Breaking News

খালাতো বোন মিশ্মির প্রতি ক্রাশ । পর্ব - ০৩

ভাইয়া এসে আমার হাত থেকে রিমোট কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললো।

আজকে কলেজ যাসনি কেনো?
-আমি বললাম...
-আজকে তো আপুকে দেখতে আসবে।
-ভাইয়া বললো..
-তোকে তো আর দেখতে আসবে না যে তো কলেজ না গিয়ে বাড়ি বসে থাকতে হবে.
আমি বললাম...
-বাড়িতে অনেক কাজ ভাইয়া। এই কাজ ফেলে রেখে কেউ কলেজে যায়।
-ভাইয়া বললো...
-টিভির সামনে বসে কাজ করছিস।
আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই মোবাইল এর রিংটোন বেজে উঠলো।
ফোনের দিকে তাকিয়ে ভাইয়ার রাগী মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো।ড্রয়িং রুম থেকে বারান্দায় গেলো।
আমি ভাবলাম হয়তো ভাইয়ার প্রেম আলাপ শুনার জন্য আড়ি পাতলাম।
একবার যদি জানতে পারি ভাইয়ার গালফ্রেন্ড কে?
তাহলে তার সাথে ভাব জমিয়ে আমার উপর ভাইয়ার অত্যচারের দিন শেষ হতো। কারণ ছেলেদের রাজা থেকে দাস বানাতে পারে একমাত্র বউ আর গালফ্রেন্ড রা।

অপর প্রান্ত থেকে কি বলছে তা কিছুই শুনতে পারছি না। কিন্তু ভাইয়ার কথা গুলো স্পষ্ট শুনা যাচ্ছে।
ভাইয়া মোবাইলে কারে যেন বলছে।
চিন্তা করিস না, তোর পরীর আসে পাশে আমি কোন ছেলেকে ঘেষতে দিবো না।
তবে মাঝে মধ্যে আমি একটু শাসন করি।তুই কবে দেশে ফিরবি।
ভাইয়া বললো...
ও,এসেই বিয়েটা করে ফেলবি।
অপর প্রান্ত থেকে কি বলল..শুনতে পেলাম কিন্তু কি এমন কথা বললো যে ভাইয়ার চোখে পানি চলে আসলো।
ভাইয়াকে আমি কোন দিন কান্না করতে দেখি নাই।
কথা শুনে তো মনে হলো না খারাপ কিছু হয়েছে।মোবাইল পকেটে রেখে চোখের জল মুছে রকিং চেয়ারে বসে পরলো।
এই মুহুর্তে কেনো যেন ভাইয়া অসহয় মুখটা তাই ভাইয়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।আমাকে দেখে ভাইয়া
অনুরধের স্বুরে বললো।

মিশ্মি একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিবি।ভাইয়ার কথা শুনে মাথায় হাত বুলাতে শুরু করলাম।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাইয়া ঘুমিয়ে পরলো।
১২টার সময় আকাশ ভাইয়ার পরিবারের সবাই আসলো।
আপুকে রিয়া সাজিয়ে দিচ্ছে।আজ অনেক সুন্দর লাগছে আপুকে।
মা কিচেন রুম থেকে বের হতে পারচ্ছে না দেখে আমাকে বললো..
মিশ্মি মা এই সরবত গুলা ওদের দিয়ে আয়।
আমি সরবত নিয়ে তাদের দিতে গেলাম।আকাশ ভাইয়ার চাচাতো ভাই জোবায়ের কেমন যেনো বাজে দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিলো ব্যাপারটা মোটেও পছন্দ হলো না আমার।
ড্রয়িং রুম থেকে সোজা নিজের রুমে ঢুকবো ঠিক তখন কে যেনো আমাকে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
আমার বুঝতে অসুবিধা হলো না লোকটা কে। কারণ ভাইা ছাড়া এমন কাজ আর কেউ করতে পারে না।
ভাইয়াকে বললাম..
-ভাইয়া ছাড়ো আমার ব্যাথা লাগছে।
ভাইয়া বললো..

ব্যাথা লাগার জন্যই তো এভাবে ধরেছি।তোকে ওখানে সরবত দিতে যেতে কে বলেছিলো।আর ওড়না ঠিক ভাবে নিতে পারিস না।নাকি যোবায়ের কে দেখানোর জন্য ইচ্ছা করেই এমন করে নিয়েছিস।
আমি ওড়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলাম।একটু সরে গেছে তাই বলে এত বড় কথা শুনাতে হবে।
কেন যে তখন এই খাটাশটার মাথা টিপে দিলাম।মাথা ব্যাথায় তখন মারে গেলিই ভালো হতো।
আমি ভাইয়াকে কিছু না বলে ভাইয়ার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রুমের দরজা লক করে ঘুমিয়ে পরলাম।বিকালে
ঘুম থেকে উঠে দেখলাম সবাই ড্রয়িং রুমে বসে মিটিং করতেছে।সবাই মানে মা বাবা আপু ফুফা ফুফি রিয়া ভাইয়া আর জরিনা খালা।আমার মা বাবার লাভ ম্যারেজ।বাসা থেকে পালিয়ে এসে ছিলো মা তাই নানুর বাসা থেকে এখনো মেনে নেয়নি।
আমি সোফায় বসতে বসতে বললাম।
আমি মনে হয় মিটিং আসতে লেট করলাম।সঙ্গে সঙ্গে ভাইয়া বললো।
তুই ছোট মানুষ, তুই আসলেই কি আর না আসলেই কি?
আমাকে অপমান না করলে ভাইয়ার পেটের ভাত মনে হয় হজম হয় না।
সবসময় মনে হয় আমাকে কিভাবে অপমান করা যায় মনে মনে সেটাই ভাবে।
যাই হোক রিয়ার থেকে জানতে পারলাম।আগামি সপ্তাহে আপুর বিয়ের ডেট ফাইনাল হয়েছে।
মাকে বললাম এতো তাড়াতড়ি বিয়ে হওয়ার কারণ কি?
মা বললো...১বছরের জন্য

ব্যবসার কাজের জন্য আকাশ কে বিদেশ যেতে হবে।সামনের মাসে তাই এতো তাড়াতাড়ি।
ফুাপা ফুপি বিয়ে আগের আর তাদের বাসায় যাবে না।কারন মা বাবা একা সামলাতে পারবে না এতো ঝামেলা।
জরিনা খালা একটু পর পর বাবাকে বলছে..
ভাইজান এহন একটু টিভি দেহি আমার প্রিয় নাটক টা দিচ্ছে এহন।
বাবা জরিনা খালাকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দিলো।কারণ বাবা টিভি দেখা পছন্দ করেন না।বাবার ধমক খেয়ে জরিনা খালা চুপসে গেলো।তার।চুপসে যাওয়া মুখ দেখে খুশি তেমন সবে ঠিক করলাম। একলাইন গান গাইবো।তখনি ভাইয়া বললো..

মিশ্মি এখানে বসে না থেকে পড়ার টেবিলে যা আমি আসতেছি।
আমি অসহায়ের মতো বললাম।
আজকেও পড়তে হবে।
ভাইয়া বললো..
কেন আজ তোর বিয়ে নাকি যে আজ পড়তে বসা যাবে না।
আমি মনে মনে বললাম।
বিয়ে থাকলেও মনে হয় তুমি আমাকে বাসর রাত থেকে টেনে এনে পড়াতে।
সোফা থেকে উঠে পড়ার রুমপ এসে বসলাম।
একটু পর ভাইয়া এসে বললো...
মিশ্মি আমার জন্য নিজের হাতে একটা কফি বানিয়ে নিয়ে আনতে পারবি।
আমি মাথা নেড়ে হ্যা বললাম।

ভাইয়া বললো...
আজকেও আবার ইউটিউব থেকে দেখে বানাস না।তুই তো জানিস আমি নকল করা লাইক করি না।
ইসসসস,তার মানে কি ভাইয়া দেখে ফেলেছে। কিন্তু কিভাবে দেখলো।
ভাইয়া বলো..
কিভাবে দেখেছি সেটা তোর না জানলেও চলবে।
এখন তাড়াতাড়ি কফি বানিয়ে আন।ভাইয়া আমার মনে কথা জানলো কিভাবে।
এটা নিয়ে তেমন মাথা না ঘামিয়ে কিচেন রুমে গেলাম।
অনেক টাইমনি কফি বানালাম।ইচ্ছে করে এতো টাইম কিছুটা চলে যায়।রুমে এসে দেখলাম ভাইয়া কাকে যেনো বলছে।

আমি যখন তোকে একবার কথা দিয়েছি ওকে তোর মতোই মতই সবসময় লেখাপড়ায় ফাস্ট থাকবে তো আমি আপ্রাণ চেষ্টা করবো আমার কথা রাখার।
আমাকে দরজার সামনে দেখে ভাইয়া ফোনটা কেটে দিলো।
আমাকে ধমক দিয়ে বলল।
নক করে ঢুকতে পারিস না। এই বলে কফির মগ নিয়ে কফি খাওয়া শুরু করলো।
আর আমি ভাবছি ভাইয়া কি আমার মতো অন্য কাউকে পড়ায় নাকি?
এটা ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে গেলো।পৃথিবীতে তাহলে আমার মতো আর একজন যে ভাইয়ার অত্যচার সহ্য করছে৷

ভাইয়ার কফি খাওয়া হয়ে গেলে কফির মগ কিচেনে রাখতে গেলাম।
একটা মগে কফি নিয়ে আরাম করে সোফায় বসে খেতে লাগলাম। একটু মুখে দিয়েই আবার ফেলে দিলাম কারণ কফি বানানো অনেক বাজে হয়েছে।
এটা ভাইয়া খেলো কিভাবে?

চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com