Breaking News

জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৬২



রেস্টুরেন্টে কাপল পার্টি ডান্স শুরু হয়ে গেলো,,,
আদিত্য হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে জয়াকে বললো-মিস জয়া...???
Can i dance with you...???
জয়া মুচকি হেসে সম্মতি জানালো,,,
তারপর আদিত্যর হাতটা ধরলো...
আদিত্য,জয়ার হাত ধরে টেনে জয়াকে নিজের কাছে নিয়ে গেলো,,,
জয়া ফিসফিস করে বললো-আদিত্য...???
কি করছো...???
সবাই দেখছে তো...
আদিত্য দুষ্টমি ভরা হাসি দিয়ে জবাবে বললো-সবাই দেখলে দেখুক,,,
তাতে কি হয়েছে হুম...???
আমি আমার হবু বউয়ের সাথেই তো ডান্স করছি,,,
কোনো অন্য মেয়ের সাথে তো আর ডান্স করছি না...

জয়া-আদিত্য...???
চান্স পেয়ে ডান্স করো না,,,
আমার ভিষণ লজ্জা লাগছে কিন্তু,,,
বাড়ির সবাই আছে এখানে...
আদিত্য-বাড়ির সবাই দেখুক,,,
তাতে কিচ্ছু হবে না,,,
সবাই জানে যে,আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি...
আদিত্য,জয়ার হাতটা ঘুরিয়ে কাপল ডান্স শুরু করে দিলো,,,
খুশি ডান্স দেখে নীলাকে বললো-দেখ নীলা...???
দিদি আর দুলাভাইকে একসাথে কি ভালো মানিয়েছে...
নীলা-তুই ঠিকই বলেছিস খুশি,,,
মনে হচ্ছে ওরা দুজন দুজনের জন্যেই তৈরি হয়েছে,,,
কি বলে যেনো ওটাকে...???
হে,মনে পরেছে...

"Made for each other"
খুশি-আরেহ বাহ,,,
তুইতো একদম আমার মনের কথাটাই বলে দিলি রে,,,
আমিও এটাই বলতে চেয়ে ছিলাম...
আদিত্য আর জয়া রোমান্টিক ভাবে কাপল ডান্স করছিলো,,,
কিন্তু হঠাৎ করে গেষ্টদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে এসে,,,
ইচ্ছে করে জয়ার সাথে ধাক্কা খেলো...
সেটা দেখামাত্রই আদিত্য খুব ক্ষেপে গিয়ে,,,
ওই ছেলের কলার ধরে মারতে মারতে বললো-শালা...???
তোর সাহস হয় কি করে,,,
আমার বউকে টাচ করার...???

ছেলেটা উত্তরে বললো-আদিত্য...???
আমরা এতদিন ধরে একসাথে বিজনেস করছি,,,
আর তুই আমার গায়ে হাত তুললি...???
তোর বউ যখন এতই দামি জিনিস,,,
তো সিন্দুকে ভরে লুকিয়ে রাখিস না কেনো...???
আদিত্য-চুপ শালা,,,
তোকে তো আজ আমি মেরেই ফেলবো,,,
তুই যেই হাত দিয়ে জয়াকে ছুঁতে চেয়েছিস,,,
আজ আমি তোর সেই হাতই ভেঙে দেবো...
আদিত্য দুই-চারটা থাপ্পড় মেরে দিলো,,,
জয়া আদিত্যকে থামানোর চেষ্টা করে বললো-আদিত্য...???
প্লিজ,ওকে ছেড়ে দাও...

কিন্তু আদিত্য থামছে না দেখে,,,
জয়া তার মামাদের ডেকে বললো-বড় মামা...???
ছোট মামা...???
তোমরা প্লিজ আদিত্যকে থামাও...
মিষ্টার সোরাব ও মিষ্টার মেহরাব,,,
আদিত্যকে থামাতে চেষ্টা করলো,,,
কিন্তু আদিত্য কিছুতেই থামছে না...
সবার সামনে আদিত্যর এই মারামারি করাটা দেখে,,,
জয়া বিব্রত বোধ করলো,,,

আর কাঁদতে কাঁদতে রেস্টুরেন্ট থেকে বাইরে চলে গেলো...
মিসেস মেহরাব,খুশি আর নীলাও জয়ার পিছুপিছু,,,
রেস্টুরেন্ট থেকে বাইরে চলে গেলো...
তারপর সবাই মিলে জয়াকে নিয়ে বাড়িতে চলে এলো,,,
বাড়ি ফিরে জয়া মন খারাপ করে নিজের ঘরে চলে এলো,,,
খুশি আর নীলা জয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করলো যে,,,
আদিত্য যা করেছে,,,
তা শুধুমাত্র জয়ার জন্যই করেছে...
কিন্তু,জয়া তবুও আদিত্যর উপরে রাগ করে রইলো,,,
কিছুক্ষণ পর...
আদিত্যও জয়ার বাড়িতে চলে এলো,,,

আদিত্য তারপর জয়ার ঘরে ঢুকতেই,,,
খুশি আর নীলা,আদিত্যকে দেখে বেড়িয়ে গেলো...
আদিত্য তারপর জয়াকে মানানোর জন্য বললো-আমার ভুল হয়ে গেছে,Sorry...!!!
প্লিজ,তুমি এভাবে আর রাগ করে থেকো না...
জয়া কোনো কথা না বলে চুপ করে রইলো,,,
আদিত্য জয়ার রাগ ভাঙানোর জন্য আবারও বললো-আচ্ছা,কান ধরতে হবে...???
Ok,,,আমি এই যে কান ধরছি,,,
প্লিজ তবুও এভাবে চুপ করে থেকো না,,,
কিছু তো বলো প্লিজ...???
জয়া রাগ করেই বললো-কি বলবো তোমাকে হে...???
সব জায়গায় গিয়েই কি তোমাকে মারামারি করতে হবে...???
এভাবে গুন্ডামি করতে হবে,তাইনা...???
আদিত্য জয়ার হাতটা ধরে বললো-জয়া...???
তুমি শুধু আমার,,,

আর কারোর নয়,,,
তাই আমি ছাড়া তোমাকে যদি আর অন্য কেও,,,
ভুলেও টাচ করার চেষ্টা করে,,,
তাহলে আমি তার হাত-পা ভেঙে হসপিটালে পাঠিয়ে দেবো,,,
তারপর দরকার হলে হসপিটালের বিলও আমিই দেবো,,,
কিন্তু তার হাত-পা আগে ভাংবোই...
জয়া-বাহ,কি কথা...!!!
আর কি আমার আমার শুরু করে দিয়েছো তুমি হে...???
আমি কোনো জায়গা-সম্পত্তি নই যে,,,
তুমি শুধু আমার আমার বলবে...
আদিত্য ক্ষেপে গিয়ে জয়ার দুই হাত চেঁপে ধরে,,,
জয়াকে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে বললো-হে,,,
তুমি শুধু আমারই,,,

আর কারোর নয়,,,
তোমার সবকিছুতে শুধু আমারই অধিকার থাকবে,,,
আর কারোর নয়...!!!
আমি ছাড়া অন্য কেও যদি তোমার দিকে তাঁকায়,,,
তাহলে আমি তার চোখ উপড়ে ফেলবো...
আমি ছাড়া অন্য কেউ যদি তোমাকে টাচও করতে চায়,,,
তবে আমি তার হাত ভেঙে দেবো...
আদিত্য জোরে জয়ার হাত চেঁপে ধরায়,,,
জয়ার হাতের চুড়ি গুলো ভেঙে জয়ার হাত কেটে গেলো...
জয়া সেটা খেয়াল করে বললো-আদিত্য...???
ছাড়ো আমাকে,,,
আমার হাতে লাগছে কিন্তু...
আদিত্য এবার খেয়াল করে দেখলো,,,
জয়ার হাত কেটে রক্ত গড়িয়ে পরছে...
আদিত্য তারাতারি করে জয়ার রুমের,,,
টেবিলের ড্রয়া গুলো থেকে খুঁজে,,,
ফাষ্ট-এইড বক্স বের করলো...

তারপর জয়াকে বিছানার উপরে বসিয়ে দিয়ে,,,
আদিত্য জয়ার হাতে স্যাভলুন লাগিয়ে,,,
রক্ত থামিয়ে,ড্রেসিং করে দিলো...
জয়ার জন্য আদিত্যর এই গভীর মায়া দেখে,,,
জয়া সব রাগ ভুলে গিয়ে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে বললো-কেনো এত কথায় কথায় রাগ করো তুমি হুম...???
আমি যদি তোমারই হই,,,
তাহলে আমাকে নিয়ে তোমার এত ভয় কিসের বলো তো...???
আমিতো তোমারই থাকবো,তাইনা...?
আদিত্যও জয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো-আমি তোমার কোনো কিছুই,,,
অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারবো না,,,
তুমি শুধু আমার আর আমারই থাকবে...
জয়া,আদিত্যর কাঁধে আলতো করে Kiss করে বললো-আমি তো তোমারই,,,
কিন্তু তুমি যে সব-সময় এত মাথা গরম করে,,,
সবার সামনে মারামারি শুরু করে দাও,,,
লোকে কি এটা ভালো বলে,,,

বলো...???
আদিত্য-লোকে কি বলে,,,
তা আমি জানতে চাই না,,,
আমি শুধু জানি তুমি যে,,,
তুমি শুধুই আমার...
জয়া-হে তাই,,,
আমি শুধুই তোমার,,,
হইছে...???
এবার একটু শান্ত হও,,,
আর রাগটা কমাও প্লিজ...???
আর তো মাত্র দুদিন বাকি,,,
কাল গায়ে হলদু আর তার পরেরদিনই তো বিয়ে,,,
এরপর আমি পুরোপুরি তোমার হয়ে যাবো,,,

আমাদের মাঝে আর কোনো বাঁধা থাকবে না তাইনা...???
আদিত্য-হে,তুমি ঠিকই বলেছো,,,
এর আগের বার বিয়ের সময় যা হয়ে ছিলো,,,
এবার আর আমি তা কিছুতেই হতে দেবো না,,,
আমি আমাদের বিয়েতে এবার আর,,,
কোনো কিছুরই কমতি রাখবো না...
ধুমধাম করে আমি এবার আমাদের বিয়ের আয়োজন করবো...
জয়া-ওসব তো পরে হবে,,,
কিন্তু এখন তুমি এভাবে গাল ফুলিয়ে না রেখে,,,
এবার একটু হাসো তো প্লিজ...???
আদিত্য হেসে জয়াকে বললো-i love you so much...!!!
জয়া-i love you toooo...

পরেরদিন,,,
কমিউনিটি সেন্টারে,,,
আদিত্য আর জয়ার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হচ্ছে,,,
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সবাই খুব নাচ-গান করছে...
খুশি,নীলা,সিহাব,রাজন ফাটিয়ে ডান্স করছে,,,
এমন কি জয়ার মামা-মামিরাও আনন্দে সবাই ডান্স করছে...
ডান্স শেষে সবাই কথাবার্তা বলছিলো,,,
এই সুযোগে মিসেস মেহরাব,,,
আদিত্যকে আড়ালে ডেকে নিয়ে,,,
আদিত্যর হাতে সেই ফাইলটা দিয়ে বললেন-বাবা...???
এটার আর কোনো দরকার নেই,,,
আমার তোমার উপরে এমনিতেই ভরসা হয়ে গেছে,,,
তুমি এটা ফিরিয়ে নাও...
আদিত্য জবাবে বললো-না আন্টি,,,
এটা আপনি আপনার কাছেই রেখে দিন...
মিসেস মেহরাব-না বাবা,,,
তা হয়না,,,

এই ফাইলটা আমার কাছে একটা বোঝার মতো লাগছে,,,
তুমি এটা নিজের কাছেই ফিরিয়ে নাও,,,
আর সবকিছু আবার আগের মতই নিজের নামে করে নাও...
আদিত্য-প্লিজ আন্টি...???
আমাকে এই ফাইলটা আর ফেরত নিতে বলবেন না,,,
আমি একবার যখন সবকিছু জয়ার নামে লিখে দিয়েছি,,,
তো এটা আর এখন ফেরত নিতে পারি না...
মিসেস মেহরাব-কিন্তু...???
আদিত্য-না আন্টি,,,
আর কোনো কিন্তু নয়,,,
তাছাড়া জয়া আর আমার বিয়ে হবার পরে,,,
এগুলো জয়া বা আমার নামে থাকার মধ্যে,,,
কোনো পার্থক্যই আর থাকবে না,,,
আমার যা কিছু,,,

তা তো এমনিতেই জয়ার হবে,,,
দুটোই একই কথা...
মিসেস মেহরাব-এতদিন আমি তোমাকে অনেক ভুল বুঝেছি বাবা,,,
পারলে আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও...
আদিত্য-প্লিজ আন্টি...???
এইভাবে আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে,,,
আপনি নিজেকে ছোট করবেন না,,,
দোষ আমারও ছিলো...
মিসেস মেহরাব-জয়া সত্যিই খুব ভাগ্যবতী,,,
যার কারনে তোমার মতো একজনকে ও,,,
স্বামী হিসেবে পেতে চলেছে...
আদিত্য-আপনি শুধু দোয়া করবেন আমাদের জন্য,,,
সবাই আমাদের খুঁজবে,চলুন...

মিসেস মেহরাব-হে চলো...
এদিকে খুশি জয়াকে বললো-দিদি...???
একটা কথা না বললেই নয়,,,
তোর বিয়েতে এত আয়োজন করতে,,,
দুলাভাই দুহাতে অনেক টাকা খরচ করছে,,,
কোনো কিছুর এরেজমেন্ট করতে বাকি রাখেনি,,,
যেমন ডেকোরেশন,তেমন খাবারের আয়োজন...
নীলা-হে,,,
আজ তো শুধুমাত্র হলুদেই এতকিছুর আয়োজন করেছে,,,
না জানি কাল বিয়েতে কি এলাহি আয়োজন করবে...
খুশি-সেটা তো কাল বিয়েতেই দেখা যাবে,,,
কিন্তু দিদি একটা কথা,,,

দুলাভাই এর আগের বার বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গিয়ে ছিলো,,,
এইবার কিন্তু আমরা তা আর হতে দেবো না,,,
এবার আমরা দুলাভাইকে বিয়ের আসর থেকে কোথথাও যেতে দেবো না...
খুশি এটা বলে খিলখিল করে হাসতে লাগলো,,,
জয়া আর নীলাও খুশির কথা শুনে হাসাহাসি করলো...

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com