আমার ভালোবাসায় তো ভেজাল ছিল না
নাটোরের প্রভাবশালী এক নেতার সাথে সখ্যতা ছিলো। তিনি প্রায়ই খুশি হয়ে হালকা পাতলা কিছু গিফট পাঠাতেন। একদিন তার ঢাকার বাড়িতে কফির দাওয়াতে দেখা করি। তিনি যথেষ্ট রোমান্টিক মানুষ। খুব হাসাতে পারতেন, মজা করতে পারতেন, এমনকি কিছু বলাও লাগতোনা। তার দাতালো হাসি দেখেই হাসি পেতো...
সেদিন খালি বাসায় আড্ডা খুব জমেছিল আমাদের।
তার সরলতার মুগ্ধতায় ভুল করে বসি আমি, নিজেকে সঁপে দেই তার বাহুডোরে।
সম্বিত ফিরে এলে অনুশোচনা জাগে।
তিনি আমার অনুশোচনা দূর করে মনে শান্তি আনতে করলেন কি জানেন..??
আমাকে কোলে তুলে নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের বড় আয়নার সামনে দাঁড় করালেন।
তারপর গলায় আচমকা পড়িয়ে দিলেন একটি ডায়মন্ড পেনডেন্ট,
জীবনে প্রথম হীরার অলংকার দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম।
অনুশোচনাবোধ উবে গেল। রোমান্টিকতায় মুগ্ধ হয়ে বিবাহিত নেতার প্রেমে পড়ে গেলাম মূহুর্তে...!!
তারপর আর কিছু নিয়ে ভাবিনি...
শুধু কাশফুলের নরম ছোয়ায় মজেছি নেতার নেত্রী হয়ে।
আর প্রতিবার ভালোবাসার পর পেয়েছি একটি করে ডায়মন্ড পেনডেন্ট ।
কিন্তু...
আমার সুখের দিন বেশিদিন সয়নি। দেশে শুরু হয়েছিল কু-ছাত্রদের দেশব্যাপী নৈরাজ্য।
নেতার নেত্রী চলে গেলেন...
নেতা আটকা পড়লেন।
সুখের দিনগুলি আমার আজ নেই। স্মৃতি হিসেবে আছে শুধু নেতার দিয়ে যাওয়া ২৪ টি পেনডেন্ট।
সেগুলো বুকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় পড়ে থেকে সারাদিন আরাশের 'ব্রকেন এঞ্জেল' গান শুনতাম সারাদিন ।
আমি ভাবতেই পারিনি, দুঃখ আমার এখানেই শেষ নয়...!!!
গতকাল খবর পেলাম নেতা যে ব্রান্ডের পেনডেন্টগুলো আমায় দিয়ে আসছিলেন এতদিন, সে ব্রান্ড নাকি ভেজাল রত্ন বিক্রি করতো। মাথায় বাজ পড়ে নিচ পর্যন্ত জ্বলে গেল যেন, এ আমার কি হয়ে গেল...!!
আমার ইজ্জত তো ভেজাল ছিলোনা...!
(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেত্রী)
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com