খালাতো বোন মিশ্মির প্রতি ক্রাশ । পর্ব - ০৪
কফি খাওয়ার পর মুখটা তেতো হয়েছে বলে ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম খাচ্ছিলাম আর টিভি তে কাটুন দেখছিলাম।ভাইয়া যে আমার জন্য পড়ার টেবিলে বসে আছে সেটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
মিশ্মি আজ তোর খারাপ কিছু আছে।ইমরান ভাইয়া তোর জন্য রুমে বসে আছে।
কথাটা শুনে সব ফেলে এক দৌড়ে রুমের দরজার সামনে দাড়ালাম।ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভাইয়া একবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে আর একবার দরজার দিকে তাকাচ্ছে। আমি ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকলাম।আমাকে দেখে ভাইয়া ধমক দিয়ে বললো।
একটা মগ রেখে আসতে এতো সময় লাগে।আমি কিছু বলতে যাবো। তার আগে ভাইয়া বললো।
তোর জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমার পা ব্যাথা হয়ে গেছে।
এখন আমার পা টিপে দিবি তুই?
এই বলে খাটের সাথে হেলান দিয়ে শুইয়ে পরলো।
বজ্জাতটা আমাকে কিছু বলাল সুযোগ দিলো না।আমাকে দাড়িয়ে থাকতে থেকে ভাইয়া বললো...কিহলো
তোকে এখানে দাড়িয়ে থাকতে বলছি।তাড়াতাড়ি পা টিপে দে।
আমি গিয়ে খাটে বসে পা টিপতে লাগলাম।আর ভাইয়া আরাম করে মোবাইলে গেম খেলছে।
প্রায় ১ঘন্টা পর ভাইায়াকে বললাম।ভাইয়া আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।আমার কথা শুনে ভাইয়া খাট থেকে উঠে চেয়ারে গিয়ে বসলো।আর বললো এখন পড়তে বস
আমিও গুড গালের মতো চুপচাপ পড়তে বসলাম। অনেকক্ষণ একটা ম্যাথ বুঝানোর পর ভাইয়া আমাকে বললো।
এখন এই ম্যাথ টা করে দেখা।
আমি বললাম।
ভাইয়া কাল দেখাবো, এখন হাতটা ব্যাথা করছে।
ভাইয়া বললো...
আমি তোকে এখন করতে বলছি, কালকে করতে বলিনি।
কোনো কথা না বলে তাড়াতাড়ি কর।
আমি হাতে ব্যাথা নিয়ে তাড়াতাড়ি অংকটা করে দেখালাম।
তারপর নিজের রুমে চলে গেলাম।রাতে মার ডাকে খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম।
খাবার টেবিলে ভাইয়াকে দেখে বললাম।ভাইয়া আজ তুমি তোমাদের বাসায় যাবে না?
মা আমাকে ধমক দিয়ে বললো।
বাসায় যাবে মানে, তোর ফুপি দের বিয়ে আগে বাসায় যেতে দিবো না।তুই জানিস না।
আর আমার কোনো ছেলে আছে।বিয়ের সময় অনেক ছেলেদের অনেক কাজ আছে সেগুলো তো ইমরান ই করবে।
আমি মনে মনে বললাম।
তার মানে এখন থেকে দিন রাত ২৪ ঘন্টা ভাইয়ার অত্যাচার সহ্য করতে হবে।
খাওয়া দাওয়া সেরে রুমে এসে শুইয়ে পরলাম।সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হচ্ছিলাম তখনই মোবাইলে একটা মেজেস আসলো।
মেজেস চেক করে দেখলাম।ভাইয়া মেজেস করছে, আমি অফিসে চলে এসেছি।আমার যেনো আজ আসতে না হয়।
তাড়াতাড়ি কলেজে যা।ধ্যাত শয়তানটা অফিয়ে গিয়েও আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না।
রেডি হয়ে খেয়ে কলেজ চলে আসলাম।
কলেজের ক্যাম্পাসে অনেক দিন পর আমাকে যে ছেলেটা প্রপোজ করে পরের দিন থেকে আর কলেজে আসেনি আজ তাকে দেখতে পেলাম।তাকে দেখে ডাক দিলাম।কিন্তু আমাকে দেখে ছেলেটা চলে যাচ্ছিলো।আমি দৌড়ে ছেলেটার সামনে দাড়ালাম।
আর বললাম..
কি হলো আমাকে দেখে চলে যাচ্ছো কেনো?
আমার কথা শুনে ছেলেটি হাটু গেড়ে বসে বললো।আপু তোমাকে আমার অনেক আপু ডাকতে ইচ্ছা করে।
দিবে কি আমাকে আপু ডাকার অধিকার।
ছেলেটার কথা শুনে আমি ছেলেটার গালে একটা ঠাসস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম।
আর বললাম।
কেনো তোর বাসায় বোন নেই।রাস্তা ঘাটে মেয়ে মানুষ দেখলেই আপু ডাকতে ইচ্ছে করে।
এই বলে চলে আসলাম।ক্যান্টিনে গিয়ে বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিয়ে ক্লাস রুমে গিয়ে ক্লাস করলাম। ছুটির পরে সোজা বাসায় চলে আসলাম।রুমে ঢুকে ভাইয়াকে আমার রুমে চোখ লাল করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গেলাম।
আমি ভাইয়াকে বললাম,
ভাইয়া তুমি এতো তাড়াতাড়ি অফিস থেকে চলে আসলে যে।
আমার কথা শুনে ভাইয়া খুব হিংস্র ভাবে আমার দিকে তাকালো।
আমি ভাইয়ার এমন রুপ দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম।আজ আবার কি ভুল করলাম।
ভাইয়া যখন আমার কামিজের হাতা টেনে ছিড়ে ফেলো তখন আমার ধ্যান ভাঙ্গলো।
ভাইয়া রাগী ভাবে বললো, তোকে কতদিন বলছি সাদা কালারের কিছু পরবি না।
তখন আমি আমার কামিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম।সত্যিই আমি সাদা কালারের কামিজ পরেছি।
এতক্ষণ তো খেয়াল করিনি।এতো বড় ভুল হলো কেমন করে আমার।
আমি ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলাম।ভাইয়া সকালে তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে ভুলে পরে ফেলেছি।প্রমিজ করছি এমন ভুল আর করবো না।
আমার কথা শুনে ভাইয়া একটু শান্ত হয়ে বললো,তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে আস।এই বলে চলে গেলো।
আমি ওয়াশ রুমে ঢুকতেই বললাম।
সাদা কালারে যদি এতো এলাজি থেকে থাকে তাহলে তুই কেনো সাদা কালারের শাট পরিস।আমার তো সাদা কালার ফেবারিট।
সেই যে একবছর আগে আমার বার্থডের দিন একটা সাদা
কালারের গাউন পড়েছিলাম।তারপর থেকে যেনো কি হলো ভাইয়ার আমাকে আর সাদা কালারের কিছু পরতে দেন না।
ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
বিকালে ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখলাম সবাই সেজেগুজে কোথায় যেনো যাচ্ছে।
আমি একটু অভিমান সুরে বললাম।
আমাকে রেখে তোমরা সবাই কোথায় যাচ্ছো।
ভাইয়া বললো,
তিয়ার বিয়ের শপিং করতে যাচ্ছি।আমিও যাবো, তুই গিয়ে কি করবি?
আমি বললাম,
কেন আমিও আপুর জন্য কিছু চয়েস করে দিবো।
ভাইয়া বললো,
তুই আর কি চয়েস করে দিবি। তো যে পছন্দ সেগুলো যদি তিয়া বিয়ে সময় পরে তাহলে সবাই হাসা হাসি করবে
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com