আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ২৮
সবাই মিলে নাস্তা টেবিলে বসে আছি, কিন্তু জান্নাত নেই। নিয়ম অনুযায়ী আজকে আমাদের বৌভাত।
আন্টিঃ কি ব্যাপার জিয়ান তুমি রেডি হয়ে কই যাচ্ছো?
জিয়ানঃ কেন আম্মু কলেজে? আমার সাথে ফারহাও যাবে।
ফারহাঃ
আন্টিঃ জিয়ান তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? আজকে তোমাদের বৌভাত আর তুমি বলতেছ কলেজ যাবা তাও ফারহাকে নিয়ে
আংকেলঃ জিয়ান এই সব কি বলতেছ তুমি?
জিয়ানঃ ফারহা তোমার খাওয়া শেষ?
ফারহাঃ হুম।
জিয়ানঃ তো বসে আছো কেন? যাও উপরে যাও, গিয়ে রেডি হয়ে নাও।
ফারহাঃ আন্টির দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
জিয়ানঃ কি হলো যাও,
ফারহাঃ হনু একটা সব সময় রাগ দেখায়, কালকে বিয়ে হলো আজকে নাকি কলেজ যাবো? আরে বাবা কলেজ গেলে বিয়ে করলাম কেন? মানুষ তো পড়াশুনো না করার জন্য বিয়ে করে কিন্তু আমার কপাল দেখুন বিয়ের পরের দিন কলেজ যাওয়ার জন্য জামাই ধমক দিচ্ছে। আজব! ওখানে থেকে রুমে চলে আসলাম।
জিয়ানের আম্মুঃ জিয়ান এইটা কোন ধরনের পাগলামো? বিয়ের পরের দিন কলেজ গেলে লোকে কি বলবে?
জিয়ানঃ আম্মু লোকে কি বললো না বললো তাতে আমার কিছু এসে যায় না। তাছাড়া বিয়েটা যখন ফারহার জেদের জন্য হয়েছে, তার জন্য আমরা তো অবুঝ হতে পারি না তাই না?তাই আমি চাই ফারহা আগে পড়াশুনা শেষ করুক তারপর নতুন করে আবার সব করবো। আমি চাই না এত বাচ্চা বয়সে ফারহা এইসব কিছুতে জড়িয়ে যাক।
জিয়ানের আব্বুঃ এই না হলে আমার ছেলে,,,
জিয়ানের আম্মুঃ সেটা না হয় বুজলাম কিন্তু,,,
জিয়ানঃ কোনো কিন্তু না আম্মু,, ফারহা না হয় বাচ্চা মানুষ কিন্তু আমরা তো বাচ্চা না আমাদের সবটা বুজতে হবে। আচ্ছা যাই হোক বাদ দাও সে কথা। আমার মনে হয়, ফারহার পরিবারও এই নিয়ে কোনো দ্বিমত করবেন না।
ফারহাঃ নিচে এসে দেখি সবাই কি নিয়ে যেন আলোচনা করতেছেন আমাকে দেখে থেমে গেলেন।
জিয়ানের আম্মুঃ আরে ফারহা তুমি রেডি হয়ে আসলে কেন এই পাগলের কথায়? দেখ জিয়ান তুই কলেজ যাওয়ার আছে তো যা। কিন্তু ফারহা আজকে কলেজ যাবে না,
জিয়ানঃ আম্মু,,,,
জিয়ানের আম্মুঃ আমি কোনো কথা শুনতে চাই না যেটা বলেছি সেটাই,
জিয়ানঃ আচ্ছা ঠিক আছে আজকে যেতে হবে না, কিন্তু কালকে থেকে না করতে পারবা না কিন্তু।
জিয়ানের আম্মুঃ হুম
ইয়াহুউউউউউ আজকে কলেজ যেতে হবে না,,, মনে হচ্ছে একটা ডান্স দিই কিন্তু পারলাম না কারণ শ্বশুর বাড়ী বলে কথা।
আংকেল আর স্যার চলে যাওয়ার পর আমি আন্টিকে জড়িয়ে ধরলাম,,,,
ফারহাঃ আন্টি আপনি না খুব ভালো,,,
আন্টিঃ কি বললে
ফারহাঃ আরে বাবারে আন্টি এত রেগে গেলেন কেন? আমি খারাপ কিছু বলেছি নাকি? কি হলো আন্টি?
আন্টিঃ আবার,,,
ফারহাঃ না মানে বুঝতেছি না তো কেন রাগ করতেছেন?
আন্টিঃ আমি কি তোমার এখনো আন্টি রয়ে গেছি নাকি এই মাকে তোমার পছন্দ হয় নাই?
ফারহাঃ নাহ আন্টি তেমন কি, না মানে আম্মু তেমন কিছুই না। অভ্যাস হতে একটু সময় লাগবে
আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে যত পারো সময় নাও কিন্তু আমি আন্টি এল্যাও করবো না,
ফারহাঃ এমা এইটা কেমন কথা? তাইলে সময় নিয়ে আর লাভটা কি হলো?
আম্মুঃ জানি নাহ বাট এইটাই ফাইনাল।
ফারহাঃ আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।
আম্মুঃ হুম মনে থাকে যেন,,
ফারহাঃ আচ্ছা আম্মু জান্নাতকে দেখছি না যে ও কোথায়?
আম্মুঃ মহারাণীর কথা আর বলিও না, পরে পরে ঘুমাচ্ছে আর কি করবে? মা তুমি গিয়ে একটু দেখো তো ঘুমা ভাঙ্গাতে পারো কি না?
ফারহাঃ আচ্ছা আম্মু যাচ্ছি।
রুমে গিয়ে দেখি মহারাণী কি আরামে ঘুমাচ্ছে, নিজের জল্লাদ ভাইটাকে দিয়ে আমার আরামের ঘুম হারাম করে নিজে কি সুন্দর ঘুমাচ্ছে। ধারাও চান্দু তোমারে মজা বুঝাচ্ছি,,
একটা কাগজ নিয়ে ওর কানের মধ্যে সুড়সুড়ি দিচ্ছে, ঘুমের মধ্যে বিরক্তি নিয়ে যা লুক বানিয়েছে দেখেই আমার হাসি পাচ্ছে। বেচারি মনে হয় আমার মতো স্বপ্ন দেখতেছে ভাবছে।
আমি থামবার নাম নিশান নিচ্ছি না অনবরত সুড়সুড়ি দিয়েই যাচ্ছি। এক পর্যায়ে বেচারি রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আমাকে দেখে একটা চাপা বিরক্তির হাসী দিলো। ওর অবস্থা দেখেই আমার হাসি পাচ্ছে।
জান্নাতঃ ভাবী কিছু বলবা?
ফারহাঃ হুম, তোমায় আম্মু ডাকতেছে।
জান্নাতঃ উফ এইই আম্মুটা না সব সময় এমন করে,, দূর ভালো লাগে না,
বকতে বকতে জান্নাত ওয়াশরুমে চলে গেলো, আর আমি হাসতেছি। সারাদিন আম্মু আর জান্নাতের সাথে গল্প করে কাটাইছি। জিহা একবার আসছিলো কিন্তু আমি কোনো কথাই বলি নাই ওর সাথে। ওরা আমার সাথে যা করেছে আমি কখনোই ভুলবো না। ও অনেক বার মাফ চেয়েছে কিন্তু আমি কোনো কথায় বলি নাই।
যখন কাছের মানুষ থেকে কষ্ট পায় মানুষ তখন নিজেকে সব থেকে বেশি অসহায় মনে হয়। জিহা আমার সব থেকে কাছের বন্ধু ছিলো সেও আমায় ঠকিয়েছে। চাইলেও পারবো না ওদের করা সব অপমান ভুলে যেতে।
আপনার পছন্দের গল্প পড়তে এবং গল্প পোস্ট করতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন। কমেন্টে গ্রুপের লিংক দেওয়া আছে
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com