পরী যখন বউ । পর্ব - ০৯ এবং শেষ
আকাশের দেহের দুইটা অংশ দুই দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে...
এমন সময় মাবশূরাহ এর পেটে পেইন শুরু হয়,আবার অন্যদিকে আকাশের বলি সে আর সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে....!
এটা দেখে মাবশূরাহ এর বাবা আরো কয়েকজন মিলে ধরা ধরি করে মাবশূরাহকে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শোয়াই দেয়.!
পন্ডিতরা এসে মাবশূরাহকে দেখে ওর কি হয়েছে,পন্ডিতরা নিজের অলৌকিক শক্তি ব্যবহার করে মাবশূরাহ এর জ্ঞান ফিরিয়ে আনার জন্য,আর কি কারনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে তা জানার চেষ্টা করে,
পন্ডিতরা চেষ্টা করছে,কিন্তু কিছুতেই মাবশূরাহ এর জ্ঞান ফিরছে না,একে একে সমস্ত পন্ডিত চেষ্টা করে,কিন্তু কেউ সফল হচ্ছে না,
এমন সময় বয়স্ক পন্ডিতটা আসে যে মাবশূরাহ এর সাধনার কথা বলে ছিলো,আর সেও চেষ্টা করে অলৌকিক শক্তি দিয়ে,কিন্তু সে যা দেখতে পায় তার পড়ে তো সে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে,
পন্ডিতের এই অবস্থা দেখে সবাই তো পেরেশান, হায় হায় উনার কি হলো,সবাই তো ভয় পেয়ে যায়,কারন উনি পরী-পালকের সব চাইতে বড় পন্ডিত,আধ্যাত্মিক শক্তি উনার থেকে বেশি কারোর কাছে নাই,
মাবশূরাহ এর বাবা,পন্ডিত মশাই আমার মেয়ের কি হয়েছে...?
আমার মেয়ে উঠছে না কেন....?
পন্ডিত যা বলে সবাই তো মাথায় হাত দিয়ে ফেলে...!
আপনার মেয়ের পেটে মানুষের বাচ্চা, আর সেই বাচ্চা ভবিষ্যৎ প্রজন্মে পরী-পালকে রাজ করবে,কারন মাবশূরাহ এর সাধনার সকল শক্তি এই বাচ্চার শরীরে ঢুকে গেছে,আর মাবশূরাহ এর ততক্ষণ পর্যন্ত জ্ঞান ফিরবে না যতক্ষন না আকাশ জীবিত হবে,কারন দুনিয়ায় চক্রের সাথে আপনার মেয়ের সুত্র জুড়ে গেছে,সে আর সম্পূর্ণ রুপে পরী নাই,সে পরীর মত হাজার বছর ও বাঁচবে না,সে মানুষের মত বুড়ো হয়ে গেলে মারা যাবে,মানুষ চক্র লেগে গেছে ওর শরীরে,
মাবশূরাহ এর বাবা পন্ডিত মশাই কি বলছেন কি এই সব...?
আকাশকে তো বলি দেওয়া হয়ে গেছে,আর সে জীবিত না হলে আমার মেয়ের ও জ্ঞান ফিরবে না...?
পন্ডিত, জী মহারাজ এমন টাই হবে....!
মাবশূরাহ এর বাবা,পন্ডিত মশাই আপনি যে করে হোক আমার মেয়েকে বাঁচান, হাত জোর করে....!
পন্ডিত, মহারাজ মাবশূরাহকে বাঁচাতে হলে আকাশকে আবার জীবিত হতে হবে,কিন্তু তা তো আর সম্ভব না...!
মাবশূরাহ এর বাবা,আমি জানি না পন্ডিত মশাই আপনি আমার মেয়েকে যে করেই হোক ঠিক করে দেন,দরকার হয় আকাশকে আবার পূনরায় জীবিত করুন...!
পন্ডিত, মহারাজ এ কি বলছেন আপনি..?
পূনরায় জীবিত করার কলাবিদ্যা সে তো হাজার বছর পুরোনো,
আর সেই মন্ত্র যেই মনিরিশিরা বের করেছিলো,তারা সেই মন্ত্রটা কোন এক গুহায় লুকিয়ে রেখেছে,সেই মন্ত্রছাড়া পূনরায় জীবিত কি ভাবে করবো আমি...?
মাবশূরাহ, এর বাবা আমি তা জানি না,আপনি যে করেই হোক আমার মেয়েকে জীবিত করুন....!
পন্ডিত,টেনশনে পড়ে যায়,আচ্ছা মহারাজ আমাকে কিছুটা সময় দিন,আমি দেখছি কি করা যায়,তারপর পন্ডিতটা সেখান থেকে চলে যায় তার দুই একজন সাথীকে নিয়ে,সবাই একি স্থানে একত্রে হয়ে আছে,আজ কোন পরী তার বাসস্থানে যাবে না,কারন আজ আমাবস্যা তাই...!
ঘন্টা তিন এক পর পন্ডিত তার সাথীদেরকে নিয়ে ফিরে আসে,
সবাই তো অবাক চোখে পন্ডিতের দিকে চেয়ে আছে,কি করবে উনি এখন, তারপর বড় পন্ডিত সকলের উদ্দেশ্য করে বলে,
আমরা যেখানে দূর্গ করবো সেখানে কেউ যাবেন না ভুলেও,একটা সীমারেখা একে দেয় গোল করে...!
আকাশের মুখমন্ডলটা আর শরীরটা নিয়ে ঐ গোলের মধ্যে রাখে আর পরী-পালকের সমস্ত পন্ডিত গোল করে বসে পড়ে,
চতুর্পাশে আগুন জ্বলছে সীমা রেখা বরাবর,সকল পন্ডিতরা দূর্গ শুরু করে দেয় বড় পন্ডিত এর কথায়....!
আর সমস্ত পরী-পালকের সকল পরী গোলকের বাহির থেকে তা নির্বাক চোখে দেখছে...!
বড় পন্ডিত সকল পন্ডিতের উদ্দেশ্য করে বলে,
আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে আমি সেই গুহায় যাবো যেখানে মানুষ জীবিত করার মন্ত্রের বইটা লুকিয়ে রাখা হয়েছে,আমি বইটা গুহা থেকে আনার সময় হয়তো আমার জান ও চলে যেতে পারে কারন মনিরিশিরা সেই গুহার আশেপাশে বিভিন্ন মায়া জাদু লাগিয়ে রেখেছে,আমার যাই হোক কিন্তু তোমরা কেউ পিছু হাটবা না
আর আমার কনিষ্ঠা আঙ্গুলটা একজন ধরে সংযোগ করে রাখবা ,মন্ত্রের বইটা তার হাতেই চলে আসবে....!
আর আমি যদি না ফিরে আসি তাহলে মন্ত্রটা পাঠ করে মন্ত্রের বইটা আবার আমার হাতে রেখে দিবা,
পন্ডিত, নিজের আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে সেই গুহায় যায়,
বইটা সেই গুহা থেকে বের করে সমস্ত মায়াজাল পার হয়ে,কিন্তু বইটা নিয়ে ফেরার সময় একটা মায়া জাদুতে আটকে পড়ে,
পাশের পন্ডিতের হাতে বইটা এসে পড়ে,সে বইটা খুলে মন্ত্রটা পাঠ করে,সাথে সাথে আকাশের দেহটা মাটি থেকে কয়েক হাত উপরে উঠে যায়, তার মস্তক ছাড়া শরীরটার সাথে ইতি মধ্যে আকাশের মস্তকটা জোড়া লেগে যায়,
পরী-পালকের আজ যেন কোন এক শর্বশক্তির কাজ চলছে,
সবাই হতভম্ব হয়ে আছে,
আকাশের শরীরটা আস্তে করে মাটিতে নেমে আসে,
অন্যদিকে মাবশূরাহ এর জ্ঞান ফিরে আসে, জ্ঞান ফিরার পর সে আকাশ বলে চিৎকার দিয়ে উঠে...
(পাঠক ভাইরা মাবশূরাহ এর জ্ঞান ফিরে আশা মানে বুঝেন তো.....?
আকাশকে বাঁচিয়ে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা স্বরূপ বড় করে একটা কমেন্ট হবে.....?
আমি কিন্তু চাইছি সিংগেল থাকবো, জোর করে আপনারা আমাকে পরীর সাথে সংসার করতে ঠেলে দিছেন,এখন যদি ধন্যবাদ স্বরুপ কমেন্ট না পাই খবর আছে)
আকাশের জ্ঞান ফিরে আশে, সে আস্তে আস্তে চোখ খুলে নিজেকে আবিষ্কার করে সে মাটিতে পড়ে আছে,
তার চতুর্পাশ ঘিরে অনেক লোক বসে আছে সাদা কালারের জামা পরিধান করে...!
পন্ডিতটা মন্ত্র পাঠ করে তাড়াতাড়ি বড় পন্ডিতের হাতে বইটা দিয়ে দেয়,
আর বড় পন্ডিত বইটা গুহায় রেখে বের হয়ে আসে,তখন সে দেখতে পায় কোন মায়াজাদু আর নাই,সে নিজের মধ্যে ফিরে আসে,
অন্যদিকে মাবশূরাহ এর চিৎকার শুনে ওর বাবা-মা আরো কয়েকজন দৌড়ে যায়,
মাবশূরাহ, আকাশ আকাশ বলে জোরে চিৎকার করতে থাকে...!
মাবশূরাহ, এর বাবা মা আকাশ ঠিক আছে,তুই এমন করিস না,
মাবশূরাহ, নাহ আমার আকাশ কই,আমার আকাশকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও,আমার আকাশকে চাই, আমি ওকে দেখবো,
মাবশূরাহ এর বাবা,মা রে তুই একটু শুয়ে রেস্ট কর,আকাশ ঠিক আছে,ওর কিছু হয় নি,
মাবশূরাহ, নাহ আমি আকাশকে দেখবো বলে জোর করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে,আর ঘর থেকে বের হয়ে আকাশ আকাশ বলে চিৎকার করতে থাকে,
আকাশ,আস্তে আস্তে উঠার চেষ্টা করে মাটি থেকে...!
মাবশূরাহ লক্ষ্য করে হাজার হাজার পরীর ভিড়ে আকাশ দাঁড়িয়ে আছে,
পন্ডিতদের দূর্গ করাও শেষ,
মাবশূরাহ,পরী- পালকের পরীদেরকে ঠেলে দৌড়ে গিয়ে আকাশকে ঝাপটে ধরে,আর পাগলের মত চুমু খেতে থাকে আকাশের সারা শরীরে, আমার কলিজার কিছু হয় নি তো বলে আকাশের ঘাড়ে ঠোঁটে কপালে চুমু খেয়েই যাচ্ছে, সবাই তো সরমে চোখ বন্ধ করে রেখেছে,মেয়েটা করছে কি...?
আকাশ,কলিজা আমি তো ঠিক আছি,তুমি এমন করছো কেন...?
আর আমাকে না বলি দেওয়া হয়েছিলো,তাহলে জীবিত হলাম কি করে....?
এমন সময় পন্ডিত একজন এগিয়ে এসে সে আর বলতে জীবিত হলেন কি ভাবে,মাথার ঘাম পায়ে পড়েছে আমাদের আপনাকে জীবিত করতে...!
মাবশূরাহ,আকাশকে ঝাপটে ধরে আছে,মনে হয় যে ছেড়ে দিলে আকাশ কোথাও হারিয়ে যাবে,
আকাশ,ও মাবশূরাহ কে জড়িয়ে ধরে...!
এরপর আকাশকে আর মাবশূরাহকে রাজ সভায় নিয়ে যাওয়া হয়...!
মাবশূরাহ এর বাবা আর পরী-পালকের সকলে মেনে নেয় আকাশকে,কারন মহারাজ আদেশ করেছে,আর তার চেয়ে বড় কথা আকাশকে মারলে মাবশূরাহ ও মরে যাবে....!
সেই রাতে তাদরে আবার বিয়ে হয়,এবং সকল পরীদের সামনে মাবশূরাহ এর বাবা আকাশকে পরী-পালকের রাজা হিসাবে ঘোষিত করে,তবে আকাশের পর আকাশের আর মাবশূরাহ এর সন্তান এই হবে এই রাজ সভার অধিকারী...!
আকাশ,তারপর মাবশূরাহ কে নিয়ে পরী-পালক থেকে ফজরের আগেই বাসায় ফিরে আসে,কেউ টের ও পায় না....!
সারাদিন আকাশ আর মাবশূরাহ জমিনে থাকে রাতের বেলায় পরী-পালকে যায়,কারন এখন তারা যখন ইচ্ছা হয় পরী-পালকে যেতে পারে,
কিছুদিন পর মাবশূরাহ এর বাবু হবে,আকাশ সব সময় ওর খেয়াল রাখে....!
কিছুদিন পর ওদের ফুটফুটে একটা বাচ্চা হয়,গায়ের রং ধবধবে সাদা মাবশূরাহ এর মত,কিন্তু চেহারায় পুরা আকাশের উপরে গিয়েছে,
এভাবই চলতে থাকে...!
ছয় বছর পর,
তানিম দৌড়াচ্ছে খাবার খাবে না বলে,
তানিম হচ্ছে মাবশূরাহ আর আকাশের বাবু,
আর মাবশূরাহ তানিমের পিছনে পিছনে দৌড়াচ্ছে ওকে খাবার খাওয়ানোর জন্য, তানিম কোথায় গিয়ে জানি লুকিয়ে পড়ছে,
এমন সময় আকাশ এসে মাবশূরাহ কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে নাক ঘষতে থাকে,আমার কলিজাটা কি করে...?
মাবশূরাহ, তোমার বান্দর পোলাটারে খাওয়াইতেছি,
কিন্তু কোথায় গিয়ে যে লুকিয়ে পড়ছে খাওয়ার ভয়ে কে জানে...!
মাবশূরাহ তানিমকে এত ডাকা ডাকে কিন্তু তানিম বের হয় না,...!
আকাশ,আমার ছেলে অনেক ভালো দেখছো সে জানে তার পাপা এখন তার মাকে আদর করবে বলে কোলে তুলে নেয়,আর ওদের বেড রুমে গিয়ে মাবশূরাহকে ছেড়ে দিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়...!
আকাশ,চলো তানিম এর জন্য একটা খেলার সাথী আনি...?
মাবশূরাহ,এহহহহ লাগবে না একটাকেই পারি না সামাল দিতে তিনার আরো একটা চাই
আকাশ,তোমার না লাগলে নাই আমার লাগবে বলে মাবশূরাহ কে আদর করতে শুরু করে....!
এমন সময় তানিম দরজার সামনে এসে দরজা বাড়ি দিতে থাকে পাপা-মাম্মাম তোমরা কোথায়...?
আকাশ,তানিম তোমার পাপা তোমার মাম্মামকে আদর করছি,তোমার সাথে খেলার জন্য একটা সাথী আনতে....!
তানিম,আচ্ছা পাপা বেশি করে করো কেমন আমার খেলার সাথী যেন তাড়াতাড়ি পাই আমি....!
মাবশূরাহ, বদ লোক একটা খবিশ নিজের ছেলেকে কেউ এই সব বলে...?
আকাশ,দেখছো তোমার ছেলে কত স্মার্ট,সে বলছে বেশি করে আদর করতে,আমি তাই করবো....!
ঐ মিয়ারা আপনারা কি শুনেন হা,
ওরা আদর করবে এটাও শুনতে হবে আপনাদের জান সবাই,নিজের বউকে গিয়ে আদর করেন....!
<>সমাপ্তি<>
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com