সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০১
বাঁচাও!!বাঁচাও!!কে আছো বাঁচাও??
এই মেয়ে চেচাচ্ছো কেন??(মুখ চেপে ধরে)
দেয়ালে সাথে চেপে ধরে হর্ঠাৎই একটা অপরিচিত ছেলে আমার মুখ চেপে ধরে বলতে লাগল!!!
তার এমন কাজে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে!!
ছেলেটি মুখে মাস্ক পড়ার কারনে তার ফেস ঠিক মতো বোঝা যাচ্ছে না!!
অবাকের চোখে তাকিয়ে আছি আমি তারদিকে!!!!
আমার নাম তানজিল মীম!!আমি একজন সাংবাদিক!!একটা কাজে অফিস থেকে বেরিয়ে ছিলাম!!
বর্তমানে একটা রেস্টুরেন্টের ওয়াশরুমে দাঁড়িয়ে আছি!!
আমি ওয়াচরুমে ঢুকতেই কোথা থেকে একটা ছেলে এসে ভিতরে ঢুকে গেল!!
ছেলেটিঃএই মেয়ে এইভাবে চেঁচালে সবাই মনে তোমাকে আমি আর বলল না!!
তারপর তার মাস্কটা খুলে ফেললো!!
ওনার ফেস দেখে ১৪০ ভোল্ট কা জাটকা খেলাম আমি!!
কারন উনি হলেন বাংলাদেশের সেলিব্রিটি মিস্টার আয়ান!!
ওনাকে দেখেই অটোমেটিকই মুখ থেকে বেরিয়ে আসলঃ
মিস্টার সেলিব্রেটি আপনি???
আয়ানঃ আসলে একটু বিপদে পরেই এমন কাজটা করতে হলো তার জন্য আমি খুব দুঃখিত মিস!!
it’s okk কিন্তু আপনি এখন এইভাবে এই সময়???
আয়ানঃ আসলে আজকে কোনো গার্ড ছাড়াই মাস্ক পড়ে বেরিয়ে ছিলাম আমি!!
সাথে কোনো গাড়ি নিয়ে আসি নি!!
কিন্তু আমাকে যে এইভাবে দেখে সবাই চিনতে পারবে বুঝতেই পারি নি!!
তাই সবাই একসাথে জোট পেতে ধরার আগেই সামনে এই রেস্টুরেন্টের ঢুকে ওয়াশরুমে আসলান!!!!
কিন্তু ভিতরে যে তুমি ছিলে খেয়াল করিনি প্লিজ চেচিও না!!!
আরে মিস্টার সেলিব্রিটি কোনো চাপ নিবেন না আমি আছি না!!
আপনি এক কাজ করুন আপনার লোকেদের ফোন করে আসতে বলুন!!
আয়ানঃআমার ফোনটা ভীরের মধ্যে নিচে পড়ে গিয়েছিল!!
ওহ আচ্ছা আমার ফোন দিয়ে ফোন করুন!!!
তারপর আমার ফোনটা দিলাম আয়ানকে!!
আয়ানঃ হ্যালো,সোহেল তাড়াতাড়ি আমার জন্য গাড়ি পাঠা আমি বাসা থেকে বেরিয়ে
এখানে আঁটকে গেছি!!তাড়াতাড়ি কর ৫ মিনিটের মধ্যে পাঠা তাড়াতাড়ি কুইক!!
আরো পড়ুনঃ
সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০২
সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০৩
সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০৪
সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০৫
সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০৬
ওপাশ থেকেঃ
সোহেলঃ ওকে ভাই এখনি আসছি!!এই বলে ফোনটা কেটে দিল সোহেল!!
তারপর তাড়াতাড়ি করে কিছু গার্ড নিয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে আসল!!
এসে আবার ফোন দিল আমার নাম্বারে!!
সোহেলঃ হ্যালো ভাই আসছি তো আপনি কই!!??
আয়ানঃ ওয়েট কর আমি আসছি!!!
এখন কথা হলো একসাথে দুজন একটা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসব কিভাবে!!
কেউ দেখলে কী বলবে!!!!
আয়ানঃ মিস এখন কী করব!!কিভাবে বের হবো এখান থেকে!!!
-কিছুক্ষন ভাবার পর........
আরে মিস্টার সেলিব্রেটি একদম চাপ নিবেন না!!দুই মিনিটের মধ্যে আপনি বেরিয়ে যাবেন!!
আমি একজন জার্নালিস্ট কি করব শুধু দেখতে থাকেন!!
আগে আমি বের হবো!!তারপর আপনি!!
চেঁচানোর আওয়াজ পেলেই চুপ করে বেরিয়ে যাবেন!!
এই বলে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি!!!
খাবারের মধ্যে নিজের মাথার একটা চুল ছিঁড়ে রাখলাম তারপর চেঁচিয়ে উঠলাম আমি!!!
আমার চেঁচানো শুনে পুরো রেস্টুরেন্ট কেঁপে উঠল!!সাথে সাথে সবাই আমাকে ঘিরে ধরলো!!
ওয়েটারঃ কী হয়েছে ম্যাম!!
কী হয়েছে এগুলো কী(চুল দেখিয়ে)
সরি ম্যাম!!!
what সরি খাবার দেওয়ার সময় ঠিক মতো দেখে দেন না নাকি!!
আপনি জানেন এখন আপনার নামে সোশাল মিডিয়ায় কী ছড়িয়ে দিতে পারি আমি!!
আপনার রেস্টুরেন্ট আমি বন্ধ করিয়ে ছাড়ব!!
রেস্টুরেন্টের মালিকঃ সরি ম্যাডাম এইবারের মতো মাফ করে দিনব ওদের ভুল হয়ে গেছে!!
কিন্তু কে শুনে কার কথা উড়াধুরা চেঁচিয়ে মারছি আমি!!
আর সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে!!!
এদিকে আয়ান এত আওয়াজ শুনে আস্তে করে ওয়াশরুম থেকে মাস্ক পড়ে বেরিয়ে আসলেন!!
ওনাকে দেখে চেঁচামেচির বেগ আরো বারিয়ে দিলাম আমি!!যাতে কেউ পিছনে না তাকায়!!
সেই সুযোগে আয়ান বেরিয়ে গেলেন রেস্টুরেন্ট থেকে!!!আয়ান যেতেই!!!
এইবারের মতো ক্ষমা করে দিলাম ২য় বার আর দিবো না এখন তাড়াতাড়ি এই খাবারটা চেইঞ্জ করে আনেন!!
আমার কথা শুনে মুহূর্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠল!!
রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে তার কর্মচারীদেরও!!!
তারপর আবার বসে পরলাম টেবিলে!!!এক দীর্ঘশ্বাস ফেললাম শুধু!!!
এদিকে আয়ান গাড়িতে বসে!!মেয়েটার কান্ড দেখে হাসছে ভিষণ!!!
আয়ানের এমন কান্ড দেখে সোহেল বললঃ
ভাই সব ঠিক আছে তো!!আপনি এইভাবে হাসছেন কেন???
আয়ান আর বলিস আজকে একটা মেয়ে যদি না থাকত তবে এখনো আমি রেস্টুরেন্টে আটকে থাকতাম হয়তো!!!
আপনার লিখা পোষ্ট করতে চাইলে আমাদের গ্রুপে পোষ্ট করতে পারেনঃ
সোহেলঃওহ মেয়েটার নাম কী ভাই!!
আয়ানঃ আহ মেয়েটার নামটাই তো জানা হলো না!!
তবে এতটুকু বলেছিল মেয়েটা নাকি একজন জার্নালিস্ট!!
সোহেল অনেকটাই অবাক হয়ে বললঃ
ভাই জার্নালিস্ট হয়ে আপনাকে help করল!!
অন্য কেউ থাকলে তো সোশাল মিডিয়ায় এতক্ষনে এটা ভাইরাল হয়ে যেত!!!
আয়ানঃ সেটাই তো মেয়েটা আমার সাথে একটা সেলফি পর্যন্ত তোলার জন্য বলল না!!!(মনে মনে)
-এই সাহায্য তুলে রাখলাম মিস আবার দেখা হলে সুদসমেত ফেরত দিবো!!
(ভেবেই মুচকি হাসল আয়ান)
তারপর গাড়ি কাঁচের জানালার ভিতর থেকেই বাহিরের দৃশ্য দেখতে ব্যস্ত হয়ে পরল "সে"!!!
একরাশ বিরক্তি নিয়ে ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে নিতু!!কারন সে কোনো রিকশা পাচ্ছে না!!তার উপর তার জুতো ছিড়ে গেছে!!প্রচন্ড বেগে মাথা গরম হয়ে আছে তার!!তাই
এই রোদের ভিতর আর দাঁড়িয়ে না থেকে হাটা শুরু করল সে!!এক হাতে জুতো কাঁধে একটা ব্যাগ!!
পরনে একটা সাদা চুড়িদার!!চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে!!
এমন সময় সামনে অনেক মানুষের ভীড় দেখতে পেল নিতু!!
একটু সামনে এগোতেই অবাক হয়ে গেল সে!!কারন সবাই একজন ছেলেকে ঘিরে ধরে আছে!!
ছেলেটির সাথে সবাই সেলফি তুলতে ব্যস্ত!!আরেকটু এগোতে ছেলেটির মুখ দেখতে পেল সে!!
ছেলেটির ফেস দেখে "হা" হয়ে গেছে সে!!কারন ছেলেটি হলো তার প্রান প্রিয় মানুষ বললে ভুল হবে
তার প্রথম ক্রাশ এন্ড প্রথম ভালোবাসা বিখ্যাত শিল্পী মিস্টার রুহান!!
মুহুর্তেই তার বিরক্ত মাখা ফেস উওেজনার রূপ নিলো!!
নিতু জুতো রেখে দিল এক দৌড়!!একপায়ে জুতো আছে আর এক পায় নেই এমন অবস্থা!!
আর এই দৌড়ই তাকে সবচেয়ে বড় সিনক্রিয়েট করে দিল!!
কারন উওেজনায় দৌড়াতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল সে!!
সাথে সাথে আশেপাশের সবাই তাকালো নিতুর দিকে!!
-গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে..........
রুহান তার চোখের কালো চশমাটা খুলে সামনের মেয়েটার দিকে তাকালো!!
মেয়েটার বোকামো দেখে মনে মনে হাসল রুহান!!কিন্তু বাহিরে তা প্রকাশ করল না!!
এই মুহূর্তে রুহানের কাছে মেয়েটাকে একটা বাচ্চা মনে হচ্ছে!!
কারন মেয়েটি সবার সামনে এ্যাঁ করে কেঁদে দিল!!!
আশেপাশের লোকজন সবাই হা হয়ে তাকিয়ে রইল নিতুর দিকে!!
এদিকে নিতু কিছু বুঝতে না পেরেই কেঁদে দিল!!
এই মুহূর্তে লজ্জায় তার মাথা হেট হয়ে গেছে!!
কী করবে বুঝতে না পেরে আস্তে করে নিচ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে একপলক রুহানের দিকে তাকিয়ে দিল এক দৌড়!!নিতুকে আর পায় কে???
এদিকে নিতুর পালানো দেখে রুহান আরো অবাক হয়ে গেল!!
তারপর আর কিছু না ভেবেই গাড়িতে উঠে বসল সে!!!তার ড্রাইভার কাক্কু গাড়ি চালাতে শুরু করল!!
গাড়িতে উঠে প্রচন্ড বেগে হাসতে লাগল রুহান!!
মুহুর্তে তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসল "বাচ্চা মেয়ে" একটা!!!
এদিকে নিতু অনেকটা দূরে যাওয়ার পড় দাঁড়িয়ে পড়ে তারপর জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল সে!!
আরেকটু দেরি হলেই তার মানসম্মান সব মাটিতে বসে লুডু খেলত!!!তারপর সামনে একটা রিকশা
পেয়ে উঠে বসল সে!!তারপর নিজেকে হাজার টা গালাগালি দিতে লাগল নিতু!!
তার একটা ছোট্ট বোকামির জন্য রুহানের অটোগ্রাফ নিতে পারল না সে!!দূর ভালো লাগে না!!
এই মুহূর্তে তার ইচ্ছে করছে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে কান্না করতে!!!
কিন্তু পারছে না সে!!তাই মুখ ফুলিয়ে যেতে লাগল তার গন্তব্যে........
অফিসের বসের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি আমি!!
এর কারনটা হলো আমার লেট করে অফিসে আসা!!
কিন্তু দোষটা কী আমার ছিল ওই সেলিব্রেটির জন্যই তো হলো দেরি!!
আমার কী দোষ!!কিন্তু এই কথা যদি বসকে বলি তবে আরো দশগুণ কথা শুনিয়ে দিবে আমায়!!
তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে বসের কথা শুনে যাচ্ছি আমি!!
এমন সময় হুট করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো দিহান!!দিহান আমার দিকে তাকিয়েঃ
দোস্ত তুই এখানে........
বসঃ এই তো আরেক লেটুস আসল!!
আচ্ছা তোমরা দুই বন্ধু প্রতিদিন এত দেরি করে আসিস কেন অফিসে!!!
দিহানঃ বস কে বলছে প্রতিদিন দেরি হয় শুধু সপ্তাহে ৬ দিনই তো দেরি হয়!!
দিহানের আহামকের মতো কথা শুনে প্রচন্ড বেগে হাসি পাচ্ছে আমার!!
কিন্তু এই মুহুর্তে হাসা মানে "নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুর মারা"!!
তাই নিজের হাসি চেপে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমি!!
ধর্ষিতা বউ (সিরিজ গল্প)
ধনীর মেয়ে বস্তির ছেলে (সিরিজ গল্প)
বিবর্ণ বৈশাখে রংধনু(সিরিজ গল্প)
বিরহ মিছিল(সিরিজ গল্প)
বসঃ মীম তুমি তো আগে এত লেট করতে না তবে এখন হর্ঠাৎ করে কী হল তোমার!!
বস আজকের জন্য সরি আসলে কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না তাই একটু দেরি হয়ে গেছে সরি বস!!
দিহানঃ আমিও স্যার!!
বসঃ তুই আর কথাই বলিস না এই নিয়ে ৩৯৯বার বলা হয়ে গেছে তোকে!!
আজ পর্যন্ত পারলি না!!কালকে থেকে দেরি হলে রাতে ১ঘন্টা করে ওভার টাইমে কাজ করবি তুই!!
তারপর দুজনই মাথা নাড়িয়ে "হ্যাঁ" সমর্থন দিলাম!!!
তারপর দুজনেই মাথা নিচু করে বসের কেভিন থেকে বেরিয়ে আসলাম!!
বসের রুম থেকেই বেরিয়ে আসতেই দিহান আর আমি দুজনে একসাথেই হেসে দিলাম!!!
তারপর চলে আমাদের গন্তব্যে............
-কলিং বেলে জোরে টিপে ধরে রেখেছে নিতু!!
মনে হচ্ছে এখনি দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতে পারলে এখনি ঢুকে যেত!!
হর্ঠাৎ দরজা খুলে ঝাঁজালো কন্ঠে বলে উঠল নিতুর আম্মুঃ
এ তুই কী মহারাষ্ট্র জয় করে আসলি নাকি যে এত জোরে জোরে কলিং টিপছিস!!
নিতুঃআম্মু আপু এসেছে!!!
আম্মুঃ তোর আপু এই দুপুরবেলা আসে নাকি!!!
নিতুঃ ওহ তাই তো ভুলেই গেছিলাম!!
আম্মুঃ এখন বল এত জোরে কলিংবেল টিপছিস কেন???
নিতুঃআরে আম্মু বল না!!প্রচুর খিদে পেয়েছে তাই তাড়াতাড়ি খেতে দেও আমায়!!
এই বলে দ্রুত গতিতে পা ফেলে রুমে চলে গেল মিতু!!
ব্যাগটাকে ডুরুম বেগে বিছানার উপর ফেলে দৌড় দিল ওয়াশরুমে!!
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com