খালাতো বোন মিশ্মির প্রতি ক্রাশ । পর্ব - ০২
পড়ার টেবিলে বসে ভাইয়ার দেওয়া ম্যাথ টা করার জন্য সবে খাতা টা বের করছি। অমনি ভাইয়া রুমে চলে আসলো।
-ভাইয়া রুমে এসে চেয়ার টেনে বসে বললো।
-কাল যে ম্যাথটা দিয়েছি সেটা দেখা।আমি ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলাম।
-ভাইয়া অংকটা করতে মনে ছিলো না।
-ভাইয়া আমার দিকে তিক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
কেনো কাল রাতে কোন প্রেমিকের কথা ভাবছিলি।সামান্য একটা কাজ করতে দিয়েছিলাম সেটা করতে ভুলে গেলি।
-আমি চুপ করে রইলাম।
-আমার উত্তর না পেয়ে ভাইয়া বললো।
-আজকে বাসার সব কাজ করবি তুই।রাতের রান্না টাও তুই করবি।
-আমি আস্তে করে বললাম।
-ভাইয়া বললো।
-ভাইয়া আমি তো রান্না করতে পারি না।
-ভাইয়া বললো
-রান্না করতে না পারলে ৫০০বার কানে ধরে উঠ বস করবি তুই।
কথাটা শুনে আমি ভয়ে একটা ঢুক গিললাম।
তারপর বললাম,
না না আমি রান্না করতে পারবো।
-ভাইয়া বললো এখন এই রুমটা মুছে দে।
আমি ঘর মুছার জিনিস পত্র নিয়ে এসে রুমটা মুছা শুরু করলাম।
-একবার ভাইয়ার দিকে উকি দিয়ে দেখলাম ভাইয়া লাকসাহেবের মতো চেয়ারের মোবাইল টিপছে আর আমাকে কাজের মেয়ের মতো কাজ কারাচ্ছে।
-এইচ্ছে করে বালতির পানি গুলি ভাইয়ার মাথায় ঢেলে দেই।
অনেক সময় নিয়ে রুমটা মুছে বালতিটা কিচেন রুমে রেগে আসতে গেলাম।
আমার হাতে বালতি আর আমার অবস্তা দেখে মা আর জরিনা খালা হাসলে লাগলো।জরিনা খালাকে দেখে মনে হলো অনেক খুশি হয়েছে। কারণ রুমটা আমি মুছছি।
আমি পরিষ্কার না করলে তার কার লাগতো তাই।
-একটু পর ভাইয়া কিচেন রুমে এসে মাকে বললো।
মামি আজ মিশ্মি একাই রান্না করবে।
-কথা টা বলতে দেরি হয়েছে কিন্তু কিচেন থেকে জরিনা খালার বের হতে দেরি লাগে নাই।
সোজা ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি অন করে সিরিয়াল দেখার জন্য বসে গেলো।
আর মা বললো।
ইমরান মিশ্মি তো রান্না করতে পারে না।মার কথা শুনি একটু খুশি হলাম।ভাবলাম মা আমার কষ্টটা বুঝতে পেরে এই কথাটা বলছে।কিন্তু আমার ভাবনা ভুল প্রমাণ করে মা বললো।
ও কিনা রান্না করবে পরে আমাদের সবার রাতের খাবার খাওয়া হবে না।
-নিজেরা খেতে পারবে না বলে না করছে।আমার আত্মসম্মানে লাগলো কথাটা তাই আমি বললাম।
-তুমি এখান থেকে যাও তো মা।আমি তোমার থেকে ভালো রান্না করতে পারি।
-আমার কথা শুনে মা চলে গেলো। কিন্তু ভাইয়া দেয়ালের সাথে ভর করে দাঁড়িয়ে রইলো।
-আমি চিন্তায় পরে গেলাম। কি রান্না করবো।
-হঠাৎ মনে পরবে বিরিয়ানি রান্না করলে ভালো হবে।কিন্তু আমি তো বিরিয়ানি রান্না করতে পারি না। অবশ্য মোবাইল দেখে রান্না করতে পারতাম।কিন্তু ভাইয়ার সামনে মোবাইল দেখে রান্না করলে আমাকে আস্ত রাখবে না ভাইয়া।
একটু পর ভাইয়া বললো।
কি হলো সং এর মতো দাঁড়িয়ে আসিস কেনো??
তাড়াতাড়ি রান্না কর আমি যেনো খেয়ে রাতে বাড়ি যেতে পারি।
আমি মনে মনে বললাম।
কেনো ফুপি কি রান্না করে না যে আমার রান্না করা খাবার তোমার খেয়ে যেতে হবে।
একটা কল আসায় ভাইয়া কিচেন রুম থেকে বের হয়ে যেতেই আমি দৌড়ে রুমে গিয়ে মোবাইল নিয়ে আসলাম।
ইউটিউবে বিরিয়ানি রান্না করা দেখে রান্না করতে লাগলাম।
রান্না যখন শেষ দিকে তখন ভাইয়া এসে হাজির হলো।
আমি মোবাইল টা লুকিয়ে ফেললাম।
তারপর একটু নাড়াচাড় করে খাবর টেবিলে পরিবেশন করে রাখলাম। বাবা অফিস থেকে আসার পরই সবাই এক সাথে খেতে বসলাম।
-আপু তো বিরিয়ানি দেখে অনেক খুশি হলো।কারণ বিরিয়ানি আপুর ফেবারেট খাবার মা বাবা খাবার মুখে দিয়ে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
-আমি ভয় পেয়ে গেলাম ভাবলাম বিরিয়ানি রান্না হয়তো ভালো হয়নি তাই একটু বিরিয়ানি মুখে দিলাম
কিন্তু রান্না তো ভালোই হয়েছে।
মা আমাকে বললো...
তুই নিজে এটা রান্না করেছিস।
-আমি রেগে বললাম।
ভূতে এসে রান্না করে দিয়ে গেছে।
ভাইয়া বাদে সবাই আমার রান্নার প্রসংসা করলো।আজ পর্যন্ত ভাইয়ার মুখে আমার কোন প্রশংসা শুনলাম না।
খাওয়া দাওয়া শেরে রুমে এসে ঘুমানো প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
তখন ভাইয়া এসে বললো।
এখনি ঘুমিয়ে পড়ছিলি কেনো??কাল যে ম্যাথটা দিয়েছিলাম সেটা এখন আমার সামনে করবি।আমি অবাক হয়ে বললাম।
তার জন্য তো শাস্তি দিয়েছো তাহলে আবার করতে যাবো কেনো??
ভাইয়া বললো
ওটা ভুলে যাওয়ার জন্য দিয়েছি এখন যদি মথ্যা টা না পারিস তাহলে সারা রাত জাগিয়ে রাখবো।
-এমনিতেই অনেক ঘুম পাচ্ছে। তাই অনেক সাহস যোগিয়ে বললাম।
-তোমার যদি এতোই পড়াতো ইচ্ছে থাকে তাহলে নিজের বোন রিয়াকে পড়াও না কেনো??
আমার আপুকেও তো পড়াতে পারো।
ভাইয়া আমার কথা শুনে বললো
ওরা কি তোর মতো গাধি নাকি।
আমি বললাম...
আমি মোটেও গাধি না যতেষ্ট মেধাবী ছাত্রী।
-ভাইয়া মুচকি হেসে বললো..
-সেটা তো আমার পড়ানোর পরে হয়েছিস।ক্লাস সেভেনে থাকতে অংকতে ফেল করছিলি।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি চুপসে গেলাম।চুপ চাপ পড়ার রুমে দিয়ে অংকটা করে দেখালাম।
ভাইয়া চলে যাওয়ার পরে রুমে এসে ঘুমিয়ে গেলাম।সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম।তখন হঠাৎ মনে পরলো।আজ তো আপুকে আকাশ ভাইয়ার ফ্যমিলি থেকে দেখতে আসবে।
ঠিক দেখতে আসবে না একেবারে বিয়ে ডেট ফাইনাল করতে আসবে।
আকাশ ভাইয়া আর আপু দুজন দুজন কে ভালোবাসে।
অনেক মানুষ যখন আসবে তাহলে নিশ্চয়ই
অনেক কাজ থাকবে তাই ঠিক করলাম আজ কলেজ যাবো
না।
কিচেন রুমে উকি দিয়ে দেখলাম মা আর জরিনা খালা নানরকম পদ রান্না করতেছে।
আমি ড্রয়িং বসে টিভি অন করে মাকে খাবর দিতে বললাম।
মা বিরক্তিকর ভাব নিয়ে খবার দিয়ে গেলো।১০টার দিকে ভাইয়ার কল আসতে লাগলো।
আমি ফোনটা অফ করে কাটুন দেখায় মনোযোগ দিলাম।
কিন্তু ঠিক তার ১৫মিনিট পর ভাইয়া বাসায় হাজির হলো...
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com