পরী যখন বউ । পর্ব - ০৭
মাবশূরাহ, না বলে যখন এই দিকে ফিরে আকাশ মাবশূরাহ কে দেখে বিকট আওয়াজে চিৎকার মারে...!
কারন মাবশূরাহ এর চোখ জোড়া সবুজ হয়ে গেছে,
মাবশূরাহ এর চেহারা বিভৎস হয়ে গেছে,ওর মুখ থেকে আগুনের ফুলকি ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে,
মাবশূরাহ, পৈচাশিক হাসি হাসছে,আর আকাশের গলা চিপে ধরে বলেতে থাকে
কি মনে করেছিলি তুই আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে আমার শক্তি নষ্ট করে দিলে সব কিছু দমে যাবে..?
এটা তোর ভুল ধারনা এই যে দেখ আমি আমার শক্তি ফিরে পেয়েছি,
ঐ দিন তো জোর করে আমার শরীর নিজের বস করেছিস,
আজ আমি জোর করে তোর শরীর বস করবো....!
আকাশের চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝড়ে পড়ছে,
কারন মাবশূরাহ আকাশের গলা খুব জোরে চেপে ধরেছে, ওর নড়ার মত শক্তি ও নাই,
মাবশূরাহ,নিজের শরীর থেকে কাপড় খুলে ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে দেয়,
আর আকাশের ঠোঁট জোড়া নিজের করে নেয়,
আকাশ,চুপ করে শুয়ে আছে,ওর মনে হচ্ছে ওর রুহু এখনি বের হয়ে যাবে,
মাবশূরাহ এর ঠোঁট জোড়া অগ্নিশিখার মত গরম হয়ে আছে,
আকাশের যেন নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে,
কিন্তু তাও মাবশূরাহ ক্ষেমা দিচ্ছে না,
আকাশ,আর সহ্য করতে না পেরে বেহুশ হয়ে যায়,
মাবশূরাহ, লক্ষ করে আকাশ আর কোন রেসপন্স করছে না,
কেমন লাগে এখন...?
নিজের মধ্যে সব প্রতিশোধ দমিয়ে রেখেছিলাম,
আজ তা মাত্র উশুল করা শুরু করলাম,সামনে দেখ আরো কত কিছু হয়....!
মাবশূরাহ,আকাশকে বিছানায় ফেলে রেখে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্লোরে পড়ে থাকা কাপড় গুলো নিয়ে,
মাবশূরাহ নিজের রুপে ফিরে এসেছে....!
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এসে দেখে আকাশ এখনো বিছানায় ঐ অবস্থায় পড়ে আছে,
মাবশূরাহ এর কেন জানি খারাপ লাগছে আকাশের জন্য,
একটু আগে তার মধ্যে কোন হিতাহিত জ্ঞান ছিলো না,সে আকাশের সাথে কি করেছে,
জগ থেকে পানি নিয়ে আকাশের মুখে ছিটা মারে,
আকাশ,আস্তে আস্তে চোখ খুলে, চোখ খুলে দেখে মাবশূরাহ ওর সামনে,
কিন্তু ওর ভয়ংকর রুপটা এখন আর নাই....!
আকাশ,চুপ করে আছে,
মাবশূরাহ, এই এখন কেমন লাগছে তোমার...?
আকাশ,মনে মনে সাপের চামড়া পরিবর্তন হয় সময়কালে
কিন্তু এই মেয়ে রুপ পরিবর্তন করে মিনিটে মিনিটে,
নিজে অত্যাচার করে এখন নিজেই জিজ্ঞেসা করছে কেমন লাগছে,
জীবনের মানে হয়তো ফুরিয়ে এসেছে, আর কিছুদিন পর হয়তো আমার জীবনের ইতি ঘটবে,
কিন্তু হাতে আর যতদিন সময় আছে তোমাকে ভালোবেসে যাব,
তুমি আমার উপর যত অত্যাচার এই করো না কেন.....!
মাবশূরাহ, এই কথা বলছো না যে...!
আকাশ,কি বলবো,ভালো লাগছে...!
মাবশূরাহ, এই আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুম যাবো,আমার খুব মাথা ঘুরাচ্ছে,
সে নিজেই আকাশকে জড়িয়ে ধরে,আর আকাশের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে,
মাবশূরাহ, এর এমন আচরণের কারন হচ্ছে,আজ অনেকদিন পর সে নিজের শক্তি ফিরে পেয়েছে, এতদিন সে সবার মত মানুষ ছিলো,কিন্তু আজ থেকে আবার পরী হয়ে গেছে,অলৌকিক শক্তির প্রভাবে সে এমন আচরন করেছে,এতটা শক্তির চাপ সে একসাথে নিতে পারেনি,না হয় সে আকাশের সাথে এইরূপ আচন করতো না,কারন সেও আকাশকে একটু হলেও ভালোবাসে,তবে এটা সত্যি যে ওর মনে আকাশের জন্য কিছুটা খোপ রয়েছে...!
আকাশ,ও চুপ করে শুয়ে আছে মাবশূরাহ কে জড়িয়ে ধরে,
আচ্ছা মাবশূরাহ একটা কথা জিজ্ঞেসা করবো তার সঠিকতা উত্তর দিবে আমায়...?
মাবশূরাহ, হা দিবো বলো...?
আকাশ,তুমি কি আমায় সত্যিই ভালোবাসো...?
মাবশূরাহ,সত্যি ভালোবাসি কিনা জানিনা, আর এটা কি ভালোবাসা কিনা তাও জানি না,
তবে এটা সত্য যে তোমাকে জড়িয়ে না ধরলে আমার ঘুম আসে না,
তোমার হাতে খাবার না খেলে আমার পেট ভরে না,মনের কোনে কোন এক জায়গায় তোমাকে অবস্থান দিয়ে ফেলেছি,তবে হা তুমিই আমার জন্য সাতরাজার ধন, তোমার দাঁড়ায় আমার স্বপ্ন পূরন হবে....!
আকাশ,সবটাই জানে কিন্তু মাবশূরাহ কে কিছু বঝতে দিবে না সে,
তুমি আমায় ভালোবাসো কিনা সেটা তুমি জানো না,তবে আমি তোমায় খুব ভালোবাসি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি,তোমার জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিতেও পারবো,জীবন দিতে দুই মিনিট ও ভাবতে হবে না আমার...!
মাবশূরাহ, মনে মনে আমি তো তাই করবো,তোমার জীবন এই নিবো....!
তোমার রক্তের বদলতে যে আমার সাতরাজার ধন মিলবে,তোমাকে যে মরতেই হবে....!
মাবশূরাহ, কি বলছো কি তুমি এই সব,জীবন দিবে মানি...?
তোমার কিছু হলে আমার কি হবে....!
আকাশ,(নিজে নিজে জীবন তো তুমিই নিবে,মিথ্যে আশ্বাস কেন দিচ্ছো,)আরে নাহ কথার কথা বলেছি...!
মাবশূরাহ, আমি আরো ভেবেছি কি না কি....!
এই আর একটাও কথা না, এখন ঘুমাবো দুজন,
আকাশ,আচ্ছা...!
তারপর দুজনে মিলে গুমিয়ে পড়ে,
সকালে মাবশূরাহ ঘুম থেকে উঠে দেখে আকাশ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
মাবশূরাহ, এই তুমি কেন কষ্ট করে চা আনতে গেলে....!
আকাশ,(মনে মনে,কালতো ভেবে নিয়েছি যতদিন সময় আছে তোমায় ভালোবেসে যাবো)কেন আনতে পাড়ি না বুঝি...?
মাবশূরাহ, এই নাহ তা কেন...?
কই দেখি দাও,আমার বরটা কষ্ট করে চা করে আনছে,মাবশূরাহ চায়ে একটা চুমুক দেয়,চা টা অনেক মজার হয়েছে,খুশিতে আকাশের গালে একরা চুমু একে দেয়...!
ইশ এত মজার চা মনে হয় এই জীবনের প্রথম খেলাম....!
এভাবেই চলতে থাকে,আকাশ এখন সব সময় মাবশূরাহ এর দেখাশোনা করে,তিন বেলা ওকে খাইয়ে দেয়...!
মাঝে মাঝে ঘুরতেও নিয়ে যায়,দুজনে মিলে এক রিক্সায় করে ঘুরে খুব মজা করে...!
আমাবস্যা, প্রায় চলে এসেছে,আর মাত্র দুইদিন বাকি...!
আকাশের মনটা একদম ছোট হয়ে আছে,কাল বাদে পরশু সে আর এই দুনিয়ায় থাকবে না,তবে সে সন্তুষ্ট যে সে তার ভালোবাসার মানুষটার হাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবে.!
আমাবস্যা চলে এসেছে,আজ রাতেই আমাবস্যা....!
মাবশূরাহ এর বাবা-মাও জমিনে আসে,তারপর মাবশূরাহ এর কাছে যায়,
আকাশ,মাবশূরাহ এর বাবা-মা কে পা ধরে সালাম করে...!
আজকে আকাশ অফিসে যায় নাই...!
মাবশূরাহ তোমরা কথা বলো আমি একটু সাজ্জাদের সাথে কথা বলে আসছি...!
তারপর আকাশ ঘর থেকে বের হয়ে যায়...!
মাবশূরাহ এর বাবা কিরে পাঠা টাকে বলি দিবি কি ভাবে...?
মাবশূরাহ, ওটা নিয়ে তোমরা চিন্তা করো না,
আজ রাতে ওকে খাবারের মধ্যে শুরা মিশিয়ে দিবো,মানে মন্ত্রের পানি.....!
তারপর ওকে পরী-পালকে নিয়ে গিয়ে পুরা পরী-পালকে সবার সামনে বলি দিবো....!
আকাশ লক্ষ্য করে তার ফোনটা বাসায় ফেলে রেখে এসেছে,
ফোনটা নেওয়ার জন্য আবার বাসায় ফিরে যায়,তখনি মাবশূরাহ আর ওর বাবার কথোপকথন শুনে ফেলে....!
আচ্ছা তাহলে আজ আমাকে ঘুমের মধ্যে পরী-পালকে নিয়ে যাবা,
সমস্যা নেই,তোমার হাতে মন্ত্রের পড়া পানি কেন বিষ ও খেয়ে নিবো,
ভালোবাসা যখন উপলব্ধি করাতে পারি নি,মরে যাওয়াই শ্রেয়....!
মাবশূরাহ, লক্ষ্য করে আকাশ আবার ঘরে ফিরে এসেছে,
আকাশ কি হলো তুমি না সাজ্জাদের সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা,ফিরে এলে যে...?
আকাশ,যাবো কিন্তু ফোনটা ভুলে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলাম,
তাই সেটা নিতে এসেছি....!
মাবশূরাহ, ওহ।
আকাশ,ফোনটা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়...!
দুপুরে ফিরে আসে,সাজ্জাদকে এ বিষয়ে কিছু জানায় না,
আর সাজ্জাদ ও ভুলে গেছে আজ যে আমাবস্যা...!
দুপুরে আকাশ নিজ হাতে মাবশূরাহকে খাইয়ে দেয়,সারাদিন মাবশূরাহ এর দেখাশোনা করে,মাবশূরাহ এর সাথে সাথে থাকে,আজকেই শেষ দিন
এরপর হয়তো আর কোনদিন মাবশূরাহকে নিজ হাতে খাইয়ে দিতে পারবে না,মাবশূরাহ কে ভালোবাসতে পারবে না....!
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com