সুরা আস-সাফফাত | তাফসীর | আয়াত নং: ১-৫

তাফসীরঃ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ "রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে হালকাভাবে নামায পড়ার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি সূরায়ে সাফফাত পড়ে আমাদের ইমামতি করতেন।” (এ  হাদীসটি ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) ১-৫ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, এই তিন শপথের দ্বারা ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে। অন্যান্য গুরুজনদেরও এটাই উক্তি। হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, ফেরেশতাদের সারি আকাশের উপরে রয়েছে।হযরত হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ "সমস্ত মানুষের উপর তিনটি বিষয়ে আমাদেরকে মর্যাদা দান করা হয়েছে। 

আমাদের সারিকে ফেরেশতাদের সারির মত করা হয়েছে, সমগ্র যমীনকে আমাদের জন্যে মসজিদ বানানো হয়েছে এবং পানি না পাওয়া অবস্থায় মাটিকে আমাদের জন্যে অযুর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ "ফেরেশতারা তাঁদের প্রতিপালকের সামনে যেভাবে সারিবদ্ধ হয়ে দণ্ডায়মান হন সেই ভাবে তোমরা সারিবদ্ধ হওনা কেন?

" সাহাবীগণ (রাঃ) আর করলেনঃ “ফেরেশতারা কিভাবে তাদের  প্রতিপালকের সামনে কাতারবন্দী হন?" রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) উত্তরে বলেনঃ “তারা প্রথম সারিকে পূরণ করে নেন এবং অন্যান্য সারিগুলোকেও সম্পূর্ণভাবে মিলিয়ে নেন। (ইমাম মুসলিম (রঃ), ইমাম আবু দাঊদ (রঃ), ইমাম নাসাঈ (রঃ) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন) (আরবী) (যারা কঠোর পরিচালক) এ আয়াতের তাফসীরে সুদ্দী (রঃ) প্রমুখ গুরুজন মেঘ-বৃষ্টিকে একদিক থেকে অন্যদিকে ধমক দিয়ে পরিচালনকারী ফেরেশতার দল অর্থে এটা ব্যবহৃত হয়েছে বলে মত প্ৰকাশ করেছেন। 

রাবী ইবনে আনাস (রঃ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, উক্ত আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছেঃ কুরআন কারীম যে জিনিস হতে বাধা প্রদান করেছে তা থেকে তারা এক পদও অগ্রসর হন না।(আরবী) (যারা যিকর আবৃত্তিতে রত), সুদ্দী (রঃ)-এর মতে এঁরা হলেন ঐ ফেরেশতা যারা আল্লাহ্ পয়গাম বান্দাদের নিকট আনয়ন করে থাকেন। যেমন মহান আল্লাহ্ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “এবং (শপথ তাদের) যারা মানুষের হৃদয়ে পৌছিয়ে দেয় উপদেশঅনুশোচনা স্বরূপ বা সতর্কতা স্বরূপ।”এই শপথসমূহের পর এখন যে বিষয়ের উপর শপথ করা হয়েছে তার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে ও তোমাদের সবারই সত্য ও সঠিক মা'বুদ একমাত্র আল্লাহ। যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এতোদুভয়ের অন্তর্বর্তী সব কিছুর প্রতিপালক, এবং প্রতিপালক সকল উদয়স্থলের। 

তিনিই আকাশের উপর তারকারাজি, চন্দ্র এবং সূর্যকে কাজে নিয়োজিত রেখেছেন, যেগুলো পূর্ব দিকে উদিত হয় ও পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। মাশরিকের উল্লেখ করে মাগরিবের ইঙ্গিত থাকার কারণে ওর উল্লেখ করা হয়নি। অন্য আয়াতে উল্লেখ করাও হয়েছে। যেমন ঘোষিত হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের নিয়ন্তা।”(৫৫:১৭) অর্থাৎ শীতকালের ও গ্রীষ্মকালের উদয় ও অস্তের স্থানের প্রতিপালক তিনিই।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url