Breaking News

বখাটে ছেলের পর্দাশীল বউ । পর্ব - ০৪



কিছুক্ষন পর আবারো সেই একি শব্দ শুনতে পায় নূর ।এবার নূর সাত-পাঁচ না ভেবেই বারান্দায় যাবার জন্য পা বাড়ায়। .
নূর আস্তে আস্তে বারান্দার দরজা খুলে বারান্দায় গেল,বারান্দার লাইট আন না করেই বারান্দার চার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো,,হঠাৎ কোন এক অবরন নূর কে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ধরে মুখ চেপে ধরলো।হঠাৎ করেই এই ঘটনা হয়াতে নূর ভয় পেয়ে যায়।নূর ভয়তে চুপ করেই দাড়িয়ে রয়েছে।সেই অবরনটা আস্তে করে বললো,,,,,

,,,,,,ভয় পেও না নূর আমি রাহাত,,,?!
নূর রাহাত এর নামটা শুনে আরো ভয় পেয়ে যায়।রাহাতে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু রাহাত নূর কে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে,,,
রাহাত: নূর চুপ-চাপ দাড়িয়ে থাকো। আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না।কেননা আমি তোমাকে ভালোবাসি,(স্লো ভয়েজে নূর এর কানে ফিস ফিস করে বললো),আমি তোমাকে এক নজর দেখতে এসেছি।এতো দিন তোমাকে দূর থেকে দেখেছি শুধু।আজ আমি তোমাকে দেখবো । আমাকে একটি বার তোমাকে দেখার শুজুক দেও নূর।
নূর রাহাত এর কথায় পাথর+অবাক হয়ে যায়,,,
নূর: হে আল্লাহ্,,,তুমি আমাকে এই ছেলেটির কাছ থেকে বাঁচাও। আমি চাই না সে আমাকে দেখুক,,সে যদি আমাকে দেখে তাহলে যে আমার গুনাহ হবে।রক্ষা কর আল্লাহ্,,,(মনে মনে বললো).
রাহাত: নূর,,,,কি আমাকে,,,(বাকি কথা বলার আগেই নূর রাহাত এর হাতে জোরে একটা কামড় দিল)..
রাহাত: আহ্হহহ,,,,(আস্তে করে আহ করে ওঠে নূর মুখের থেকে হাত সরিয়ে নিলো।নূর রাহাত কে সর্বশক্তি দিয়ে জোরে এক ধাক্কা দিয়ে রুমে দিকে দৌড় দিল,,রুমে গিয়ে তাড়াতারি করে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় গিয়ে খাঁতা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। নুর এর বুকের ভিতর ধুক ধুক শব্দ হতে লাগলো। অনেক ভয় পেয়ে গেছে নূর).

নূর: হে আল্লাহ্ তুমি আমাকে বাঁচিয়েছো,,,তোমার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া,,, (মনে মনে বললো).
রাহাত: ওহহ নূর তুমি তো দেখছি অনেক দুষ্ট সভারেব মেয়ে।বাবা রে হাতটা আমার কেটে দিয়ে গেল।যাক এটা আমার ভালোবাসার প্রথম নিশানা,,(বাঁকা হেসে বললো).
রাহাত আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করে নূরদের বারান্দা থেকে চলে গেল।নূর ঐ অবস্থায় ঘুমিয়ে গেল।
সকালে,,
নূরের ঘুম ভাঙলো ওর মায়ের ডাকে।নূর ওঠে বসে রাতের কথা ভাবতে লাগলো,,,
নূর: আমি তো ফজরের নামাজ আদায় করতে পারি নি।আমার এখন নামাজ কাজা পড়তে হবে।সে কাল রাতে কেন আসলো।আর আর সে কি বললো,আমাকে সে ভালোবাসে।তাও আবার আমাকে না দেখে।(মনে মনে).
নূর কিছুক্ষন এই সব ভাবার পর,ওঠে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নাস্তা সেরে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো।নূরের সাথে ওরা তিন জনও ছিল,,নূর ওদের সাথে কাল রাতের বিষয়ে কিছু বললো না।সেই দোকানের সামনে এসে দেখে,রাহাত দোকানের সামনের বেঞ্চে বসে আছে। রাহাত কে দেখে মনে হচ্ছে সারা রাত ঠিক মতো ঘুম হয় নি।

রাহাত: নূর তোমার জন্য সারা রাত ঘুম হয় নি আমার।তোমার নেশা চেপে গেছে আমার,,তাই তাড়াতারি বাসা থেকে চলে আসলাম তোমাকে এক নজর দেখার জন্য,,(মনে মনে বলে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূর এর দিকে)
নূর রাহাত এর দিকে না তাকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে সোজা হেঁটে যেতে লাগলো।নূরেরা মাদ্রাসায় পৌছে গেল।ক্লাস শেষ করে নূর,রাহিমা,লিজা,রাবেয়া এক সাথে বাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো।সেই দোকানের সামনে আসার পর রাহাত এসে ওদের পথ আটকে দাড়ালো।রাহাত কে দেখে ওরা একটু ঘাবড়ে গেল,,,,
রাহাত: তোমরা তিন জন চলে যাও,,আমি নূরের সাথে আলাদা কথা বলতে চাই।(গম্ভীর গলায়).
নূর: পথ আটকে দাড়িয়ে থাকাটা অবশ্যই ভদ্রতার কাজ নয়।মেয়েদের পরপুরুষের সাথে কথা বলাটা ইসলামের শরিয়তে জায়েজ নেই। তাই আমি চাচ্ছি‌না আপনার সাথে কথা বলতে।আর আপনার যদি কিছু বলার থাকে তাহলে আপনি আমার বাবার কাছে বলতে পারেন।আসা করি আমার কথাটা বুঝতে পেরেছেন,,(মাথা নিচু করে বলে রাহাত এর পাশ কাটিয়ে চলে গেল).
রাহাত নূর এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়লো।
রকি: ভাই,,,ভাবি কিন্তু ঠিক বলেছে। আপনে ভাবির বাবার সাথে কথা বলেন,,আপনার আর ভাবির বিয়ের ব্যাপারে।(রাহাত এর কাছে এসে মৃদ স্বুরে বললো).
রাহাত: হুমম,,,,কাল আমি নূর এর বাসায় যাবো।ওর বাবার সাথে আমার আর নূরের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবো।,,(গম্ভীর স্বুরে বললো).
রাহাত এর কথা শুনে সবাই একটু খুশি হলো,,,
রাহিমা: নূর আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম রে,,(ভাঙা স্বুরে বললো).
লিজা: আমিও..।
নূর: সব সময় ভয় কে জয় করে চলতে হবে।আর বিপদের সময় আল্লাহ্ কে সরন করবে,,তিনি আমাদের রক্ষা করবেন,(মৃদ স্বুরে বললো).
রাবেয়া: নূর তুমি অনেক কিছু যানো।তোমার কাছ থেকে শিক্ষার দরকার আমাদের,, ।
নূর: হয়েছে,,, এবার যে যার বাসায় যাও,,।
রাহিমা: হুমমম।

পরের দিন রাহাত,রকি,জিয়ান,রনি ওরা চার জন মিলে নূর দের বাসায় গেল।এলাকার লোকরা রাহাত কে নূর দের বাসায় আসতে দেখে সবার মনের ভিরত একটু খটকা লাগলো।নূর দের বাসার সামনে দাড়িয়ে কলিং বেল বাজাতেই নূর এর ছোট ভাই দরজা খুলে দিল।
রাকিব:(নূরের ছোট ভাই),,আপনারা কারা,,আর কাকে চান??(জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে).
রাহাত: তুমি কি নূর এর ভাই,,(গম্ভীর কন্ঠে).
রাকিব: হ্যাঁ! কিন্তু আপনি আমার বোনের নাম জানলেন কি করে?(ভ্রুঁ কুঁচকে বললো).
রাহাত: সেটা না জানলেও চলবে। তোমার বাবা কি বাসায় আছে??(গম্ভীর কন্ঠে).
রাকিব:জ্বী আছে,,!
রকি: আমরা তার সাথে কথা বলতে চাই??
রাকিব: আচ্ছা,, আপনারা ভিতরে আসেন,?
রাকিবের কথায় ওরা ভিতরে গেল,,
রাকিব: আপনারা বসুন আমি বাবা কে ডাক দিয়ে নিয়ে আসছি??
রাহাত: হুমম!

রাকিব ওর বাবা কে ডাক দিয়ে নিয়ে আসলো।ইমাম হোসেন গেস্ট রুমে এসে ওদের কে দেখে চৎমকে যায় ।এদিকে রকি,জিয়ান, রবি নূরের বাবা কে দেখে চৎমকে যায়,,,
ইমাম হোসেন: কি ব্যাপার তোমরা এই খানে।আমি তো কেস ওঠিয়ে নিয়েছি। তাহলে কেন এসেছো তোমরা??(ভারি কন্ঠে).
রাহাত: কিসের কেস??(ভ্রুঁ কুঁচকে).
ইমান হোসেন: কেন কয়দিন আগে যে আমি তোমাদের নামে কেস রেছিলাম সেইটা??
রাহাত ইমান হোসেন এর কথা বুঝতে পারলো।
রাহাত: তার মানে এই সেই ব্যক্তি যাকে আমি,,,শিট,,,(মনে মনে).
রকি: সেদিনের জন্য আমরা মাফ চাচ্ছি।আপনি আমাদের মাফ করে দিন।(করুম দৃষ্টিতে বললো).
ইমান হোসেন: থাক মাফ চাইবার দরকার নেয়।আর তোমরা কি মাফ চাইতে এসেছো??
রকি: হ্যাঁ! আরেকটা বিষয়ের জন্যেও এসেছি?
ইমান হোসেন: কী বিষয়,,,,।

রাহাত: আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই,(কিছু ক্ষন চোখ বন্ধ করে,হুট করে চোখ মেলে তার দিকে তাকিয়ে বলে দিল).
ইমান হোসেন: কিহ্,,,,,,,,সন্মানের সাথে বলছি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও। এই বিষয়ে আমি আর একটাও কথা বলতে চাই না।(রাগি কন্ঠে).
রাহাত: আমার কথার উওর দেন।আপনি কি নূর কে আমার সাথে বিয়ে দিবেন কি না,(রাগি গলায়).
ইমান হোসেন: কোন বখাটে ছেলের সাথে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিতে চাই না।আসা করি তুমি তোমার উওর পেয়ে গিয়েছো।এবার এখান থেকে চলে গেলে খুশি হবো??(রাগি কন্ঠে বললো).
রাহাত: বিয়ে তো আমি আপনার মেয়েকেই করবো সেটা বখাটে হয়ে করি বা ভালো হয়ে করি,,(রাগি গলায় বলে চলে যেতে নিলে ইমান হোসেন বললো).
ইমান হোসেন: তুমি যতই ভালো হও না কেনো,,আমি তোমার সাথে কোন দিনও আমার মেয়েকে বিয়ে দিবো না,,(জোর গলায়).

রাহাত ইমান হোসেনের কথা শুনে আরো রেগে গেল কিছু না বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। এতোক্ষন নূর গেস্ট রুমের কথা সব শুনেছে।নূর বুঝে গিয়েছে যে এটা রাহাত ছিল,,,,
নূর: আমার মধ্যে এমন কি আছে যা দেখে আমাকে সে বিয়ে করতে চায়।(মনে মনে).
রাহাত ক্লাবে গিয়ে মদের বোতর এর মুখ খুলেই খেয়ে শুরু করলো। রাগে রাহাত এর চোখ-মুখ থেকে আগুন বের হচ্ছে,,,,,
রকি: ভাই আপনি সান্ত হন,,,আমরা না হয় তাকে আবার বুঝিয়ে বলবো,,(মৃদ স্বুরে).
রাহাত কিছু বললো না মদ খেয়েই যাচ্ছে,,,,
পরের দিন রকি,জিয়ান, রনি,রিমন ওরা নূর এর বাবার কাছে গিয়ে বলে এবং অনেক অনুরধ করে কিন্তু ইমান হোসেন কিছুতেই এই বিয়েতে রাজি হয় নি বরং ওদের আপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে। রাহাত সব জানতে পারে। রাহাত নূর কে পাওয়ার ভূত ওর মাথায় চেপে বসেছে।

এবাবে আরো এক সপ্তাহ কেটে গেল।এই কয়দিনে রাহাত নূর এর সাথে দেখা করে নি এবং নূর ও রাহাত কে সেই দোকানে দেখে নি।হঠাৎ একদিন ইমান হোসেন বাসায় এসে দেখে নূর এখনো মাদ্রাসা থেকে ফিরে নি।ইমান হোসেন মাদ্রাসায় গিয়ে খবর নেয় খোঁজ করে কিন্তু নূর কে কোথাও খুজে পায় নি।সন্ধ্যা থেকে রাত হয়ে গেল এখনো নূর কে কোথাও খুজে পাওয়া যায় নি। এলাকার লোকেরা এতে রাহাত ও তার দলের লোকদের সন্দের করেছে।নূরের মা,ভাই ও ইমান হোসেন নূর কে খুজে না পেয়ে পাগল হয়ে যায়।সারা তার কোন রকম পার হল তাদের।

ভোর সকালে ইমান হোসেন ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে যাএয়ার উদ্দেশ্যে বাহিরের গেটে খুলে বের হয়ে দেখে,,,,?

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com