মুনতাসীর ও উপমার বিচ্ছেদ । পর্ব - ০২
কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দ্রুত টেবিল বসে পড়লো নাস্তা করার জন্য।
মিতি বসে নাস্তা করছে।
মোর্শেদা বেগম গরম গরম পরোটা ভেজে এনে দিচ্ছে।
উপমা মিতির দিকে তাকিয়ে বলল,,
-"আজ কলেজ যাবি না?"
-"নাহ।যেতে মন চাচ্ছে না। বাসায় বসে প্রাকটিক্যাল করবো।"
-"ওহ।"
-"তুমি বের হবে কখন?"
-"এই যে নাস্তা টা শেষ করে নেই।"
এবার তাদের সাথে যোগ দিলেন কবির ভুঁইয়া।
-"আজ কলেজ যাবি না?"
-"নাহ।যেতে মন চাচ্ছে না। বাসায় বসে প্রাকটিক্যাল করবো।"
-"ওহ।"
-"তুমি বের হবে কখন?"
-"এই যে নাস্তা টা শেষ করে নেই।"
এবার তাদের সাথে যোগ দিলেন কবির ভুঁইয়া।
উপমা ও মিতির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
-"কি খবর আমার দুই মেয়ের?"
-"কি খবর আমার দুই মেয়ের?"
দুজনেই এক সাথে হেসে দিল।
মুহূর্তেই মুনতাসীর তাদের পাশ কাটিয়ে বসার ঘরে বসা দাদুর দিকে এগিয়ে গেলো।
উপমার নাকে এসে বারি খেলো এক মিষ্টি ঘ্রাণ।
এক পলক মুনতাসীর এর দিকে তাঁকিয়ে নিজের খাওয়ায় মন নিবেশ করলো উপমা।
মুনতাসীর মাকে উদ্যেশ্য করে বলল,,
-”আমি আজ নাস্তা খাবো না।আমার লেট হয়ে যাচ্ছে।”
-”একটু খেয়ে যাও।”
-”নাহ মা।তুমি বোঝার চেষ্টা করো আমার সময় নেই।”
বেশি সময় লাগবে না।
-”আমি আজ নাস্তা খাবো না।আমার লেট হয়ে যাচ্ছে।”
-”একটু খেয়ে যাও।”
-”নাহ মা।তুমি বোঝার চেষ্টা করো আমার সময় নেই।”
বেশি সময় লাগবে না।
তুই খেয়ে নে।একবার দেখতো কি অবস্থা করেছিস তুই নিজের না খেতে খেতে।
-"তুমি কেনো বুঝতে চাইছো না মা যে আমার লেট হয়ে যাচ্ছে?"
-”আমি তো কিছু বুঝি না।এবার ঘরে কেউকে নিয়ে আসো যে তোমার কথা বুঝবে।”
এবার মায়ের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো মুনতাসীর। বিরক্তির কন্ঠে বলল,
-"মা তুমি আবার শুরু করেছ।”
-”কেনো?কি সমস্যা?বিয়ের কথা বললেই তোমার ফেস এমন হয় কেনো?”
-”আমার এগুলো ভালো লাগে না।”
আয়শা খাতুন ছেলে বউ ও নাতির কর্ম কান্ড দেখে হাসলেন।
নাতির সাথে মজা করে বললেন,,
-”কি? তোমার মেয়ে ভালো লাগে না?"
-”কি? তোমার মেয়ে ভালো লাগে না?"
মুনতাসীর দাদুর কথায় হতবম্ব হলো। দাদুর কথার অর্থ বুঝতে কয়েক সেকেন্ড লাগলো।
কি বলছে তার দাদু? মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে বলল,,
-”দাদু তুমি কিন্তু বেশি বেশি বলছো। আমি এই কথা কখন বলেছি?।”
আয়শা খাতুন চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে খানিকটা ঠাট্টার শুরে বললেন,,
-"আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি।তবে তোমার কোনো সমস্যা থাকলে বলতে পরো।আমি যদি তোমার সমস্যা সমাধান করতে পারি।"
-"আমি,,,। ধুর তোমাদের সাথে কথাই বলবো না।"
বলেই মুনতাসীর ধুপ ধাপ কদম দিয়ে চলে গেলো।উপমা কিছু বলল না।
-”দাদু তুমি কিন্তু বেশি বেশি বলছো। আমি এই কথা কখন বলেছি?।”
আয়শা খাতুন চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে খানিকটা ঠাট্টার শুরে বললেন,,
-"আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি।তবে তোমার কোনো সমস্যা থাকলে বলতে পরো।আমি যদি তোমার সমস্যা সমাধান করতে পারি।"
-"আমি,,,। ধুর তোমাদের সাথে কথাই বলবো না।"
বলেই মুনতাসীর ধুপ ধাপ কদম দিয়ে চলে গেলো।উপমা কিছু বলল না।
মোর্শেদা বেগম পরোটা মুখে পুড়ে নিতে নিতে বললেন,,
-”এইবার এই ছেলেকে বিয়ে না দিয়ে আমি খেন্ত হবো না।
রূপবতী গুণবতী মেয়ে নিয়ে আসবো।”
উপমা অতি কষ্টে খাবার গিললো। চোখের কোনে জমে থাকা জল মুছে নিলো।
উপমা অতি কষ্টে খাবার গিললো। চোখের কোনে জমে থাকা জল মুছে নিলো।
মামী কেনো এমন করে রূপবতী, গুণবতী উল্লেখ করলো তাও বুঝতে পারলো উপমা।
খাবার টুকু শেষ করে দাদুর কাছে চলে গেলো।
দাদুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।
-“এখন কেমন ফিল হচ্ছে?”
-”মানে”
-”আরে কাল রাতে মিতি বলল তোমার নাকি শরীর ভালো না।
-“এখন কেমন ফিল হচ্ছে?”
-”মানে”
-”আরে কাল রাতে মিতি বলল তোমার নাকি শরীর ভালো না।
তাই জিজ্ঞাস করলাম।”
-”ওহ।হুম ভালো আছি।কিন্তু আপনি এখন ও অফিসে যান নি যে?
-”ওহ।হুম ভালো আছি।কিন্তু আপনি এখন ও অফিসে যান নি যে?
সেই কখন তো বাড়ি থেকে বের হলেন।"
-"হুম বেরিয়েছিলাম তো আগেই কিন্তু দেখি গাড়ির টায়ার পাঞ্চার কি আর করার।
-"হুম বেরিয়েছিলাম তো আগেই কিন্তু দেখি গাড়ির টায়ার পাঞ্চার কি আর করার।
ড্রাইভার ও আজ আসতে পারবে না।তাই নিজেই চেঞ্জ করে নিলাম।
এ জন্য লেট হলো।"
-"ওহ।"
-”ভার্সিটি যাচ্ছো বুঝি?”
-”হুম।পরীক্ষা আছে।”
-”ওকে অল দা বেস্ট।”
-"ওহ।"
-”ভার্সিটি যাচ্ছো বুঝি?”
-”হুম।পরীক্ষা আছে।”
-”ওকে অল দা বেস্ট।”
বলেই মুনতাসীর চলে গেলো। উপমা নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে রইলো।
লোকটাকে দেখতে ভীষণ লাগে।একদম পরিপাটি থাকে।কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে।
অদ্ভুত অনুভূতি হয় এই লোককে দেখলে।
আচ্ছা সে যে এতো কিছু ভাবে এই লোক নিয়ে সেই লোক কি তাকে নিয়ে কিছু ভাবে।
এ এক গভীর প্রশ্ন।তবে এখন প্রশ্ন হলো চাইলে কি একবার লিফট এর জন্য বলা যেত না উপমাকে ?
একটু বলা যেত না যে চলো উপমা তোমায় ড্রপ করে দেই?আজব ধরনের মানুষ।
উপমা রিকশা করে নিলো। অযথা এই লোকের কথা ভেবে লাভ নেই।
ভার্সিটিতে এসে দুটো ক্লাস শেষে ক্যান্টিন চলে গেলো উপমা ও রিনি।
ভার্সিটিতে এসে দুটো ক্লাস শেষে ক্যান্টিন চলে গেলো উপমা ও রিনি।
রিনি হলো উপমার একমাত্র বান্ধবী।দুজনেই এক সাথে চায়ের কাপে চুমুক দিলো।
রিনি লক্ষ্য করলো উপমা কেমন যেনো চুপচাপ হয়ে আছে।
মেয়েটা চুপ চাপ তবে আজ একটু বেশি নীরবতা পালন করছে।
রিনি ভ্রু কুচকে উপমার হাতে চিমটি কাটলো।বলল,,
-”কি হয়েছে তোর?”
উপমা মিন মিন করে বলল,,
-”কিছু না।”
-”কি হয়েছে তোর?”
উপমা মিন মিন করে বলল,,
-”কিছু না।”
-”আমি কি তোর আপন কেউ না?আমাকে বললে কি হবে?
আমি কি তোর কাছের কেউ না?আমার থেকে কেনো লুকোচ্ছিস?”
-”তেমন কিছু না।আমি ঠিক আছি।আর তুই তো আমার কাছের মানুষ।
-”তেমন কিছু না।আমি ঠিক আছি।আর তুই তো আমার কাছের মানুষ।
তোর কাছে কিছু লুকোচ্ছি না।”
-”হুম। বুঝতে পেরেছি আমি এখন পর হয়ে গিয়েছি।অনেক বছর হয়েছে।
-”হুম। বুঝতে পেরেছি আমি এখন পর হয়ে গিয়েছি।অনেক বছর হয়েছে।
এখন তোর নতুন কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড লাগবে।আমি বুঝি।
পূরণ হয়ে গেলে কারো ভালো লাগে না।”
উপমা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো।
উপমা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো।
এই মেয়েকে না বলা অব্দি উল্টো পাল্টা কথা বলেই যাবে।
তাই কাল রাতে মামীর বলা কথা গুলো বলল রিনিকে। রিনি একটু ভেবে জিজ্ঞাস করলো,,
-”তোর মামী হঠাৎ এমন করে কথা বলল কেনো?”
-”তোর মামী হঠাৎ এমন করে কথা বলল কেনো?”
-”বলছি। দুদিন আগের কথা রাতে আমি আমার রুমে বসে এ্যাসাইনমেন্ট করছিলাম।
কিন্তু কিছু জায়গায় এতো বাজে ভাবে আটকে গিয়েছিলাম যে বহু বার চেষ্টা করেও পারি নি।
তার উপর পরদিন ছিল এ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার লাস্ট ডেট।তাই মাথার উপর চাপ ছিল।
তাই ভাবি একটু ব্রেক নিবো।
এর মাঝে পানির ও তেষ্টা পায় কিন্তু যেই না পানি খেতে যাই দেখি রুমের জগে পানি নেই।
তাই পানি নিতে চলে যাই কিচেনে।
কিচেনে গিয়ে দেখি মুনতাসীর ভাই ও তার জগে পানি নিচ্ছেন।
তিনি আমাকে দেখে অবাক হন।জিজ্ঞাস করেন এতো রাতে কি করছি।
যখন পুরো ঘটনা বলি তখন বলেন যে উনি আমার সাহায্য করবেন।
আমিও উনার সাহায্য নেই।এ্যাসাইনমেন্ট করতে করতে ভোর হয়ে যায়।
আমি তো বসার ঘর থেকে আমার রুমে চলে যাই কিন্তু মুনতাসীর ভাই বসার ঘরেই ঘুমিয়ে যায়।
পড়ে মামী উঠে দেখে ফেলেন।
যদিও তিনি আজ বেশ কয়েক দিন আমার সাথে ঠিক মত কথা বলেন না।
কেমন এড়িয়ে চলেন কিন্তু এর পর থেকেই তিনি আরও গম্ভীর হয়ে আছেন।
তারপরেই এই কথা বলেন।
দ্বিতীয়ত কয়েক দিন আগে আমি মিতির সাথে দুষ্টুমি করে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে নামছিলাম
দ্বিতীয়ত কয়েক দিন আগে আমি মিতির সাথে দুষ্টুমি করে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে নামছিলাম
ঠিক তখন মুনতাসীর ভাইয়ার সাথে বেশ জোড়ে ধাক্কা লাগে।
আমি তো পড়তে পড়তে বেঁচে যাই।
কিন্তু এই বেঁচে যাওয়ার মাঝে মামীর মুখের ভাব ভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে যায়
মুহূর্তেই কারণ মুনতাসীর ভাই একদম ফিল্মি স্টাইলে আমাকে তার বহু ডোরে আগলে নেন।
তবে এই ঘটনা কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও
মামীর ভাব ভঙ্গি পরিবর্তন হয় মুহুর্তে এবং সেই পরিবর্তন এখনও বিদ্যমান।
-”কিন্তু এগুলোর সাথে উনার এই কথার কি মেল?”
-”কিন্তু এগুলোর সাথে উনার এই কথার কি মেল?”
-”উনি ভাবছেন হয়তো,,,
-”মানে তুই আর মুনতাসীর ভাই?”
-”সেটাই কিন্তু উনি যে ভুল সেটা কি করে বুঝাই।”
-”উনি ভুল মানে?তুই তো সত্যিই সত্যি মুনতাসীর ভাইকে পছন্দ করিস।”
-”আমি করি ঠিক আছে কিন্তু উনি করেন না।আর সেটা,,
-”সেট তুই কি করে বুঝলি?”
-”দেখ আমি বুঝি।আজ সকালের ঘটনায় বলি, আজ উনি আমার সামনে দিয়ে গাড়ি নিয়ে অফিসে চলে গেলেন।আমায় একবার লিফ দিবে কি না তাও জিজ্ঞাস করলেন না। অন্য কেউ হলে তো অন্তত একবার জিজ্ঞাস করতো।”
-”কেন তোকে আর মিতিকে না এক সাথে উনি ড্রপ করে।”
-”সেটা একদম মাঝে মাঝে। মিতির যেদিন তার কলেজ বাসে যেতে ভালো না লাগে সেদিন।আর মিতি জোর করে আমাকে তাদের সাথে নেয়।উনি তো একবার ও বলে না।এই আর কি।”
-”হয়েছে আর বলতে হবে না।”
-”আচ্ছা চল বাসায়।”
দুজনেই ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে যায়।উপমা মন মরা হয়ে হাটতে থাকে।রিনিও বুঝে না কি বলবে।দুজনেই আরো কিছুক্ষন কথা বলে যে যার গন্তব্য অনুযায়ী রিকশায় উঠে গেলো।"
-"আজ তোকে দেখলাম তোর প্রিয় মানুষের সাথে।"
মুনতাসীর এক পলক তার সামনে বসে থাকা পুরুষের দিকে তাকালো।সামনে তার একমাত্র বেস্টফ্রেন্ড বসে আছে।কিন্তু তার বেস্টফ্রেন্ড নামক শত্রু অর্থাৎ নাঈম এর কথার অর্থ সে বুঝলো না। হাতে থাকা ফাইলের দিকে তাকিয়ে বলল,,
-"বুঝলাম না।"
-"এই তুই কি একটু মানুষ হবি না।একে তো নিজের ভেতর অনুভূতি পুষে রেখেছিস
সেই সাথে সময়ের ব্যবহার ও করতে পারিস না।
এখন এসে আবার বলছিস আমার কথা বুঝতে পারছিস না।এটা কেমন কথা?"
-"ঘুরিয়ে না বলে সোজা সাপ্টা বল।"
-"আজ দেখলাম তুই উপমাকে একা রেখে চলে এলি।
-"ঘুরিয়ে না বলে সোজা সাপ্টা বল।"
-"আজ দেখলাম তুই উপমাকে একা রেখে চলে এলি।
তাকে ভার্সিটি ড্রপ করতে পারতি।
তার সাথে সময় কাটিয়ে তার তোর জন্য অনুভূতি বুঝতে পারি।"
মুনতাসীর হাতে থাকা ফাইল পাশে রেখে বলল,,
মুনতাসীর হাতে থাকা ফাইল পাশে রেখে বলল,,
-"প্রথমত তার কলেজ যাওযার প্রথম দিন তাকে বলেছিলাম যে আমি ড্রপ করে দেই।
কিন্তু সে বলেছে একা যেতে পারবে।এবং এভাবে আমি পৌঁছে দিকে বিষয়টা অন্যরকম দেখায়।
সে কারো হেল্প নিতে চায় না। আর দ্বিতীয়ত তুই আমার বাসার সামনে কি করছিলি?"
-"আমার শ্বশুর বাসায় গিয়েছিলাম।তোর ভাবিকে মানিয়ে নিয়ে এলাম।সে তো ঝগড়া করে চলে গিয়েছিল।তাই মানিয়ে নিয়ে এলাম।"
-"আমার শ্বশুর বাসায় গিয়েছিলাম।তোর ভাবিকে মানিয়ে নিয়ে এলাম।সে তো ঝগড়া করে চলে গিয়েছিল।তাই মানিয়ে নিয়ে এলাম।"
-"ওহ। তাই বলে সকাল সকাল?কালকে বিকেল না তদের ঝগড়া হলো।"
নাঈম আফসোস করে বলল,,
-"বউ ছাড়া কতো কষ্ট।বউ ছাড়া রাতে ঘুম হয় না।বিয়ে করলো বুঝবি।অবশ্য তুই তো এমনিই সারাদিন তার চিন্তায় বিভোর থাকিস।"
-"তেমন টা নয়।"
-"লুকিয়ে লাভ নেই।আচ্ছা বলেন তো আপনি কবে আপনার মনের কথা তার কাছে তুলে ধরবেন?"
-"সঠিক সময় এখনো আসে নি।"
-"তবে আসবে এই সময়?
-"জানি না।"
-"মামা তাড়াতাড়ি করিস।নাহলে দেখা যাবে তোর সঠিক সময় আসতে আসতে অন্য কেউ তোর কলিজাকে নিয়ে চলে গেছে।"
মুনতাসীর কিছুটা বিচলিত হয়ে বলল,,
-"আল্লাহ না করুক।তুই বন্ধু নাকি শত্রু?"
-"তোর ভালোর জন্য বলছি।"
-"তাই বলে এভাবে?"
-"তাহলে আর কিভাবে?তুই তো এতো দিনে তার মনের ভাব বুঝার ও চেষ্টা করিস নি।আচ্ছা তুই কি একটুও বুঝতে পারিস না যে তোর জন্য সে কি ফিল করে?"
মুনতাসীর কিছুক্ষণ চুপ রইলো।কি বলবে সে।সে তো উপমার কর্ম কান্ড দেখে কিছুই অনুমান করতে পারে না।মুনতাসীর আমতা আমতা করে বলল,,
-"আসলেই আমি বুঝি না।"
নাঈম আশাহত হয়ে বলল,,
-"একটুও না? তোর দিকে কেমন করে তাকায়,তোর দিকে তাকিয়ে হাসে কি না?তুই কি একটু বুঝিস না?"
-"সে তো নরমাল থাকে।"
-"হতে পারে সে ফিল করে কিন্তু তির মতো ইন্ট্রোভার্ট।"
-"কে জানে?"
নাঈম এবার খানিকটা রেগে গেলো।কি এই ছেলে? নাঈম আগে ইন্ট্রোভার্ট দেখেছে কিন্তু এমন কেউকে দেখে নি।ভালোবাসার মানুষের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করবে এতেও নাকি সংকোচ। কেন রে ভাই?ভালোবাসার কথা বলতে কিসের সংকোচ?আজব একটা মানুষ মুনতাসীর।কোন দিন যেনো সে উপমাকে হারিয়ে ফেলবে শুধু তার এই সংকোচ বোধের কারণে। উফ!নাঈম এবার খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠে বলল,,
-"তোর এই ভাবলেশহীন মনভাবের কারণে দেখবি তুই ওকে হারিয়ে ফেলবি।ভালোই ভালোই বলছি পাখিকে নিজের খাঁচায় বন্দী করে নাও।নাহলে তোমার নাকের নিচে অন্য কেউ এসে তোমার পাখি নিয়ে যাবে তুমি টের ও পাবা না।"
-"এভাবে বদদোয়া দিস না।"
-"আসলে তোকে বোঝানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।যখন দেখবি তোর পাখিকে অন্যকেউ নিয়ে যাবে তখন তোর শিক্ষা হবে।তখন তুই আমার কথা মনে করবি আর চোখের পানি ফেলবি।এমন ও হতে পারে তোর চোখের সামনে তাকে কেউ নিয়ে যাবে কিন্তু তুই?তুই চেয়েও কিছু করতে পারবি না। ধুঁকে ধুঁকে শেষ হয়ে যাবি। ভেতর ভেতর হাহাকার করতে করতে শেষ হবি।"
বলেই চেয়ার ছেড়ে উঠে গেলো নাঈম।নাঈম নিজেও জানে যে এভাবে বলা ঠিক না।কিন্তু এই মুনতাসীর কে কিভাবে বুঝাবে যে,,ভালোবাসলে বলে দিতে হয়।এর কোনো সঠিক সময় প্রয়োজন হয় না।যে কোনো মুহুর্ত কে সঠিক সময় হিসেবে ধরে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে হয়।নয়তো সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে করতে ভালোবাসার মানুষ অন্যের হয়ে যায়।
মুনতাসীর নাঈমের কথায় চুপ হয়ে গেলো।চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো।আসলেই কি সঠিক সময় আসতে আসতে সে উপমাকে হারিয়ে ফেলবে?উপমাকে কি আর মনের কথা বলা হবে না?
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com