জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫৭
আদিত্য বাইরে বেড়িয়ে এসে রাজনকে ফোন করে সব জানালো,,,
রাজন-ঠিকাছে ভাই,,,
আপনি কোনো চিন্তা করবেন না,,,
আমি দেখছি ভাবির ফোন নাম্বারটা ট্রেক করে,,,
কোনো লোকেশন বের করা যায় কি না...
আদিত্য-Ok,,,
আমি এদিকটা দেখছি,,,
তুই ওদিকটায় খোঁজ কর,,,
আর তোর ভাবির কোনো খবর পাওয়া মাত্রই,,,
আমাকে জানাবি...
রাজন-ঠিকাছে ভাই...
আদিত্য ফোনটা রেখে গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জয়াকে খুঁজতে লাগলো,,,
কিন্তু আদিত্য কোথাওই জয়াকে খুঁজে পেলো না...
আদিত্য পথে পথে সবাইকে জয়ার ছবি দেখিয়ে খোঁজ করতে লাগলো,,,
কিন্তু কেওই জয়ার খোঁজ দিতে পারলো না...
জয়াকে খুঁজে না পেয়ে,,,
অসহায়ের মতো আদিত্য বললো-তুমি কোথায় হারিয়ে গেলে জয়া...???
প্লিজ ফিরে এসো...!!!
আদিত্য তারপর জয়ার ফোনে কল করলো,,,
কিন্তু জয়ার ফোনটা বন্ধ পেলো...
হঠাৎ করে রাজনের ফোন এলো,,,
আদিত্য তারাতারি রিসিভ করে বললো-হ্যালো রাজন...???
জয়ার কোনো খবর পেয়েছিস...???
রাজন-না ভাই,,,
তবে ভাবির মোবাইল নাম্বারটা ট্রেস করে,,,
লাষ্ট একটা লোকেশন বের করতে পেরেছি...
আদিত্য-Very good,,,
লাষ্ট লোকেশনটা কোথায় পাওয়া গেছে...???
রাজন-ঢাকা টু সিলেট মহারোড,,,
যেখান থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়...
আদিত্য-Ok...OK...
আমি এক্ষুনি ওখানে যাচ্ছি...
টুট...টুটু...
ফোনটা কেটে দিয়ে
আদিত্য,,,
গাড়িটা নিয়ে তারাতারি করে মহারোডে চলে এলো,,,
তারপর আদিত্য গাড়ি থামিয়ে,,,
প্রত্যেকটা বাসে উঠে জয়ার খোঁজ করতে লাগলো...
কিন্তু কোনো বাসের মধ্যেই জয়া নেই,,,
হঠাৎ আদিত্যর চোখ পরলো,,,
জয়ার মতো একটা মেয়ে,,,
বাসের সিটে সাইড করে জানালার দিকে হেলান দিয়ে বসে আছে...
আদিত্য সেই মেয়ের কাছে গিয়ে জয়া বলে ডাক দিতেই,,,
মেয়েটি ঘুরে আদিত্যর দিকে তাঁকালো...
জয়ার মতই অন্য আরেকটা মেয়েকে দেখে,,,
আদিত্য হতাশ হয়ে Sorry বলে,বাস থেকে নেমে এলো...
আদিত্য প্রায় সবগুলো বাসই খুঁজে দেখলো,,,
কিন্তু কোথাওই জয়াকে দেখতে পেলো না...
তারপর আদিত্য রাজনকে আবারও ফোন করলো,,,
রাজন-হে ভাই বলুন...???
আদিত্য-তোর ভাবিকে তো এখানে এসেও পেলাম না...
রাজন-আমিও এদিকে অনেক জায়গায় খুঁজে দেখলাম,,,
ভাবি তো কোথাওই নেই এখানে...
আদিত্য-আচ্ছা রাজন...???
লাষ্ট কয়টার সময় জয়া এই লোকেশনে ছিলো,,,
এটা একটু দেখ তো...
রাজন-সকাল ১০টায় ভাবি ওখানে ছিলো...
আদিত্য-ঠিকাছে রাখছি...
আদিত্য তারপর বাস স্টপে গেলো,,,
আর বাস কন্টাক্টরের কাছে গিয়ে বললো-Excuse me...???
এখান থেকে সকাল ১০ টায়,,,
কোন কোন রুটে বাস ছেড়ে গেছে বলতে পারবেন...???
বাস কন্টাক্টর-এখান থেকে তো একটাই রুটে বাস ছেড়ে গেছে...
আদিত্য-কোথায় গেছে...???
বাস কন্টাক্টর-সকাল ১০ টায় তো এখান থেকে,,,
ঢাকা টু সিলেট গামী বাস ছেড়ে চলে গেছে...
আদিত্য-ওহ,Thanks...
আদিত্য তারপর মনে মনে বললো-এখান থেকে সকাল ১০ টায় যখন ঢাকা টু সিলেট গামী বাসই ছেড়ে গেছে,,,
তারমানে জয়া সিলেটেই গিয়েছে...
আদিত্য,রাজনকে ফোন করে বললো-রাজন...???
ঢাকা থেকে সিলেট যেতে,,,
প্লেনে করে গেলে কত টুকু সময় লাগবে...???
রাজন-এই ধরুন ২২ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে...
কিন্তু কেনো ভাই...???
ভাবির কোনো খোঁজ পেয়েছেন...???
আদিত্য-না,,,
এখনও পাইনি,,,
তবে আমার মনে হয় যে,,,
জয়া সিলেটেই গিয়েছে...
রাজন-আমারও সেটাই মনে হচ্ছে ভাই...
আদিত্য-তুই এক্ষুনি আমার জন্য ইমিডিয়েট,,,
সিলেট যাওয়ার ফ্লাইটের একটা টিকিট কেটে ফেল...
রাজন-ঠিকাছে ভাই,,,
তবে আমিও আপনার সাথে যাবো...
আদিত্য-না,,,
তুই এদিকের সবকিছু সামলে নে,,,
সিলেটে আমি একাই যাবো...
রাজন-ঠিকাছে,,,
তাই হবে ভাই...
এক ঘন্টা পর,,,
আদিত্য ফ্লাইটে করে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো...
আধা ঘন্টার মধ্যেই আদিত্য সিলেটে "হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে" এসে পৌঁছালো,,,
আদিত্য ওখানে পৌঁছাতেই,,,
রাজন ফোন করলো...
আদিত্য-হ্যালো...???
রাজন-ভাই...???
আপনি ঠিকমতো সিলেটে পৌঁছে গেছেন...???
আদিত্য-হে,,,
আমি এইমাত্র পৌঁছেছি...
রাজন-ঠিকাছে,,,
কোনো দরকার হলে আমায় ফোন করে জানাবেন...
আদিত্য-তাতো জানাবোই,,,
কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা...
রাজন-কি কথা ভাই...???
আদিত্য-সিলেট তো কম বড় একটা শহর নয়,,,
ভাবছি এত বড় একটা শহরে,,,
তোর ভাবিকে এখন কোথায় খুঁজবো...???
রাজন-সেটা তো আমিও ভাবছি ভাই,,,
আর ভাবির নাম্বারটাও তো বন্ধ আছে,,,
সে কারনে ভাবি বর্তমানে এখন কোন লোকেশনে আছে,,,
সেটাও আমরা এখন ট্রেস করতে পারছি না...
আদিত্য-তাহলে এখন উপায়...???
রাজন-ভাই...???
আপনি এত চিন্তা করবেন নাতো,,,
দেখবেন,আপনি ভাবিকে ঠিক খুঁজে পাবেন...
আদিত্য-হে,জয়াকে তো আমাকে যেভাবেই হোক,,,
খুঁজে বের করতে হবেই,,,
দরকার হলে পুরো সিলেট শহর তন্ন তন্ন করে,,,
আমি জয়াকে খুঁজে বের করবো...
রাজন-ভাই...???
একটা কথা বলবো...???
আপনি ভাবিকে খুব ভালোবাসেন তাইনা...???
আদিত্য-আমি তোর ভাবিকে কতোটা ভালোবাসি,,,
তা আমি জানি না,,,
শুধু এটুকু বলতে পারি যে,,,
আমি জয়াকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না...!!!
রাজন-ভাই...???
আপনার এই ভালোবাসা বিফলে যাবে না,,,
আরেকটা কথা বলবো ভাই...???
আদিত্য-আবার কি কথা...???
শুধু কি তোর কথাই শুনবো...???
নাকি তোর ভাবিকে খুঁজবো এইবার
রাজন-ভাই...???
আমি শুনেছি সিলেটে,,,
হজরত শাহজালাল কামেল পীর আওলিয়ার,,,
একটা মাজার আছে...
আদিত্য-হে,আমিও শুনেছি,,,
কিন্তু ওটা দিয়ে আমি এখন কি করবো...???
রাজন-ভাই...???
আগে আমার পুরো কথাটা তো শুনুন...
আদিত্য-Ok বল...
রাজন-ভাই...???
আপনি যখন একবার সিলেটে পৌঁছে গিয়েছেনই,,,
সবার আগে আপনি বরং সেই মাজারেই একবার যান,,,
সেখানে গেলে নাকি সবার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়,,,
তাই বলছিলাম কি,,,
আপনি যদি একবার ওখানে যান,,,
বলা তো যায় না,,,
ওখানে যদি ভাবিও যায় তখন...???
আদিত্য-তুই ঠিকই বলেছিস,,,
আমি এয়ারপোর্ট থেকে প্রথমে সোজা ওখানেই যাবো,,,
রাখছি এখন...
আদিত্য এয়ারপোর্ট থেকে একটা প্রাইভেট কার নিয়ে,,,
হজরত শাহজালাল পীর আওলিয়ার মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলো...
এদিকে জয়ার বাড়িতে ডাইনিং টেবিলে সবাই খেতে বসলো,,,
জয়ার নানিকে খুশি ধরে ধরে নিয়ে এলো...
জয়ার নানি খেতে বসতেই,,,
মিসেস মেহরাব তার প্লেটে খাবার এগিয়ে দিতেই,,,
জয়ার নানি হাত বাড়িয়ে বাঁধা দিয়ে বললো-নীলা...???
তুই আমার খাবারটা বেড়ে দিয়ে যা তো...
মিসেস মেহরাব বুঝতে পারলেন যে,,,
জয়ার নানি তার উপরে রেগে আছেন...
নীলা এগিয়ে এসে জয়ার নানিকে খাবার বেড়ে দিলো,,,
আদিত্য বাড়িতে এসে ঝামেলা করায়,,,
আজ সবার খেতেও দেরি হয়ে গেছে,,,
আর ফুড ট্রাক খুলতে যেতেও দেরি হয়ে গেছে...
মিষ্টার মেহরাব উপর থেকে নীচে নামতে নামতে বললেন-সোরাব...???
তোর খাওয়া হলো...???
ফুড ট্রাক খুলতে যাবি না...???
মিষ্টার সোরাব-এই তো ভাইজান,,,
আরেকটু খাওয়া বাকি আছে,,,
আমি এক্ষুনি আসছি...
মিসেস মেহরাব তার স্বামিকে উদ্দেশ্য করে বললেন-টেবিলে খাবার দিয়েছি,,,
তুমিও খেয়ে নাও এই ফাঁকে...
মিষ্টার মেহরাব তার স্ত্রীর কথার জবাবে বললেন-খুশি...???
আমি খাবো না,,,
আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,
তোর বাবাকে তারাতারি আসতে বল,,,
আর আমার রাতেও ফিরতে দেরি হবে,,,
তাই আমার জন্য অপেক্ষা না করে,,,
তোরা সবাই খেয়ে নিস...
মিসেস মেহরাব টিফিন বক্সে কিছু খাবার ভরে নিয়ে এসে বললেন-টিফিন বক্সটা অন্ততঃ নিয়ে যাও সাথে করে,,,
পরে খেয়ে নিও...
মিষ্টার মেহরাব ঝাঁজি দিয়ে বলে উঠলেন-বললাম তো আমার খিদে নেই...
মিষ্টার মেহরাবের ঝাঁজি শুনে,,,
বাড়ির সবাই চমকে উঠলো...
তারপর মিসেস মেহরাব,তার স্বামিকে বললেন-আমার উপরে রাগটা,,,
তুমি কেনো এই খাবারের উপরে উঠাচ্ছো...???
সোজা কথায় বললেই তো পারো যে,,,
আমার উপর রেগে আছো,,,
আর তাই কিছুই খেতে চাচ্ছো না...???
মিষ্টার মেহরাব-তোমাকে আর কি বলবো...???
তুমি যেটা আদিত্যর সাথে করেছো,,,
তারপর তোমার সাথে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধছে এখন...
মিসেস মেহরাব-আর আদিত্য যে আমাদের সাথে কি কি করে ছিলো,,,
তুমি সেগুলো সব ভুলে গেছো...???
মিষ্টার মেহরাব-মানলাম,,,
আদিত্য এর আগে অনেক ভুল করে ছিলো,,,
কিন্তু আদিত্য,নিজের ভুলটা শোধরানোর জন্য বারবার চেষ্টাও করেছে অনেক...
আর তুমি তার জন্য আদিত্যকে,,,
মিথ্যে কিডন্যাপের কেসে জেলে পাঠিয়ে দিলে...???
ছিঃ...ছিঃ...ছিঃ...
ওই আদিত্যর সামনে তুমি আমাদের সবার মাথাটাই হেট করে দিয়েছো...
মিসেস মেহরাব-আমি যেটা করেছি,,,
সেটা একদম ঠিকই করেছি...
মিষ্টার মেহরাব-না তুমি ঠিক করোনি,,,
তুমি আদিত্যর সাথে যেটা করেছো,,,
সেটা অন্যায় করেছো...
মিসেস মেহরাব-আমি যা কিছু করেছি,,,
সব কিছু জয়ার ভালোর জন্যই করেছি,,,
ওই আদিত্যর কাছ থেকে জয়াকে বাঁচানোর জন্য করেছি...
মিষ্টার মেহরাব-কেনো করলে তুমি এটা...???
মিসেস মেহরাব-এ ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিলো না,,,
আমি শুধু চেয়েছি ওই আদিত্যর কাছ থেকে,,,
জয়াকে দূরে সড়িয়ে দিতে ব্যস...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি জয়ার ভালো করেছো এটা...???
মিসেস মেহরাব-হে ভালোই করেছি,,,
কারন ওই আদিত্য,নিজের জেদটা পূরণ করার জন্য,,,
এত পাগলামি শুরু করে দিয়ে ছিলো...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি তো ওই আদিত্যকে ক্ষমা না করে দিয়ে,,,
বরং ওর মতই ওর উপরে জেদ করেছো,,,
প্রতিশোধ নিয়েছো এটা...
মিসেস মেহরাব-এটা আমার জেদ নয়,,,
আমি চাই না যে,ওই আদিত্য জয়ার জীবনে থাকুক...
মিষ্টার মেহরাব-আর জয়ার ভাগ্যে যদি ওই আদিত্যই লেখা থাকে,,,
তাহলে তোমার আমার চাওয়ায় কিচ্ছু হবে না,,,
কথাটা ভালো করে মনে রেখো...
মিসেস মেহরাব-তা আর কোনো দিনও হবে না,,,
ওই আদিত্যর কাছ থেকে আমি জয়াকে,,,
এতো দূরে পাঠিয়ে দিয়েছি যে,,,
আদিত্য হাজার চাইলেও,,,
আর কখনোই জয়াকে খুঁজে পাবে না,,,
আর আমি চাইও না যে,,,
আদিত্য জয়াকে খুঁজে পাক...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি চাওয়া না চাওয়ার কে...???
কে হও তুমি জয়ার...???
ওর মা হও...???
মিসেস মেহরাব-মা না হলেও,,,
আমি জয়ার বড় মামি হই,,,
ওর মায়ের মতই...
মিষ্টার মেহরাব-হুহ,,,
খুব বড় মা হতে এসেছো তাইনা...???
তুমি যদি সত্যিই জয়ার মা হতে,,,
তাহলে জয়াকে আমাদের সবার কাছ থেকে,,,
এভাবে দূরে পাঠিয়ে দিতে পারতে না কখনো...
মিসেস মেহরাব-তুমি আমাকে এই চিনলে এতো দিনে...???
মিষ্টার মেহরাব-হে আজকাল তো,,,
আমি সত্যিই তোমাকে চিনতে পারছি না আর...
আমি যার সাথে এত বছর ধরে সংসার করেছি,,,
তুমি কি সেই নাকি অন্য কেও...???
মিসেস মেহরাব-কি বলতে চাও...???
মিষ্টার মেহরাব-বলতে চাই যে,,,
তুমি আর আগের মতো নেই,,,
তুমি সম্পূর্ণ বদলে গেছো...
সোরাব...???
তোর হলো...???
চল এবার...
মিষ্টার সোরাব-হে,,,
হয়ে গেছে ভাইজান,,,
চলো,,,
মিষ্টার মেহরাব না খেয়েই তার ছোট ভাইকে নিয়ে চলে গেলো...
অপরদিকে,,,
হজরত শাহজালাল আউলিয়ার মাজারের কাছেই,,,
মিসেস মেহরাবের বড় ভাইয়ের হোটেল...
সিলেটে পৌঁছে,,,
জয়াকে নিয়ে তাই তিনি মাজারের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন...
মাজার দেখে জয়া সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায়,,,
মিসেস মেহরাবের ভাই,,,
জয়াকে নিয়ে সেই মাজারে গেলেন...
এদিকে আদিত্যও সেই একই মাজারে এসে ঢুকলো,,,
জয়া আর আদিত্য কাছাকাছি থাকার পরেও,,,
মাজারে প্রচুর লোকের ভিড় থাকায়,,,
কেউ কাউকে দেখতে পেলো না...
মাজারে মিলাদ শরীপ শুরু হলো,,,
জয়া মহিলাদের সারিতে গিয়ে বসলো,,,
আর আদিত্য পুরুষদের কাতারে গিয়ে বসলো...
মিলাদ শরীপ শেষে সবাই মোনাজাত উঠালো,,,
জয়াও মোনাজাত উঠিয়ে বললো-ইয়া আল্লাহ...???
ও যাতে ভালো থাকে,,,
সেইজন্যেই আমি ওর থেকে এতো দূরে চলে এসেছি,,,
তুমি ওকে ভালো রেখো,,,
সহিহ্-সালামতে রেখো...
-আমীন...!!!
জয়ার বিপরীতে আদিত্যও মোনাজাত উঠিয়ে বললো-জয়াকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও প্লিজ...!!!
জয়ার হঠাৎ করে মনে হলো যে,,,
আদিত্য জয়ার খুব কাছাকাছিই কোথাও আছে...
কিন্তু জয়া এদিকে-ওদিকে তাঁকিয়ে দেখলো,,,
কোথাও আদিত্য নেই...!!!
জয়া তাই নিজেকে শান্তনা দেওয়ার জন্য বললো-ও এখানে কোথা থেকে আসবে...???
ও তো এখন ঢাকায়...
আদিত্যর কথা মনে পরে জয়ার দুচোখে অশ্রু ঝড়তে লাগলো,,,
এদিকে হঠাৎ করে আদিত্যরও কেনো জানি,,,
এমন একটা অজানা অনুভুতি হলো যে,,,
আদিত্যরও মনে হতে লাগলো যে জয়া তার আশেপাশেই আছে...
দুজনে সত্যি সত্যি এই মুহূর্তে কাছাকাছি আছে,,,
কিন্তু কেউই কাউকে দেখতে পাচ্ছে না...
মিসেস মেহরাবের ভাই এসে বললো-এবার চল মা,,,
দেরি হয়ে যাচ্ছে...
জয়ার ওনার সাথে মাজার থেকে বেড়িয়ে চলে গেলো,,,
খুব কাছাকাছি থাকা সত্যেও জয়া আর আদিত্যর দেখা হলো না,,,
আদিত্যও তাই জয়াকে খুঁজে পেলো না
চলবে...
রাজন-ঠিকাছে ভাই,,,
আপনি কোনো চিন্তা করবেন না,,,
আমি দেখছি ভাবির ফোন নাম্বারটা ট্রেক করে,,,
কোনো লোকেশন বের করা যায় কি না...
আদিত্য-Ok,,,
আমি এদিকটা দেখছি,,,
তুই ওদিকটায় খোঁজ কর,,,
আর তোর ভাবির কোনো খবর পাওয়া মাত্রই,,,
আমাকে জানাবি...
রাজন-ঠিকাছে ভাই...
আদিত্য ফোনটা রেখে গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জয়াকে খুঁজতে লাগলো,,,
কিন্তু আদিত্য কোথাওই জয়াকে খুঁজে পেলো না...
আদিত্য পথে পথে সবাইকে জয়ার ছবি দেখিয়ে খোঁজ করতে লাগলো,,,
কিন্তু কেওই জয়ার খোঁজ দিতে পারলো না...
জয়াকে খুঁজে না পেয়ে,,,
অসহায়ের মতো আদিত্য বললো-তুমি কোথায় হারিয়ে গেলে জয়া...???
প্লিজ ফিরে এসো...!!!
আদিত্য তারপর জয়ার ফোনে কল করলো,,,
কিন্তু জয়ার ফোনটা বন্ধ পেলো...
হঠাৎ করে রাজনের ফোন এলো,,,
আদিত্য তারাতারি রিসিভ করে বললো-হ্যালো রাজন...???
জয়ার কোনো খবর পেয়েছিস...???
রাজন-না ভাই,,,
তবে ভাবির মোবাইল নাম্বারটা ট্রেস করে,,,
লাষ্ট একটা লোকেশন বের করতে পেরেছি...
আদিত্য-Very good,,,
লাষ্ট লোকেশনটা কোথায় পাওয়া গেছে...???
রাজন-ঢাকা টু সিলেট মহারোড,,,
যেখান থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়...
আদিত্য-Ok...OK...
আমি এক্ষুনি ওখানে যাচ্ছি...
টুট...টুটু...
ফোনটা কেটে দিয়ে
আদিত্য,,,
গাড়িটা নিয়ে তারাতারি করে মহারোডে চলে এলো,,,
তারপর আদিত্য গাড়ি থামিয়ে,,,
প্রত্যেকটা বাসে উঠে জয়ার খোঁজ করতে লাগলো...
কিন্তু কোনো বাসের মধ্যেই জয়া নেই,,,
হঠাৎ আদিত্যর চোখ পরলো,,,
জয়ার মতো একটা মেয়ে,,,
বাসের সিটে সাইড করে জানালার দিকে হেলান দিয়ে বসে আছে...
আদিত্য সেই মেয়ের কাছে গিয়ে জয়া বলে ডাক দিতেই,,,
মেয়েটি ঘুরে আদিত্যর দিকে তাঁকালো...
জয়ার মতই অন্য আরেকটা মেয়েকে দেখে,,,
আদিত্য হতাশ হয়ে Sorry বলে,বাস থেকে নেমে এলো...
আদিত্য প্রায় সবগুলো বাসই খুঁজে দেখলো,,,
কিন্তু কোথাওই জয়াকে দেখতে পেলো না...
তারপর আদিত্য রাজনকে আবারও ফোন করলো,,,
রাজন-হে ভাই বলুন...???
আদিত্য-তোর ভাবিকে তো এখানে এসেও পেলাম না...
রাজন-আমিও এদিকে অনেক জায়গায় খুঁজে দেখলাম,,,
ভাবি তো কোথাওই নেই এখানে...
আদিত্য-আচ্ছা রাজন...???
লাষ্ট কয়টার সময় জয়া এই লোকেশনে ছিলো,,,
এটা একটু দেখ তো...
রাজন-সকাল ১০টায় ভাবি ওখানে ছিলো...
আদিত্য-ঠিকাছে রাখছি...
আদিত্য তারপর বাস স্টপে গেলো,,,
আর বাস কন্টাক্টরের কাছে গিয়ে বললো-Excuse me...???
এখান থেকে সকাল ১০ টায়,,,
কোন কোন রুটে বাস ছেড়ে গেছে বলতে পারবেন...???
বাস কন্টাক্টর-এখান থেকে তো একটাই রুটে বাস ছেড়ে গেছে...
আদিত্য-কোথায় গেছে...???
বাস কন্টাক্টর-সকাল ১০ টায় তো এখান থেকে,,,
ঢাকা টু সিলেট গামী বাস ছেড়ে চলে গেছে...
আদিত্য-ওহ,Thanks...
আদিত্য তারপর মনে মনে বললো-এখান থেকে সকাল ১০ টায় যখন ঢাকা টু সিলেট গামী বাসই ছেড়ে গেছে,,,
তারমানে জয়া সিলেটেই গিয়েছে...
আদিত্য,রাজনকে ফোন করে বললো-রাজন...???
ঢাকা থেকে সিলেট যেতে,,,
প্লেনে করে গেলে কত টুকু সময় লাগবে...???
রাজন-এই ধরুন ২২ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে...
কিন্তু কেনো ভাই...???
ভাবির কোনো খোঁজ পেয়েছেন...???
আদিত্য-না,,,
এখনও পাইনি,,,
তবে আমার মনে হয় যে,,,
জয়া সিলেটেই গিয়েছে...
রাজন-আমারও সেটাই মনে হচ্ছে ভাই...
আদিত্য-তুই এক্ষুনি আমার জন্য ইমিডিয়েট,,,
সিলেট যাওয়ার ফ্লাইটের একটা টিকিট কেটে ফেল...
রাজন-ঠিকাছে ভাই,,,
তবে আমিও আপনার সাথে যাবো...
আদিত্য-না,,,
তুই এদিকের সবকিছু সামলে নে,,,
সিলেটে আমি একাই যাবো...
রাজন-ঠিকাছে,,,
তাই হবে ভাই...
এক ঘন্টা পর,,,
আদিত্য ফ্লাইটে করে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো...
আধা ঘন্টার মধ্যেই আদিত্য সিলেটে "হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে" এসে পৌঁছালো,,,
আদিত্য ওখানে পৌঁছাতেই,,,
রাজন ফোন করলো...
আদিত্য-হ্যালো...???
রাজন-ভাই...???
আপনি ঠিকমতো সিলেটে পৌঁছে গেছেন...???
আদিত্য-হে,,,
আমি এইমাত্র পৌঁছেছি...
রাজন-ঠিকাছে,,,
কোনো দরকার হলে আমায় ফোন করে জানাবেন...
আদিত্য-তাতো জানাবোই,,,
কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা...
রাজন-কি কথা ভাই...???
আদিত্য-সিলেট তো কম বড় একটা শহর নয়,,,
ভাবছি এত বড় একটা শহরে,,,
তোর ভাবিকে এখন কোথায় খুঁজবো...???
রাজন-সেটা তো আমিও ভাবছি ভাই,,,
আর ভাবির নাম্বারটাও তো বন্ধ আছে,,,
সে কারনে ভাবি বর্তমানে এখন কোন লোকেশনে আছে,,,
সেটাও আমরা এখন ট্রেস করতে পারছি না...
আদিত্য-তাহলে এখন উপায়...???
রাজন-ভাই...???
আপনি এত চিন্তা করবেন নাতো,,,
দেখবেন,আপনি ভাবিকে ঠিক খুঁজে পাবেন...
আদিত্য-হে,জয়াকে তো আমাকে যেভাবেই হোক,,,
খুঁজে বের করতে হবেই,,,
দরকার হলে পুরো সিলেট শহর তন্ন তন্ন করে,,,
আমি জয়াকে খুঁজে বের করবো...
রাজন-ভাই...???
একটা কথা বলবো...???
আপনি ভাবিকে খুব ভালোবাসেন তাইনা...???
আদিত্য-আমি তোর ভাবিকে কতোটা ভালোবাসি,,,
তা আমি জানি না,,,
শুধু এটুকু বলতে পারি যে,,,
আমি জয়াকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না...!!!
রাজন-ভাই...???
আপনার এই ভালোবাসা বিফলে যাবে না,,,
আরেকটা কথা বলবো ভাই...???
আদিত্য-আবার কি কথা...???
শুধু কি তোর কথাই শুনবো...???
নাকি তোর ভাবিকে খুঁজবো এইবার
রাজন-ভাই...???
আমি শুনেছি সিলেটে,,,
হজরত শাহজালাল কামেল পীর আওলিয়ার,,,
একটা মাজার আছে...
আদিত্য-হে,আমিও শুনেছি,,,
কিন্তু ওটা দিয়ে আমি এখন কি করবো...???
রাজন-ভাই...???
আগে আমার পুরো কথাটা তো শুনুন...
আদিত্য-Ok বল...
রাজন-ভাই...???
আপনি যখন একবার সিলেটে পৌঁছে গিয়েছেনই,,,
সবার আগে আপনি বরং সেই মাজারেই একবার যান,,,
সেখানে গেলে নাকি সবার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়,,,
তাই বলছিলাম কি,,,
আপনি যদি একবার ওখানে যান,,,
বলা তো যায় না,,,
ওখানে যদি ভাবিও যায় তখন...???
আদিত্য-তুই ঠিকই বলেছিস,,,
আমি এয়ারপোর্ট থেকে প্রথমে সোজা ওখানেই যাবো,,,
রাখছি এখন...
আদিত্য এয়ারপোর্ট থেকে একটা প্রাইভেট কার নিয়ে,,,
হজরত শাহজালাল পীর আওলিয়ার মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলো...
এদিকে জয়ার বাড়িতে ডাইনিং টেবিলে সবাই খেতে বসলো,,,
জয়ার নানিকে খুশি ধরে ধরে নিয়ে এলো...
জয়ার নানি খেতে বসতেই,,,
মিসেস মেহরাব তার প্লেটে খাবার এগিয়ে দিতেই,,,
জয়ার নানি হাত বাড়িয়ে বাঁধা দিয়ে বললো-নীলা...???
তুই আমার খাবারটা বেড়ে দিয়ে যা তো...
মিসেস মেহরাব বুঝতে পারলেন যে,,,
জয়ার নানি তার উপরে রেগে আছেন...
নীলা এগিয়ে এসে জয়ার নানিকে খাবার বেড়ে দিলো,,,
আদিত্য বাড়িতে এসে ঝামেলা করায়,,,
আজ সবার খেতেও দেরি হয়ে গেছে,,,
আর ফুড ট্রাক খুলতে যেতেও দেরি হয়ে গেছে...
মিষ্টার মেহরাব উপর থেকে নীচে নামতে নামতে বললেন-সোরাব...???
তোর খাওয়া হলো...???
ফুড ট্রাক খুলতে যাবি না...???
মিষ্টার সোরাব-এই তো ভাইজান,,,
আরেকটু খাওয়া বাকি আছে,,,
আমি এক্ষুনি আসছি...
মিসেস মেহরাব তার স্বামিকে উদ্দেশ্য করে বললেন-টেবিলে খাবার দিয়েছি,,,
তুমিও খেয়ে নাও এই ফাঁকে...
মিষ্টার মেহরাব তার স্ত্রীর কথার জবাবে বললেন-খুশি...???
আমি খাবো না,,,
আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,
তোর বাবাকে তারাতারি আসতে বল,,,
আর আমার রাতেও ফিরতে দেরি হবে,,,
তাই আমার জন্য অপেক্ষা না করে,,,
তোরা সবাই খেয়ে নিস...
মিসেস মেহরাব টিফিন বক্সে কিছু খাবার ভরে নিয়ে এসে বললেন-টিফিন বক্সটা অন্ততঃ নিয়ে যাও সাথে করে,,,
পরে খেয়ে নিও...
মিষ্টার মেহরাব ঝাঁজি দিয়ে বলে উঠলেন-বললাম তো আমার খিদে নেই...
মিষ্টার মেহরাবের ঝাঁজি শুনে,,,
বাড়ির সবাই চমকে উঠলো...
তারপর মিসেস মেহরাব,তার স্বামিকে বললেন-আমার উপরে রাগটা,,,
তুমি কেনো এই খাবারের উপরে উঠাচ্ছো...???
সোজা কথায় বললেই তো পারো যে,,,
আমার উপর রেগে আছো,,,
আর তাই কিছুই খেতে চাচ্ছো না...???
মিষ্টার মেহরাব-তোমাকে আর কি বলবো...???
তুমি যেটা আদিত্যর সাথে করেছো,,,
তারপর তোমার সাথে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধছে এখন...
মিসেস মেহরাব-আর আদিত্য যে আমাদের সাথে কি কি করে ছিলো,,,
তুমি সেগুলো সব ভুলে গেছো...???
মিষ্টার মেহরাব-মানলাম,,,
আদিত্য এর আগে অনেক ভুল করে ছিলো,,,
কিন্তু আদিত্য,নিজের ভুলটা শোধরানোর জন্য বারবার চেষ্টাও করেছে অনেক...
আর তুমি তার জন্য আদিত্যকে,,,
মিথ্যে কিডন্যাপের কেসে জেলে পাঠিয়ে দিলে...???
ছিঃ...ছিঃ...ছিঃ...
ওই আদিত্যর সামনে তুমি আমাদের সবার মাথাটাই হেট করে দিয়েছো...
মিসেস মেহরাব-আমি যেটা করেছি,,,
সেটা একদম ঠিকই করেছি...
মিষ্টার মেহরাব-না তুমি ঠিক করোনি,,,
তুমি আদিত্যর সাথে যেটা করেছো,,,
সেটা অন্যায় করেছো...
মিসেস মেহরাব-আমি যা কিছু করেছি,,,
সব কিছু জয়ার ভালোর জন্যই করেছি,,,
ওই আদিত্যর কাছ থেকে জয়াকে বাঁচানোর জন্য করেছি...
মিষ্টার মেহরাব-কেনো করলে তুমি এটা...???
মিসেস মেহরাব-এ ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিলো না,,,
আমি শুধু চেয়েছি ওই আদিত্যর কাছ থেকে,,,
জয়াকে দূরে সড়িয়ে দিতে ব্যস...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি জয়ার ভালো করেছো এটা...???
মিসেস মেহরাব-হে ভালোই করেছি,,,
কারন ওই আদিত্য,নিজের জেদটা পূরণ করার জন্য,,,
এত পাগলামি শুরু করে দিয়ে ছিলো...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি তো ওই আদিত্যকে ক্ষমা না করে দিয়ে,,,
বরং ওর মতই ওর উপরে জেদ করেছো,,,
প্রতিশোধ নিয়েছো এটা...
মিসেস মেহরাব-এটা আমার জেদ নয়,,,
আমি চাই না যে,ওই আদিত্য জয়ার জীবনে থাকুক...
মিষ্টার মেহরাব-আর জয়ার ভাগ্যে যদি ওই আদিত্যই লেখা থাকে,,,
তাহলে তোমার আমার চাওয়ায় কিচ্ছু হবে না,,,
কথাটা ভালো করে মনে রেখো...
মিসেস মেহরাব-তা আর কোনো দিনও হবে না,,,
ওই আদিত্যর কাছ থেকে আমি জয়াকে,,,
এতো দূরে পাঠিয়ে দিয়েছি যে,,,
আদিত্য হাজার চাইলেও,,,
আর কখনোই জয়াকে খুঁজে পাবে না,,,
আর আমি চাইও না যে,,,
আদিত্য জয়াকে খুঁজে পাক...
মিষ্টার মেহরাব-তুমি চাওয়া না চাওয়ার কে...???
কে হও তুমি জয়ার...???
ওর মা হও...???
মিসেস মেহরাব-মা না হলেও,,,
আমি জয়ার বড় মামি হই,,,
ওর মায়ের মতই...
মিষ্টার মেহরাব-হুহ,,,
খুব বড় মা হতে এসেছো তাইনা...???
তুমি যদি সত্যিই জয়ার মা হতে,,,
তাহলে জয়াকে আমাদের সবার কাছ থেকে,,,
এভাবে দূরে পাঠিয়ে দিতে পারতে না কখনো...
মিসেস মেহরাব-তুমি আমাকে এই চিনলে এতো দিনে...???
মিষ্টার মেহরাব-হে আজকাল তো,,,
আমি সত্যিই তোমাকে চিনতে পারছি না আর...
আমি যার সাথে এত বছর ধরে সংসার করেছি,,,
তুমি কি সেই নাকি অন্য কেও...???
মিসেস মেহরাব-কি বলতে চাও...???
মিষ্টার মেহরাব-বলতে চাই যে,,,
তুমি আর আগের মতো নেই,,,
তুমি সম্পূর্ণ বদলে গেছো...
সোরাব...???
তোর হলো...???
চল এবার...
মিষ্টার সোরাব-হে,,,
হয়ে গেছে ভাইজান,,,
চলো,,,
মিষ্টার মেহরাব না খেয়েই তার ছোট ভাইকে নিয়ে চলে গেলো...
অপরদিকে,,,
হজরত শাহজালাল আউলিয়ার মাজারের কাছেই,,,
মিসেস মেহরাবের বড় ভাইয়ের হোটেল...
সিলেটে পৌঁছে,,,
জয়াকে নিয়ে তাই তিনি মাজারের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন...
মাজার দেখে জয়া সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায়,,,
মিসেস মেহরাবের ভাই,,,
জয়াকে নিয়ে সেই মাজারে গেলেন...
এদিকে আদিত্যও সেই একই মাজারে এসে ঢুকলো,,,
জয়া আর আদিত্য কাছাকাছি থাকার পরেও,,,
মাজারে প্রচুর লোকের ভিড় থাকায়,,,
কেউ কাউকে দেখতে পেলো না...
মাজারে মিলাদ শরীপ শুরু হলো,,,
জয়া মহিলাদের সারিতে গিয়ে বসলো,,,
আর আদিত্য পুরুষদের কাতারে গিয়ে বসলো...
মিলাদ শরীপ শেষে সবাই মোনাজাত উঠালো,,,
জয়াও মোনাজাত উঠিয়ে বললো-ইয়া আল্লাহ...???
ও যাতে ভালো থাকে,,,
সেইজন্যেই আমি ওর থেকে এতো দূরে চলে এসেছি,,,
তুমি ওকে ভালো রেখো,,,
সহিহ্-সালামতে রেখো...
-আমীন...!!!
জয়ার বিপরীতে আদিত্যও মোনাজাত উঠিয়ে বললো-জয়াকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও প্লিজ...!!!
জয়ার হঠাৎ করে মনে হলো যে,,,
আদিত্য জয়ার খুব কাছাকাছিই কোথাও আছে...
কিন্তু জয়া এদিকে-ওদিকে তাঁকিয়ে দেখলো,,,
কোথাও আদিত্য নেই...!!!
জয়া তাই নিজেকে শান্তনা দেওয়ার জন্য বললো-ও এখানে কোথা থেকে আসবে...???
ও তো এখন ঢাকায়...
আদিত্যর কথা মনে পরে জয়ার দুচোখে অশ্রু ঝড়তে লাগলো,,,
এদিকে হঠাৎ করে আদিত্যরও কেনো জানি,,,
এমন একটা অজানা অনুভুতি হলো যে,,,
আদিত্যরও মনে হতে লাগলো যে জয়া তার আশেপাশেই আছে...
দুজনে সত্যি সত্যি এই মুহূর্তে কাছাকাছি আছে,,,
কিন্তু কেউই কাউকে দেখতে পাচ্ছে না...
মিসেস মেহরাবের ভাই এসে বললো-এবার চল মা,,,
দেরি হয়ে যাচ্ছে...
জয়ার ওনার সাথে মাজার থেকে বেড়িয়ে চলে গেলো,,,
খুব কাছাকাছি থাকা সত্যেও জয়া আর আদিত্যর দেখা হলো না,,,
আদিত্যও তাই জয়াকে খুঁজে পেলো না
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com