বান্ধবীর ভাই যখন ডেবিল বর | পর্ব - ০১
বেহায়ার মতো বুকের আচল ফেলে দিয়ে আমাকে কাছে টানার চেষ্টা করছো কেনো?
আমি কি ইচ্ছা করে বুক উদাম করে রাখছি?ভুলবসত আচল পরে গেছে।
আর সেজন্য কথা শুনাতে হবে।অদ্ভুত লোক।
উঠে ওনার কাছে গিয়ে বললাম।এই যে মিস্টার আদনান, কি ভাবেন নিজে কে, চুড়ির সাথে আটকে গিয়ে আচল পরে গেছে।বুক উদাম করে আপনাকে বিমোহিত শিহরিত কোনোটাই করার ইচ্ছা আমার নেই।
তাও আপনার মতো লোককে।আপনি কতটা কাপুরুষ বুঝতে পারছেন।বাসর রাতে বউয়ের সাথে গল্প করবেন। আদর করবেন। তা না করে উল্টা কথা শুনাচ্ছেন।
ইসস তোমাকে আমি করব আদর। ভাবলা কি করে। বিয়ের সময় এমন কোনো শর্ত দেয়নি তোমার বাবা মা, আর বলেও নি আমার মেয়েকে সারাত আদর করবা। বলেই হা হা করে হেসে উঠলো আদনান।
ওর হাসি দেখে মেজার টা খারাপ হয়ে গেলো।রেগে গিয়ে বললাম। ওহ আপনার বাবা মা ও এমন কোন শর্ত দেয়নি বিয়েতে যে বুকের আচল আপনার সামনে ফেলে রাখা যাবে না।
আর জানেন আপনি, এমনেতেই আপনাকে বানোরের মতো দেখায়।আর হাসলে দেখায় হনুমানের মতো।বলেই জিব্বায় কামড় দিলাম। ইস কি বললাম।লোকটা আবার রাগ করবে নাতো।
কিন্তু আদনান রাগলো না।উল্টা আমাকে বললো, আলিফ লায়লার ভূত দেখছো?যে মানুষ গুলো দেখতে ভালো দেখায় না। তাদের কে প্রচুর ময়দা মাখায়,তখন তাদের কে ভূতের মতো দেখায়।
আর আমার সামনে এখন সেরকম এক পেত্নীর মতো বসে আছে।
-কি, আমি দেখতে পেত্নীর মতো।
-না পুরাই তেলাপোকার মতো, আচ্ছা তোমার নাম জুই রাখলো কেনো?তুমি তো জুই ফুলের মতো সুন্দর নও,তোমার নাম রাখা উচিত ছিলো তেলাপোকা। তুমি একটা উইপোকা।
--আমি রেগে গিয়ে বললাম,আমি তেলাপোকা মতো কোন দিক দিয়ে।আপনি একটা তেলাপোকা , আমার পেট তেলাপোকার মতো বড় নাকি,ও ফিসফিসিয়ে বললো,দেখলে বুঝতাম পেট কেমন।
আর এখন বড় না হলেও হয়ে যাবে। প্রচুর রাগ হচ্ছে এই আদনানের উপর। জানতাম এমনটাই করবে। তাও কষ্ট হচ্ছে খুব।ওয়াশরুমে ঢুকে মেকআপ উঠাচ্ছি আর ভাবছি সত্যিই কি আমি পেত্নীর মতো? বাসর রাতে সকল মেয়ে সুন্দর হোক বা না হোক আশা করে,জামাইয়ে এসে ঘোমটা উঠিয়ে বলবে,তুমি এত সুন্দর কেনো?
জানো,তোমার ওই কাজল কালো চোখের মায়ায় পড়েছি।তোমাকে রুপবতি হতে হবে না।আমার মায়াবতি হয়ে সারজীবন আমার সাথে থেকো, আর আমার কি কপাল, প্রশংসা তো করলোই না, উল্টো আচল বুক থেকে সরে যাওয়াতে কতগুলো কথা শুনালো। এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি উনি ফেইসবুক চালাচ্ছে।
আজোব লোক,
ইনিই হয়তো প্রথম লোক যে বিয়ের রাতে ফেইসবুক চালচ্ছে।উনার কাছে গিয়ে বললাম।
-কেমন লোক আপনি?
-পাঁচ ফুট ১০ই,লম্বা।সুদর্শণ এক যুবক আমি।
-সেটা জিজ্ঞেসা করিনি।বলছি আপনি কি রকম লোক। বাসর রাতে ফেইসবুক উইজ করছেন।
-কেনো?আজ কি কোনো বিষেস রাত যে ফেইসবুক উইজ করা যাবা না।
-অবশ্যই বিষেশ রাত।
-আমি তো দেখতেছি অন্য সব দিনের মতো একটা চাদ উঠছে।বিষেশ কোনো এক দিক দিয়ে।
-আপনি একটা.....…।ইচ্ছে করছে ফোনটা ভেঙ্গে দেই।
-কেনো? ফোন আবার কি করলো?
-ফোন কিছু করেনি,করছেন তো আপনি।
-তো ফোন ভাঙ্গবা কেনো?পারলে আমাকে ভাঙ্গো।
-পারলে তাই করতাম।কি ভাব ফোনের সাথে। বাসর রাতে বউ রেখে ফোন নিয়ে টিপাটিপি।
-তো, তোমাকে টিপতাম?
মুখে কিছুই আটকায় না এ লোকের। বুঝলাম এর সাথে আর কথা বারিয়ে লাভ নেই।উনাকে বললাম রুম থেকে বের হন।শাড়ি পাল্টাবো।
-ওয়াশরুমে গিয়ে পাল্টাও।
-না সেখানে পাল্টালে ভিজে যাবে।
-তো আমার সামনেই পাল্টাও।
-আপনার মতো লুচু লোকের সামনে আমি শাড়ি পাল্টাবো কখনো না।
-হোয়াট ইজ লুচু, ডিয়ার? এটা কি বরিশালের ভাষা?
বরিশালের মানুষ দেখতেও ভালো লাগে না।ভাষায়ও সুন্দর না।
--বরিশাল নিয়ে আজে বাজে কথা বলবেন না। বরিশালের মানুষ সবচেয়ে ভালো।
ওরা আপনাদের মতো গন্ডার মার্কা না । আর আমার বাড়ি বরিশাল নয় ভোলা।
-ওই একই লাউ আর কদু।
-না, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ঢাকার মধ্যে। কিন্তু এদের কে কেউ ঢাকাইয়্যা বলে না।
আর আপনার সাথে প্যাচানোর ইচ্ছা নেই।
দয়া করে বের হন রুম থেকে।
-না যাবো না।
-আপনি বের হবেন। নাকি চিৎকার করে উঠবো।তখন সবাই ভাববে,
যে ছেলে বিয়েই করতে চায়না, সে এখন বউ পাওয়ার আগেই....।
-থাক আর কিছু বলতে হবে না,গেলাম।অবশেষে বের হলো আদনান।
যাক লোকটা গেলো তবে।গরমে ঘেমে গিয়েছি খুব।শাড়ি পড়ার অভ্যাস নেই।
ভার্সিটিতে ভাইভাতে শাড়ি পড়তাম মাঝে মাঝে।
ভাইবা রুমে যাওয়ার আগ মুহূর্তে শাড়ি পরতাম।তাও শাড়ি ছুটে যেতো।
একবার ভাইবা রুমে ঢুকলাম। আর তখনি শাড়ির কুচি ছুটে গেলো।
কি বাজে অবস্থা হয়েছিলো তখন। কোনো রকম শাড়ি ধরে রাখলাম।
যে মেয়ে শাড়ি সামলাতে পারে না সে কিনা এই ছ্যাচড়া লোকটাকে সামলাবে।
(নতুন গল্প সকলে অবশ্যই সাপোর্ট করবেন,
আপনাদের সাপোর্ট পেলে বাকি পাট গুলো লেখব, নয়তো লিখবো না।)
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com