ভালোবাসি প্রিয় । পর্ব - ১৬
আংকেল এর কথা শুনে মেহেদী রেগেমেগে বাড়ির দিকে আসছে। পেয়েছেটা কি সে! লোকদের ডেকে এটা সেটা শোনাচ্ছে! কি চাইছে সে! আজ এর বিহিত করে ছাড়বে। ঘরে প্রবেশ করতেই দেখলো আরও গোলাপি বিল্ডিংয়ের চাচিসহ পাশের বাড়ির আরও দুজন চাচি এসে গল্প করছে নাফিসার সাথে। মেহেদীকে দেখেই তাদের মধ্যে একজন বললো...
- মেহেদী, খুব ভালো বউ পেয়েছো। যেমন সুন্দরী তেমন আচার-আচরণও ভালো। তোমার মা থাকলেও আজ ছেলের বউয়ের প্রশংসা করে বেড়াতেন।
অন্য একজন বললো...
- যা হয়েছে হয়েছেই। পুরনো সব ভুলে নতুন করে সব গুছিয়ে নাও। সুন্দরভাবে সংসার সাজাও।
দু'চারটা কথা বলে আরো প্রশংসা শোনাচ্ছে নাফিসার আর তাদের জ্ঞান দিচ্ছে। মেহেদী জোর করে মুখে একটু হাসি ফুটানোর চেষ্টা করলো। ভেতরটা রাগে ফাটছে। এর মধ্যে নাফিসা ঝোপ বুঝে কো*প মারলো।
- কি গো! বাজার করে আনোনি যে?
মেহেদীর এখন অনেক কিছুই ইচ্ছে করছে কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। তাই খুব শান্ত গলায় উত্তর দিলো,
- সাথে টাকা নিতে ভুলে গেছি।
- ওহ!
নাফিসা বসা থেকে উঠে এসে ওয়ারড্রব খুলে মেহেদীর মোড়ানো পাচশত টাকার নোটটা মেহেদীর হাতে দিলো। মেহেদী অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়েছে কিন্তু নাফিসা মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছে। মেহেদী কিছু না বলে টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলো। আন্টিরা একটু পরই চলে গেলো। মেহেদী এবার সত্যি সত্যিই বাজার করে বাসায় ফিরেছে। নাফিসা ঘর থেকে দেখেই হাসছে। যাক, কাজ হয়েছে তাহলে! নাফিসা বাজার এগিয়ে নিতে দরজার কাছে এসে দাড়ালো। মেহেদী কাছে আসতেই নাফিসা বাজার নেয়ার জন্য হাত বাড়ালো। মেহেদীও নাফিসার হাতে ব্যাগ দিয়ে দিলো। নাফিসা রান্নাঘরে এলো ব্যাগ রাখতে। মেহেদী রুমে এসে দেখলো চাচীরা চলে গেছে কিনা। ঘরে কাউকে না পেয়ে এবার প্রথমে বারান্দার দরজা লাগালো। পরে নাফিসার হাত ধরে টেনে নিয়ে রুমে এসে তার রুমের দরজা আটকে দিলো। সজোরে দুই গালে দুইটা থা-*প্পড় বসিয়ে দিলো। নাফিসা চোখে যেন হলদে ফুল দেখছে! আর চোখের বৃষ্টি ঝরতে তো সময়ই নেয় না! মেহেদী চু-*লের মু-*ঠি ধরে বললো,
- বাইরের লোক ডেকে বাজার আনতে বলা! কিসের বাজার! হ্যাঁ? টাকা কি তো-*র বা*প দিয়ে গেছে!
- আমার বাপ দিবে কেন! বউকে খাওয়াবা, উপার্জন করতে পারো না!
মেহেদী চু-*লের মু*ঠি ছেড়ে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।
- কিসের বউ! কিসের বিয়ে! কাউকে খাওয়াতে পারবো না। কারো জন্য উপার্জন করতে পারবো না। যা তো*র বা*পের কাছে। টাকা নিয়ে এসে ইচ্ছে মতো বাজার করে খা।
নাফিসা উঠতে উঠতে বললো,
- ছি! তুমি একজন শিক্ষিত ছেলে হয়ে যৌতুক নিবে! তবে সমস্যা নেই। তুমি বললে আমি এনে দিবো টাকা।
মেহেদীর মেজাজ গেলো চড়ে! পড়ার টেবিলের সামনে থেকে চেয়ারটা হাতে নিয়ে বিকট একটা চিৎকার করে নাফিসাকে মা*রতে এলো। নাফিসা চোখ বন্ধ করে দু'হাতে মাথা চেপে ধরলো। কিন্তু মেহেদী থেমে গেছে। কি করতে যাচ্ছিলো সে! মা*ডার হয়ে যেত এক্ষুনি। চেয়ারটা ঢিল দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলো। নাফিসা চোখ খুলে তাকাতেই মেহেদী তার সামনে এসে দুহাত ধরলো। হাতের চুড়ি জোড়া খুব ভালো করে দেখে চিনতে পারলো।
- এগুলো পড়েছিস কেন! খুল...
- না খুলবো না। আমার স্বামীর দেয়া প্রথম গিফট পড়বো না কেন! ছাড়ো প্লিজ। আহ! মেহেদী ব্যাথা পাচ্ছি আমি, ছাড়ো..
মেহেদী জোর করেই যাচ্ছে। নাফিসা খুলবে না তাই হাত মুঠো করে রেখেছে। আর কান্না করে যাচ্ছে। মেহেদী টানতে টানতে চুড়ি দিয়ে হাত কে-*টে ফেলেছে। র-*ক্ত পড়ছে টুপটাপ তবুও নাফিসা মুঠো ছাড়ছে না। মেহেদী নাফিসার চোখে তাকিয়ে দেখলো কান্না করছে, মুখে তাকিয়ে দেখলো কষ্টের ছাপ স্পষ্ট। না, এসব অভিনয় হতে পারে না। ব্যর্থ হয়ে নিজেই ছেড়ে দিলো।
সকালে হাতে ভাতের গরম মাড় পড়েছে আবার সেই জায়গাতেই এখন কে*টে গেছে। ব্যাথা আর কত সহ্য করা যায়! নাফিসা শব্দ করে কান্না করতে করতেই দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলো। মগে পানি নিয়ে হাত চুবিয়ে রাখলো। খুব ব্যা*থা লা*গছে, জ্বা-লা করছে! মেহেদী সেখানেই দাড়িয়ে মেঝেতে পড়া র-*ক্তের দিকে তাকিয়ে আছে। পকেট থেকে ওয়ালেট নিয়ে দেখলো বাজার করে অবশিষ্ট কিছু টাকা আছে, মোবাইলটা ওয়ারড্রব এর উপর থেকে নিতে গেলে কাটা জায়গায় লাগানোর মলমটা চোখে পড়লো।
এটাই তো আনতে যাচ্ছিলো সে। এটা এখানে কিভাবে এলো! নাফিসা এনেছে! নাফিসা হাতে ফু দিতে দিতে রুমে প্রবেশ করলো। এখনো র-*ক্ত পড়া বন্ধ হয়নি! আর না বন্ধ হয়েছে তার কান্না। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে সে। মেহেদী তার দিকেই তাকিয়ে আছে। নাফিসা তার উদ্দেশ্যে বললো,
- খাওনি তো কিছু। খাবার এনে দেই?
মেহেদী ওয়ারড্রব এর উপর থেকে মলমটা হাতে নিয়ে নাফিসাকে টেনে খাটে বসালো। নাফিসার শাড়ির আঁচল দিয়ে র-*ক্ত মুছে আস্তে আস্তে কাটা জায়গায় মলমটা লাগিয়ে দিলো। নাফিসা অশ্রুসিক্ত নয়নে হা করে তাকিয়ে আছে মেহেদীর দিকে। মলম লাগানো হলে আবার বললো,
- আলু ভাজি আর ভাত রান্না করা আছে। এনে দেই খাবার?
মেহেদী কিছু না বলে সোজা বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। নাফিসা হতাশ হয়ে তাকিয়ে রইলো। একটুপর রান্নাঘরে এসে দেখলো কি বাজার এনেছে। যা এনেছে এখানে আলুর পরিমাণই বেশি! আলু কি সস্তা নাকি বেশি দাম! কোন হিসেবে এতো আলু এনেছে! নাফিসার একা হলে তো মাসব্যাপী খেতে পারবে!
সবজি ছাড়া আমিষ জাতীয় কিছুই দেখা যাচ্ছে না। নাফিসা কষ্টের মাঝেও হেসে আলু আর পেয়াজ ঝুড়িতে রেখে বাকি সবজি ফ্রিজে রাখলো। যা রান্না করা আছে তা দুপুরে খেয়েও বেশি হবে। মেহেদীর জন্যই তো বেশি করে রান্না করেছিলো। না খেলে আর কি করার! পেটে কি পাথর বেধেছে! দেখে তো মনে হয়না হোটেলে খায়! হোটেলে খাবেই কিভাবে! উপার্জন আছে! আগের জমানো যা ছিলো এসবই হয়তো সিগারেটের দোকানে ফেলছে।
দুপুরে খেয়ে নাফিসা মোবাইলটা নিয়ে ইউটিউবে রান্নাবান্না দেখতে লাগলো। হঠাৎ তার ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল এলো। কে ফোন করেছে!
- আসসালামু আলাইকুম।
- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো?
রিসাদের কণ্ঠ শুনে নাফিসা থমকে গেলো। ওটা ব্লক করেছে, এতোদিন পর এখন আবার অন্য নম্বর থেকে কল করেছে!
- কেমন আছো? ভালো নেই?
- আলহামদুলিল্লাহ। ফোন করেছেন কেন?
- আমার নম্বর ব্লক করেছো কেন?
- আমার ইচ্ছে।
- অহ আচ্ছা, একটু আগে তোমাদের বাসায় গিয়েছি। তোমাকে না পেয়ে ফিরে এলাম। বাসায় তালা দেওয়া। কোথায় আছো তুমি?
- যেখানেই আছি, আপনাকে বলতে বাধ্য নই।
- এই! তুমি কি মেহেদীর কাছে গিয়েছো?
- যদি বলি হ্যাঁ!
- মেনে নেয়নি তোমাকে। তাড়িয়ে দিয়েছে না?
- না। আমি এখনো মেহেদীর কাছেই আছি। তার ঘরে বউ হয়ে আছি।
- নাফিসা, কি বলছো তুমি এসব! এগুলো কিছুতেই সম্ভব না। মিথ্যে বলছো তুমি আমাকে। মেহেদী তোমাকে মানবে না। আর যদি সেখানে থেকেও থাকো তাহলে, চলে আসো তুমি আমার কাছে। আমি অনেক ভালো রাখবো তোমাকে, অনেক ভালোবাসবো। মেহেদীর কাছে তুমি একটুও ভালো থাকতে পারবে না। প্লিজ শুনো আমার কথা।
- আমি মেহেদীর কাছে অনেক ভালো আছি, সুখে আছি, শান্তিতে আছি। আর সম্পূর্ণই মেহেদীর হয়ে গেছি। আর কখনো কল করে বিরক্ত করবে না আমাকে।
নাফিসা কল কে-*টে নম্বর ব্লক করে দিলো। অসহ্যকর! বিকেলে অল্প খাবার রান্না করলো। ভালো না হলেও তেমন খারাপ না। খাওয়া যায়। রাতেও মেহেদীকে খাওয়ার জন্য বললো কিন্তু খায়নি সে। আজ আর কোন টর্চার করেনি নাফিসার উপর। পরপর দুটো সিগারেট জ্বা-*লিয়ে শুতে এলো। নাফিসা আগেই শুয়ে পড়েছে কিন্তু ঘুমায়নি। আজ তার কাছেও আসছে না। খাটের একপাশে শুয়ে আছে। নাফিসাও এদিকেই চুপটি মেরে শুয়ে রইলো।
সকালে নাফিসার ঘুম ভাঙতেই দেখলো তারা দুজনেই খাটের মাঝামাঝিতে শুয়ে আছে এক কাথার নিচে। তবে তাদের মাঝে একটু দূরত্ব বজায় আছে। মাথার উপর স্লো স্পিডে ফ্যান চলছে। মেহেদীর একটা হাত নাফিসার বালিশের কাছে। নাফিসা মেহেদীর হাতের উপর তার হাতটা আলতো করে রাখলো। আঙুলের ফাকে আঙুল রাখতেই যেন ঘুমের মধ্যেই মেহেদী আঁকড়ে ধরলো হাতটা। নাফিসা মুচকি হেসে সেও মুঠোয় ধরলো মেহেদীর হাত। হঠাৎই মেহেদীর ঘুমটা ভেঙে যায়। হয়তো নাফিসার হাতের স্পর্শেই। চোখ কপাল কুচকে তাকাতেই নাফিসার মুখে হাসি দেখতে পেল আর তার হাত যে নাফিসার হাত ধরে আছে সেটাও চোখে পড়লো। মেহেদী হাত সরিয়ে নিতে চাইলে নাফিসা আরো বেশি চেপে ধরলো।
মেহেদী এবার ঝাটকা দিয়ে সরিয়ে নিলো। যার ফলে নাফিসা কা-*টা জায়গায় ব্যাথা পেল। মেহেদী উঠে চলে গেলো। নাফিসাও উঠে বিছানা ও ঘর গুছিয়ে নিলো। সকালের জন্য আর রান্না করেনি। শুধু শুধু রান্না করবে কার জন্য! রাতের খাবার গরম করে খেয়ে নিলো সে। মেহেদী নিত্যদিনের মতো বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। নাফিসা শাড়ির সাথে দুটো থ্রিপিস এনেছিল। গোসল করে সেখান থেকে কলারযুক্ত থ্রিপিসটা নিয়ে পড়লো। যার ফলে গলার ঘাড়ের দাগগুলো ঢেকে গেছে। কিন্তু কাল যে থা-*প্পড় দিয়েছে দুই গাল এখনো লাল হয়ে আছে। ক্রিম, পাউডার ভালোভাবে মেখে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। জর্জেট ওড়নাটা মাথায় ঘোমটা দিয়ে পার্স আর ফোন হাতে নিয়ে দরজা তালা দিয়ে বেরিয়ে গেলো। এর মাঝে মেহেদীর বাসায় আসার সম্ভাবনা কম। ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে রিক্সায় উঠে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। পথে মেহেদীকে দেখেছে নাফিসা।
বাজারের পাশে চায়ের দোকানে দাড়িয়ে কলা খাচ্ছে আর হাতে বিস্কুটের মতো কিছু দেখা যাচ্ছে। তাহলে ভাত না খেয়ে বাইরে এসে রুটি কলা খেয়ে দিন কাটায়! কয়দিন চলবে এভাবে! নাফিসা বড় একটা নিশ্বাস ছাড়লো। রিক্সা নিয়ে সে ভার্সিটি চলে এলো। ভাগ্যের পরিহাসে প্রিন্সিপালের রুমে এসে প্রিন্সিপালকে একা পেল। মেহেদীকে ভার্সিটির সব শিক্ষকরা চিনেন। স্যারের অনুমতি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে অনেক আকুতি মিনতি করে মেহেদীর সাথে ঘটা সব ঘটনা বললো। আর মেহেদীকে যেন ভার্সিটি থেকে এক্সাম দেয়ার সুযোগ দেয় সেটাও অনুরোধ করলো। ফরম পূরন তো আগেই করেছে, এখন এডমিট কার্ড দিলেই এক্সাম দিতে পারবে। প্রথমে না করলেও পরে রাজি হলেন প্রিন্সিপাল। আর নাফিসাকেও বিভিন্ন কথা শুনিয়েছেন। নিজের সাধ্যমতো বুঝানোর চেষ্টাও করেছেন।
নিজের পড়াশোনাও চালু রাখতে বলেছেন। নাফিসা এতোটা ভালোকিছু আশা করেনি। তবুও পেয়ে গেছে। এটাই শিক্ষার গুরুত্ব প্রকাশ করে । একাধারে বকাও দিয়েছে, জ্ঞানও দিয়েছে আবার ভবিষ্যতের লক্ষ্যও দেখিয়েছে! একজন অশিক্ষিত লোকের কাছে নিশ্চয়ই এসব পাওয়া যেত না। নাফিসা প্রিন্সিপালের অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে ফেরার পথে পলাশ স্যারের সাথে দেখা হয়েছে। স্যার জানালো দুদিন পর ফাইনাল রাউন্ড কমপিটিশন। নাফিসা ও মেহেদীকে নিয়ে স্যারের অনেক স্বপ্ন ছিলো। মেহেদীকে তো নিবে না, এখন নাফিসা ই আছে এটেন্ড করার মতো। নাফিসাকে অনেক বলার পরও রাজি হলো না। এই কমপিটিশনের জন্য এতো কিছু ঘটেছে, এটাতে কখনো এটেন্ড করবে না সে। মেহেদীকে নেয়ার জন্য স্যারের কাছে অনুরোধ করলো। স্যার মুখটা মলিন করে ফেললো। নাফিসারও কষ্ট হচ্ছে তবুও এর চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে মেহেদীর স্বপ্নটা ভে-*ঙে দেয়ার জন্য।
ভার্সিটি থেকে সে সোজা শপিংমলে চলে গেলো। আরও পাচছয়টা শাড়ি কিনলো। আর দুইটা বোরকা সাথে হিজাব কিনলো। বোরকা হিজাব বাসায়ই ছিলো। কিন্তু এখন ওবাড়িতে যাবে না। দ্রুত শপিং শেষ করে বাসার দিকে রওনা হলো।
রাস্তায় জ্যাম থাকায় রিক্সা হতে বাজারের কাছেই নেমে গেলো। কতোটা পথ এখন হেটে যেতে হবে! একটু এগিয়ে আসতেই রিসাদ সামনে পড়লো। নাফিসা তাকে দেখে চমকে উঠলো!
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com