পাওয়া না পাওয়া
আমি মধ্যবিত্ত, বিয়ে করলাম মাস্টার্স পাস মেয়েকে। ভেবেছিলাম স্ত্রী চাকরি পেলে সংসারে সচ্ছলতা আসবে।
এই সময়ে এসে একা হাতের ইনকাম দিয়ে সংসার চালানো খুব মুশকিল।
কোম্পানি জবে যা বেতন পাই টেনেটুনে সংসার চলে।
স্ত্রীর চাকরি হলো।২৫ হাজার টাকা বেতন।সংসারে দেয় ৫ হাজার।
বাকি টাকা তার কাছেই রাখে।প্রশ্ন করলে বলে
তোমার টাকায় তো সংসার চলছেই,বাড়তি আমিও ৫ হাজার টাকা দিই।
তাহলে বাকও টাকার হিসেব চাচ্ছো কেনো?
স্ত্রীর এমন উত্তরে আমার আর কিছু বলার থাকে না।
পরের বছর না ফিরতেই কোল জুরে ফুটফুটে ছেলে সন্তান।
রোজ রাতে ছেলেকে ও দুধ খাওয়ায় আর আমরা টুকটাক গল্প করি।প্রায় সময়ই ও বলে
ছেলেকে শহরের বড় স্কুলে পড়াবো।ভালো টিউশন রাখবো
এদিকে আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলি।সরকারি স্কুলের বাইরে পড়ানোর সামর্থ্য আমার নাই,ইচ্ছেও নাই।স্ত্রীর এক কথা,ছেলেকে দামী স্কুলে পড়াবে।একদিন রাগ করে বললাম
দামী স্কুল, দামী টিউশন পড়াবে ভালো কথা।এতো টাকা কোথায়?
আমার চাকরির টাকাটা জমিয়ে রেখেছি।ও বড় হতে হতে ওই টাকার পরিমান আরো বাড়বে।
আর শুনো,সামনের সপ্তাহে ব্যাংকে যাবো,টাকা তুলবো "
কত টাকা? "
এক লাখ "
এতো টাকা জমে গেছে? "
এক বছর ধরে জমাচ্ছি যে।ওই টাকা দিয়ে তুমি একটা সাইড ব্যবসা ধরো।ছেলে বড় হচ্ছে,
ওর ভবিষ্যত আসতে আসতে অনেক টাকার প্রয়োজন "
স্ত্রীর কথায় রীতিমতো আমি হতভম্ব।কি বলবো বুঝতে পারলাম না।
তার ক'দিন পরেই মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন।মাথার ভেতরে ছোট সাইজের ঘা হয়েছে।
বিদেশ,মাদ্রাজে নিয়ে যেতে হবে।
স্ত্রী বললো " ওই টাকাটা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা হবে না? "
" ওটা তো তুমি এতো কষ্ট করে জমিয়েছো,ছেলেকে দামী স্কুলে পড়াবে বলে।সেটা দিয়ে দিবে? "
" সাধারণ স্কুলে পড়েও অনেকে অনেক কিছু হচ্ছে।
তুমি মাকে ওই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাও "
অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে বললাম "
যারা তোমার মতো মা পায় তাদের দামী স্কুলে পড়ার কি প্রয়োজন?
পারিবারিক শিক্ষা যে সন্তান পায় সেই তো প্রকৃত শিক্ষিত। "
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com