রাগী মেম । পর্ব - ০৬
কিরে আজ এতো তারাতাড়ি অফিস থেকে আসলি কেনো?
-- অফিস থেকে তারাতাড়ি আসা যাবে না এমন কোনো আইন আছে নাকি,,,,
-- তা না,, হঠাৎ কেনো?
-- কাল সিলেট যাচ্ছি, কয়েক দিনের জন্য,,,,
-- সত্যি ?
-- তুমি কি খুশি হইছো?
-- অনেক,,,, আচ্ছা ঐ খানে কোনো মেয়ে পছন্দ হলে বলবি কিন্তু?
-- হুম এক সাথে ৫,৬ টা বিয়ে করমো,,,তারপর বুঝবে মজা,,,,, সারাদিন শুধু এই চিন্তা করে,,,
-- হইছে যা আর বলবো না,,,
-- বলো না করছে কে,,, এমনি না হলে আমার রুমে ভিতরে সাউন্ড বক্স আছে কথাটা রেকর্ডিং করে সব সময়ের জন্য লাগিয়ে রাখো,,, একটা সেকেন্ড জেনো আমি এই কথাটা না শুনা বাদে থাকি
( রাতে খাওয়ার সময়)
-- ভাইয়া তুই নাকি সিলেট যাচ্ছিস?
-- হুমম,,,,
-- কেনো?
-- তর জন্য ছেলে দেখছি,,,
-- দুরর বাদ দে,,,,,
--( ওমা আমার বোন আজকে আমার কথায় কিছু বলছে না,, আবার এতো সুন্দর করে কথা বলছে,,, ঘটনা কি?)
--- ভাইয়া একটা কথা বলবো?
-- হুম বল,,,
-- না মানে আমার জন্য এক জোরা নুপুর আনবি? সুন্দর দেখে?
-- ( এইটা তাহলে কথা,,,,)
-- টাকা দিলে আমি নিয়ে আসতে পারবো কোনো সমস্যা নাই,,,
-- থাক লাগবে না,,,
-- আম্মু উঠলে কেনো?,,
-- দারা,,
( একটু পর)
-- এই নে ২০০০ টাকা,,
-- কেনো?
-- আমার কাছে এটাই ছিলো,,, আমার মেয়ের জন্য সুন্দর দেখে নুপুর নিয়ে আসবি,,,
-- ( এটা আমি কি করলাম,, দুজনে কষ্ট পেয়েছে,,,, থাক আমারি তাদের রাগ ভাঙ্গাতে হবে,,)
-- না এখন টাকা নিবো না,,, তোমার মেয়েকে বল আমি এখন আমার টাকা দিয়ে এনে দিচ্ছি,,, বিয়ের পর জেনো তার বর কে বলে আমার টাকা ফেরত দেয়,,,
-- আম্মু আমার নুপুর লাগবেনা,,, কেউ যদি ইচ্ছে করেও নিয়ে আসে আমি পানিতে ফেলে দিবো,,
-- আমি টাকা দিচ্ছি নিবি না কেন,,,,
-- না লাগবে না আমার নুপুর,,,
-- আম্মু এতো করে যখন তোমার মেয়ে বলছে তাহলে আর কি দরকার,,
-- তুই চুপ কর,,,, এই নুসরাত খাওয়া ছেড়ে উঠলি কেন?
-- আম্মু আমার খাওয়া শেষ,,,( নুসরাত চলে গেলো)
-- আম্মু তোমারও কি খাওয়া শেষ,,?
-- তুই গিল বসে বসে,,
-- আহারে পাগলী বোন,,রাগাতে চাইলাম একটু অনেকটা রাগ করেছে,,,,
সামান্য নুপুরের জন্যো,,
( আপনারা একটা বিষয় চিন্তা করছেন?
মা বাবার ভালোবাসাটা একটু মেয়েদের প্রতি বেশি থাকে,,,
কেনো জানেন?
আসলে মেয়েদের জীবনটা আমরা যতটা সহজ মনে করি তাদের জীবনটা তার থেকে একটু বেশি কঠিন,,,
হয়তো আমরা বুঝতে পারি না,, কারন তারা ছোট বেলা থেকে বাবা,
মা,ভাই ও পরিবার নামক একটি বট বৃক্ষের নিচে নিরাপদ আশ্রয়ের নিচে থাকে,,,
সেখানে তৈরি করে হাজারো মায়ার বন্ধন,,
বট বৃক্ষের মতো শিকর গুলো চলে যায় মাটির অনেক গভিরে,,,,
জিবনের অর্ধেক বয়সে তাদের একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়,,,
সেই সিদ্ধান্তটা হলো সেই মায়ার বন্ধন ছেড়ে আরেটা যায়গায় গিয়ে নতুন করে জীবনটা সাজানো,,,,
এটা যে কত কষ্টের সেটা একমাত্র মেয়েরাই জানে,,,
তাইতো বাবা মায়েরা একটু তাদের প্রতি যত্নশীল বেশি হয়,,
ওদের আপদারটা যেভাবেই হোক পূরন করার চেষ্টা করে,,
আবার মনে করার কোনো কারন নাই যে বাবা মা ছেলেদের ভালোবাসে না,,
আসলে তারা এমন একটা জিনিস তাদের কাছে সবার জন্য সমান ভালোবাসা থাকে।
তবে মেয়েদের একটু বেশি আদর করে,,
আচ্ছা আপনারা আবার কিছু মনে করবেন না কথা প্রশংঙ্গে কথা গুলো চলে আসছে,,,
সবটা গল্প পড়লে হয়তো ভালোবাসার বন্ধন কত প্রকার সব জানতে পারবেন,,, )
-- সাবধানে যাবি,,, আর পৌছে আমাকে ফোন দিবি,,,
-- আচ্ছা আম্মু আমি যাই দোয়া করো,, নুসরাত কোথায়
-- মনে হয় এখানো ঘুম থেকে উঠে নাই,,তুই যা আমি বলবো,,
-- নুসরাত কে সব সময় পাশে রাখবে,,,আমি গেলাম,, আসসালু আলাইকুম,,
-- ফি আমানিল্লাহ,,,
-- কি ব্যাপার মেম এখনো আসছে না কেন,,
ঐতো দেখা যাচ্ছে,,
-- আসসালামু আলাইকুম মেম,, হুড মর্নিং,,,
-- হুমম,,, সব রেডি তো?
-- গাড়িতে উঠেন,,,,
-- আমি পিছনে বসলাম,, মেম ও আমার সাথে বসলো,,,
-- ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করো,,,
-- মেম এতো বড় জার্নি ট্রেনে গেলে কি হতো না?
-- না,,, মাইক্রোতে কি সমস্যা?
-- না মানে,,ড্রাইভার কি পারবে?
-- ড্রাইভার আপনার মতো অকর্মা না,,,
-- তাহলে মেম আমাকে শুধু শুধু কষ্ট দিয়ে সিলেট নিয়ে যাওয়ার কি দরকার,,
-- চুপ করে বসে থাকেন,,,
-- প্রায় অনেকক্ষন হয়ে গেলো গাড়িতে বসে আছি,,,,, হঠাৎ লাক্ষ করলাম মেম তার মাথাটা আমার কাদের উপর রেখে ঘুমিয়ে আছে,,,
এই প্রথম এরকম পরিস্থিতিতে পরলাম,,,খুব নার্ভাস ফিল করতেছি,,
( অনেক্ক্ষণ পর তানহার ঘুম ভাঙ্গলো,,,,আর এই অবস্থা দেখে কিছুটা লজ্জা পেলো,)
-- এই ড্রাইভার আর কতক্ষন লাগবে?
-- এই তো মেম মনে হয় আর ৩ ঘন্টা লাগবে,,,
-- আর ভালো লাগছে না,,,,
,,,
কিছুক্ষণ পর গাড়ি সিলেটে প্রবেশ করলো,, প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে,, এখান থেকে গন্তব্যে যেতে আরো ২ ঘন্টা লাগবে,,, পাহাড়ি রাস্তা,,, একদম নির্যন,,,এখানে বিপদে পড়লে কেউ সাহায্য করার মতো নেই,,,তানহা কিছুটা ভয় পাচ্ছে,,,, নিহান আনমনে কি যেনো ভাবছে,,,,গাড়ি তার আপন গতিতে চলে,,, হটাৎ ড্রাইভার হার্টব্রেক ধরলো,,,
--কি হলো ড্রাইভার,,এভাব ব্রেক কশলেন কেন,,,?
-- ওমাই গড,,,ড্রাইভার নেই গাড়িতে,,,?
-- কিহ্!
-- হুমম,,, এই কি করছেন? গাড়ি থেকে নামবেন না,,,, হয়তো বড় ধরনের কোনো বিপদ,,
( কিছুক্ষন পর ৫,৬ জন লোক আসলো,,,হাতে ধারালো অস্ত্র,,, তানহা ভয়ে নিহান বাম হাতটা চেপে চেপে ধরলো,,,,)
-- গাড়ি থেকে বের হও,,
-- কেনো ভাইয়া,( নিহান)
-- কোনো কথা নেই,, যা বলছি তারাতারি কর,,,( ছুড়ি দেখিয়ে,,,)
-- (তানহা ভয়ে নেমে পড়লো,,,
--( আমি আর কি করবো? আমি তো আর সিনেমার নায়ক না যে ডিসুম বিসুমা করে সব গুলারে মেরে ফেলবো,,,আমিও নেমে যাই,,,)
-- সাথে যা কিছু আছে বের কর,,,
-- ভাই সব কিছু দিয়ে দিবো,,,?
-- ঐ সব বের কর,,
( তানহা আর নিহান সব দিয়ে দিলো,,,পড়নের পোশাক গুলো ছাড়া কিছুই নেই,,,,,)
-- যা সুজা সামনের দিকে হাটতে থাক,,আর পিছনের দিকে তাকাবি না,,,
-- গাড়িটা দিয়ে দেন অন্তত গন্তব্যে পৌছাই?
-- এখন যাবি এখান থেকে না মাথা থেকে গারটা আলাদা করে দিবো?
-- না থাক চলে যাই,,,
-- (তানহা সেই কখন থেকে চুপ করে আছে,,,মনে হয় কিছুই বুঝে না,,,,, দুজন সামনের দিকে হাটতেছে কোথায় যাবে কেউ জানে না,,,,, এক অজানর উদ্দেশ্যে হাটতে শুরু করলো,,,, পাহাড়ের উপর দিয়ে কতক্ষণ হাটা যায়,,, চারোদিকে অন্ধকার,,, তবে অন্ধারটা বেশি না,,চার পাঁচ দিন হলো নতুন চাদ উঠেছে,,,কিছুটা জোনাক আছে,,,)
-- বেশি বুঝলে এমনি হয়,,,,
-- আমি কি জানতাম।
-- জানতেন না যে পাহাড়ি রাস্তায় বিপদ বেশি থাকে,,,, তবুও নিয়ে এসেছেন,,,কই আপনার ড্রাইভার,,ভয়ে তো পালিয়েছে,,,
-- এখন এসব বাদ দাও,,আমার খুব ক্লান্ত লাগছে,,,,,,,আমি আর হাটতে পারবো না,,
-- কষ্ট হলেও এই পাহাড়টা পার হতে হবে,,,
-( দু'জন হেটে হেটে পাহাড়টা পার হলো,,,, দুজনেই ক্লান্ত,, হঠাৎ তানহা সামনের একটি ছোট্ট কুটির দেখতে পেলো,,,)
-- এই নিহান সাহেব সামনে একটা ঘড় দেখা যাচ্ছে,,,, ঐটা তে গিয়ে আপাতত আশ্রয় নেই,,
-- ঐ খানে যাওয়া আমার মনে হয় ঠিক হবে না,,
-- আপনি বেশি বুঝেন?
-- কম বুঝি দেখেই তো আজ এই অবস্থা।
-- এতো কথা না বলে চলেন.....
চলবে...
Next Part koi
ReplyDelete