Breaking News

মুখোশের আড়ালে। পর্ব - ০৬



সে দিন সন্ধ্যায় পার্টিতে প্রায় সবাই এসে পড়েছে,শুধু কয়েকজন ছাড়া, সবাই সব গিপ্ট আইমানে হাতে দিয়ে ভিতরে চলে যায়। আইমান বার বার বাহিরের দিকে তাকাই
পার্টিতে কিছু লোকজনের সাথে আরহাম কথা বলছে।
কিছুক্ষণের মধ্যে কর্নিয়ার পরিবার সবাই এসে পড়েছে।
আরহাম পিছনে তাকাতেই কর্নিয়াকে দেখে তার দিকে তাকিয়ে থাকে, কর্নিয়া লাল রঙ -এর একটা গ্রাউন পড়ে এসেছে। সাথে মেসিং সাজ,দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।
আইমান কর্নিয়ার আব্বুকে দেখে সে দিকে আসে, এসে কামরুলকে জড়িয়ে ধরে বলে আমি জানতাম তুই আসবি।

কামরুল এমন কান্ড দেখে হতবাক।
আইমান ওকে ছেড়ে দিতেই কামরুল ওর চেহেরার দিকে তাকিয়ে থাকে।
-- আইমান তাদের থেকে গিপ্ট নিয়ে ওদের ভিতরে পাঠিয়ে দেয়।
তখনি সেখানে একে একে রাফিন,রুহাম,উর্মি, সবার পরিবার একসাথে সেখানে প্রবেশ করে।আইমান একে একে সবাইকে জড়িয়ে ধরে একই কথা বলে।
সবাই গিপ্ট আইমানে এসিস্ট্যান্টের হাতে দিয়ে। পার্টির স্থানে চলে যায়
কর্নিয়া তার বন্ধুদের এখানে দেখে তাদের দিকে এগিয়ে যায়।
কামরুল আইমানের দিকে তাকিয়ে বলে, একে এত চেনা চেনা লাগছে কেনো? আর আমাকে তুই বলে ডাকলো,কন্ঠটা ও খুব পরিচিত মনে হচ্ছে।
সেখানে রাফিন,রুহাম,উর্মির আব্বু কামরুলকে দেখে সেখানে গিয়ে বলে আরে তুই এখানে?
-- কামরুল তার ফ্রেন্ডদের একসাথে দেখে বলে উঠে আরে তোরা সবাই এখানে?
-- এসব কি হচ্ছে? ও কে? যে সবাইকে একসাথে তার বার্থডে পার্টিতে ইনভাইট করলো।আর ওকে খুব চেনা চেনা লাগলো, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছি না।( রাফিনের আব্বু)
-- তখনি সেখানে একজন ওয়েটার জুস নিয়ে এসে বলে স্যার নিন, সবাই এক গ্লাস করে জুস হাতে নিয়ে কথা বলতে থাকে।

তখনি আইমান সেখানে এসে বলে, তোরা সবাই এখানে, আর আমি তখন থেকে খোঁজে যাচ্ছি তোরা সবাই কেমন আছিস? তোরা আজকে আমার পার্টিতে স্পেশাল গেস্ট । তাই তোদের জন্য স্পেশাল কিছু করবো না সেটা কি করে হয়।
---তখন থেকে দেখছি, আমাদেরকে তুই তুই করে বলছেন? আমরা কি একে অপরকে চিনি?(কামরুল)
--আইমান একটা হাসি দিয়ে সেখানকার ওয়েটার দের বলে এদের বেশি করে খেয়াল রাখবে। এরা আমার কাছে খুবই স্পেশাল। আমি এখন আসছি এই বলে আইমান সেখান থেকে চলে যায়।
কর্নিয়া তার বন্ধুদের কাছে গিয়ে কথা বলছে এমন সময় আরহাম সেখানে এসে বলে হাই মিস কর্নিয়া তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেনো?আর কিছু নাও নি এখনো?
-- এই দিকে এসো একজন ওয়েটারকে ডেকে বলে।
-- ধন্যবাদ আমার কিছু লাগবে না(কর্নিয়া)
-- আরে সেটা বললে হয় নাকি। এই বলে ওয়েটারের হাত থেকে একটা জুস নিয়ে কর্নিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে এই নাও (আরহাম)

-- আরে আমি বললাম তো আমার লাগবে না( কর্নিয়া)
-- ওকে নো প্রবলেম এই বলে জুসটা ওয়েটারের হাতের ট্রিতে রেখে দেয়।
আরহাম পাশে তাকিয়ে রুহাম উর্মিকে দেখে বলে তোমরা একে অপরকে চিনো?
-- হুম,ওরা আমার ফ্রেন্ড হয়(কর্নিয়া)
-- ওহহহ,হাই
, ও কে তোমরা পার্টিতে এনজয় করো, এই বলে আরহাম মুচকি হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
কর্নিয়া আরহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
-- আরে রাফিন আবার কোথায় চলে গেলো? ( রুহাম)
-- রাফিন ও এসেছে এখানে?( কর্নিয়া)
--হুম, তোর সাথে দেখা হয় নি এখনো(উর্মি)
-- নাহহ( কর্নিয়া)

--জানিনা এই পার্টি মধ্যে এসে ও আগের মত আনন্দ করতে মন চাচ্ছে না ( উর্মি)
-- হুম সত্যি বলছিস,তর্নিশা আর ক্যাথিয়া কথা মনে পড়তে খুব কষ্ট হয়। ওদের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত এখনো চোখে ভাসে ( রুহাম)
-- কি থেকে কি হয়ে গেলো(উর্মি)
--কর্নিয়া কিছু না বলে সামনে দিকে তাকিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।
এভাবে আর কিছু সময় কেটে যায়।
কেকটার জন্য আরহাম আইমানকে একটা জায়গায় এনে দাঁড় করায় আর সবাই আইমানকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।
আইমান কেক কেটে প্রথম আরহাম আর আফিয়াকে খাওয়ায় দেয়।
এক টুকরো কেক হাতে নিয়ে কামরুলের কাছে গিয়ে বলে আরে হা কর কামরুল অনিচ্ছায় সত্ত্বেও হা করে।
এইভাবে কেক কাটা শেষ হলে। আইমান স্টেজ দাঁড়িয়ে এনাউস করে বলে, লেডিস এন্ড জেন্টালমেন, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনাদের জন্য আমি একটা ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। সবাই অনুষ্ঠানটা দেখে যাওয়ার অনুরোধ রইলো। ভেবে নিবেন এটা আমার জীবনের একটা অংশ। আমি চাই পরবর্তী কোন সিরিয়াল এই অংশটা যোগ করবো। আপনাদের মতামতে উপর এটা নির্বর করে।
কিছুক্ষনের মধ্যে শুরু হবে।এই বলে আইমান স্টেজ থেকে নেমে কামরুলদের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।
তখনি একটা পর্দা দিয়ে স্টেজ ডেকে ফেলে।
কিছুক্ষণের মধ্যে পর্দা সরে যেতে একটা নাটক শুরু হয়। চারজন ছেলে একটা মেয়েকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।ছেলে গুলো কেউ মেয়েটার চুল নিয়ে খেলছে, কেউ গায়ে হাত দিচ্ছে, মেয়েটার বারবার ছেলে গুলোকে হাত দিয়ে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে ।
সেখানে থাকা লোকরা কিছুই বুজতে পারছে না এখানে কি শুরু হচ্ছে।
সবাই স্টেজের দিকে তাকিয়ে আছে।
কামরুল আর বন্ধুরা এসব দেখে একে অপরের দিকে তাকাই।
তখনি একটা ছেলে এসে ওই ছেলে গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে বলে, আরে তোরা এসব কি করছিস?
একটা মেয়ের সাথে এইভাবে খারাপ আচরণ কেনো করছিস?
ছেলেটি মেয়েটিকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।
কিন্তু সেখানে থাকা একটা ছেলে মেয়েটার হাত ধরে নেয়।
এটা দেখে ওই ছেলেটি রেগে সে ছেলেটিকে জোরে থাপ্পড় মেরে বলে, দেখ ভালো হচ্ছে না,
আমি কিন্তু সব প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে দিবো।

তখন সেখানে থাকা একটা ছেলে বলে, খুব সাহস হয়েছে তাই না, আমাদের গায়ে হাত তোলা। এই বলে ছেলে গুলো ওই ছেলেটিকে মাথায় বারি দিয়ে অজ্ঞান করে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যেতে যেতে বলে, আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারে ভয় দেখনো,দেখ এবার কি করি।
তখনি আবার স্টেজে পর্দা দিয়ে ডেকে যায়।
সবাই এসব দেখে অবাক হয়ে যায়।
কামরুল আর তার বন্ধুরা এসব দেখে ঘামতে থাকে। তখনি আইমান তাদের উদ্দেশ্য বলে, আরে তোমরা এত ঘামছো কেনো? এটা তো একটা নাটক, পরবর্তী কোন সিরিয়ালে এই অংশটা রাখবো। তোমরা এটা দেখে বলবে কেমন হবে, পরবর্তী কোন সিরিয়ালে রাখলে।
-- তখনি আবার স্টেজ থেকে পর্দা সরে যায়। স্টেজে সব লাইট অপ করে শুধু একটা ডিম লাইট জ্বালানো। সেখানে একটা ছেলে বসে আছে। সে কাঁদছে আর চিৎকার করে বলছে তোদের কখনো ভালো হবে না,দেখে নিস।

তখনি সেখানে একটা ছেলে এসে বলে এই জলটা খেয়ে নে।
ছেলেটা পানি পিপাসা ধরায় সে দ্রুত পানি গ্লাস নিয়ে পানি খেতে থাকে।
কিন্তু ছেলেটি জানতো এই পানিতে ড্রাগস মেশানো ছিলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে ছেলেটিকে ওই ছেলে গুলো একটা জায়গায় এনে দাঁড় করায়।
কিন্তু পিছনে পর্দায় একটা কলেজে ছবি তুলে ধরা।
ছেলেটি ডলতে ডলতে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। ওই ছেলে গুলো একটা লোককে ডেকে আনে যে প্রিন্সিপালের চরিত্র করে।
সে এসে দেখে ছেলেটি ডলতে ডলতে নিচে পড়ে যাচ্ছে। আর আবল তাবল বকছে।
ওই ছেলে গুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই প্রিন্সিপালকে উল্টা পাল্টা বুঝিয়ে, আর মোবাইল একটা ফেক ভিডিও দেখাতে থাকে। এসব দেখে প্রিন্সিপাল ছেলেটিকে কলেজ থেকে লাল দাগ দিয়ে বের করে দেয়।
আর এই খবরটা তার বাবা মার কাছে চলে যায়। যে তার ছেলে ড্রাগস নিয়ে একটা মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করছে।

পরবর্তীতে তাকে কোন কলেজে নেওয়া হয় না।
এই দুঃখে তার বাবা হার্টঅ্যাটাক করে মারা যায়।
এসব কিছু দেখে কামরুল আর তার বন্ধুরা একে অপরের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে একে অপরেরকে বলে, এটা কি করে সম্ভব? তাহলে কি? এই বলে তারা ভয়ে ঘামতে থাকে, এসির মধ্যে তাদের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম দিচ্ছে তারা ঘাম মুছে নেয়।

আইমান তাদের অবস্থা দেখে তাদের কাছে গিয়ে বলে, আরে তোমরা এমন করছো কেনো? তোমাদের দেখে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে, কে কোথায় আছিস এদের ঠান্ডা শরবত দিয়ে যা।
-- না - না- আমাদের কিছু লাগবে না(রাফিনের আব্বু)
এইভাবে নাটকটা শেষ হয়ে যায়।
ওইদিকে আরহাম এই নাটক চলার মাঝে আফিয়ার কানে কিছু একটা ফিস ফিস করে বলে।
আফিয়া সেটা শুনে নাটক না দেখে অন্যদিকে চলে যায়।
অন্যদিকে চলে যেতেই........

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com