অন্ধপ্রেম । পর্ব - ০২
শীতল শাওয়ারের নিচে কাদতে কাদতে জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলে .
এদিকে বিকাল হয়েছে .শীতলের বাবা রাজ কে ফোন করে বলে শীতলকে বাড়িতে নিয়ে আসতে .
রাজ চালাকি করে বলে তার কিছু কাজিন আছে যারা দেশের বাইরে থেকে এসেছে . তাদের সাথে শীতল গল্প করে সময় কাটাচ্ছে.
আসতে লেট হবে শীতলের .
শীতলের খেয়াল রাখতে বলেছে শীতলের বাবা .
রাজ বাকা হাসি দিয়ে মনে মনে বলে খুব ভালো করেই আপনার মেয়ের খেয়াল রাখবো হবু শশুর মশাই .
শীতলের জ্ঞান ফিরলে নিজেকর রুমের বেডে আবিষ্কার করে .
মাথা ব্যাথা করছে শীতলের .
সে তো ওয়াস রুমে ছিলো এখানে কিভাবে এলো .
শীতল খেয়াল করলো তার গায়ে শুকনো জামা .
এই জামা যে রাজ পড়িয়েছে সেটা ভাবতে তার বেশি সময় লাগেনি .
রাজ রুমে ঢুকে শীতলের কাছে যায় .
_ওয়াস রুমে পড়ে ছিলে .আমার বাসার পানি তো সব শেষ করে দিলে তুমি গোসল করে .
শীতল ঘৃনা নিয়ে রাজের দিকে তাকালো .
_তোমার জামা আমি চেন্জ করেছি . এটাতে রিয়েক্ট করার কিছু নেই .
_শীতল এবার মুখ খুললো .
_আপনি কি মানুষ না জানোয়ার .এতো বড় জঘন্য অপরাধ করেও আমার সামনে কথা বলছেন .আপনার মধ্যে বিবেক বলে কিছু নেই .
নিজের বন্ধুর বোনের সাথে এমন জঘন্য কাজ করতে আপনার এতোটুকু লাগলোনা .
আমার পরিবার আপনাকে কত বিশ্বাস করে আর আপনি কিনা এই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখলেন না .
রাজ শীতলের কোন কথায় শুনছেনা .
এমন একটা ভাব করছে যেনো সে কিছুই শুনতে পায়নি .
রাজ আপন মনে নিজের কাজ করছে .
কি সব পেপার দেখছে রাজ .
শীতল আবার বললো...
_আপনার মতো ভালো মানুষের মুখোশ পরা লোকেরা অবশ্য এসব করে .
আপনাদের মতো লোকেরা কাছে নো সম্পর্কের মূল্য দিতে জানেনা .
আপনার মুখোশ আমি খুলে দেবো সবার সামনে ...
শীতল কথা গুলো বলেই রুমের বাইরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো .ঠিক তখনি রাজ শীতলের হাত টেনে দেয়ালের সাথে মিশালো .
শীতল রাজকে একটা ধাক্কা দিয়ে বেড সাইডে ফেলে দিলো .
মাথায় অনেকটা চোট পেয়েছে রাজ .কিছু ব্লিডিং পড়ছে কপাল থেকে .
রাজ এসব তোয়াক্কা না করে শীতলের কাছে গিয়ে শীতলকে আবারো দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো .
শীতল ঘৃনার দৃষ্টি নিয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে আছে .
রাজ ভয়াবহ দৃষ্টি নিয়ে শীতলের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো..
অণেক হয়েছে তোমার লেকচার .তোমার বাবা তো কলেজের লেকচ্যারাল .বাবার মতোই লেকচ্যার তো ভালোই দিতে পারো তুমি .
তোমার যে অবস্থা করেছি আমি তাতে কারো সামনে মুখ দেখাতে পারবেনা তুমি .
এসব যদি সোসাইটির লোকেরা জানে তাহলে তোমাদের সম্মানের তেরটা বাজবে .
আমাকে কেউ কিছুই করতে পারবেনা .
তোমার বাবার তো হার্টের সমস্যা তাইনা .
যদি এসব তোমার বাবা জানে তাহলে কি হবে বলোতো ??
শীতল কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলো .
এসব সে ভাবেনি .
বাবা জানতে পারলে মেনে নিতে পারবেনা .
তার মেয়েকে ল
কেউ ধর্ষন করেছে এটা তার কাছে মৃত্যুর চেয়ে কষ্টদায়ক হবে .
_আমি তোমাকে এখনি বিয়ে করবো .
একমাত্র এটাই হবে তোমাদের সবার জন্য মঙ্গলজনক .
এমনিতে আমি ছাড়া তোমার মতো ধর্ষিতা মেয়েকে কেউ বিয়ে করবেনা .
শীতল এবার রাজকে থাপ্পর দিলো .
_তোর মতো জঘন্য লোককে আপনি বললেও পাপ লাগবে .
তুই ভাবলি কি করে আমি তোর মতো ধর্ষককে বিয়ে করবো .
কে জানে আরো কত কত মেয়েদের তোর শিকার বানিয়েছিস .
তোদের মতো জানোয়ার অমানুষ কখনো কারো স্বামী হতে পারেনা .
রাজ শয়তানের মতো হাসি দিয়ে বললো ..
এমনিতে তোমার জবান খুলেনা .
সব সময় তো চুপচাপ থাকতে .এখন তো দেখছি বেশ চটর চটর কথা বলছো .
আমাকে যা যা বলছো তার হিসেব আমি পড়ে শোধ সমেত নেবো .
এখন বিয়েতে রাজি না হলে তোমার বাবাকে ফোন করবো .
তারপর বলবো তার মেয়েকে আমি কিভাবে রেপ করেছি .
বিস্তারিত সব বলবো .
এরপর মিডিয়ার লোকেদেরও জানাবো কিভাবে একজন নিরীহ সম্মানিত মেয়েকে আমি অমসম্মানিতো করেছি .
শীতল এবার ভয় পেয়ে গেলো .
নিজের জন্য তার ভয় করছেনা .বাবার জন্য শীতলের ভয় করছে .
বাবার সম্মান মাটিতে মিশে যাবে তার মেয়ে ধর্ষন হয়েছে একথা সোসাইটির লোকেরা জানলে .
অন্যদিকে এই ধর্ষককে বিয়ে করা অসম্ভব .
বিয়ে করলে প্রতি রাতেই এই জানোয়ার তাকে বৈধ ভাবে ধর্ষন করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই .
শীতল কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা .
তার চোখ দিয়ে লাগাতার অস্র ঝরছে .
রাজ শীতলের উওরের জন্য ওয়েট করছে পকেটে হাত ঢুকিয়ে .
_আমি রাজি তবে ,,
_কি তবে ??
_আমার সাথে কেনো এমন করছেন তা বলতে হবে .
_কাহিনী সবে শুরু হলো .আর তুমি এখনি শেষ করতে চাও ডিয়ার .
ধীরে ধীরে সব জানতে পারবে আগে বিয়েটা হোক .
তুমি রাজি তো বিয়ের জন্য ..
শীতল ঘৃনায় লজ্জায় নিচে তাকিয়ে আছে ..
এছাড়া তার কাছে আর কোনো উপাই নেই .
রাজ বিয়ের জন্য কিছু শাড়ি গয়না বেডে রেখে নিচে চলে আসলো .
শীতল নিরুপায় হয়ে সেগুলো পরে নিচে নামলো .
কাজি আর রেজিস্টার তাদের বিয়ে পড়ালো .
স্বাভাবিক নিয়মে চুপচাপ তাদের বিয়ে হলো .
রাজ আর শীতল দাড়িয়ে আছে .
শীতলের বাবা মা আর ভাই রোদ সোফায় বসে আছে .
নিরবতা চলছে সবার মাঝে .
শীতল শূধু কান্না করছে আর শীতলের মা আচল দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না করছে .
শীতলের বাবা : তোমরা আগে থেকে পছন্দ করো একে অপরকে সেটা জানাবেনা .
আমার সম্মানের কথা একবারো ভাবলেনা তোমরা ??
রোদ : বোনকে কোলে নিয়ে বেড়ানো ,খাওয়ানো ,ঘুম পাড়ানো ,পড়ানো .সারা রাত জেগে থেকে পরিক্ষার জন্য প্রিপারেশন করানো এসবের এভাবে প্রতিদান পেলাম ,,,ওয়াও থ্যাংক কিউ বেরি মাচ ডিয়ার সুইট সিস্টার .
শীতল কিছু বলছেনা ..শুধু কান্না করছে .
আসল কথা বলে দিলে রাজ তার বাবাকে ধর্ষনের কথা বলে দেবে .
এজন্য শীতল চুপচাপ দাড়িয়ে আছে .
যা বলার রাজ বলেছে .
রাজ : রোদ দোস্ত আমরা ভালোবাসি দুজন দুজনকে তাই না জানিয়েই বিয়ে করেছি .
তোরা তো শীতলের বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক করে ফেলেছিস .
শীতলকে হাড়ানোর ভয়ে আমি এই কাজ করেছি .
রোদ : তুই তো কথায় বলিস না .বন্ধু হয়ে এমন করলি .আমাদের সম্মানের কথা ভাবলিনা .
রাজ চুপ হয়ে গেলো .
শীতলের বাবা : আমি তোমাদের মুখ দেখতে চাইনা .
আমার মেয়ে মারা গিয়েছে আমার কাছে .এই বাড়ি তোমাদের ছায়াও যেনো না দেখি .
রোদ বাবা এদের চলে যেতে বলো .
শীতল তার বাবার পা ধরে বসে পড়লো..
বাবা আমি ভুল করেছি আমাকে মাফ করে দাও .
তোমাদের ছাড়া আমি বাচবোনা .
শীতলের বাবা পা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলো নিজের রুমে .
রোদও চলে গেলো রাগে .
শীতলের মা তাদের মাথায় হাত রেখে চলে যেতে বললো..
শীতলের মা : রাজ বাবা তোমরা এখন চলে যাও .রোদের বাবা আর রোদ রাগ করেছে .
রাগ চলে গেলে তোমাদের আপন করে নেবে .
আমার মেয়েকে দেখো বাবা .
তুমি ছাড়া ওর কেউ নেই আর .
রাজ : জি আন্টি দেখে রাখবো .খুব ভালো করেই দেখে রাখবো ..
আপনি চিন্তা করবেনা .
ওর চোখের পানি পড়তে দেবোনা কখনো .
জনপ্রিয় পোষ্ট সমূহঃ
শীতল শেষ বারের মতো তার মাকে জড়িয়র ধরে কাদলো .
তার মা ও কাদলো মেয়েকে বিধায় দিয়ে .
শীতল মনে মনে বললো ..
আমি তোমাদের সম্মান নষ্ট করিনি মা .তোমারা জানোনস তোমাদের মেয়ের সাথে কি হয়েছে .
আজকের পর থেকে তোমাদের মেয়ে জিবন্ত লাশ হয়ে থাকবে .
রাজ বিধায় নিয়ে শীতলকে নিয়ে তার গাড়িতে বসলো .
ড্রাইভ করছে রাজ আর শীতল বাহিরে মুখ বের করে কাদছে তার পরিবারের জন্য .
শীতল ভাবছে কেনো তার জিবন এমন হলো .
রাজ কেনো তার সাথে এমন করলো .
কি অপরাধ ছিলো তার .
কিসের জন্য এমন করছে সে .
আর যাইহোক এই অমানুষের সাথে থাকা যায়না .
তার গা ঘিন ঘিন করছে রাজের কথা ভেবে .
সারা জিবন এই লোকের সাথে সে থাকবে কিভাবে .
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com