Breaking News

জয়া ও আদিত্য এর রোমান্টিক প্রেমের গল্প। পর্ব - ৫১



থাপ্পড় খেয়ে আদিত্য চুপচাপ নিজের ঘরে চলে এলো,,,
আদিত্য বিছানায় বসে টিভি দেখতে লাগলো,,,
একটার পর একটা চ্যানেল রিমোট দিয়ে ঘুরাচ্ছে আদিত্য,,,
কিন্তু কোনো কিছুই আদিত্যর ভালো লাগছে না...
আদিত্য রিমোট দিয়ে টিভিটা বন্ধ করে,রাজনকে ফোন করলো...
রাজন-হ্যালো ভাই...???
আদিত্য-মনিরের নাম্বারটা যোগাড় করতে বলে ছিলাম,যোগাড় হয়েছে...???
রাজন-জি ভাই...
আদিত্য-Very Good!!!
আমাকে মেসেজ করে নাম্বারটা পাঠিয়ে দাও...
রাজন মেসেজ করে মনিরের নাম্বারটা আদিত্যকে পাঠিয়ে দিলো,,,
আদিত্য নাম্বার পেয়ে সাথে সাথে মনিরকে কল দিলো...
মনির-হ্যালো কে বলছেন...???
আদিত্য-আমি তোর দুলাভাই বলছি,শালা...
মনির-কোন দুলাভাই...???
আদিত্য-আদিত্য খাঁন...!!!
মনির-কি চাই...???

আদিত্য-চুপচাপ আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন শালা,,,
জয়া আমার বউ হয়,,,
আর তোর বোন হয়,,,
আজকের পর,তুই যদি আমার বউয়ের দিকে তাঁকাস,,,
তো তোর হাত-পা ভেঙে লুলা করে দেবো,,,
তখন আর অন্য কোনো মেয়েকেও তুই বিয়ে করতে পারবি না...
মনির ভয়ে পেয়ে বললো-কিইইইহ...???
আমাকে ভয় দেখাচ্ছো নাকি হে...???
আদিত্য-চুপ শালা,,,
আর একটা কথা বললে না,,,
তোর কানের নীচে মারবো একটা...
শোন,জয়ার বাড়িতে ফোন করে বলবি যে,,,
তুই এই বিয়েটা করতে চাস না...
মনে থাকবে....???

মনির-এইইই আমাকে কি হুমকি দিচ্ছেন নাকি আপনি...???
আদিত্য-এখন তো স্রেফ হুমকি দিলাম,,,
কাল যদি তুই এই বিয়ে ভেঙে না দিস,,,
তাহলে তোর যে কি অবস্থা করবো,,,
তা তুই নিজেও বুঝতে পারছিস না...
ভালো চাস যদি,যা বললাম তাই কর শালা,,,
আদিত্য লাইনট কেটে দিলো,,,
মনির ভেবে দেখলো,,,
আদিত্যর সাথে ঝামেলা করে লাভ নেই...
তাই সে ঠিক করলো,,,
কাল সকালেই মিসেস মেহরাবকে ফোন করে সব জানিয়ে দেবে...
পরেরদিন,,,
মিসেস মেহরাব চিল্লাচিল্লি করে সারা বাড়ি মাথায় করলেন...
হাঁকাহাঁকি শুনে,জয়া সহ পরিবারের সবাই ড্রয়িং রুমে চলে এলো...
মিষ্টার মেহরাব-কি হলোটা কি তোমার...???
সকাল বেলাই এত চিল্লাচিল্লি শুরু করলে কেনো...???
মিসেস মেহরাব-চিল্লাচিল্লি করবো না তো কি চুপ করে থাকবো...???
মিষ্টার সোরাব-ভাবি...

কি হয়েছে সেটা তো বলবে নাকি...???
মিসেস মেহরাব-মনির ফোন করে ছিলো,,,
ওই আদিত্য নাকি মনিরকে হুমকি দিয়েছে,,,
মনির যাতে জয়াকে না বিয়ে করে...
আর মনির তাই এ বিয়ে করবে না বলে সাফ মানা করে দিয়েছে...
কথাটা শুনে সবাই চমকে উঠলো...
মিষ্টার সোরাব-কিইইহ...???
ওই আদিত্য পেয়েছেটা কি...???
নিজেকে কিভাবে ও...???
ফিল্মের হিরো ভাবে নাকি নিজেকে যে,,,
যা ইচ্ছা তাই করবে ও...???
মিসেস মেহরাব-ফিল্মের হিরোই ভাবে নিজেকে,,,
যখন মন চাইবে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যাবে,,,
নিজেও বিয়ে করলো না,,,
এখন আবার অন্য কাউকেও জয়াকে বিয়ে করতে দেবে না...
মিষ্টার সোরাব-এই রকম বদমাশ,একরোখা ছেলে আমি জীবনে দেখিনি,,,
যেদিন থেকে ও জয়ার জীবনে এসেছে,,,
সেদিন থেকে একটার পর একটা ঝামেলা করেই যাচ্ছে,,,
মনে হচ্ছে মেরে ওর হাত-পা ভেঙে দেই...
মিসেস মেহরাব,জয়াকে বললেন-জয়া...???
যা কিছু হয়ে যাক না কেনো,,,

তুই কিন্তু কিছুতেই আর ওই ছেলের সাথে কথা বলবি না,,,
ওর থেকে তুই একদম দূরে দূরে থাকবি...
তোর সাথে কথা বলার জন্য ও হয়তো,,,
আরো অনেক নতুন নতুন নাটক শুরু করবে,,,
তুই কিন্তু খবরদার ওর ধারে কাছেও যাবি না...
জয়া-বড় মামি...???
আমার উপরে তোমরা প্লিজ ভরসা রাখো,,,
আমি এমন কিছুই করবো না,,,
যাতে তোমাদেরকে আর ছোট হতে হয়...
মিসেস মেহরাব-যাক,তোর কথা শুনে আশস্ত হলাম,,,
ওই আদিত্যকে তো আমি পরে দেখে নেবো,,,
এখন ফুড ট্রাক খুলতে দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,
চলো সবাই...

জয়া আর তার পরিবার ফুড ট্রাক খুলতে,,,
আদিত্যর রেস্টুরেন্টের সামনে এলো...
এদিকে আদিত্য আজ,,,
রেস্টুরেন্টের বারান্দায়ই চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেছে...
যাতে করে জয়াকে সরাসরি দেখা যায়...
জয়া আর তার পরিবার আসা মাত্রই,,,
আদিত্য জয়াকে দেখতে শুরু করলো...
মিসেস সোরাব সেটা খেয়াল করে বললেম-দেখো,আজ একেবারে রেস্টুরেন্টের বাইরেই এসে বসেছে...
মিসেস মেহরাব-আর দেখো,কিভাবে শকুনের মত জয়ার দিকে তাঁকিয়ে আছে...
জয়া নিজের উড়না দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টা করলো,,,
মিসেস মেহরাব-জয়া...???
তুই ফুড ট্রাকের ভেতরে যা তো,,,

তাহলে তোকে আর অত দেখতে পারবে না ও...
জয়া ফুড ট্রাকের ভেতরে যাবে,,,
এমন সময় খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি অফিসার ও পুলিশের লোকজন এলো......
সেটা দেখে আদিত্যও একটু চমকে গেলো,,,
মিষ্টার মেহরাব-আপনারা এখানে...???
কি হয়েছে...???
সরকারি অফিসার-আপনাদের ফুড ট্রাক বন্ধ করার নোটিশ নিয়ে এসেছি আমরা...
মিষ্টার সোরাব-কিইইইহ...???
সরকারি অফিসার-জি,,,

রাস্তার মধ্যে এভাবে বিনা লাইসেন্স ছাড়া খাবারের দোকান বসানো সম্পূর্ণ বে-আইনি কাজ,,,
তাছাড়া আপনারা এই ফুড ট্রাকের জন্য কোনো সরকারি অনুমোদনও নেননি,,,
তাই এই ফুড ট্রাক আমরা আটক করে,,,
পুলিশ কাস্টমে নিয়ে যেতে এসেছি...
জয়া হাত জোর করে বললো-প্লিজ,আপনারা এটা নিয়ে যাবেন না,,,
এই ফুড ট্রাকের উপর নির্ভর করে,,,
আমাদের পুরো সংসার চলে...
দেখুন,আপনারা যেভাবে বলবেন,,,
আমরা সেভাবেই নিয়ম-নীতি মেনেই এই ফুড ট্রাক চালাবো...
সরকারি অফিসার-দেখুন,এসব বলে কোনো লাভ নেই,,,
বিনা লাইসেন্সে আমরা কিছুই করতে পারবো না...

তবে হে,কালকে খাদ্য অধিদপ্তরের কিছু নিয়ম মেনে লাইসেন্স ও ট্রেনিং ট্রেনিং দেওয়া হবে,,,
আপনারা চাইলে ওখানে গিয়ে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন...
জয়া-কিসের ট্রেনিং এটা...???
সরকারি অফিসার-এই ধরুন হঠাৎ করে এই ফুড ট্রাকে আগুন লাগলে,কিভাবে নেভাবেন,,,
এসব ট্রেনিং দেওয়া হবে...
আপনারা কাল ওখানে গিয়ে লাইসেন্স আর ট্রেনিং নেওয়ার পরই,,,
আমরা এই ফুড ট্রাক আপনাদের ব্যবহার করতে দিতে পারি...
জয়া-ঠিকাছে,আমরা রাজি আছি,,,
আমরা লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ওখানে যাবো...

পরেরদিন,,,
খাদ্য অধিদপ্তরের অফিসে জয়া আর মিষ্টার সোরাব এলো,,,
সরকারি অফিসার তাদের নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে বললেন...
মিষ্টার সোরাব-এই জয়া...???
এসব ইংরেজিতে কি ছাতা মাথা লেখা আছে এখানে...???
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না...
জয়া-ছোট মামা...???
আমি আছি কেনো...???
আমি তোমাকে শিখিয়ে দিচ্ছি দাঁড়াও...
জয়া,মিষ্টার সোরাবকে সব শিখিয়ে দিলো,,,
তারপর ফর্ম পূরণ করে দুজনেই জমা দিলো...
সরকারি অফিসার-আপনাদের সবাইকে আলাদা দু দলে ভাগ করে ট্রেনিং দেওয়া হবে,,,
একই পরিবারের লোক,একই দলে থাকতে পারবেন না...
মিষ্টার সোরাব-এটা কি বলছেন...???
জয়া,আমার ভাগ্নি হয়,,,

আমরা দুজন এক দলেই থাকবো...
সরকারি অফিসার-নিয়মের বাইরে গেলে,লাইসেন্স দেওয়া হবে না কাউকে...
জয়া-ছোট মামা...???
কিছু করার নেই,নিয়ম মেনে নিতে হবে...
মিষ্টার সোরাব-ঠিকাছে,তুই এখানে একটু দাঁড়া,,,
আমি তোর মামিকে ফোন করে জানিয়ে দিয়ে আসছি যে,,,
আমরা এখানে ঠিকমতো পৌঁছে গেছি...
মিষ্টার সোরাব একটু দূরে যেতেই,,,
রাজন ওনাকে ধরে নিয়ে গিয়ে পাশেই একটা ঘরে আটকে রাখলেন...
আদিত্যও ফর্ম জমা দিতে এসেছে,,,
আদিত্য রাজনকে ভিডিও কল দিলো-হে,রাজন...???
কাজ হয়ে গেছে..

রাজন-জি ভাই,এই দেখুন আপনার মামা শশুড় চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিয়েছে...
আদিত্য-শোনো,সোরাব আংকেলের যেনো কোনো অসুবিধা না হয়,,,
ওনি আমার মামা শশুড় হয় কিন্তু...
জয়ার সাথে কথা বলার জন্যই আমি ওনাকে এভাবে আটকে রাখতে বলেছি,,,
ওনার যেনো ওখানে কোনো রকম অসুবিধা না হয়...
রাজন-কোনো অসুবিধা হবে না ভাই,,,
আপনি একদম নিশ্চিন্তে থাকুন,,,
আর ভাবির সাথে কথা বলুন যান...
আদিত্য-ঠিকাছে,রাখছি এখন...
এদিকে ছোট মামাকে দেখতে না পেয়ে,,,
জয়া ফোন করে খুঁজতে লাগলো...
কিন্তু সরকারি অফিসার জয়াকে ধমক দিয়ে বললো-এখানে ফোন ব্যবহার করা নিষেধ,,,
ফোনটা আমার কাছে জমা দিন,,,
পরে ফেরত নিয়ে যাবেন...

সরকারি অফিসার সবাইকে দুটো দলে ভাগ করলো,,,
প্রত্যেক দল থেকে একজন করে নিয়ে জুটি বাঁধা হলো...
আদিত্য আর জয়া ভিন্ন দলে ছিলো,,,
কিন্তু ভাগ্যক্রমে,দুজনের একসাথে জুটি হয়ে গেলো...
আদিত্যকে দেখে জয়া চমকে উঠলো,আর সরকারি অফিসারকে বললো-স্যার...???
আমি ওনার সাথে পার্টনার হতে চাই না...
আদিত্য মুচকি হেসে জয়ার কানের কাছে গিয়ে বললো-এক্ষনি আমি ডাকলে,,,
এখানকার সবগুলো মেয়েই চলে আসবে,আমার পার্টনার হওয়ার জন্য... দেখতে চাও...???
wait দেখাচ্ছি,,,

আদিত্য অন্য দলের মেয়েদের বললো-তোমাদের মধ্যে কে আমার পার্টনার হতে চাও...???
প্রায় সব মেয়েই আদিত্যর সাথে পার্টনার হতে রাজি হলো...
সেটা দেখে জয়ার খুব হিংসা লাগলো, আর জয়া সরকারি অফিসারকে সাথে সাথে বললো-স্যার...???
ওনার সাথে পার্টনার হতে আমার কোনো প্রব্লেম নেই,,,
আমি রাজি...
আদিত্য আর জয়া এক জায়গায় এসে দাঁড়ালো,,,
সরকারি অফিসার-ওকে প্রথমে কারা ট্রেনিং নিতে চান...???
আদিত্য,জয়ার হাত ধরে তুলে বললো-আমরা চাই...
সরকারি অফিসার-ওকে মিষ্টার আদিত্য,,,
আপনি মিস জয়াকে ফায়ার সার্ভিসের জ্যাকেট পরিয়ে দিন,,,
আর মিস জয়ার চুলগুলোও বেঁধে দিন...
আদিত্য,জয়ার কাছে গিয়ে চুলগুলো ধরতেই,,,
জয়ার চুলের সুবাস এসে আদিত্যর নাকে ঢুকলো...
আদিত্য ফিসফিস করে জয়ার কানের কাছে গিয়ে বললো-কি শেম্পু ইউজ করো তুমি যে,তোমার চুলে এত সুন্দর ঘ্রাণ...

জয়া-আদিত্যকে একটা ভেংচি দিয়ে বললো-চুপ...
আদিত্য তারপর জয়াকে ফায়ার সার্ভিসের জ্যাকেট পরিয়ে দিলো...
এরপর সরকারি অফিসার,জয়াকে বললো-মিস জয়া...???
রান্না করার সময় আগুন লাগলে,,,
কিভাবে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়...???
সেটা দেখান তো এই গ্যাস সিলিন্ডারের সাহায্যে...
জয়া অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে গ্যাসটা চালু করতেই,,,
সেটা গিয়ে আশেপাশের সবাই সহ,সরকারি অফিসারের মুখে এসে পরলো...
সরকারি অফিসার রেগে গিয়ে বললো-এভাবে আগুন নেভাবেন আপনি...???
জয়ার মুখটা শুকিয়ে গেলো,,,

আদিত্য সেটা দেখে বললো-Sorry স্যার,,,
প্রথম তো,তাই আমার পার্টনার হয়ত একটু ভুল করে ফেলেছে,,,
আমি ওকে সবকিছু শিখিয়ে দিচ্ছি...
এদিকে ট্রেনিং নিতে আরমান আর মিলনও এসেছে,,,
ওরা দুজন আদিত্য আর জয়ার এসব দেখে জ্বলতে লাগলো...
মিলন-দেখেছিস,দুজনে কিভাবে রোমান্স করছে...???
আরমান-করতে দে...
সেদিন আমাদের খুব মেরে ছিলো না এই আদিত্য...???
আজ তার প্রতিশোধ নেবো...
মিলন-কিভাবে...???
আরমান-আজ সবাই ট্রেনিং নেওয়ার জন্য এখানেই থাকবে রাতে,,,
সন্ধ্যার পরে দেখ এদের দুজনের আমি কি হাল করি...
সারাদিন পর,,,

এদিকে মিষ্টার সোরাবকে রাজন খাবার খেতে দিয়ে বললো-আংকেল,আপনি এগুলো খেয়ে নিন,,,
আমি ১০ মিনিট একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছি...
রাজন বিছানায় শুয়ে পরলো,,,
এই সুযোগে মিষ্টার সোরাব,মিসেস মেহরাবকে ফোন করে বললো-ভাবি...???
যা বলছি চুপচাপ আগে শোনো,,,
আদিত্য ট্রেনিং-এর এখানে এসেছে,,,
আর ওর ভাই রাজনকে দিয়ে আমাকে একটা ঘরে আটকে রেখেছে...
মিসেস মেহরাব-কিইইইহ...???
মিষ্টার সোরাব-হে,তোমরা তারাতারি এখানে চলে এসো...
মিষ্টার মেহরাব-হে,হে,আমি এক্ষুনি তোমার ভাইকে নিয়ে চলে আসছি...
সারাদিন বিভিন্ন ট্রেনিং দেওয়া হলো,,,
সন্ধ্যার পর,,,

আদিত্য একটা ফোন করতে বাইরে এলো,,,
এই সুযোগে আরমান আর মিলন প্লান করে জয়ার কাছে একটা লোক পাঠালো...
লোকটা জয়াকে এসে বললো-ম্যাম...???
আদিত্য স্যার আপনাকে ডাকছেন,,,
ওনি আপনার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন,,,
প্লিজ আসুন আমার সাথে...
অনিচ্ছা সত্যেও জয়া লোকটার সাথে বাইরে এলো,,,
লোকটা চলে গেলো জয়ার পেছন থেকে...
জয়া,আদিত্যকে ডাকতে লাগলো,,,
আড়াল থেকে আরমান আর মিলন,মাতাল অবস্থায় মদের বোতল হাতে নিয়ে বেড়িয়ে এলো...
জয়া ভয় পেয়ে বললো-তোমরা এখানে...???
আরমান-কেনো,ওই আদিত্যর চেয়ে আমরা কম কিসে...???
হা...হা...হা...

জয়া-দেখো,ভালো হবে না কিন্তু,,,
আমাকে যেতে দাও...
আরমান-কোথায় যাবে এত তারাতারি...???
চলো,আজ রাতটা আমরা খোলা আকাশের নীচে একটু ইনজয় করি...
জয়া-বাঁচাও...বাঁচাও...বলে চিৎকার করলো...
মিলন-কেউ বাঁচাতে আসবে না এখানে,,,
হা...হা...হা...
আরমান,জয়াকে ধরার জন্য হাত বাড়াতেই,,,
আদিত্য এসে আরমানের হাত চেঁপে ধরে এক ঘুসি মারলো...
শুরু হলো তমুল মারামারি,,,
আদিত্য-তোকে বলে ছিলাম না,আর কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে না তাঁকাতে...???
আদিত্য,আরমানকে কতগুলো এলোপাথাড়ি ঘুষি মারতে লাগলো,,,
কিন্তু পেছন থেকে,মিলন মদের বোতল দিয়ে আদিত্যর মাথায় জোরে আঘাত করতেই,,,
আদিত্য অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে গেলো...
জয়া চিৎকার করে উঠে দেখলো,,,,

আদিত্যর মাথায় কেটে গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে...
আরমান আর মিলন জয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে একটু দূরে নিয়ে গেলো,,,
জয়া কাঁদতে কাঁদতে,আদিত্যকে ডাকতে লাগলো...
মিলন-একে নিয়ে আমরা এখন কোথায় যাবো...???
আরমান-একটু দূরেই এখানে একটা জংগল আছে,,,
ওখানে গেলে কেউ কিচ্ছু টের পাবে না...
নে এবার ওকে নিয়ে তারাতারি গাড়িতে উঠে পর...
পথে এক লোক,আরমান আর মিলনকে,গাড়ি চালিয়ে যেতে দেখলো...
একটু সামনে এগুতেই লোকটা আদিত্যকে মাটিতে পরা অজ্ঞান অবস্থায় দেখলো...
লোকটা পানি সংগ্রহ করে আদিত্যর মুখে ছেটাতেই,,,
আদিত্যর জ্ঞান ফিরে এলো...

জ্ঞান ফিরেই আদিত্য জয়ার উড়নাটা মাটিতে পরা দেখলো,,,
আদিত্য,লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো-এখানে একটা মেয়ে ছিলো,দেখেছেন আপনি...???
লোকটা জানালো যে সে,একটা মেয়েকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে দেখেছে,দুজন ছেলেকে...
মাটি থেকে জয়ার উডনাটা তুলে আদিত্য নিজের মাথায় বেঁধে নিলো,,,
তারপর গাড়ি নিয়ে লোকটার দেখানো পথে বেড়িয়ে পরলো...
এদিকে আরমান আর মিলন জংগলের কাছে গাড়ি থামিয়ে,,,
জয়াকে জংগলের মধ্যে টেনে নিয়ে গেলো...
তারপর জয়ার সাথে জবরদস্তি করতে চেষ্টা করলো,,,
আদিত্য এসে ওদের গাড়ি দেখে থামলো...
তারপর আদিত্য গিয়ে পেছন থেকে,,,
আরমান আর মিলনকে আবারও মারতে শুরু করলো...
আদিত্য,মিলনকে ধরে মারছে,,,

ঠিক এই সময় আরমান মদের বোতল ভেঙে,ভাঙা টুকরো নিয়ে,,,
আদিত্যকে মারার জন্য পেছন থেকে আসছিলো...
জয়া সেটা দেখে দৌড়ে আদিত্যর কাছে যেতেই,,,
আরমান,আদিত্যর বদলে,জয়ার পেটের মধ্যেই বোতলের ভাঙা টুকরো ঢুকিয়ে দিলো...
জয়া-আদিত্য বলে চিৎকার করে উঠলো,,,
জয়া মাটিতে পরে যাচ্ছিলো,আদিত্য ধরে ফেললো জয়াকে...
জয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেললো,,,
আরমান আর মিলন এই সুযোগে পালিয়ে গেলো...
আদিত্য জয়াকে এই অবস্থায় দেখে পাগলের মত বলতে লাগলো-জয়া...???
উঠো,কথা বলো আমার সাথে...
কি হয়েছে তোমার..

এত তারাতারি আমাকে ছেড়ে তুমি চলে যেতে পারো না...!!!
এখনো তো তোমাকে অনেক কথা বলার বাকি আছে আমার,,,
প্লিজ,,,চোখ খোলো...
তোমার সাথে আমার এখনও অনেক হিসাব বাকি আছে,,,
কিচ্ছু হতে দেবো না আমি তোমার...
আদিত্য,জয়াকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির ভেতরে শুইয়ে দিলো,,,
তারপর আদিত্য গাড়ি চালিয়ে হসপিটালে চলে এলো...
ডক্টর জয়াকে ওটিতে নিয়ে গেলো,,,
আদিত্য ফোন করে রাজনকে সব জানালো,,,
রাজন,মিষ্টার সোরাবকে সবকিছু বলে দিলো...
মিষ্টার সোরাব সব শুনে,তারাতারি মিসেস মেহরাবকে ফোন করে সব জানিয়ে দিলেন...
খবর পেয়ে,হসপিটালে জয়ার পুরো পরিবার চলে এলো...
মিষ্টার সোরাব,আদিত্যর দেখামাত্রই কলার চেঁপে ধরে বললেন-তোর জন্যই আজ জয়ার এই অবস্থা...!!!
আজ যদি জয়ার কিছু একটা হয়ে যায়,,,
তাহলে তোকে আমরা ছাড়বো না,,,
কথাটা ভালো করে মনে রাখিস...

মিসেস খুশবু আর সিহাব,ওনাকে আদিত্যর কাছ থেকে দূরে সড়িয়ে নিয়ে গেলো...
রাজন দেখলো,আদিত্যর মাথায় রক্তের দাগ,,,
তাই সে জোর করে আদিত্যকে ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য ইমারজেন্সি রুমে নিয়ে গেলো...
আদিত্য ব্যান্ডেজ নিয়েই জয়ার কাছে ছুটে এলো,,,
একটুপর ডাক্তার এসে জানালো,,,
জয়ার অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে,,,
জয়া এখন বিপদমুক্ত,তবে পেটের ঘা শুকাতে সময় লাগবে...
পরেরদিন,,,
হসপিটাল থেকে রিলিজ নিয়ে জয়াকে তার পরিবার,বাড়িতে নিয়ে এলো...
এদিকে জয়াকে দেখার জন্য,আদিত্য জয়ার বাড়িতে আসতেই,,,
জয়ার পরিবার খুব রেগে গেলো...
মিসেস মেহরাব ক্ষেপে গিয়ে আদিত্যকে বললেন-আবার কেনো এসেছিস এখানে...???
জয়ার এই অবস্থা করেও তোর শান্তি হয়নি...???
আর কি চাস তুই...???
আদিত্য-দেখুন আন্টি,,,

এইসব কিছুর জন্য দায়ি আরমান আর মিলন,,,
আমি কিছুই করিনি...
আন্টি প্লিজ...???
আমাকে শুধু একবার জয়াকে দেখতে দিন...
মিষ্টার সোরাব-তুইই এই সব কিছুর জন্য দায়ি,,,
রাজনকে দিয়ে তুই আমাকে আটকে রেখে,জয়ার সাথে কথা বলতে চেয়ে ছিলি...
আরমান আর মিলন,তোকেই মারতে গিয়ে ছিলো,,,
মাঝখানে জয়া এসে পরায়,আজ জয়ার এই অবস্থা হয়েছে,,,
তাই সবকিছুর জন্য তুইই দায়ি...!!!
আদিত্য-আংকেল প্লিজ,,,

আমাকে একবার জয়ার সাথে দেখা করতে দিন...???
মিসেস মেহরাব-তোকে আর কতবার বলবো,জয়ার থেকে দূরে থাকতে...???
তুই কি বুঝতে পারছিস না যে,,,
তোর কারনেই জয়ার আজ এই অবস্থা...???
চলে যা এখান থেকে...
আদিত্য রেগে গিয়ে বললো-জয়াকে না দেখে আমি কোথথাও যাবো না...
আদিত্য জোর করেই জয়ার রুমে চলে এলো,,,
জয়া বিছানায় শুয়ে আছে...
আদিত্যকে দেখে জয়া বিছানা থেকে উঠতে চেষ্টা করলো,,,
কিন্তু পেটে ব্যাথা থাকার কারনে জয়া উঠতে পারছে না...
আদিত্য গিয়ে জয়ার পাশে বসে,জয়ার হাত ধরে বললো-তুমি ঠিক আছো তো...???
জয়া-হে...ঠিক আছি...
খুশি আদিত্যকে বললো-যাঁরা দিদির এই অবস্থা করেছে,,,
তুমি তাদের ছেরে দিও না...

জয়াও কেঁদে কেঁদে বললো-যাঁরা আমার সাথে এটা করেছে,,,
আমি চাই তাদের এমন অবস্থা হোক,,,
যাতে কোনও দিনও আর কোনো মেয়ের সাথে,,,
ওরা এসব না করতে পারে...
জয়ার কথাগুলো আদিত্যর কানে যেতেই,,,
আদিত্য বেড়িয়ে গেলো আরমান আর মিলনকে ধরতে...
এদিকে মিসেস কবিতা,আরমান আর মিলনকে টিকিট কেটে দিয়ে বললেন-যা তোরা কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে থাক,,,
এদিকে আমি সব সামলে নিয়ে তোদের পরে খবর দেবো,,,
তার আগে এ মুখো হবি না তোরা...
আরমান-মা...

আমার খুব ভয় করছে...
মিসেস কবিতা-কোনো ভয় নেই,,,
তোদেরকে কেউ ধরতে পারবে না,যা...
আদিত্য গাড়ি নিয়ে এসে থামলো,,,
তারপর আদিত্য গাড়ি থেকে নেমেই হক স্ট্রিক দিয়ে,,,
আরমান আর মিলনকে ইচ্ছামতো পেটালো...
আদিত্য-আজ তোদের এমন শিক্ষা দেবো,,,
যাতে জীবনে আর কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে না তাঁকাস...
মিসেস কবিতা-এইই আদিত্য,ওদের ছেড়ে দে বলছি...
আদিত্য,গাড়ি থেকে দড়ি নিয়ে,আরমান আর মিলনকে গাড়ির সাথে বেঁধে দিলো...
তারপর আদিত্য গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসলো,,,
পুরো রাস্তা আরমান আর মিলনকে গাড়ির সাথে দড়ি বেঁধে টেনে-হিচঁড়ে নিয়ে গেলো আদিত্য...
তারপর ওদের দুজনকে জয়ার পায়ের কাছে এনে ফেললো আদিত্য,,,
আরমান আর মিলন দুজনেই জয়ার পা ধরে মাফ চাইলো...
আদিত্য,জয়াকে বললো-বলো এবার,এদের কি শাস্তি দেবো আমি...???
তুমি যদি বলো,তাহলে এক্ষনি ওদের গাড়ির তলায় পিশে মেরে ফেলবো আমি...
খুশি জয়াকে বললো-দেখ দিদি,,,

তুই একবার বলেছিস,,,
তাতেই এই কুত্তা দুটোকে তোর পায়ের কাছে এনে ফেলেছে...
দুলাভাই সত্যিই তোকে খুব ভালোবাসে...!!!
মিষ্টার সোরাব-হয়েছে...হয়েছে...
এই হারামজাদা দুটোকে,আমি এক্ষুনি ধরে থানায় নিয়ে যাচ্ছি...
মিসেস মেহরাব-আমিও থানায় যাবো তোমার সাথে...
মিসেস মেহরাব থানায় গিয়ে আদিত্য,আরমান আর মিলনের নামে FIR করলো,,,
পুলিশ,আরমান আর মিলনকে এরেষ্ট করলো,,,
আর আদিত্যকে জয়ার থেকে সব সময় ৫০ ফিট দূরে থাকার নিষেধাজ্ঞা জারি করলো,,,
নিষেধাজ্ঞা না মানলে,এরেষ্ট করার হুমকি দিলো

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com