Breaking News

বখাটে ছেলের পর্দাশীল বউ । পর্ব - ০২



নূর ওদের কথায় আর দাড়ালো না সোজা ওদের সামনে গিয়ে স্ট্রেট ভাবে দাড়িয়ে আছে। ওরা সবাই নূর কে দেখে একটু আবাক হলো। নূর ওদের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,??

নূর: আসসালামু আলাইকুম,,,ভাইয়া রা আপনারা সবাই ভালো আছেন??(মৃদ কন্ঠে)
নূর এর কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেছে। এতো সুন্দর মেয়ের কন্ঠ কখনই শুনেনি ওরা।রাহাত দোকানের ভিতরে ছিল,সেখানে বসে সিগারেট এর ধোঁয়া উড়াচ্ছিল। নূর এর কন্ঠে স্বর রাহাত ভিতরে বসেই শুনতে পায়। রাহাত বেশি একটা গুরুত্ব দেয় নি।নূর ওদের চুপ থাকতে দেখে আবার বলতে লাগলো ,,,,,,

নূর: ভাইয়া আমি আপনাদের সালাম দিয়ে ছিলাম।আর একজম মুসলমান যদি আরেকজন মুসলমান ভাই বা বোন কে সালাম দেয় তাহলে নিশ্চয় সেই সালামের উওর নিতে হয়।
ওরা এখনো চুপ করেই আছে কেউ কোন কথা বলছে না,,,,
নূর: আচ্ছা ভাইয়া রা,আপনাদের মা-বোন আছে কিনা তা আমি জানি না।তবে আমরা চার জন যদি আপনাদের আপন বোন হোতাম তাহলে কি আমাদের কে এই ভাবে বাজে মন্তব্য করতে পারতেন। অবশ্যই বাজে মন্তব্য করতে পারতেন না। ইসলামের শরিয়তে এগুলা একদমি হারাম। এতে আপনাদের প্রচুন্ড গুনাহ হচ্ছে। আর এজন নারী কে কু নজরে দেখা যেমন না জায়েজ তেমন কটু কথা বলাও না জায়েজ। ইসলামিক দৃষ্টিতে মা-বোন কে শ্রদ্ধা করা উচিত। এবাবে কোন মেয়েদের সাথে অচরন করা জিনা করা সমান।

এই জন্য তার জাহান্নামের সবচাইতে ভয়ংকর শাস্তি রয়েছে। দয়া করে আপনারা বিরতো থাকেন এই সব জঘন্য কাজ থেকে।আপনারা আমাদের কে নিজের বোন মনে করেন ভাইয়া। আর এই সব কথা দয়া করে আর বলবেন না এটা আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ। আমার কথায় যদি আপমাদের খারাপ বা কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন। ভালো থাকবেন ভাইয়ারা। আসসালামু আলাইকুম,,,(নরম স্বুরে কথা গুলা বলে ওদের তিন জন এর কাছে চলে গেল এবং বাসার দিকে যেতে লাগলো),
নূর এর কথা শুনে ওরা আবাক হয়ে গেছে। কারো মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না।রাহাত ভিতরে বসে নূর এর সব কথা শুনতে পেয়েছে।রকি ওদের কাছে গিয়ে বললো,,,,
রকি: জিয়ান,রনি,রিমন আমি তোদের কে আগেই বলেছিলাম। মেয়েদের এই ভাবে টিচ করিস না।কিন্তু তোরা আমার কথা শুনিস নি।ঐ মেয়েটা যা বলে গিয়েছে এবার তোরা বুঝ যে তোরা কত বড় পাপ কাজ করছিলি এতোদিন। দেখ আমরা এমনেতেই অনেক পাপ কাজ করি। জানি না আমরা জান্নাতে যেতে পারবো কি না,,তবে একটা কাজ তো অন্তত ভালো করতে পারি। যার দারা আমরা জান্নাত পেলেও পেতে পারি।
ওরা তিন জন কোন কথা বলছে না চুপ করে আছে। ভিতর থেকে রাহাত রকি কে ডাক দিল,,,,
রাহাত: রকি এখানে আয় তো,,(জোরে ডাক দিয়ে).
রকি: জ্বী ভাই বলুন,,(রাহাত এর কাছে এসে বললো).
রাহাত: আজকেন পর থেকে ওরা যেনো কোন মেয়েকে চিট বা খারাপ কথা না বলে । যদি বলে তো আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না। যা ওদের কে বলে দে?(রাগি কন্ঠে বললো).
রকি ওদের সবাই কে রাহাত এর কথাটা বলে দেয়।ওরাও আর রাহাত এর উপর দিয়ে কোন কথা বললো না,,,
রাহাত: কে এই মেয়ে। এতো সুন্দর কন্ঠের স্বর,না জানি দেখতে কতটা মায়াবি হবে। না না আমি এগুলা কেন ভাবছি।এগুলা ভাবা যাবে না।(মনে মনে বলে সিগারেট এর ধোঁয়া উড়াতে লাগলো).
রাহিমা: নূর আমি তো অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যদি ছেলে গুলা তোর সাথে খারাপ কিছু করতো তাহলে।(ভয় ভয় বললো).

লিজা: হ্যাঁ নূর আমিও অনেক ভয় পেয়েছিলাম,(নূর এর কাধে হাত রেখে বললো).
নূর: দেখহো,,আমরা জানি একটা কুকুর কে যতোক্ষন না রাগাবো ততক্ষন সেই কুকুরটা আমাদের সাথে ভালো অচরন করবে। আর যদি কুকুরটিকে রাগিয়ে দেয় তাহলে সে তো আমাদের ক্ষতি করারা চেস্টা করবেই। ঠিক সে রকম ভাবে যদি আমরা একজন মানুষ এর সাথে ভালো অচরন করে তাকে বুঝিয়ে বলি তাহলে সেই মানুষটি আমাদের কথা বুঝবে এবং কথাটিতে সহমত হবে।

আর যদি খারাপ ব্যবহার বা গালা-মন্ধ করি হাতলে তারাও আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে।ঠিক এই রকম ভাবে আমি তাদের সবাই কে বুঝিয়ে বলেছি,আমি জানি না তারা আমার কথা বুঝতে পেরেছে কি না তবে আমার মনে হয় তাদের যদি আগে এবাবে বুঝিয়ে বলা হতো তাহলে হয়তো তারা অনেক আগেই বুঝতো এই বিষয় টা।যাই হোক এবার তোমরা যাও,, এমনেতেই আজ একটু দেরি হয়ে গেছে আমাদের। কাল দেখা হচ্ছে,,,,আল্লাহ্ হাফেজ,,,,!
রাহিমা: আচ্ছা ঠিক আছে,,যায় তাহলে??
এই কথা বলে যে যার বাসায় চলে গেল,,,
এবাবেই আরো এক সপ্তাহ কেটে গেল,,কিন্ত সেদিনের পর থেকে ওরা আর ওদের বাজে কথা বলে নি। শুধু ওদের কে না আর কোন মেয়েকেই বাজে কথা বলে নি ওরা। নূর মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে। নূর এই জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছে।

একদিন রাহাত এর লোকের কাছে খবর আশে কে যেনো রাহাত এর নামে পুলিশের কাছে complain করেছে। আর সেই ব্যক্তি নাকি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক। রাহাত ওর দল-বল নিয়ে সেই মাদ্রাসায় যায়। গিয়ে সেই শিক্ষক কে খুজতে শুরু করে ।
রাহাত: এই তোরা ঐ ক্লাস রুমে যা।আর আমি এই ক্লাস রুমে দেখছি..(রাগি গলায়).
রকি: জ্বী ভাইয়া??
ওরা যে যার মতো অন্য ক্লাস রুম এ চলে গেল খোঁজ করতে। রাহাত একটার পর একটা ক্লাস রুম খুজতে শুরু করলো। হঠাৎ একটা ক্লাস রুম এর কাছ দিয়ে যাবার সময় রাহাত এর কানে একটা মিষ্টি স্বুর ভেসে আসতে লাগলো,রাহাত সেখানেই থেমে যায় এবং সেই ক্লাস রুমের গেট এর পিছন দিকে লুকিয়ে শুনতে থাকে। রাহাত একটা মিষ্টি স্বুরের গজল শুনতে পায়,রাহাত মন দিয়ে গজলটি শুনতে লাগলো,,,,,,
রিদয় মাজে মালা গাথি ছন্দে আর গানে,,,,,,
তুমি আমার ফুটন্ত ফুল মনের বাগানে,,,,,
রিদয় মাজে মালা গাথি ছন্দে আর গানে,,,,,
তুমি আমার ফুটন্ত ফুল মনের বাগানে,,,,,,
তুমি যে প্রিয় নবী,,,,,
তুমি যে প্রিয় নবী,,তুমি যে দেনের ছবি,,
তোমায় নিয়ে ভাবি আমি প্রতিটি ক্ষনে,,,,,
রিদয় মাজে মালা গাথি ছন্দে আর গানে,,,,,,
তুমি আমার ফুটন্ত ফুল মনের বাগানে,,,,,
প্রেম বিরহে ঢেউ জাগে আজ ব্যাথার শওরে,,
শর্ব হারার কাব্য লিখি জরোদা অক্ষরে,,,,
নাহি গো শুখের রবি,,,
যা কিছু আধার সবি,,,
শ্রাবন মেগের মতো কাঁদি তোমার শরনে,,,
রিদয় মাজে মালা গাথি ছন্দে আর গানে,,,,,,
তুমি আমার ফুটন্ত ফুল মনের বাগানে,,,,,
তোমার আশায় যায় কেটে যায় দিবস রজনী,,,
তোমায় নিয়ে এই রিদয়ে সপ্নো যে বুনি,,,,
দেও না দেখা তুমি,,,
হয়েছি ব্যকুল আমি,,,
তোমার প্রমে জলি সদা,,
দুঃখের দহনে,,,,
রিদয় মাজে মালা গাথি ছন্দে আর গানে,,,,,,
তুমি আমার ফুটন্ত ফুল মনের বাগানে,,,,,
(বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন).
রাহাত চোখ বন্ধ করে মুগ্ধ নয়নে গজলটি শুন ছিল। কখন যে গজল টি শেষ হয়ে গিয়েছে তা ও নিজেও জানে না। রকি রাহাত এর কাছে এসে দেখে রাহাত চোখ বন্ধ দাড়িয়ে আছে,রকি রাহাত নকে ডাক দেয়।
রকি: ভাই,,ভাই কি হয়েছে আপনার??(রাহাত এর কাঁধে হাত রেখে বললো).
রাহাত রকির ডাকে হচকচিয়ে ওঠে চোখ মেলে তাকালো,,তারপর সোজা সেই ক্লাস রুমে ঢুকে গেল। এবাবে ক্লাস রুমের ভিতরে প্রবেশ করাতে সবাই একটু আবাক হল। রাহাত ভিতরে ঢুকে দেখে সব মেয়েরা কালো বোরখা পড়া। রাহাত কে দেখে সবাই মখের নেকাপ ফেলে দিয়ে মুখ ডেকে ফেললো।

রাহাত এখন আরো পাগল হয়ে গেছে,এর মধ্যে সেই মেয়েকে কিভাবে খুজে পাবে যে কিনা একটু আগে মিষ্টি স্বুরে গজল গেয়েছিলো।রকি,জিয়ান,রিমন,রনি রাহাত এর এই কাজ এ হা করে রাহাত এর দিকে তাকিয়ে আছে । রাহাত সারা ক্লাস রুমে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো। রাহাত কে দেখে সব মেয়েরা চুপ হয়ে গেছে। কেউ কোন কথা বলছে না। রাহাত সেই মেয়ে গুলুর উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো,,,,,,
রাহাত: একটু আগে গজল কে গেয়েছিল বল??(জোর গলায়).
রাহাত এর কথা শুনে কেউ কোন কথা বলছে না চুপ করে আছে। রাহাত এটা দেখে আবারো বলতে লাগলো,,,
রাহাত: বলছো না কেন? কে একটু আগে গজল কে গেয়েছিল? আমি কিছুই করবো না বলো,বলো কে গজল গেয়েছিল??

কারো মুখে কোন কথা নেই। আবারো নিরবতা ছেয়ে গেল পুরা ক্লাস রুমে। কেউ কোন কথায় বলছে না রাহাত এর ভয়তে। রকি,জিয়ান,রনি রিমন রাহাত এর এই কান্ড দেখে অবাকের উপর অবাক হয়ে গেছে। কেউ কোন কথা বলছে না দেখে রাহাত এর ভিশন রাগ হচ্ছে,,,,,
রাহাত: এই আমি কি বলেছি তোমরা শুনতে পাও নি। বলো কে গজল গেয়েছে একটু আগে ।(রাগি কন্ঠে).
এবারো সাবই চুপ করে আছে। রাহাত এর রাগ দিগুন ভেড়ে গেল। রাহাত পিছের থেকে gun টা বের করে ওদের সামনে দরলো। ক্লাসের মেয়েরা সবাই gun দেখে ভয় পেয়ে যায়,,,,,
রাহাত: এবার যদি না বলো তো সব কয়টা কে এখানেই gun দিয়ে শুট করে মেরে দিবো,,,(ধমকের স্বুরে রাগি কন্ঠে বললো).

সবাই রাহাত এর ধমকে আর gun দেখে আরো ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ করেই একটা মেয়ে ৪নাম্বার বেঞ্চ থেকে দাড়িয়ে যায়। মেয়েটি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে বললো,,,
মেয়েটি: আ,,,,আ,,আমি গজলটি গেয়ে ছিলাম,(কাপা কাপা স্বুরে বললো).
রাহাত মেয়েটির দিকে ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে আছে,,,
রাহাত: তুমিই গজল গেয়েছিলে একটু আগে???(গম্ভীর স্বুরে).
মেয়েটি: জ,,জ,,,জ্বী,(কাপা কাপা স্বুরে).
রাহাত: এই মেয়েটির কন্ঠ আমি আগেও শুনেছি,,কিন্তু কোথায় তা মনে পড়ছে না,(মনে মনে).,, তোমার নাম কি??(গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো).

মেয়েটি: ন,,,ন,,নুরজাহান নূর,,(মাথা নিচু করে কাপা কাপা স্বুরে বললো).
রাহাত: কোথায় থাকো??(গম্ভীর গলায়).
নূর: র,,রহমত আঙ্কেল এর বাড়িতে ভাড়া থাকি আমরা,,(কাপা কাপা কন্ঠে).
রাহাত: বাবার নাম কি??(গম্ভীর গলায়).
নূর: ইমান হোসেন??(মৃদ স্বুরে).
রাহাত নূর এর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেসে ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রাহাত এর এই কান্ড দেখে ওদের সাথে থাকা সবাই আরো অবাক হয়ে গেছে। রাহাত মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে রকি কে বলে বাইক স্টার্ট দিতে আর মনির চাচার দোকানে যেতে(যেখানে আড্ডা দেয় ওরা সেখানে),,রকি কিছু না বলেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সেই দোকানের রাস্তায় যেতে লাগলো,,সাথে ওর বাকি লোক গুলাও বাইকে যেতে লাগলো,,,,
নূর সেখানেই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে,রাহাত সেই কখন চলে গেছে সেটা ওর খেয়াল নেয়,,,রাহিমা নূর কে বললো,,,,

রাহিমা:কিরে নূর বস,,ওরা তো সেই কখন চলে গেছে,,(নূর কে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো).
নূর মাথা তুলে দেখে কেউ নেই।তারপর বড় একটা নিশ্বাস ফেলে বসে পড়ে। ক্লাস এর সব মেয়েরা এসে নূর কে এটা ওটা জিজ্ঞেস করতে থাকে কিন্তু নূর তো কিছুই জানে না রাহাত কেন এইটা করলো বা কেন ওর নাম,বাবার নাম,কোথায় থাকে তা জিজ্ঞেস করলো,,,,
নূর: আরে বোন রা আমি কিছুই জানি না কেন সে আমাকে এগুলা জিজ্ঞেস করেছে। আর এটা তো মহিলা মাদ্রাসা তাহলে এরা এখানে কেন বা কি কারনে এসেছে??
লিজা: নূর ওরা বখাটে ছেলে এদের কোথায় যেতে নিষেদ নেয়। আর ওরা হয়তো কোন কারনে এখানে এসেছিল। তারপর তুমি যখন গজল গেয়ে ছিলে তখন মনে হয় সেই ছেলেটি মানে রাহাত তোমার গজল গাওয়া শুনে ফেলে।

রাহিমা:হ্যাঁ লিজা এটাই হবে হয়তো। আর নূর তোর যেই সুন্দর মিষ্টি স্বুর,যে কোন ছেলে শুনলে পাগল হয়ে যাবে আমি সীয়র,,,(নূর কে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো).
নূর: নাউজুবিল্লা,,এগুলা কি বলিস। সে যদি আমার কন্ঠ শুনে থাকে তাহলে আমার যে গুনাহ হয়েছে। তুই তো সেটা যানিস,,(মন খারাপ করে বললো)
রাহিমা: হুমম জানি তো। আচ্ছা এখন বাসায় চল ছুটি হয়ে গিয়েছে ।
নূর: হুমম চল??
ওরা তিন জন বাসায় যাবার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো। সেই দোকানের সামনে আসতেই ওরা তিন জন দেখলো,,,,,,?

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com