সুখ পাখি । পর্ব - ১৬
সকালে....
আরু সোজা গিয়ে টিভির সামনে বসে পরে,,
ততক্ষণে মুটা মুটি সবাই নিচে নেমে এসেছে,,
আরুর ও খাবারের জন্য ডাক পরে,,
আরু টিভি অফ করে খাবার টেবিলের কাছে যেতেই ইসু বলে উঠে..
ইসুঃ- এই আরু,,একটু উপরে যা তো,,দেখ শুভ্র টা ঘুম থেকে উঠেছে কি না..
আরুঃ- আমি? আমি কেন? তুমি যাও,,
ইসুঃ- দেখছিস না আমি কাজ করছি,,যা না বাবা,
আরুঃ- ওকে ওকে যাচ্ছি তো,,
বলেই আরু নাচতে নাচতে উপরে উঠে গেলো,,
শুভ্র র রুমে গিয়ে দেখে শুভ্র ঘুমাচ্ছে,,,
--- ওহ মাই খাট,,এত বেলা হলো মশাই এখনো পরে পরে ঘুমাচ্ছে! দাড়ান আপনার ঘুমের বারোটা কিভাবে বাজাতে হয় আরুর তা ভালো ভাবেই জানা আছে,,
আরুঃ- এই যে মিয়া ভাই,,উঠেন,,এই যে শুনছেন?
শুভ্র ঃ-- ( কোন রেসপন্স নেই)
আরুঃ- ওই গায়ক মশায়,,শুনুন,,
শুভ্র ঃ-- হুমমম( ঘুমের ঘোরে)
আরুঃ- আচ্ছা যন্ত্রণা তো,,উনার তো ঘুম ই ভাঙছে না ধুরর,,
আরু আর উপায় না পেয়ে টেবিলের উপর থেকে গ্লাসে পানি নিয়ে আসে,,হাতে কিছু পানি নিয়ে শুভ্র র মুখে ছিটিয়ে দেই,,,
চোখে মুখে পানির স্পর্শ পেতেই আস্তে আস্তে চোখ খুলল শুভ্র,,
আরুঃ- At last...আপনার ঘুম ভাঙলো তাহলে
শুভ্র কোন কথা বলছে না ফেল ফেল করে আরুকেই দেখছে,,,
আরুঃ- কি ব্যপার বলুন তো গায়ক মশায়,,কথা বলছেন না কেন,আচ্ছা থাক আপনি ফ্রেস হয়ে আসেন আমি নিচে গেলাম,,
বলেই আরু উল্টো দিকে ফিরে যেই না চলে আসবে তখনই আরুর মনে হলো পিছন থেকে কেউ ওর ওরনায় ধরে আছে,,
পিছনে ফিরে দেখার আগেই ওর হাতে টান পরায় সোজা বিছানায় পরে যায়,,
ভয়ে চোখমুখ খিঁচে গেলো আরুর,,
শুভ্র আরুর মুখে স্লাইড করতে করতে বলে উঠলো,
,
শুভ্র ঃ-- কাল সারাদিন অনেক জালিয়েছো,,In fact কাল রাতে কল্পনায় এসেছো,,ঘুমাতেও দাও নি,,, যাও ঘুমিয়েছি স্বপ্নে এসে জালিয়েছো,,এখন আবার কল্পনায় শাসন ও করছো?সাহস টা মনে হয় বেরে গেছে তোমার?
শুভ্রের স্পর্শে আরুর সারা শরীর কাপছে,,
আরু কাপা গলাই বলে উঠলো,,
আরুঃ- কককি বলছেন এসব?গাঁজা খেয়েছেন নাকি? গাঁজা কয় বোতল খাইছেন?
শুভ্র ঃ-- চুপ থাকো পিচ্চি,, আমি এখন ঘুমাবো তুমি ও ঘুমাবা,,ভাগ্যিস এখন তুমি সত্যি সত্যি নেই,,নাহলে তো আমার মাথা শেষ ছিলো,,এই মেয়ে এতো জালাও কেন তুমি আমায়,,
আরুঃ- আপনি আবার আমায় পিচ্চি ডেকেছেন?আপনি জানেন না আমার মা বাবা অনেক কষ্ট করে টাকা ইনকাম করে।..
একটা ছাগল কিনে জবাই করে আমার একটা সুন্দর নামের আকিকা দিসে,,
আমার আকিকার নাম আইরাহ,,
পিচ্চি না,সবাই যেমন আরু ডাকে আপনিও আরুই ডাকতে পারেন,,নট পিচ্চি,,
শুভ্র ঃ-- ওফফফ কল্পনা ই ও তুমি তার ছেড়া কথা বলো,,
আরুঃ- কি তখন থেকে কল্পনা কল্পনা করছেন,, আমি কল্পনা ই না বাস্তবে আছি,
,বলেই শুভ্র র হাতে ঠাস করে একটা চিমটি দেই,,
হাতে ব্যথা পাবার সাথে সাথে ই শুভ্র ঠাস করে উঠে বসে,,
শুভ্র ঃ-- তততুমি,? তুমি কখন এলে?
আরুঃ- ওমা এতক্ষণ ধরে কথা বলছেন!আর এখন বলেন আমি কখন এলাম,,হায় খোদা!!
ততক্ষণে আরু ও উঠে বসে,,,
আরুঃ- কি বলছিলেন এতোক্ষণ? সব আমার মাথার উপর দিয়ে গেছে,,সেই কখন ইসু আপু আপনাকে ডাকতে পাঠালো এখন ও আপনি বিছানায়,,
আরু কথা শেষ করার আগেই শুভ্র উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়,,
আরুঃ- যাহ বাবা,,কি হলো এটা? আমার কথার কোন পাত্তাই দিলো না,,
ডাইনোসর কোথাকার.....
আরু শুভ্র কে বকতে বকতে নিচে নেমে আসে,,,
ইসুঃ- কিরে শুভ্র উঠে ছে? এতোক্ষণ লাগলো কেন?
আরুঃ- উনার সঙ্গে যে আমি সুখ দুঃখের গল্প করছিলাম তাই,,( মুখ কুচকে কথাটা বলে উঠলো)
-- মানুষের আর ঠেকা পড়সে না যে তোমার সাথে তার সুখ দুঃখের গল্প করতে হবে!
উপর থেকে শুভ্রের কন্ঠ শুনতে পেয়ে সবাই শুভ্রের দিকে তাকালো,,
সে ততক্ষণে চেয়ারে বসেছে,,
আরুঃ- শুনুন মিস্টার গায়ক মশায়,,আমি মোটেও আপনার সাথে ঝগড়া করার মুডে নেই,,
শুভ্র ঃ-- ইসু আপু,,খাবার দাও,,আর কাউকে বলে দাও মানুষের এতো ইচ্ছে নেই একটা পিচ্চি র সাথে কথা বলার,,
ইসু খাবার দিতে দিতে বলে,,
--- ওই তোরা চুপ করবি? সক্কাল সক্কাল ঝগড়া শুরু করছে,,,
খাবার টেবিলে,,,
তরুর অপজিটের সিটে বসেছে অভ্র,, অভ্রের ডান পাশে আকাশ আর বাম পাশে শুভ্র,, শুভ্রের সোজাসুজি আরু,,
-- বেচারা অভ্র খাচ্ছে কম তরুকে দেখছে বেশি,,তরুও ব্যপার টা বুঝতে পেরে মুচকি মুচকি হাসছে,,
খাবারের মাঝখানে হঠাৎ পায়ে সুরসুরি অনুভূত হয় তরুর,,
,ব্যপার টা আন্দাজ করতে পেরে তরু পা টা সরিয়ে নেই,
অভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে সে খাবারের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে
,এবার সুরসুরি লাগে আরুর পায়ে,,আরু ভেবেছে কাজ টা শুভ্রের,,
তাই আর কিছু না ভেবেই ঠাস করে টেবিলের নিচে দিয়েই শুভ্রের পায়ে লাথি মারে,, হঠাৎ ব্যথা পাওয়ায় শুভ্র খানিকটা চমকে উঠে আর লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে পরে,,
রেগে আরুর দিকে তাকিয়ে দেখে সে নিশ্চিন্তে খাচ্ছে,,
শুভ্র ঃ-- এই পিচ্চি মেয়ে,, লাথি মারলা কেন?
আরু ঃ-- আপনি আমার পায়ে সুরসুরি দিলেন কেন?
শুভ্র ঃ-- আমি? আমি কেন তোমাকে সুরসুরি দেবো,,আমাকে দেখে কি তোমার জোকার মনে হয়?( রেগে)
আরুঃ- তো কি ভুতে এসে আমার পায়ে সুরসুরি দিছে?
বেচারা অভ্র তো লজ্জায় কিছু বলতেও পারছে না,,
আকাশ ব্যপার টা বুঝতে পেরে শুভ্র কে থামিয়ে দেই,
আকাশ ঃ-- ধুর মিয়া সকাল সকাল এমন করছিস জেন, শান্তি তে খা তো,,।
শুভ্র আর কোন কথা না বলে খেয়ে রুমে চলে যায়,,
তরু খেয়ে নিচ থেকে কিছু ক্ষন আড্ডা দিয়ে রুমে যায়,,
তরু রুমে ঢুকাী সাথে সাথে ই কেউ একজন পিছন থেকে দরজা অফ করে দিলো,,
তরু পিছনে তাকিয়ে দেখে অভ্র..
তরুঃ-- কি হলো দরজা বন্ধ করেছেন কেন?
অভ্রঃ- আমার ইচ্ছে,,
তরুঃ-- সরুন তো আমি দরজা খুলবো,,
অভ্রঃ-- না,, বলেই টান দিয়ে তরুকে কাছে নিয়ে আসে,,
অভ্রের স্পর্শে তরু খানিকটা সক্ড হয়ে যায়,,
অভ্রঃ- তরু,,আমার দিকে তাকাও,,
,,তরু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,,
অভ্রঃ-- লুক এট মি,,তরু
তরু অভ্রের দিকে তাকালো,,
অভ্রঃ- আমার চোখের দিকে তাকাও,,
তরুও অভ্রের কথা মতো তাকালো,,,
অভ্রঃ-- কিছু কি দেখতে পাচ্ছো?
তরুঃ-- হ্যা,,
অভ্রঃ- কককি দেখতে পাচ্ছো?( খুশি হয়ে)
তরুঃ-- আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে তো চোখই দেখতে পাবো,,তাই নয় কি?
অভ্রঃ-- সত্যি ই কিছু দেখতে পাচ্ছো না?
তরুঃ-- নাহ,,আপনি যান তো,,আজায়রা কথা বার্তা,,
বলেই তরু সরে গিয়ে দরজা খুলে যেই না বের হবে,,সামনে থাকা মানুষ টাকে দেখে থমকে যায়,,
তরুর পিছনে পিছনে অভ্র ও বের হয়,,,
ঠিক তখনই----
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com