আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ১৯
ফারহাঃ হুম স্যার, আমার ফ্রেন্ডরা বলে।
রাহাত স্যারঃ আচ্ছা যাই হোক কাকের ডাকটাই শুনাও।
ফারহাঃ আচ্ছা। কিন্তু স্যার কোন গান গাইবো?
রাহাত স্যারঃবহুম্মম্ম,, তোমার যেটা ইচ্ছা সেটা শুনাও।
ফারহাঃ আমার ইচ্ছা! আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে শুরু করা যাক?
রাহাত স্যারঃ হুম করো,
ফারহাঃওকে।
আমি জোয়ান একটা মাইয়্যা,
বুইড়া জামাইর কাছে আমার
বাবাই দিছে বিয়ে।
বুইড়ার কাশিতে কাশিতে যায় লুঙী খুলিয়া,
আমি জোয়ান এক
রাহাত স্যারঃ স্টফ
ফারহাঃ কি হলো স্যার?
রাহাত স্যারঃ এইটা আবার কি গান?
ফারহাঃ আরে স্যার আপনি এই গান আর শুনেন নাই?
এখনকার জন্য এইটা তো অনেক ফেমাস একটা গান।
রাহাত স্যারঃ রাখো তোমার ফেমাস। তোমাকে এই সব ফালতু গান শুনতে কে বলে?
আর এই ফালতু গান তুমি আমাকে শুনাচ্ছো? দাঁতে দাঁত চেপে,
জিহাঃ আমি তো আপনাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম কোন গান গাইবো?
কিন্তু আপনি তো বললেন আমার ইচ্ছা মতো গাইতে, এখন আমার দোষ হয়ে গেলো?
রাহাত স্যারঃ তোমার ইচ্ছা মতো গাইতে বলছি বলে এই গান শুনাবা?অন্য কোনো গান খুঁজে পাও নাই?
জিহাঃআমার যেটা ইচ্ছা হয়েছে সেটা গেয়েছি।
রাহাত স্যারঃ তু,,, মনে মনে গলায় হাত দিয়ে,,আমার গলায় এমন লাগতেছে কেন?
জিহাঃ কি ব্যাপার স্যার চুপ করে গেলেন কেন? আবার গলায়ও হাত দিয়ে রেখেছে, তার মানে আমার ওষুধ কাজ দিয়েছে। হিহিহি আমার সাথে পাঙ্গা দিতে আসছো তাই না, এখন বুজো মজা। খুশিটা একটু চাপা দিয়ে বললাম,, স্যার কি হয়েছে?
রাহাত স্যারঃকিছু না তুমি যাও, ক্লাস শুরু হয়ে যাবে এখুনি,,
কথা বলতেও অসহ্য লাগতেছে কেমন জানি চুল্কাচ্ছে গলাটা,
জিহাঃ আচ্ছা স্যার,, আমার তো খুশিতে নাচতে ইচ্ছা করতেছে। তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে ওখানে থেকে চলে আসলাম।
হেসে হেসে ক্লাসে চলে আসলাম,
জিহাঃ কিরে হাসতেছিস কেন? আমি ভাবছি তুই কান্না করতে করে বের হবি এখন দেখি হাসতেছিস?
ফারহাঃ বইনা ভুলে যাসনে আম, ফারহাকে কাঁদানো এতো সহজ না, ফারহাকে যে কাঁদাতে আসবে সে উল্টো কাঁদবে।
জিহাঃ কি করেছিস তুই? তোর কথা শুনে তো আমার ভয় করতেছে।
ফারহাঃ আচ্ছা তাহলে শুন,, তারপর জিহাকে সবটা খুলে বললাম।
জিহাঃ
ফারহাঃ
জিহাঃ এইটা তুই কি করলি? শেষ পর্যন্ত বেচারা স্যারটাকে তুই কচু পাতার রস খাওয়াই দিলি?
ফারহাঃ ফারহার সাথে পাঙ্গা নিলে তো এমনি হবে।
জিহাঃ তাও এইটা কিন্তু তুই ঠিক করিস নাই।
ফারহাঃ এ্যা ঠিক করিস নাই, তোকে বলছে না ঠিক করি নাই। ওই বজ্জাত আমাকে দিয়ে কাজ করাবে আর আমি কিছু করবো না তা কি করে হয়?
জিহাঃ তাই বলে কচুপাতা?
ফারহাঃ এই এই স্যারের জন্য তোর এত জ্বলতেছে কেন?
জিহাঃ জ্বলবে না? স্যার বলে কথা।
ফারহাঃ হুহ, জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যা। আচ্ছা যাই হোক ক্লাস শুরু হয়ে যাবে এখুনি চুপচাপ বসে থাক।
জিহাঃ হুহ
কিছুক্ষণ পর ক্লাস শুরু হয়ে গেলো।
প্রত্যেক ঘন্টা ঠিক মতো ক্লাস চললেও আইসিটি ক্লাসটা ঠিক মতো হলো না। স্যার নাকি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাই ওনার পরিবর্তে অন্য স্যার এসেছেন ক্লাস করার জন্য।
কথাটা শুনে কেমন জানি খারাপ লাগলো, আমি সত্যি একটু বেশি করে ফেলেছি। আমি যদি এই কাজটা না করতাম তাহলে এই রকম কিছুই হতো না।
দূর আমি সব সময় একটু বেশি বেশি করে ফেলি। ঘন্টা চলতেছে তার গতিতে আর আমি মরতেছি অনুতাপের আগুনে পুরা ক্লাস শুধু স্যারের কথা ভেবেই মন খারাপ করে বসে ছিলাম।
জিহাঃ কিরে, কি হইছে? মন খারাপ কেন?
ফারহাঃ স্যারের সাথে এমন আমার উচিত হয় নাই তাই না?
জিহাঃ এই জন্যই মন খারাপ হইছে আমার বেপ্পিটার?
আরে বাবা কিছু হবে না, কালকে ঠিক হয়ে যাবে দেখিস।
ফারহাঃ সত্যি?
জিহাঃ হুম রে বাবা। আচ্ছা কালকে তো পহেলা ফাল্গুন মেলায় ঘুরতে যাবি না?
ফারহাঃ ওয়াও মেলা?তাও কালকে?
জিহাঃ হুম,, যাবি?
ফারহাঃ যাবো মানে আলবাত যাবো।
জিহাঃ ওকে তাহলে কালকে বিকালে যাওয়া যাক?
ফারহাঃ ওকে,অনেক মজা হবে।
জিহাঃ হুম,, শুন কালকে কিন্তু শাড়ী পরে আসবি বুঝেছিস?
ফারহাঃ শাড়ী?
জিহাঃ হুম শাড়ী আমি অন্য কোনো কথা শুনবো না।
ফারহাঃ শাড়ী মানে পুরাই প্যারা। আচ্ছা ঠিক আছে পরবো। এখন বাসায় যাওয়া যাক। তারপর দুইজনে যার যার বাসায় চলে আসলাম।
শুয়ে শুয়ে পড়তেছি কিন্তু কিছুই যেন ভালো লাগতেছে না। বার বার স্যারের কথা মনে পরতেছে। এখন কেমন আছেন উনি? ঠিক হয়ে যাবেন তো? আচ্ছা উনি এখন কি করতেছেন? ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম নিজেই জানি না।
সকালে পাখির কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। বেড থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।
আজ পহেলা ফাল্গুন। ফাল্গুন আসতে না আসতেই যেন প্রকৃতি এক অন্য রূপে সেজেছে।
ফাল্গুনের ছোঁয়ায় প্রকৃতি আরো মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠেছে।
চারপাশে পাখির কিচিকিচি শব্দ। ফাল্গুন আসায় পাখির যেন আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে।
চারদিকে ফুলের সমারোহ, ফাল্গুনের ছোঁয়ায় ফুলের রূপ যেন ঝলকে পড়ছে।
নয়ন যে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে প্রকৃতির রূপে।
ফাল্গুনের এই বৈচিত্র্য প্রকৃতিতে যে কেউ প্রেমে পরে যাবে।
সকালটা যে এতটা সুন্দর হয় সেটা আমার জানা ছিলো না তাও আবার ফাল্গুনের ছোঁয়ায় রাঙ্গানো সকাল।
রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে হালকা নাস্তা করে নিলাম।
বিকালে বের হওয়ার কথা আম্মিকে বললে,
আম্মি প্রথমে নিষেধ করলেও পরে আর বারণ করে নাই, তানহাটাও যাওয়ার জন্য বায়না করতেছে।
আম্মি বলেছে যাওয়ার হলে তানহাকেও নিয়ে যেতে হবে তা না হলে যেতে দিবে না তাই বাধ্য হয়ে ওকেও নিয়ে যেতে হচ্ছে।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com