শুধু তুই । পর্ব - ০৬
ক্যাপ্টেন রিয়াত সামনেই তো অনেক বড় একটা মিশন কি ভাবছেন ছুটিতে কোথায় যাবেন?
সবটাই তো জানা আছে তোমার তারপরও জিজ্ঞেস করছ আমি যাব কোথায়?
না ওই আরকি !যাকে পাগল সাব্যস্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তার কাছে যাওয়া কি সত্যিই আপনাকে মানায়?
এর উত্তর জানা নেই রিয়াতের শুধু দীর্ঘ একটা শ্বাস নেওয়া ছাড়া ঔনয়তো কিই বা উত্তর হবে সে সম্পর্কেও অবহিত নয় সে ।যাকে সে এতটা চায় যাকে একটা মুহূর্ত কষ্ট দিতে চায় না,যাকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন বুনেছে তাকেই কিনা সে বার বার কষ্ট দিচ্ছে।তার একটা কারণও আছে বটে তবে তা সম্পন্নই নিজ যুক্তিতে দাঁড় করিয়েছে সে । যার উপর এতটা অন্যায় করছে যে তাকে এতটা ভালোবাসে তাকে কিনা সে এতটা কষ্ট দিচ্ছে ভাবতেই নিজেকে উপহাস করতে ইচ্ছে করে। সে যখন নিজ যুক্তিকে পর্যালোচনা করে তখন ভাবে, “ কষ্ট পেলে সে কষ্ট হবে ক্ষণিকের পরবর্তীতে সে সুখী হবে অন্য কারো সাথে।”
কিন্তু পর্যালোচনার এই পর্যায়ে মনটা কেমন করে যেন কেঁপে উঠে।তাদেরকে সবকষ্ট সহ্য করতে শেখানো হয়েছে কিভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের ঠিক রাখতে হয় সবটাই আয়ত্ত করেছে সে ।তবে ,তবে কেন এতটা কষ্ট হয় যখন সে মিতুর সাথে অন্য কাউকে ভাবে ?সে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যাকে সকলে দায়িত্ববান এবং কঠোর হিসেবে জানে তবে কেন সে বার বার দুর্বল হয়ে পড়ে মিতুর নাম শুনলেই বা সামনে গেলে?
ক্যাপ্টেন সামনে একটা গ্রামে কিছু লোককে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আমাদেরকে জরুরি সেখানে যেতে বলা হয়েছে।
ঠিক আছে ইমেডিয়েটলি চলো।হেড অফিসে এখনই সব কনফার্ম করতে বল।
ওকে স্যার। আসসালামুয়ালাইকুম।
সে সালামের প্রতিত্তর করলে জুনিয়র অফিসার চলে গেল।আর সেও প্রস্তুত হয়ে রওনা দিল সেই গ্রামের দিকে ।চিপ যখন ছুটে চলেছে আপন গতিতে তখন সে নিজ মনে বিবৃত করল কিছু কথা যা সে প্রত্যেক অপারেশনের আগে বলে। সেই কথা গুলি শুনলে সে অভিমানী অভিযোগকারি আর অভিযোগ করত না তাহার সনে ।আপন মনে কথাগুলো বললে যেন খানিকটা হালকা লাগে নিজের কাছেই,
মিতু আমি আজ আবারও বড় একটা মিশনে যাচ্ছি । তুই নিজেকে খুব করে যত্ন করে রাখিস।আর একটা কথা জানি না তোকে কখনো বলতে পারব কি না ?তবে আমার মনে কেউ নেই মিম তো নয়ই।আমার মনে আছিস শুধু তুই।
মা আমি কোনো সাইকোলজিস্টের কাছে যাব না ।অন্তত তুমি আমাকে বিশ্বাস কর সেদিন আমি ভুল দেখিনি।
গত দুই বছর ধরে তো বিশ্বাস করে আসছি ।তোর প্রত্যেকটা কথা মেনেছি এবার আমার কথাটা একটু রাখ মা ।দেখ তুই আমাদের একমাত্র মেয়ে তোকে ঘিরে আমাদের জীবন।তোর কিছু হয়ে গেলে আমরা কিভাবে বাঁচব তুই বল ।
মা আমার সবটাই জানে তার বিষয়ে আমি সবটা বলেছি মাকে । রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার একসপ্তাহ পেরিয়েছে।এই একটা সপ্তাহে মা আমার সাথে খুব একটা কথা বলেনি আজ এভাবে কথা বলছে বলে বড্ড ভালো লাগা কাজ করছে । সত্যি তো আমি ছাড়া তো তাদের আর কেউ নেই কি করে পারলাম আমি এতটা স্বার্থপর হতে ।তবে কেন জানিনা সেদিনের ঘটনাকে ভ্রম বলে মানতে পারছি না ।আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে সে এসেছিল আমার এই শহরে !
বসে আছি একরাশ বিরক্তি নিয়ে মায়ের এপর্মেন্ট নিয়ে রাখা এক সাইকোলজিস্টের চেম্বারের বাইরে ।প্রায় ঘন্টাখানেক হয়ে গেছে তবুও ওনার ডাকার নামই নেই । বিরক্তিকর লাগছে এখানে বসে থাকতে কিন্তু বাড়ি ফিরে গেলে মা প্রচুর রাগ করবেন ।হুট করে চেম্বারের বাইরে থাকা রেসেপসনিস্ট ডাকলেন আমার নাম ধরে ,
জায়া রেহমেত ।
এই নামটা বাবার দেয়া কিন্তু মায়ের নামটা বেশি পছন্দ না হওয়ায় মা আমাকে ডাকতেন মিতু বলে ।তবে বাবার জোড়াজুড়িতে সার্টিফিকেটে নামটা জায়া বহাল রাখা হয়েছে।আমাকে মাত্র দুই জন ব্যক্তি ডাকে মিতু বলে ।তার মধ্যে এক আমার মা আর দুই শুধুতুই নামক ব্যক্তিটি ।
আমি কি আসতে পারি ।
হ্যাঁ আসুন।
ভেতরে ঢুকেই আমার চোখ চড়কগাছ হওয়ার জোগাড় ধরেছে
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com