বাইশের বন্যা । ডাকাতের রাত । পর্ব - ০৪ । লিখা- তাসরিফ খান
এর আগে আমরা যতদিন ট্রাক নিয়ে ত্রাণ দিতে গিয়েছি, প্রতিবারই ত্রাণের বস্তা দেখামাত্র বানভাসি মানুষগুলো হিংস্র হয়ে আমাদের ট্রাক থামিয়ে খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেজন্য প্রতিবার ট্রাকে করে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকের উপরটা ত্রিপল দিয়ে ভালো করে বেঁধে, সেই ত্রিপলের উপরে আমরা বসে থাকতাম যাতে ট্রাকের ভিতর কী আছে মানুষজন বুঝতে না পারে ।
সুবিদবাজার থেকে দুয়ারা পর্যন্ত চার ঘণ্টার পথ। বেশিরভাগ রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। দুয়ারা যাওয়ার রাস্তায় দুই পাশে অনেক বন্যার্ত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে । বাঁশ কেটে পলিথিন পেঁচিয়ে অস্থায়ী থাকার ঘর বানিয়ে তারা এখানে অবস্থান করছে। রাস্তার দুই পাশে হাওর। ধান পচা গন্ধে পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসার উপক্রম। সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে গোবিন্দগঞ্জ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে থামতে হলো আমাদের। সেনাবাহিনীর কয়েকজন স্টাফ ইশারা করে আমাদের থামতে বললেন । জানতে চাইলেন যে আমরা কোথায় যাচ্ছি। আমি বললাম,
দুয়ারা বাজারের দিকে যাবো ।
ঐদিকে তো যাওয়া যাবে না ।
কেন?
ঐদিকে যাওয়ার পারমিশন নেই ।
কেন পারমিশন নেই জানতে পারি?
আপনারা মেজর স্যারের সাথে কথা বলুন, তিনি ক্যাম্পেই আছেন । এই বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন ।
আরো পড়ুনঃ
আমরা তাহলে কীভাবে স্যারের সাথে কথা বলতে পারি?
আপনারা অপেক্ষা করুন, আমি স্যারের সাথে কথা বলে আপনাদের জানাচ্ছি।
প্রায় পনেরো মিনিট পর মেজর স্যার আসলেন। উনার নাম আসহাব । আমরা সালাম বিনিময় শেষে স্যারকে বললাম,
স্যার, আমরা তাসরিফ স্কোয়াড। বন্যার্তদের জন্য কাজ করছি। আমরা দুয়ারা বাজার যেতে চাই ।
দেখুন, ঐদিকে বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে পানি যাচ্ছে ।
স্যার, আপনি পারমিশন দিলে আমরা একটা নৌকা ব্যবস্থা করে চলে যেতে পারবো।
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com