Breaking News

শুধু তুই । পর্ব - ০৩



কি রে ভুলে গিয়েছিস আমায় ?

হঠাৎ করে ফোনে আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ পেলাম আমি ।
শুরুতেই এমন প্রশ্ন করায় খানিকটা অবাক হলেও বুঝতে পারলাম এই মেসেজের প্রেরক কে?
খানিকটা যেন অভিমান ভর করল আমায় ইচ্ছা করেই কোনো রিপ্লাই করলাম না আমি।
তবে বার বার সে বার্তা আর প্রেরকের নম্বরের উপর আলতো করে ছুয়ে দিলাম আমি।
সে কি আজও বুঝবে না বড্ড অভিমানী আমি !

দীর্ঘ দুই বছর তার সাথে না হয়েছে কোন কথা আর না দেখা।
কলেজের ফাইনাল পরীক্ষার পর আর তার দেখা পাইনি আমি।
একবার গিয়েছিলাম তার আস্তানায় কিন্তু সে চলে গিয়েছিল যেন কোথায়।
যাবে নাই বা কেন সে তো এসেছিল এ শহরে অতিথির বেশে ।
শুনেছিলাম সে তার পরিবার নিয়ে থাকে ঢাকার কোথাও কিন্তু
আমার মত মেয়ের পক্ষে তাকে খুঁজে বের করা তাও আবার ঢাকার মতো জনবহুল শহরে বলতে গেলে একেবারেই সম্ভব নয় ।যদিও অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম তার হঠাৎ চলে যাওয়ায় ।
তার চলে যাওয়া আমার মনে যে কতটা দাগ কেটে ছিল সে সময় তা
শুধু আমি আর আমার পরিবার ও বন্ধুরাই জানি ।
বিশেষ করে রিমেল ও হৃদি ওরা হয়ত আমার তার প্রতি সৃষ্টি হওয়া অনুভূতির সম্পর্ক বুঝতে পেরেছিল।
তাই ওদের মুখের শান্তনা ও অনুভূতিতে ভালোবাসা আমায় সচেষ্ট করতে চেয়েছিল।
কিন্তু কি করে বুঝাব আমি তাদের যে নয়টা বছরের অনুভূতি কি সহজে ভুলে যাওয়া যায় ?
সে নাই বাসুক ভালো আমায় কিন্তু আমি বেসেছিলাম তো ভালো তায়।

আগেই বলেছিলাম যে রিমেল ছিল তার সবথেকে ভালো বন্ধু।
তার সব কথা আর সকল কাজের কারণ সব না জানলেও অল্প বিস্তর জানত সে ।
যদিও আমি তাকে ভুলতে চেয়েছিলাম তার সেই নব্য প্রেমিকার জন্যে কিন্তু রিমেলের
কিছু কথা আমার বিবেক নাড়ে দারুন ভাবে ।
তখন বুঝতে পেরেছিলাম তার আমাকে অবহেলা আর এড়িয়ে চলার কারণ।
কিন্তু বার বার একটা প্রশ্নই জেগেছে আমার মনে।
আচ্ছা আমি কি এতটাই অবুঝ যে রিমেলকে যে কথাগুলো বলেছিল
একটাবার আমায় বুঝিয়ে বলা যেত না! সে কি বুঝেনি আমি যে তুইতেই আসক্ত।
আমার মন শুধুই বলে “শুধু তুই”।
এই দুটো বছরে অনেক কিছুই বদলেছে ।
যদিও তাকে ভুলতে পারিনি ভুলবটাই বা কি করে যাকে আমরা ভুলতে চাই তাকেই ভোলা যায় কিন্তু যাদেরকে আমরা ভুলতে চাই না তাদেরকে ?
অনার্সে ভর্তি হয়েছি বয়সটা একটু হলেও বেড়েছে ।
লোকজন বলে এই বয়সটাতে নাকি মানুষ ম্যাচিউর হওয়া শেখে ।
স্কুল কলেজের মতো নাকি এই বয়সটা ছেলেমানুষি করার নয় ।
মাথায় থাকে নিজেকে কোথাও প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তা।
এই সময়টাই নাকি লাস্ট সময় নিজের ক্যারিয়ার গড়ার ।
আমার ঠিক জানা নেই এই বয়সটা ঠিক কিসের?তবে সকলের মতো আমারও ইচ্ছে ভালো কিছু করার ।
তাই অনেকটা কষ্ট করেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স টা পেয়েছিলাম আমি ।
তখন তার হঠাৎ নিরূদ্দেশ হয়ে যাওয়া আমাকে গভীর ভাবে আহত করে।
কিছুই ঠিক লাগছিল না আমার।
মায়ের অনেক আদর আর বাবার স্বপ্নের কথা চিন্তা করেই নিজেকে অল্প বিস্তর সামলে নিয়ে ছিলাম।
তবুও কোথায় যেন মাঝে মাঝেই হারিয়ে যেতাম ।
আর মনের মাঝে খেলে যেত “শুধু তুই”।

মেসেজটা আসার বেশ কিছু দিন পরে সবে ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরছিলাম আমি ।
ভার্সিটি আসার আগেই খেয়াল করছিলাম যে আকাশ নিজেকে সজ্জিত করছে
কালো হাজারো ছন্নছাড়া মেঘে ।ব্যাগ গোছানোর সময় টেবিলে ছাতাটা রেখেছিলাম একপাশে ।
বেড়ানোর আগে ফোনে সেই মেসেজ টাই দেখছিলাম।
দেখতে গিয়ে ছাতাটাই আনতে ভুলে গিয়েছিলাম আমি ।
ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে একা একা রাস্তার ফুটপাতে দিয়ে হাঁটছি আমি ।
রাজশাহী শহরটা নাকি বড্ড সুন্দর সকলের কাছে।
কিন্তু আমার কাছে সচরাচর রাজশাহী থেকে বৃষ্টিময় নিঝুম বিকেল রাজশাহী যেন অপরূপ সুন্দর লাগে।
হঠাৎ করেই মনে হলো কেউ ডাকছে আমায় পিছন থেকে,,

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com