুশি,আদিত্যকে কল করে ফোনটা জয়াকে ধরতে বললো,,,
জয়া ইশারায় না করলো...
আদিত্য ফোন রিসিভ করে বললো-হে ছোট গিন্নি,,,
বলো কি খবর...???
খুশি-দুলাভাই...???
আপনার বউ তো,আপনার চিন্তায় চিন্তায় অস্থির হয়ে গেছে,,,
নিন শিগগিরই কথা বলুন ওর সাথে...
খুশি তারপর জয়াকে বললো-নে দিদি,,,
দুলাভাইয়ের সাথে কথা বল,,,
আমি বাইরে পাহাড়া দিতে গেলাম...
খুশি জয়ার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বাইরে চলে গেলো,,,
আদিত্য মুচকি হেসে বললো-হ্যালো...???
জয়া-এখন কেমন আছো...???
আদিত্য-একটু ভালো...
জয়া-ওষুধ খেয়েছো কোনো...???
আদিত্য-হুম,,,
পেইন কিলার খেয়েছি...
জয়া-ঠিকাছে,এখন একটু রেষ্ট নাও,,,
আর ঘুমাতে চেষ্টা করো...
আদিত্য-ঘুমাতে পারি তবে একটা শর্ত আছে...
জয়া-আবার কি শর্ত শুনি...???
আদিত্য-আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না ঘুমাবো,,,
ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাকে আমার সাথে ফোনে কথা বলতে হবে,,,
রাজি...???
জয়া-সবসময় এত জেদ করো কেনো তুমি???
আদিত্য-তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য...
জয়া-আচ্ছা,এখন ঘুমিয়ে পরো...
আদিত্য-ঠিকাছে,আরেকটু কথা বলি তারপর ঘুমাবো...
আদিত্যর সাথে ফোনে জয়া অনেকক্ষণ কথা বললো,,,
পরেরদিন...
এর আগেও আপনি একবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এ বাড়িতে এসে ছিলেন...???
আমরা সবাই সেই বিয়েতে রাজিও হয়ে ছিলাম,,,
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি হলো...???
আপনার ছেলে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গিয়ে ছিলো,,,
ভরা সমাজে সবার সামনে আমাদের বেইজ্জতি করে ছিলো,,,
ভুলে গেছেন আপনি সেই সব কথা...???
মিসেস খাঁন-আমি কিছুই ভুলিনি,,,
আমার ছেলে আর আগের মতো নেই,,,
ও আপনাদের সংস্পর্শে এসে নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে,,,
ও এখন নিজেকে শোধরানোর চেষ্টাও করছে,,,
আর সেইজন্যই এতবার অপমানিত হওয়ার পরেও,,,
কাল এতো মার খাওয়ার পরেও,,,
বিয়ের প্রস্তাব দিতে আমাকে এখানে পাঠিয়েছে...
মিসেস মেহরাব-বাহ মিসেস খাঁন বাহ,,,
আপনার ছেলেটা নাহয় অবুঝ,বখে গেছে,,,
কোনো কথাই শুনতে চায় না ও...
কিন্তু আপনি তো মানি-জ্ঞানী ব্যাক্তি,,,
আপনি তো অনেক বোঝেন...
তারপরও আপনি কি করে আপনার ছেলের জেদটাকে এভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছেন...???
ধরুন,আপনার ছেলের জেদ পূরণ করার জন্য,,,
আমরা আপনার কথায় আবারও এই বিয়েতে রাজি হলাম...
কিন্তু তাতে কি গ্যারান্টি আছে যে,,,
আপনার ছেলের মন আবারও বদলে যাবে না...???
আপনার ছেলে আবারও বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যাবে না...???
এর কোনো নিশ্চয়তা আছে আপনার কাছে...???
নেই না...???
সুতরাং,দয়া করে আপনি এই প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়ে যান...
মিসেস খাঁন-আমার ছেলে তার ভুলটা শোধরানোর জন্য একটা সুযোগ চায়...
প্লিজ আপনি এই বিয়েটা মেনে নিন...???
মিসেস মেহরাব-ওহ,আপনি তাহলে নিজের ছেলের জেদটা পূরণ করার জন্য,,,
আমাদের জয়াকে আবারও কাঁদাতে চান তাইনা...???
কিন্তু আমি আর তা কিছুতেই হতে দেবো না,,,
চলে যান এখান থেকে...
আদিত্যর মা অপমানীত হয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেন,,,
মিসেস খাঁন,বাড়ি ফিরে আসতেই,,,
আদিত্য জিজ্ঞেস করে বললো-Mom...???
জয়ার পরিবার রাজি হয়েছে এ বিয়েতে...???
মিসেস খাঁন চুপ করে রইলেন...
আদিত্য-Mom...???
তুমি এভাবে চুপ করে আছো কেনো...???
কি হয়েছে আমাকে খুলে বলো প্লিজ...???
মিসেস খাঁন-দেখ বাবুই,,,
জয়ার পরিবারের সবার এখনও এটাই মনে হয় যে,,,
তুই জয়াকে মন থেকে ভালোবাসিস না,,,
এই সবকিছু তুই,শুধুমাত্র তোর জেদ থেকেই করছিস...
তোর জেদ শেষ হয়ে গেলে,,,
তোর মন যদি আবারও বদলে যায়,,,
তাই ওরা এই বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে...
আদিত্য-ওহ,ওরা তাহলে এটাই ভাবে তাইনা...???
ঠিকাছে,,,
আজ আমি প্রমাণ করে দেবো যে,,,
আমি জয়াকে ঠিক কতোটা ভালোবাসি...!!!
আদিত্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো,,,
মিসেস খাঁন পেছন থেকে ডাকলেন,,,
কিন্তু আদিত্য কিছুতেই শুনলো না...
রাজন এসে বললো-কি হয়েছে চাচি মা...???
মিসেস খাঁন-বাবুই এই শরীরেই হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যেনো বেড়িয়ে গেলো,,,
তুই একটু গিয়ে দেখ...
রাজন-ঠিকাছে,চাচি মা,,,
আমি দেখছি ভাই কোথায় গেছে...
রাজনও আদিত্যর পিছুপিছু বেড়িয়ে পরলো,,,
আদিত্য,জয়ার হাতে মেহেদী লাগানোর জন্য,,,
জয়ার বাড়ির সামনে এসে জয়াকে ডাকতে লাগলো...
কিন্তু জয়া কিছুতেই আসছে না কারন,,,
মিসেস মেহরাব জয়ার ঘরের সামনে চক দিয়ে দাগ কেটে দিয়ে বলেছেন,,,
তার অনুমতি ছাড়া জয়া যেনো এই দাগের বাইরে না যায়...
আদিত্যকেও ওই তিনজন পালোয়ান,,,
জয়ার বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না...
আদিত্যর ডাকাডাকি শুনে পুরো মহল্লার মানুষ এক হয়ে গেলো,জয়ার বাড়ির সামনে,,,
জয়া আদিত্যর ডাকে বাইরে আসার জন্য ছটফট করছে,,,
কিন্তু বড় মামির নিষেধের কারনে,,,
জয়া ঘর থেকে এক পা-ও বেরুতে পারছে না...
আদিত্য বাইরে দাঁড়িয়ে আরো জোরে জোরে,,,
জয়াকে ডাকতে ডাকতে বললো-জয়া...???
তুমি কোথায়...???
প্লিজ একটু বাইরে আসো না...???
তুমি কি তোমার হাতে মেহেদী দিয়ে,,,
আমার নাম লিখতে চাওনা...???
জয়া নিশ্চুপ হয়ে ঘরের ভেতরে চুপচাপ বসে আছে...
আদিত্য-ঠিকাছে,জয়া...
তাহলে আজ আমি সবার সামনে,,,
আমার বুকে তোমার নাম খোদাই করে লিখবো.......!!!
আর প্রমাণ করে দেবো যে,,,
আমি তোমাকে সত্যি সত্যি কতোটা ভালোবাসি.......!!!
আদিত্য তারপর রাজনকে বললো,,,
ছুরি দিয়ে জয়ার নাম আদিত্যর বুকে লিখে দিতে,,,
রাজন বললো-ভাই...???
আমার দ্বারা এ কাজ হবে না...
আদিত্য তারপর মহল্লার এক কষাইকে খুঁজে ধরে নিয়ে আসতে বললো রাজনকে,,,
রাজন ঠিকই মহল্লার একজন কষাইকে ধরে নিয়ে এলো...
সেই কষাইকে দিয়ে আদিত্য,,,
নিজের বুকে জয়ার নাম ছুরি দিয়ে খোদাই করে লিখালো,,,
আদিত্যর কথা শুনে জয়া নিজের ঘরের জানালা দিয়ে তাঁকিয়ে দেখলো,,,
আদিত্য খালি গায়ে শক্ত হয়ে বসে আছে,,,
আর আদিত্যর বুকে ছুরি দিয়ে খোদাই করে জয়ার নাম,,,
এক কষাই লিখে দিচ্ছে...
এই দৃশ্য দেখে জয়া আর ঠিক থাকতে পারলো না,,,
বড় মামির দেওয়া দাগ আর সব নিষেধ উপেক্ষা করে,,,
জয়া এক দৌড়ে ছুটে চলে এলো নিজের ঘর থেকে নীচে...
সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে জয়ার হাত লেগে, ফুলদানি পরে ভেঙে গেলো...
সেই ভাঙা ফুলদানির টুকরো জয়ার পায়ে বিঁধে গেলো,,,
জয়ার এক পা কেটে রক্তাক্ত হয়ে গেলো...
সেই রক্তাক্ত পা নিয়েই জয়া ছুটে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলো...
পেছন থেকে মিসেস মেহরাব সহ সবাই জয়াকে বাঁধা দিতে চেষ্টা করলো,,,
কিন্তু জয়া আজ আর কারো বাঁধাই শুনলো না...
এদিকে ছুরি দিয়ে খোদাই করে জয়ার নাম বুকে লেখার কারনে,,,
আদিত্যর শরীরে প্রচন্ড ব্যথা আর কষ্ট শুরু হলো...
ব্যথা সহ্য করতে না পেরে,আদিত্য ঠাস করে মাটিতে পরে গেলো,,,
জয়া দৌড়ে এসে,আদিত্যকে তুলে উঠালো,,,
আর সবার সামনে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরলো...!!!
জয়া আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো-তুমি কি পাগল হয়ে গেছো...???
যদি তোমার কিছু একটা হয়ে যেতো...???
আদিত্য মুচকি হেসে বললো-কিচ্ছু হয়নি আমার,,,
আমি ঠিক আছি দেখো...
মিসেস মেহরাব সহ জয়ার পুরো পরিবার এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠলো,,,
জয়া তারপর আদিত্যকে ধরে উঠালো,আর রাজনকে বললো-তোমার ভাইকে এখন বাড়িতে নিয়ে যাও,,,
আর ভালো ডক্টর দেখিয়ে ওষুধ খাওয়াও,,,
আর ওষুধ না খেলে,আমাকে ফোন করবে কিন্তু...
রাজন-ঠিকাছে ভাবি...
রাজন তারপর আদিত্যকে ধরে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলো,,,
মিসেস মেহরাব,জয়ার দিকে ক্ষিপ্ত দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে সবাইকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেলেন...
জয়াও তাদের পিছনে পিছনে বাড়িতে ঢুকে,,,
মিসেস মেহরাবের কাছে ভয়ে-ভয়ে গিয়ে বললো-বড় মামি...???
আমার ভুল হয়ে গেছে,,,
তুমি প্লিজ রাগ করো না...
মিসেস মেহরাব-তুই আসলে কি চাস,,,
সেটা আজ আমাদের সবার সামনে প্রমাণ করে দিলি...
জয়া-বড় মামি...???
আদিত্য নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে,,,
তাই ও নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করছে...
মিসেস মেহরাব-আর একটা কথাও আমি শুনতে চাই না,,,
চলে যা আমার সামনে থেকে...
মিসেস মেহরাব,জয়াকে নিজের ঘর থেকে বের করে দিয়ে,,,
ঘরের ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দিলেন...
মিষ্টার সোরাব-জয়া...???
তুই আজ বড় ভাবির দেওয়া দাগের বাইরে গিয়ে,,,
বড় ভাবির মনে অনেক বড় একটা দুঃখ দিয়েছিস,,,
যা এখন এখান থেকে,,,
বড় ভাবিকে একটু একা থাকতে দে...
পরেরদিন,,,
জয়া সকালে সবাইকে চা দিচ্ছিলো,,,
মিষ্টার মেহরাব উপর থেকে নেমে আসতেই,,,
মিষ্টার সোরাব জিজ্ঞেস করলো-ভাইজান...???
বড় ভাবি এখনো নীচে এলো না...???
মিষ্টার মেহরাব-তোর ভাবি তো সেই কাল থেকেই ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে আছে,,,
রাতে তো আমি ড্রয়িং রুমেই এসে শুয়ে ছিলাম,,,
একটু আগেই ওকে ডাকতে উপরে গিয়ে ছিলাম...
মিসেস মেহরাব উপর থেকে নীচে নেমে এসে বললেন-আর ডাকতে হবে না,,,
আমি নিজেই এসে পরেছি,,,
শোনো,তুমি আর জয়া দুজনে চলো আমার সাথে...
জয়া-কোথায় যাবো বড় মামি???
মিসেস মেহরাব-সেটা গেলেই দেখতে পাবি,চল...
মিসেস মেহরাব,তার স্বামী আর জয়াকে নিয়ে আদিত্যর বাড়ির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলেন,,,
এদিকে আদিত্য মায়ের সাথে ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছিলো...
মিসেস খাঁন,আদিত্যকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে বললেন-বাবুই...???
তুই এসব কি পাগলামি শুরু করেছিস...???
এভাবে নিজেকে আঘাত করে কেউ...???
আদিত্য-Mom...???
এটা শুধুমাত্র একটা আঘাত নয়,,
এটা জয়া আর আমার ভালোবাসার সাইনবোর্ড,,,
এই আঘাত আমাকে সব সময় জয়ার নাম মনে করিয়ে দেবে...!!!
কথাটা শেষ হতে না হতেই মিসেস মেহরাব,,,
জয়া আর মিষ্টার মেহরাবকে নিয়ে আদিত্যর বাড়িতে এলেন,,,
ওনাদের দেখে আদিত্য আর মিসেস খাঁন চমকে উঠলেন...
মিসেস খাঁন-আরে আপনারা এখানে...???
আসুন...আসুন...
মিসেস মেহরাব-জরুরী কথা বলার আছে,,,
তাই না বলেই এভাবে আসতে হলো...
মিসেস খাঁন-বসুন না,,,
কি কথা বলুন...???
মিসেস মেহরাব-আদিত্য কাল যা করেছে,,,
সেটা নিয়ে আমি কাল সারারাত অনেক ভেবে দেখেছি,,,
আমার এখনও মনে হয় যে,,,
আদিত্য শুধুমাত্র জয়াকে কাছে পাওয়ার জন্যই এত জেদ করছে...
মিসেস খাঁন-এটা আমারও আগে মনে হতো,,,
কিন্তু এটাই সত্যি যে,,,
বাবুই এখন জয়াকে মন থেকে ভালোবাসে...
মিসেস মেহরাব-সেটা আপনার মনে হলেও,,,
আমার মনে হয় না...
মিসেস খাঁন-আমি ওর মা,,,
আমি মা হয়ে নিজের ছেলেকে চিনতে পারবো না...???
মিসেস মেহরাব-একটা বাচ্চা যখন তার মায়ের কাছে কোনো খেলনার জন্য আবদার করে,,,
সেটা না পাওয়া পর্যন্ত সেই বাচ্চা অনেক জেদ করে,,,
কিন্তু যখন সে খেলনাটা পেয়ে যায়,,,
কিছুদিন পর তার শখ মিটে যায়,,,
সে ওই খেলনাটাই ছুড়ে ফেলে দেয়,,,
আর আবার আরেকটা খেলনা চায়...
ঠিক একইভাবে,আদিত্যও জয়াকে পাওয়ার জন্য একটা জেদ ধরেছে,,,
আর সেই জেদটা পূরণ করার জন্য,ও এতকিছু করছে,,,
আপনি বুঝতে পারছেন তো,,,
আমি কি বলতে চাচ্ছি...???
আদিত্য-না আন্টি,,,
আমার ভালোবাসাটা কোনো খেলনা নয়,,,
আমি জয়াকে সত্যি সত্যি অনেক ভালোবাসি...
মিসেস মেহরাব-কিন্তু আমার এখনও মনে হয় যে,,,
এটা শুধুমাত্র তোমার একটা জেদ ছাড়া আর কিছুই না...
আদিত্য...???
জয়া...???
তাও আমি তোমাদের দুজনের সম্পর্কটা মেনে নিবো,,,
কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে...
সবাই চমকে উঠলো,,,
আদিত্য-কি শর্ত...???
বলুন আন্টি,,,
জয়াকে পাওয়ার জন্য আমি সব শর্ত মানতে রাজি আছি...
মিসেস মেহরাব-তুমি যে জয়াকে সত্যি সত্যি ভালোবাসো,,,
তার প্রমাণ দিতে হবে তোমাকে...
আদিত্য-কি প্রমাণ...???
মিসেস মেহরাব-আমি চাই যে,,,
তুমি অন্ততঃ এক মাস অপেক্ষা করো,,,
এক মাস পরেও যদি তোমার মনে হয় যে,,,
তুমি আসলেই জয়াকে ভালোবাসো,,,
তখনই তোমরা দুজনে এই বিয়েটা করবে...
আদিত্য-Sorry আন্টি,,,
আমার পক্ষে এই বিয়েটা পেছানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়,,,
তাছাড়া সবাইকে দাওয়াত করা হয়ে গেছে,,,
বিয়ের কার্ডও বানানো হয়ে গেছে...
সুতরাং,আপনি বরং বাড়ি ফিরে যান,,,
আর গিয়ে ভালো করে আমাদের বিয়ের আয়োজন শুরু করে দিন...
মিসেস মেহরাব-আদিত্য...???
তুমি আজ আবারও প্রমাণ করে দিলে যে,,,
তুমি শুধু জিদ্দিই নয়,একরোখাও বটে,,,
চল জয়া...
জয়া আর তার স্বামীকে নিয়ে মিসেস মেহরাব,,,
আদিত্যর বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা ট্যাক্সি নিলো...
কিন্তু বাড়ি ফেরার মাঝপথে রাস্তায় ট্যাক্সি থামিয়ে,,,
কিছু মুখোশধারী অজ্ঞাত ব্যাক্তি জয়াকে টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করলো...
মিষ্টার মেহরাব বাঁধা দিতেই দুর্বৃত্তরা,,,
জয়ার বড় মামি মিসেস মেহরাবকে কিডন্যাপ করে,,,
মাইক্রো বাসে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেলো...
জয়াকে নিয়ে তার বড় মামা বাড়ি ফিরে এসে সবাইকে খবরটা জানালো,,,
পুলিশকেও খবর দেওয়া হলো...
একটু পরে পুলিশ এসে বললো-মিষ্টার মেহরাব...???
আপনার স্ত্রীকে কে বা কারা কিডন্যাপ করতে পারে...???
আপনারা কি কাউকে সন্দেহ করছেন...???
বা আপনাদের চেনা-জানা কোনো শত্রু আছে...???
সিহাব-আমি জানি এগুলো আরমান আর মিলনেরই কাজ,,,
ওরাই চাচি মাকে কিডন্যাপ করেছে...
মিষ্টার মেহরাব-হে অফিসার,,,
আসলে আরমান আমাদের ভাগ্নি জয়াকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলো,,,
আর সিহাবের বউ নীলাকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলো মিলন...
কিন্তু ওদেরকে বিয়ে করতে না পারার পর থেকেই,,,
আরমান আর মিলন আমাদের সাথে শত্রুতামী শুরু করে দিয়েছে,,,
আমার স্ত্রীকেও ওরাই হয়তো কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে...
পুলিশ অফিসার-ঠিকাছে,,,
আমরা আপনার স্ত্রীকে উদ্ধার করার সবরকম চেষ্টা করছি...
খুশি ফোন করে আদিত্যকে খবরটা জানালো,,,
মিসেস খাঁনকে নিয়ে আদিত্য তাই ছুটে এলো জয়ার বাড়িতে...
আদিত্য,মিষ্টার মেহরাবের কাছে এসে বললো-প্লিজ আংকেল,,,
আপনি কোনো টেনশন করবেন না,,,
আন্টিকে ঠিক খুঁজে পাওয়া যাবে...
আদিত্যকে দেখে জয়া কাঁদতে কাঁদতে রান্নাঘরে চলে এলো,,,
আদিত্যও জয়ার পিছুপিছু রান্না ঘরে এসে বললো-এভাবে কেঁদো না তুমি প্লিজ,,,
সব ঠিক হয়ে যাবে...
জয়া আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বললো-তুমি যেখান থেকে পারো,যেমন করে পারো,,,
বড় মামিকে খুঁজে এনে দাও প্লিজ...
আদিত্য-আমি তোমাকে ছুঁয়ে কথা দিচ্ছি,,,
আজকের মধ্যেই আমি আন্টিকে খুঁজে, বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসবো,,,
তারপর আন্টি যা বলবেন,যেভাবে বলবেন,আমি তাই করবো,,,
আন্টি যদি দুই মাস পরেও আমাদের বিয়ে দিতে চান,,,
সেটাই আমি মেনে নেবো...
আদিত্য,মিসেস মেহরাবকে খুঁজতে বেড়িয়ে পরলো,,,
এদিকে জয়া সহ বাড়ির সবাই,মিসেস মেহরাবের জন্য চিন্তায় পরে গেলো...
দুই ঘন্টা পর,,,
মিসেস মেহরাব নিজেই বাড়িতে ফিরে এলেন...
মিষ্টার সোরাব তাকে দরজায় দেখে বললো-ওই তো ভাবি ফিরে এসেছে...
তার কথা শুনে সবাই চমকে উঠলো,,,
মিষ্টার মেহরাব,তার স্ত্রী মিসেস মেহরাবকে ধরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসালেন...
মিষ্টার সোরাব-জয়া...???
শিগগিরই যা,,,
এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়...
জয়া এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে,বড় মামিকে খাইয়ে দিলো,,,
মিষ্টার মেহরাব,তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে বললেন-তোমাকে কারা ধরে নিয়ে গিয়ে ছিলো...?
তুমি কি কাউকে চিনতে পেরেছো...???
কিন্তু মিসেস মেহরাব,কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বসে আছে...
মিষ্টার সোরাব-বলো ভাবি...???
কারা তোমাকে কিডন্যাপ করে ছিলো...???
শুধু একবার তাদের নাম বলো ভাবি,,,
এক্ষুনি পুলিশ ওদের ধরে হিড়হিড় করে টেনে থানায় নিয়ে যাবে...
মিসেস মেহরাব,তবুও চুপ করে রইলেন,,,
এরপর জয়া জিজ্ঞেস করে বললো-বড় মামি...???
বলো না,কারা তোমার এই অবস্থা করেছে...???
মিসেস মেহরাব এইবার উত্তরে বললেন-আদিত্য...!!!
হে,আদিত্যই ওর লোকদের দিয়ে আমাকে কিডন্যাপ করে ধরে নিয়ে গিয়ে ছিলো...
সবাই এ কথা শুনে চমকে উঠলো,,,
জয়া চমকে উঠে বললো-কিইইইহ...???
মিসেস মেহরাব-হে জয়া,,,
আমি তোকে আগেই বলে ছিলাম,,,
আদিত্য আবারও আমাদের বিপদে ফেলবে,,,
কিন্তু তুই তখন আমার কথা শুনিসনি,,,
দেখলি তো ও কিভাবে এবার আমার উপরে শোধ তুললো...???
মিষ্টার সোরাব-অনেক সহ্য করেছি ভাবি,,,
আর না...
এইবার ওই আদিত্যকে জেলের ভাত খাইয়ে,তবে ছাড়বো,,,
ভাইজান...???
এক্ষুনি থানায় ফোন করুন আপনি,আর জানিয়ে দিন সব...
মিসেস মেহরাব-তার আর দরকার হবে না,,,
আমি নিজেই আসার সময়,,,
থানায় আদিত্যর নামে কিডন্যাপিং কেসে FIR করে এসেছি,,,
এতক্ষণে হয়তো পুলিশ আদিত্যকে এরেষ্ট করে থানায়ও নিয়ে গেছে...
মিষ্টার সোরাব-তুমি একদম ঠিক কাজটাই করেছো ভাবি,,,
আমিও পুলিশ অফিসারকে ভালো করে বলে দেবো,,,
এইবার যেনো আদিত্য,কিছুতেই আর জেল থেকে ছাড়া না পায়...
এদিকে আদিত্য,মিসেস মেহরাবকে পথে-পথে খুঁজছিলো,,,
পুলিশের গাড়ি এসে আদিত্যর সামনে থামলো...
আদিত্য পুলিশের লোকজনকে দেখে বললো-অফিসার..
কোনো খোঁজ পেয়েছেন
পুলিশ অফিসার-মিষ্টার আদিত্য
মিসেস মেহরাবকে কিডন্যাপ করার দায়ে,আমরা আপনাকে এরেষ্ট করতে এসেছি
পুলিশ,আদিত্যকে ধরে থানায় নিয়ে গেলো
চলবে...
আদিত্যকে এভাবে মার খেতে দেখে জয়ার খুব কষ্ট হয়েছে...
কিন্তু,এখন তার চেয়েও বেশি আদিত্যর জন্য জয়ার টেনশন হচ্ছে,,,
আদিত্য ঠিকমত বাড়িতে পৌঁছালো কিনা,,,
ডক্টর দেখিয়ে ওষুধ খেয়েছে কি না,,,
এসব চিন্তাই জয়ার মাথায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে...
খুশি এসে দেখলো,জয়া সারা ঘরে পায়চারি করছে আর কি যেনো ভাবছে,,,
খুশি তাই জয়াকে বললো-কি রে দিদি...???
এতো কি ভাবছিস তুই...???
বুঝেছি দুলাভাইয়ের কথাই ভাবছিস তুই তাইনা...???
জয়া থতমত খেয়ে বললো-কে বলেছে তোকে এসব...???
তুই না ইদানীং বড্ড পেঁকে গেছিস...
খুশি-দিদি...???
আমার কাছে লুকিয়ে কি লাভ বল তো...???
জয়া-কই,কি লুকাচ্ছি আমি আবার...???
খুশি-আমি জানি দিদি,,,
তুই দুলাভাইয়ের কথা ভেবেই এতো টেনশন করছিস...
জয়া-না,না,,,
আমি কেনো ওকে নিয়ে টেনশন করতে যাবো,আশ্চর্য...!!!
খুশি-হয়েছে,হয়েছে,,,
আমার সামনে আর নাটক করতে হবে না,,,
আচ্ছা দিদি,তুই তো দেখছি দুলাভাইয়ের চেয়েও বেশি জেদ করছিস,,,
তোরা দুজন কি কোনো কম্পিটিশন শুরু করেছিস নাকি যে,,,
দুজন দুজনের সাথে এত জেদাজিদি শুরু করেছিস...???
জয়া-জেদাজেদি আমি করছি...???
নাকি ও শুরু করেছে...???
খুশি-হয়েছে,,,
ভেতরে ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে যাবি,,,
তবু মুখ ফুটে কিচ্ছুটি বলবি না তাইনা...???
নে এবার ফোনটা নে,,,
আর দুলাভাইকে এক্ষুনি ফোন কর...
খুশি,আদিত্যকে কল করে ফোনটা জয়াকে ধরতে বললো,,,
জয়া ইশারায় না করলো...
আদিত্য ফোন রিসিভ করে বললো-হে ছোট গিন্নি,,,
বলো কি খবর...???
খুশি-দুলাভাই...???
আপনার বউ তো,আপনার চিন্তায় চিন্তায় অস্থির হয়ে গেছে,,,
নিন শিগগিরই কথা বলুন ওর সাথে...
খুশি তারপর জয়াকে বললো-নে দিদি,,,
দুলাভাইয়ের সাথে কথা বল,,,
আমি বাইরে পাহাড়া দিতে গেলাম...
খুশি জয়ার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বাইরে চলে গেলো,,,
আদিত্য মুচকি হেসে বললো-হ্যালো...???
জয়া-এখন কেমন আছো...???
আদিত্য-একটু ভালো...
জয়া-ওষুধ খেয়েছো কোনো...???
আদিত্য-হুম,,,
পেইন কিলার খেয়েছি...
জয়া-ঠিকাছে,এখন একটু রেষ্ট নাও,,,
আর ঘুমাতে চেষ্টা করো...
আদিত্য-ঘুমাতে পারি তবে একটা শর্ত আছে...
জয়া-আবার কি শর্ত শুনি...???
আদিত্য-আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না ঘুমাবো,,,
ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাকে আমার সাথে ফোনে কথা বলতে হবে,,,
রাজি...???
জয়া-সবসময় এত জেদ করো কেনো তুমি???
আদিত্য-তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য...
জয়া-আচ্ছা,এখন ঘুমিয়ে পরো...
আদিত্য-ঠিকাছে,আরেকটু কথা বলি তারপর ঘুমাবো...
আদিত্যর সাথে ফোনে জয়া অনেকক্ষণ কথা বললো,,,
পরেরদিন...
আদিত্যর মা মিসেস খাঁন,,,
বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে জয়ার বাড়িতে এলেন...
কিন্তু মিসেস মেহরাব সাথে সাথে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন-ক্ষমা করবেন মিসেস খাঁন,,,
আমরা আপনার ছেলের সাথে,আমাদের ভাগ্নির বিয়ে দেবো না আর...
মিসেস খাঁন-আমি জানি,,,
আমার ছেলে আপনাদের সাথে এর আগে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে,,,
আর এটাও জানি যে,,,
আমার ছেলেটা বিজনেস ছাড়া,,,
ঘৃনা করা ছাড়া আর কিছুই জানতো না...
কিন্তু জয়া আমার ছেলেটাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে,,,
জয়া আদিত্যকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে...
মিসেস মেহরাব-চুপ করুন আপনি,,,
কিসের ভালোবাসার কথা বলছেন আপনি...???
আপনি কি ভুলে গেছেন,,,
বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে জয়ার বাড়িতে এলেন...
কিন্তু মিসেস মেহরাব সাথে সাথে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন-ক্ষমা করবেন মিসেস খাঁন,,,
আমরা আপনার ছেলের সাথে,আমাদের ভাগ্নির বিয়ে দেবো না আর...
মিসেস খাঁন-আমি জানি,,,
আমার ছেলে আপনাদের সাথে এর আগে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে,,,
আর এটাও জানি যে,,,
আমার ছেলেটা বিজনেস ছাড়া,,,
ঘৃনা করা ছাড়া আর কিছুই জানতো না...
কিন্তু জয়া আমার ছেলেটাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে,,,
জয়া আদিত্যকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে...
মিসেস মেহরাব-চুপ করুন আপনি,,,
কিসের ভালোবাসার কথা বলছেন আপনি...???
আপনি কি ভুলে গেছেন,,,
এর আগেও আপনি একবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এ বাড়িতে এসে ছিলেন...???
আমরা সবাই সেই বিয়েতে রাজিও হয়ে ছিলাম,,,
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি হলো...???
আপনার ছেলে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গিয়ে ছিলো,,,
ভরা সমাজে সবার সামনে আমাদের বেইজ্জতি করে ছিলো,,,
ভুলে গেছেন আপনি সেই সব কথা...???
মিসেস খাঁন-আমি কিছুই ভুলিনি,,,
আমার ছেলে আর আগের মতো নেই,,,
ও আপনাদের সংস্পর্শে এসে নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে,,,
ও এখন নিজেকে শোধরানোর চেষ্টাও করছে,,,
আর সেইজন্যই এতবার অপমানিত হওয়ার পরেও,,,
কাল এতো মার খাওয়ার পরেও,,,
বিয়ের প্রস্তাব দিতে আমাকে এখানে পাঠিয়েছে...
মিসেস মেহরাব-বাহ মিসেস খাঁন বাহ,,,
আপনার ছেলেটা নাহয় অবুঝ,বখে গেছে,,,
কোনো কথাই শুনতে চায় না ও...
কিন্তু আপনি তো মানি-জ্ঞানী ব্যাক্তি,,,
আপনি তো অনেক বোঝেন...
তারপরও আপনি কি করে আপনার ছেলের জেদটাকে এভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছেন...???
ধরুন,আপনার ছেলের জেদ পূরণ করার জন্য,,,
আমরা আপনার কথায় আবারও এই বিয়েতে রাজি হলাম...
কিন্তু তাতে কি গ্যারান্টি আছে যে,,,
আপনার ছেলের মন আবারও বদলে যাবে না...???
আপনার ছেলে আবারও বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যাবে না...???
এর কোনো নিশ্চয়তা আছে আপনার কাছে...???
নেই না...???
সুতরাং,দয়া করে আপনি এই প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়ে যান...
মিসেস খাঁন-আমার ছেলে তার ভুলটা শোধরানোর জন্য একটা সুযোগ চায়...
প্লিজ আপনি এই বিয়েটা মেনে নিন...???
মিসেস মেহরাব-ওহ,আপনি তাহলে নিজের ছেলের জেদটা পূরণ করার জন্য,,,
আমাদের জয়াকে আবারও কাঁদাতে চান তাইনা...???
কিন্তু আমি আর তা কিছুতেই হতে দেবো না,,,
চলে যান এখান থেকে...
আদিত্যর মা অপমানীত হয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেন,,,
মিসেস খাঁন,বাড়ি ফিরে আসতেই,,,
আদিত্য জিজ্ঞেস করে বললো-Mom...???
জয়ার পরিবার রাজি হয়েছে এ বিয়েতে...???
মিসেস খাঁন চুপ করে রইলেন...
আদিত্য-Mom...???
তুমি এভাবে চুপ করে আছো কেনো...???
কি হয়েছে আমাকে খুলে বলো প্লিজ...???
মিসেস খাঁন-দেখ বাবুই,,,
জয়ার পরিবারের সবার এখনও এটাই মনে হয় যে,,,
তুই জয়াকে মন থেকে ভালোবাসিস না,,,
এই সবকিছু তুই,শুধুমাত্র তোর জেদ থেকেই করছিস...
তোর জেদ শেষ হয়ে গেলে,,,
তোর মন যদি আবারও বদলে যায়,,,
তাই ওরা এই বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে...
আদিত্য-ওহ,ওরা তাহলে এটাই ভাবে তাইনা...???
ঠিকাছে,,,
আজ আমি প্রমাণ করে দেবো যে,,,
আমি জয়াকে ঠিক কতোটা ভালোবাসি...!!!
আদিত্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো,,,
মিসেস খাঁন পেছন থেকে ডাকলেন,,,
কিন্তু আদিত্য কিছুতেই শুনলো না...
রাজন এসে বললো-কি হয়েছে চাচি মা...???
মিসেস খাঁন-বাবুই এই শরীরেই হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যেনো বেড়িয়ে গেলো,,,
তুই একটু গিয়ে দেখ...
রাজন-ঠিকাছে,চাচি মা,,,
আমি দেখছি ভাই কোথায় গেছে...
রাজনও আদিত্যর পিছুপিছু বেড়িয়ে পরলো,,,
আদিত্য,জয়ার হাতে মেহেদী লাগানোর জন্য,,,
জয়ার বাড়ির সামনে এসে জয়াকে ডাকতে লাগলো...
কিন্তু জয়া কিছুতেই আসছে না কারন,,,
মিসেস মেহরাব জয়ার ঘরের সামনে চক দিয়ে দাগ কেটে দিয়ে বলেছেন,,,
তার অনুমতি ছাড়া জয়া যেনো এই দাগের বাইরে না যায়...
আদিত্যকেও ওই তিনজন পালোয়ান,,,
জয়ার বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না...
আদিত্যর ডাকাডাকি শুনে পুরো মহল্লার মানুষ এক হয়ে গেলো,জয়ার বাড়ির সামনে,,,
জয়া আদিত্যর ডাকে বাইরে আসার জন্য ছটফট করছে,,,
কিন্তু বড় মামির নিষেধের কারনে,,,
জয়া ঘর থেকে এক পা-ও বেরুতে পারছে না...
আদিত্য বাইরে দাঁড়িয়ে আরো জোরে জোরে,,,
জয়াকে ডাকতে ডাকতে বললো-জয়া...???
তুমি কোথায়...???
প্লিজ একটু বাইরে আসো না...???
তুমি কি তোমার হাতে মেহেদী দিয়ে,,,
আমার নাম লিখতে চাওনা...???
জয়া নিশ্চুপ হয়ে ঘরের ভেতরে চুপচাপ বসে আছে...
আদিত্য-ঠিকাছে,জয়া...
তাহলে আজ আমি সবার সামনে,,,
আমার বুকে তোমার নাম খোদাই করে লিখবো.......!!!
আর প্রমাণ করে দেবো যে,,,
আমি তোমাকে সত্যি সত্যি কতোটা ভালোবাসি.......!!!
আদিত্য তারপর রাজনকে বললো,,,
ছুরি দিয়ে জয়ার নাম আদিত্যর বুকে লিখে দিতে,,,
রাজন বললো-ভাই...???
আমার দ্বারা এ কাজ হবে না...
আদিত্য তারপর মহল্লার এক কষাইকে খুঁজে ধরে নিয়ে আসতে বললো রাজনকে,,,
রাজন ঠিকই মহল্লার একজন কষাইকে ধরে নিয়ে এলো...
সেই কষাইকে দিয়ে আদিত্য,,,
নিজের বুকে জয়ার নাম ছুরি দিয়ে খোদাই করে লিখালো,,,
আদিত্যর কথা শুনে জয়া নিজের ঘরের জানালা দিয়ে তাঁকিয়ে দেখলো,,,
আদিত্য খালি গায়ে শক্ত হয়ে বসে আছে,,,
আর আদিত্যর বুকে ছুরি দিয়ে খোদাই করে জয়ার নাম,,,
এক কষাই লিখে দিচ্ছে...
এই দৃশ্য দেখে জয়া আর ঠিক থাকতে পারলো না,,,
বড় মামির দেওয়া দাগ আর সব নিষেধ উপেক্ষা করে,,,
জয়া এক দৌড়ে ছুটে চলে এলো নিজের ঘর থেকে নীচে...
সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে জয়ার হাত লেগে, ফুলদানি পরে ভেঙে গেলো...
সেই ভাঙা ফুলদানির টুকরো জয়ার পায়ে বিঁধে গেলো,,,
জয়ার এক পা কেটে রক্তাক্ত হয়ে গেলো...
সেই রক্তাক্ত পা নিয়েই জয়া ছুটে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলো...
পেছন থেকে মিসেস মেহরাব সহ সবাই জয়াকে বাঁধা দিতে চেষ্টা করলো,,,
কিন্তু জয়া আজ আর কারো বাঁধাই শুনলো না...
এদিকে ছুরি দিয়ে খোদাই করে জয়ার নাম বুকে লেখার কারনে,,,
আদিত্যর শরীরে প্রচন্ড ব্যথা আর কষ্ট শুরু হলো...
ব্যথা সহ্য করতে না পেরে,আদিত্য ঠাস করে মাটিতে পরে গেলো,,,
জয়া দৌড়ে এসে,আদিত্যকে তুলে উঠালো,,,
আর সবার সামনে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরলো...!!!
জয়া আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো-তুমি কি পাগল হয়ে গেছো...???
যদি তোমার কিছু একটা হয়ে যেতো...???
আদিত্য মুচকি হেসে বললো-কিচ্ছু হয়নি আমার,,,
আমি ঠিক আছি দেখো...
মিসেস মেহরাব সহ জয়ার পুরো পরিবার এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠলো,,,
জয়া তারপর আদিত্যকে ধরে উঠালো,আর রাজনকে বললো-তোমার ভাইকে এখন বাড়িতে নিয়ে যাও,,,
আর ভালো ডক্টর দেখিয়ে ওষুধ খাওয়াও,,,
আর ওষুধ না খেলে,আমাকে ফোন করবে কিন্তু...
রাজন-ঠিকাছে ভাবি...
রাজন তারপর আদিত্যকে ধরে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলো,,,
মিসেস মেহরাব,জয়ার দিকে ক্ষিপ্ত দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে সবাইকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেলেন...
জয়াও তাদের পিছনে পিছনে বাড়িতে ঢুকে,,,
মিসেস মেহরাবের কাছে ভয়ে-ভয়ে গিয়ে বললো-বড় মামি...???
আমার ভুল হয়ে গেছে,,,
তুমি প্লিজ রাগ করো না...
মিসেস মেহরাব-তুই আসলে কি চাস,,,
সেটা আজ আমাদের সবার সামনে প্রমাণ করে দিলি...
জয়া-বড় মামি...???
আদিত্য নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে,,,
তাই ও নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করছে...
মিসেস মেহরাব-আর একটা কথাও আমি শুনতে চাই না,,,
চলে যা আমার সামনে থেকে...
মিসেস মেহরাব,জয়াকে নিজের ঘর থেকে বের করে দিয়ে,,,
ঘরের ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দিলেন...
মিষ্টার সোরাব-জয়া...???
তুই আজ বড় ভাবির দেওয়া দাগের বাইরে গিয়ে,,,
বড় ভাবির মনে অনেক বড় একটা দুঃখ দিয়েছিস,,,
যা এখন এখান থেকে,,,
বড় ভাবিকে একটু একা থাকতে দে...
পরেরদিন,,,
জয়া সকালে সবাইকে চা দিচ্ছিলো,,,
মিষ্টার মেহরাব উপর থেকে নেমে আসতেই,,,
মিষ্টার সোরাব জিজ্ঞেস করলো-ভাইজান...???
বড় ভাবি এখনো নীচে এলো না...???
মিষ্টার মেহরাব-তোর ভাবি তো সেই কাল থেকেই ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে আছে,,,
রাতে তো আমি ড্রয়িং রুমেই এসে শুয়ে ছিলাম,,,
একটু আগেই ওকে ডাকতে উপরে গিয়ে ছিলাম...
মিসেস মেহরাব উপর থেকে নীচে নেমে এসে বললেন-আর ডাকতে হবে না,,,
আমি নিজেই এসে পরেছি,,,
শোনো,তুমি আর জয়া দুজনে চলো আমার সাথে...
জয়া-কোথায় যাবো বড় মামি???
মিসেস মেহরাব-সেটা গেলেই দেখতে পাবি,চল...
মিসেস মেহরাব,তার স্বামী আর জয়াকে নিয়ে আদিত্যর বাড়ির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলেন,,,
এদিকে আদিত্য মায়ের সাথে ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছিলো...
মিসেস খাঁন,আদিত্যকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে বললেন-বাবুই...???
তুই এসব কি পাগলামি শুরু করেছিস...???
এভাবে নিজেকে আঘাত করে কেউ...???
আদিত্য-Mom...???
এটা শুধুমাত্র একটা আঘাত নয়,,
এটা জয়া আর আমার ভালোবাসার সাইনবোর্ড,,,
এই আঘাত আমাকে সব সময় জয়ার নাম মনে করিয়ে দেবে...!!!
কথাটা শেষ হতে না হতেই মিসেস মেহরাব,,,
জয়া আর মিষ্টার মেহরাবকে নিয়ে আদিত্যর বাড়িতে এলেন,,,
ওনাদের দেখে আদিত্য আর মিসেস খাঁন চমকে উঠলেন...
মিসেস খাঁন-আরে আপনারা এখানে...???
আসুন...আসুন...
মিসেস মেহরাব-জরুরী কথা বলার আছে,,,
তাই না বলেই এভাবে আসতে হলো...
মিসেস খাঁন-বসুন না,,,
কি কথা বলুন...???
মিসেস মেহরাব-আদিত্য কাল যা করেছে,,,
সেটা নিয়ে আমি কাল সারারাত অনেক ভেবে দেখেছি,,,
আমার এখনও মনে হয় যে,,,
আদিত্য শুধুমাত্র জয়াকে কাছে পাওয়ার জন্যই এত জেদ করছে...
মিসেস খাঁন-এটা আমারও আগে মনে হতো,,,
কিন্তু এটাই সত্যি যে,,,
বাবুই এখন জয়াকে মন থেকে ভালোবাসে...
মিসেস মেহরাব-সেটা আপনার মনে হলেও,,,
আমার মনে হয় না...
মিসেস খাঁন-আমি ওর মা,,,
আমি মা হয়ে নিজের ছেলেকে চিনতে পারবো না...???
মিসেস মেহরাব-একটা বাচ্চা যখন তার মায়ের কাছে কোনো খেলনার জন্য আবদার করে,,,
সেটা না পাওয়া পর্যন্ত সেই বাচ্চা অনেক জেদ করে,,,
কিন্তু যখন সে খেলনাটা পেয়ে যায়,,,
কিছুদিন পর তার শখ মিটে যায়,,,
সে ওই খেলনাটাই ছুড়ে ফেলে দেয়,,,
আর আবার আরেকটা খেলনা চায়...
ঠিক একইভাবে,আদিত্যও জয়াকে পাওয়ার জন্য একটা জেদ ধরেছে,,,
আর সেই জেদটা পূরণ করার জন্য,ও এতকিছু করছে,,,
আপনি বুঝতে পারছেন তো,,,
আমি কি বলতে চাচ্ছি...???
আদিত্য-না আন্টি,,,
আমার ভালোবাসাটা কোনো খেলনা নয়,,,
আমি জয়াকে সত্যি সত্যি অনেক ভালোবাসি...
মিসেস মেহরাব-কিন্তু আমার এখনও মনে হয় যে,,,
এটা শুধুমাত্র তোমার একটা জেদ ছাড়া আর কিছুই না...
আদিত্য...???
জয়া...???
তাও আমি তোমাদের দুজনের সম্পর্কটা মেনে নিবো,,,
কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে...
সবাই চমকে উঠলো,,,
আদিত্য-কি শর্ত...???
বলুন আন্টি,,,
জয়াকে পাওয়ার জন্য আমি সব শর্ত মানতে রাজি আছি...
মিসেস মেহরাব-তুমি যে জয়াকে সত্যি সত্যি ভালোবাসো,,,
তার প্রমাণ দিতে হবে তোমাকে...
আদিত্য-কি প্রমাণ...???
মিসেস মেহরাব-আমি চাই যে,,,
তুমি অন্ততঃ এক মাস অপেক্ষা করো,,,
এক মাস পরেও যদি তোমার মনে হয় যে,,,
তুমি আসলেই জয়াকে ভালোবাসো,,,
তখনই তোমরা দুজনে এই বিয়েটা করবে...
আদিত্য-Sorry আন্টি,,,
আমার পক্ষে এই বিয়েটা পেছানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়,,,
তাছাড়া সবাইকে দাওয়াত করা হয়ে গেছে,,,
বিয়ের কার্ডও বানানো হয়ে গেছে...
সুতরাং,আপনি বরং বাড়ি ফিরে যান,,,
আর গিয়ে ভালো করে আমাদের বিয়ের আয়োজন শুরু করে দিন...
মিসেস মেহরাব-আদিত্য...???
তুমি আজ আবারও প্রমাণ করে দিলে যে,,,
তুমি শুধু জিদ্দিই নয়,একরোখাও বটে,,,
চল জয়া...
জয়া আর তার স্বামীকে নিয়ে মিসেস মেহরাব,,,
আদিত্যর বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা ট্যাক্সি নিলো...
কিন্তু বাড়ি ফেরার মাঝপথে রাস্তায় ট্যাক্সি থামিয়ে,,,
কিছু মুখোশধারী অজ্ঞাত ব্যাক্তি জয়াকে টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করলো...
মিষ্টার মেহরাব বাঁধা দিতেই দুর্বৃত্তরা,,,
জয়ার বড় মামি মিসেস মেহরাবকে কিডন্যাপ করে,,,
মাইক্রো বাসে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেলো...
জয়াকে নিয়ে তার বড় মামা বাড়ি ফিরে এসে সবাইকে খবরটা জানালো,,,
পুলিশকেও খবর দেওয়া হলো...
একটু পরে পুলিশ এসে বললো-মিষ্টার মেহরাব...???
আপনার স্ত্রীকে কে বা কারা কিডন্যাপ করতে পারে...???
আপনারা কি কাউকে সন্দেহ করছেন...???
বা আপনাদের চেনা-জানা কোনো শত্রু আছে...???
সিহাব-আমি জানি এগুলো আরমান আর মিলনেরই কাজ,,,
ওরাই চাচি মাকে কিডন্যাপ করেছে...
মিষ্টার মেহরাব-হে অফিসার,,,
আসলে আরমান আমাদের ভাগ্নি জয়াকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলো,,,
আর সিহাবের বউ নীলাকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলো মিলন...
কিন্তু ওদেরকে বিয়ে করতে না পারার পর থেকেই,,,
আরমান আর মিলন আমাদের সাথে শত্রুতামী শুরু করে দিয়েছে,,,
আমার স্ত্রীকেও ওরাই হয়তো কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে...
পুলিশ অফিসার-ঠিকাছে,,,
আমরা আপনার স্ত্রীকে উদ্ধার করার সবরকম চেষ্টা করছি...
খুশি ফোন করে আদিত্যকে খবরটা জানালো,,,
মিসেস খাঁনকে নিয়ে আদিত্য তাই ছুটে এলো জয়ার বাড়িতে...
আদিত্য,মিষ্টার মেহরাবের কাছে এসে বললো-প্লিজ আংকেল,,,
আপনি কোনো টেনশন করবেন না,,,
আন্টিকে ঠিক খুঁজে পাওয়া যাবে...
আদিত্যকে দেখে জয়া কাঁদতে কাঁদতে রান্নাঘরে চলে এলো,,,
আদিত্যও জয়ার পিছুপিছু রান্না ঘরে এসে বললো-এভাবে কেঁদো না তুমি প্লিজ,,,
সব ঠিক হয়ে যাবে...
জয়া আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বললো-তুমি যেখান থেকে পারো,যেমন করে পারো,,,
বড় মামিকে খুঁজে এনে দাও প্লিজ...
আদিত্য-আমি তোমাকে ছুঁয়ে কথা দিচ্ছি,,,
আজকের মধ্যেই আমি আন্টিকে খুঁজে, বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসবো,,,
তারপর আন্টি যা বলবেন,যেভাবে বলবেন,আমি তাই করবো,,,
আন্টি যদি দুই মাস পরেও আমাদের বিয়ে দিতে চান,,,
সেটাই আমি মেনে নেবো...
আদিত্য,মিসেস মেহরাবকে খুঁজতে বেড়িয়ে পরলো,,,
এদিকে জয়া সহ বাড়ির সবাই,মিসেস মেহরাবের জন্য চিন্তায় পরে গেলো...
দুই ঘন্টা পর,,,
মিসেস মেহরাব নিজেই বাড়িতে ফিরে এলেন...
মিষ্টার সোরাব তাকে দরজায় দেখে বললো-ওই তো ভাবি ফিরে এসেছে...
তার কথা শুনে সবাই চমকে উঠলো,,,
মিষ্টার মেহরাব,তার স্ত্রী মিসেস মেহরাবকে ধরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসালেন...
মিষ্টার সোরাব-জয়া...???
শিগগিরই যা,,,
এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়...
জয়া এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে,বড় মামিকে খাইয়ে দিলো,,,
মিষ্টার মেহরাব,তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে বললেন-তোমাকে কারা ধরে নিয়ে গিয়ে ছিলো...?
তুমি কি কাউকে চিনতে পেরেছো...???
কিন্তু মিসেস মেহরাব,কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বসে আছে...
মিষ্টার সোরাব-বলো ভাবি...???
কারা তোমাকে কিডন্যাপ করে ছিলো...???
শুধু একবার তাদের নাম বলো ভাবি,,,
এক্ষুনি পুলিশ ওদের ধরে হিড়হিড় করে টেনে থানায় নিয়ে যাবে...
মিসেস মেহরাব,তবুও চুপ করে রইলেন,,,
এরপর জয়া জিজ্ঞেস করে বললো-বড় মামি...???
বলো না,কারা তোমার এই অবস্থা করেছে...???
মিসেস মেহরাব এইবার উত্তরে বললেন-আদিত্য...!!!
হে,আদিত্যই ওর লোকদের দিয়ে আমাকে কিডন্যাপ করে ধরে নিয়ে গিয়ে ছিলো...
সবাই এ কথা শুনে চমকে উঠলো,,,
জয়া চমকে উঠে বললো-কিইইইহ...???
মিসেস মেহরাব-হে জয়া,,,
আমি তোকে আগেই বলে ছিলাম,,,
আদিত্য আবারও আমাদের বিপদে ফেলবে,,,
কিন্তু তুই তখন আমার কথা শুনিসনি,,,
দেখলি তো ও কিভাবে এবার আমার উপরে শোধ তুললো...???
মিষ্টার সোরাব-অনেক সহ্য করেছি ভাবি,,,
আর না...
এইবার ওই আদিত্যকে জেলের ভাত খাইয়ে,তবে ছাড়বো,,,
ভাইজান...???
এক্ষুনি থানায় ফোন করুন আপনি,আর জানিয়ে দিন সব...
মিসেস মেহরাব-তার আর দরকার হবে না,,,
আমি নিজেই আসার সময়,,,
থানায় আদিত্যর নামে কিডন্যাপিং কেসে FIR করে এসেছি,,,
এতক্ষণে হয়তো পুলিশ আদিত্যকে এরেষ্ট করে থানায়ও নিয়ে গেছে...
মিষ্টার সোরাব-তুমি একদম ঠিক কাজটাই করেছো ভাবি,,,
আমিও পুলিশ অফিসারকে ভালো করে বলে দেবো,,,
এইবার যেনো আদিত্য,কিছুতেই আর জেল থেকে ছাড়া না পায়...
এদিকে আদিত্য,মিসেস মেহরাবকে পথে-পথে খুঁজছিলো,,,
পুলিশের গাড়ি এসে আদিত্যর সামনে থামলো...
আদিত্য পুলিশের লোকজনকে দেখে বললো-অফিসার..
কোনো খোঁজ পেয়েছেন
পুলিশ অফিসার-মিষ্টার আদিত্য
মিসেস মেহরাবকে কিডন্যাপ করার দায়ে,আমরা আপনাকে এরেষ্ট করতে এসেছি
পুলিশ,আদিত্যকে ধরে থানায় নিয়ে গেলো
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com