আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ১৬
জিহাঃ ফারহায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া
ফারহাঃ আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া,,,, হঠাৎ মনে হলো একটা বাতাসের বেগের মত কিছু একটা এসে ধাক্কা দিয়ে আমাকে রাস্তার পাশে ছিটকে ফেলে দিয়েছে,,,,,,,, মুখটা উপরে তুলে তাকিয়ে দেখি রাহাত স্যার আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছেন,,,, মনে হচ্ছে এখুনি চোখ দিয়ে খেয়ে ফেলবেন,,,, কিন্তু ওনি এখানে কি করে আসলেন? আমায় বা বাঁচালেন কি ভাবে?
জিহাঃ ঘাড়ীটা ফারহা সাথে ধাক্কা লাগার আগেইই আমি চোখটা বন্ধ করে ফেলি,,,, কি করে সহ্য করতাম ফারহা এই অবস্থার দৃশ্যটা?
কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখি ফারহা রাস্তার পাশে বসে আছে আর পাশে রাহাত স্যার,,,, কিন্তু রাহাত স্যার এখানে কি করে আসলেন? যাই হোক,,,, দৌড়ে ওর কাছে গেলাম,,,,,ফারহা হাত ধরে উঠিয়ে,,,,
জিহাঃ তোর কোথাও লাগেনি তো?
জিহার কথা আমার কানে যাচ্ছে না,,,,আমি তো স্যারের রাগী দৃষ্টি দেখে ভয়ে চুপসে আছি,,,,
রাহাত স্যারঃ এই মেয়ে তোমার মাথায় কোনো সমস্যা আছে? এপাশ ওপাশ না তাকিয়ে রাস্তা পার হচ্ছো? পাগল নাকি?
ফারহাঃ নিশ্চুপ,,,, মনে মনে শয়তানের দাদা তুই আমাকে পাগল বলছিস? তোকে তো আমি কুকুরের ডিম ভাজা করে খাওয়াবো,,,, হুলো শয়তান একটা,,,
রাহাত স্যারঃ কি হলো কথা বলেতছ না কেন? আমি যদি আর এক মিনিট দেড়ি করতাম তাহলে আজকে তোমার কি অবস্থা হতো,,,,, কোনো আইডিয়া আছে তোমার?
ফারহাঃ
রাহাত স্যারঃ এই চুপ করে থাকার জন্য তোমাকে এখন আমার কি ইচ্ছা করতেছে জানো?
ফারহাঃ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে স্যারের দিকে তাকালাম,,,,
রাহাত স্যারঃ ইচ্ছা করতেছে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিই,,,,
ফারহাঃ
রাহাত স্যারঃ কান্না বন্ধ করে বলো,, কি এমন জরুরী কাজ তোমার যার জন্য আশেপাশে না তাকিয়ে এই ভাবে রাস্তা পার হচ্ছিলে,,,,,
ফারহাঃ
রাহাত স্যারঃ বলো
ফারহাঃ এ্যাাাাাাাাাাা
রাহাত স্যারঃ,,,এই মেয়ে কিরে বাবা রাস্তার মাঝখানে এত লোকের সামনে এই ভাবে বাচ্চার মত কান্না করতেছে,,,
জিহাঃ আসলে স্যার ফারহা আর আমি ফুচকা খাওয়ার জন্য রাস্তার ওই পাশে যাচ্ছিলাম,,,,,
রাহাত স্যারঃ ক,,,,,
ফারহাঃ আমার ফুচকা,,,আরেএ আমি তো ভুলেই গেলাম যে আমাদের ফুচকা খাওয়ার কথা,,,, এই জিহা চল ফুচকা খাবো,,,
জিহাঃ
রাহাত স্যারঃ ওর কথা শুনে রাগ করবো না নিজের মাথা ফাটাবো ভেবে পাচ্ছি না,,,
ফারহাঃ আরে বাবা এই ভাবে অবাক হচ্ছিস কেন? চল তো,,,
আমি জিহাকে টেনেটেন ফুচকার দোকানের সামনে নিয়ে গেলাম,,,,,, না হয় এই শয়তানটা আমায় আরো কথা শুনাতো,, তাই তো এই কথা বলে ভেগে গেলাম,,,হিহিহি,,, কিন্তু আজকে যদি আমার হিরো স্যারটা না থাকতো তাহলে হয়তো এতক্ষণে উপরের যাওয়ার টিকিট ফিক্সড হয়ে যেত,,,
রাহাত স্যারঃ,,,, আল্লাহ্!!এই মেয়ে কিরে বাবা। কিছুক্ষণ আগে এত বড় একটা ঘটনা ঘটলো আমার একটু লেইট হলে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারতো,,,,, আর এখন ও কি না সুন্দর হেসে হেসে ফুচকা খাচ্ছে? একে আল্লাহ্ কোন মাটি দিয়ে বানাইছে!! দূর এই পাগলের কথা না ভেবে আমি আমার কাজে যাই,,,,
ফারহাঃ ফুচকা খাচ্ছি আর আড়চোখে স্যারকে দেখতেছি,,,, আরে বাহ চলে যাচ্ছে,,,, ভালোই হলো গেছে গা,,, না হয় আজকে আমাকে না ছিবিয়ে খেয়ে ফেলতো,,, এই জিহা চল আজকে আর খাবো না বাসায় যাবো,,,
জিহাঃ আরে এখনো তো ভালো করে শুরুই করি নাই,,,আর এখুনি যাবি গা?
ফারহাঃ আমার আর খেতে ইচ্ছা করতেছে না,,,, তোর খাওয়ার ইচ্ছা হলে প্যাকিং করে নেয় কতগুলা,,,,
জিহাঃ আচ্ছা,,,,,
ফুচকার বিল মিটিয়ে দিয়ে বাসায় আসার জন্য রিক্সায় উঠলাম,,,,
জিহাঃ ফারহা আজকে কিন্তু স্যার নিজের জীবন বিপন্ন রেখে তোকে বাঁচিয়েছে,,, একদম সুপারম্যানের মত এসে তোকে বাঁচিয়েছে,,,
ফারহাঃ সত্যি তো একটু এদিক ওদিক হলে তো আমার সাথে স্যারেরও অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো,,,,, ওনার প্রতি ভালো লাগাটা আমার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে,,,, এই ভালো লাগা ভয়ংকর ভালোবাসা রুপে ধারণ করতেছে দিন দিন,,,, ওনার প্রতিটা কাজ আমার মনে মধ্যে ভালোবাসার ফিলিংস তৈরি করে,,,,,
জিহাঃ ফারহায়ায়ায়া,,,,
ফারহাঃ কি হইছে এই ভাবে চিল্লানি দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলিতেছিস কেন?
জিহাঃ তো কি করবো?তুই তো ভাবনার জগতে চলে গেছিস,,, চিল্লানী না দিলে তো সে জগত থেকে ফিরে আসতে পারতি না,,,,, নাকি তুই আবার স্যারের প্রেমে পড়ে গেলি,,,,,
ফারহাঃ কিছুটা লজ্জা পেয়ে,,,,দূর তুই ও না,,,,
জিহাঃ এই এই তুই লজ্জা পাচ্ছিস কেন? তার মানে হুম্ম্মম হুম্মম্ম!
ফারহাঃ যা তো,,,,
জিহাঃ তোকে আমি আমার লাইফের সব কথা শেয়ার করি আর তুই আমাকে বলবি না,,, ঠিক আছে বলা লাগবে না,,,,
ফারহাঃ আরে রাগ করছিস কেন? হুম আমি ওনাকে অনুভব করি,,কিন্তু আমি জানি না এই অনুভূতি গুলো নাম কি?আমি জানি না ওনার প্রতি আমার ভালো লাগা গুলোর নাম কি? আমি জানি না,, ওনার প্রতি আমার মনের ফিলিংস গুলার নাম কি? ওনাকে নিয়ে ভাবনা গুলোর কারণ কি আমি জানি না,,,, বাট আমি ওনাকে নিয়ে ভাবি,,,কল্পনা করি,,,রাতে ওনার ছবি দেখে ঘুমাই,,, ওনার প্রত্যেকটা জিনিষ আমার খুব ভালো লাগে,,, অন্য মেয়ের সাথে কথা বললে আমার অনেক কষ্ট হয়,,,ওনার বকা গুলোও আমার শুনতে অনেক ভালো লাগে,,,, ক্লাসে বসে বসে বইয়ের আড়াল থেকে দেখে সময় পার করি,,, আর এই গুলা যদি ভালোবাসা হয় তো আমি ওনাকে অনেক ভালোবাসি অনেক,,,,,
জিহাঃ,,,, ওমা তলে তলে এত দূর?
ফারহাঃ লজ্জা দিবি না কিন্তু বলে দিচ্ছি,, আমার মনে যা ছিলো সব বলে দিছি আমায় একদম পচাবি না,,
জিহাঃপচাবো না মানে,,,,
ফারহাঃ মানে হলো তোর বাসার সামনে চলে আসছি
জিহাঃ আজকে না হয় বেচে গেলি কিন্তু কালকে তোর খবর আছে,,,,
ফারহাঃ কালকেরটা কালকে দেখা যাবে এখন বাসায় গিয়ে বসে বসে মুড়ি খা,,
জিহাঃ দেখা যাবে,,,,
ফারহাঃ আচ্ছা,,,
জিহাকে নামিয়ে দিয়ে আমার বাসার সামনে চলে আসলাম,,,,
বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে পড়তে বসলাম,,,, রুমে শুয়ে শুয়ে পড়তে ছিলাম,,,
কিন্তু মোবাইল সামনে রেখে কি কেউ পড়তে পারে? আমি তো পারি না আপনারা পারেন?
আমার কাছে মনে হয় মোবাইল সামনে রেখে পড়া মানে শিয়ালের কাছে মুরগি
পাহারা রেখে যাওয়া সমান,,,,,
পড়ার পাকে মোবাইল নিয়ে গুঁতোগুঁতি করছিলাম,,,
এমন সময় একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো,,,,
সাধারণত অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলে রিসিভ করি না,,,
কিন্তু অনেক বার আসার পর রিসিভ করলাম,,
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com