অন্ধপ্রেম । পর্ব - ০৩
শীতল বাহিরে তাকিয়ে কান্না করছে .
সে কি করবে তা ভাবছে .
এরকম জানোয়ারের সাথে সে থাকবে কি করে সেটা
ভেবে পাচ্ছেনা শীতল .
রাজ আড় চোখে শীতলের
দিকে মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে .
কি রকম নেশাগ্রস্থের মতো তাকিয়ে থেকে থেকে মুচকি মুচকি হাসছে রাজ .
তখনি কিছু ঘুন্ডা টাইপ ছেলে রাজদের গাড়িটাকে তাদের গাড়ি দিয়ে
ধাক্কা মেরে একটা খাদের
পাশে ফেলে দিলো .
ছেলেগুলো হেসে হেসে বললো , ,
_এতো সুন্দর জিনিস কে নিয়ে কেউ বাহিরে বের হয়.
আমরা হলে তো বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতাম .
রাজ কিছু বলবে তার আগেই ছেলেগুলো চলে গেলো .
রাজ তার গাড়ি নিয়ে খাদ থেকে রোডে নিয়ে এলো .
শীতল কোনো রিয়েক্ট করেনি .
তার সাথে রাজ যেটা করেছে তাতেই সে স্তব্ধ .
রাজ রাগে জোরে জোরে বাতাসের বেগে ড্রাইভ করতে লাগলো ,,,,
শীতলের দিকে রাজ এমন ভাবে তাকাচ্ছে মাঝে মাঝে যেনো
শীতলের জন্য রাজ অপমানিত হয়েছে .
রাজ শীতলকে অপমানের জন্য দ্বায়ি করছে .
শীতলের সুন্দরি হওয়া যেন অপরাধ .
রাজ বিশাল এক আলিশান বাড়িতে গাড়ি থামালো .
রাজ শীতলকে কিছু না বলেই হন হন করে ভেতরে চলে গেলো .
শীতল রাজের পিছু পিছু বাড়িটাতে ঢুকলো .
বাড়ির ভেতরে গিয়ে শীতল অবাক হলো .
জমিদার বাড়ির মতো লাগছে
বাড়িটা .
বিদেশি সব শপিজ দিয়ে
বাড়িটা সাজানো .
শীতল কিছু টা ভয় পাচ্ছে বাড়ির ভেতরে ঢুকে .
রাজকে সে দেখতে পাচ্ছেনা .
সে তো রাজের রুমও চেনেনা .
কিছুই বুঝতে পারছেনা সে কি করবে .
অবশ্য যার স্বামি রাজের মতো হয় তার সবকিছু নিজেই বুঝতে হয় .
শিতল বেশ কিছুক্ষন ড্রয়িং রমে দাড়িয়ে থাকলো ,,,
_বউরানি আপনি এসে গিয়েছেন ???
আপনার জন্য ওয়েট করছিলাম .
শীতল দেখলো একটা বয়স্ক লোক দ
তার পিছনে দাড়িয়ে আছে .
লোকটা বেশ ফর্সা ,,লম্বা,,লালা দাড়ি আছে ,সুঠাম দেহের অধিকারি ..
কন্ঠটা বেশ অমায়িক ,,,,লোকটার মাঝে নূরানির ভাব আছে .
_আপনি আমায় চেনেন ??
_জি হ্যা .আপনি রাজ বাবার বউ .আমরা আপনার অপেক্ষায় ছিলাম .
রাজ বাবা আমাদের জানিয়েছিলেন তিনি বিবাহ করেছেন .
আপনি দেখতে ঠিক লক্ষির মতো .
আপনার আর রাজ বাবার ঘর আলোতে ভরে উঠবে দেখবেন .
শীতল নিজে নিজে তাচ্ছ্যিলের হাসি দিলো .
_ চলুন আপনাকে আপনার রুমে দিয়ে আসি .
স
শীতলকে রাজের রুমের সামনে এনে দিয়ে লোকটা চলে গেলো ,,,
শীতল ধীরে ধীরে রুমে ঢুকলো .
রুম দেখে শীতলের মনে হলো সে কোনো অন্ধকার বাঘের রুমে ঢুকেছে .
হঠাৎ রাজ ওয়াস রুম থেকে টাওয়াল পড়ে বের হলো ,,,
রাজ শীতলকে খেয়াল করেনি ..
রাজ ফোনে কথা বলছে আর এক হাত দিয়ে টাওয়াল টা খুলছে ..
টাওয়াল খোলার সাথে সাথে শীতল একটা চিৎকার দিলো ,,,
_তুমি এখানে যে ? আমকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো বুঝি ??
আমার আদর নিতে এসেছো তাইনা ডিয়ার ??
কাছে এসো একটু আদর করে দিই ,,,
রাজ মুচকি হেসে কথা গুলো বললো টাওয়াল পড়তে পড়তে ,,,,
_আপনাকে আমার জুতাও দেখতে চায়না .
আপনার আদরের থেকে পুরো গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেবো .
তবুও আপনার নোংরা ছোয়া নিজের গায়ে লাগাবোনা .
_এতো তেজ তোমার ?? তোমার এই এটিটিউটের জন্য মন চায় প্রেমে পড়ি তোমার .
তোমাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে খুব .
নেশা নেশা লাগে তোমার এটিটিউট দেখে .
রাজ শীতলের কোমর জড়িয়ে ধরে বললো কথা গুলো ,,
শীতল রাজকে এক ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিলো .
রাজ মুচকি হাসলো শুধু।
_আপনার মতো জানোয়ার কাউকে কখনো ভালোবাসতে পারেনা ।
কারো প্রেমেও পড়েনা ধর্ষকরা ।
কারো ভালোবাসার যোগ্যও না আপনার মতো জঘন্য লোক .
আপনাকে কখনো কেউ ভালোবাসতে পারেনা কেউ .
_আমাকে কেউ ভালোবাসবেনা বলেইতো আমি তোমাকে বিয়ে করলাম .
তুমি না চাইলেও আমার কাছেই তুমি থাকবে সারাজিবন .
স্বামি হিসেবে তোমার আমাকেই ভালোবাসতে হবে .
স্বামি যেমন হোক তাকেই তোমাদের মতো মেয়েরা ভালোবাসে .
_আমি ভালোবাসবো আপনাকে ???
কুকুরকে ভালাবাসা ঢের ভালো এর চাইতেও .
_তাকিয়ে দেখো আমার দিকে একবার .
আমার মতো ছেলেকে পাওয়ার জন্য মেয়েরা পাগল।
তোমার ভাগ্য ভালো আমি তোমাকে বিয়ে করেছি .
_বিয়ে করার ছিলো তাহলে আমাকে ধর্ষন কেনো করলেন ??
আমি কি করেছিলাম ??
এতো বড় শাস্তি কেনো আমাকে দিলেন ??
শীতল কাদতেঁ কাদতেঁ কথাগুলো বললো ,,
রাজ শীতলের খুব কাছে এসে শীতলের চোখ গুলো মুছে দিলো ,,,
_তোমাকে জোর করে বিয়ে করলে তুমি আমার কাছে থাকতেনা .
তোমার পরিবার তোমাকে আমার কাজ থেকে নিয়ে যেতো .
ডিবোর্স করিয়ে দিতো আমাদের .
তখন তোমার ওবং তোমাদের থেকে আমার প্রতিশোধ নেওয়া হতোনা জান .
_প্রতিশোধ ?? কিসের প্রতিশোধ ?? কি করেছি আমি ?!
আমার পরিবার কি করেছে ??
আজ আপনাকে বলতেই হবে ।আপনি কেনো এরকম করলেন ??
রাজ আবার শীতলের কাছে গিয়ে কানে কানে বললো ,,,
_কাহীনি সবে শুরু .
বলে দিলেতো জোস শেষ হয়ে যাবে .
তোমার আমার কাছ থেকে মক্তি নেই .
কখনো আমার কাছ থেকে চলে যেতে না পারো তাই
তোমাকে ধর্ষন করেছি আমি .
ধীরে ধীরে তোমার থেকে আর তোমার সো কল্ড ফ্যামিলি থেকে রিবেন্জ নিবো আমি .
আমার কাছ থেকে চলে যেতে চাইলেই তোমাকে ধ্রষনের কথা সবাই জানবে ,,
তখন সোসাইটিতে তোমাদের সম্মান রাস্তায় লুটিয়ে পড়বে ,,,
এখন রাতের জন্য সাজুগুজু করে নাও .
আমার প্রতিশোধের আগুনে জ্বলার জন্য তৈরি হও ডিয়ার .
তুমি না চাইলেও তোমাকে ছোবো .
এটাই তোমার শাস্তি ,,,
শীতল এবার রেগে গিয়ে রাজের মুখে থু থু মারলো .
রাজ শীতলের বিহেভ দেখে চমকে যায় .
শীতলের মতো মেয়ে এমন করছে তা কল্পনার বাহিরে .
শীতল বেশ শান্তশিষ্ট মেয়ে .
অবশ্য কোনো মেয়েকে অসম্মান করলেতো সে এরকম বিহেভ করবেই স্বাভাবিক .
রাজ নিজের মুখ মুছে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে শীতলের দিকে তাকালো ,,
শীতলও কম যায়না .সেও রেগে লাল হয়ে রাজের দিকে তাকালো যেনো রাজকে গিলে খাবে .
রাজ শীতলকে কিছু করতে যাবে তখনি কেউ দরজায় কড়া নাড়ল ..
_রাজ বাবা আপনাদের কিছু লাগবে কি ??
রাত হয়ে গিয়েছে খাবারের ব্যাবস্থা করতে হবেতো .
কি কি আপনারা খাবেন তা বলে দিন .
আমরা রান্না করে দিচ্ছি ...
বউ রানিকে নিয়ে নিচে আসুন .
রাজ শান্ত গলায় বললো ,,,
_আপনি যান নিচে .আমি আসছি .
এখনে ছোট একটা কাজ আছে এসে সেটা সেরে আসছি .
লোকটা চলে যেতেই রাজ শীতলকে একটানে বেডে ফেলে দিয়ে শীতলের উপর উঠে বসে দুই হাত চেপে ধরলো...
শীতল ভয়ে চোখ বন্ধ করে দিলো ,,,
না জানি তাকে কি করে রাজ .
_আমার তোমার মতো জঙলি বিড়ালকে ভিষন ভালো লাগে .
তোমার বিহেভে আমি ফিদা হয়ে গিয়েছি জাস্ট .
তুমি যতই দূরে যাবো আমাকে ততই তোমার কাছে পাবে .
আমার ছোয়া তোমাকে নিতেই হবে ডিয়ার .
এখন তুমি তৈরি হও বিকোজ বিয়ের প্রথম রাত বলে কথা .
আজকে তোমাকে আমি আবার ধর্ষন ,,,সরি সরি আমারা তো স্বামি স্ত্রি তাই ওয়ার্ডটা আদর হবে .
রাজ শয়তানের মতো হাসি দিয়ে শীতলকে ছেড়ে চলে গেলো রুমের বাহিরে .
শীতল উঠে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে বেডে আবার শুয়ে পড়লো ,,
কাদতেঁ কাদতেঁ চোখ জ্বলছে শীতলের .
বাবা মা ভাইয়ার কথা তার মনে পড়ছে .তাদের মিস করছে শীতল .
নিশ্চই তারাও মিস করছে শীতলকে .
আমি কি কখনো নিজের লাইফে ফিরতে পারবো .কখনো নিজের পরিবারে কাছে যেতে পারবো .
এই জানোয়ারের কাছ থেকে কখনো কি মুক্তি পাবো ??
আমাকে স্বামি নামের লোকটা তিলে তিলে মেরেই ফেলবে .
নিজেকে নিয়ে নিজে কথাগুলো বলছে আর কাদছে শীতল .
সে কি করেছে যার জন্য রাজ তাকে কষ্ট দিচ্ছে .
কেনো এমন করছে রাজ তার সাথে .
শীতল একবারোও রাজের রুমটাকে খেয়াল করেনি .
কতটা সৌখিনতায় রুমটাকে গুছিয়ে সাজানো হয়েছে তা দেখলে শীতল রাজের রুচি কতটা বুঝতে পারতো .
শীতলের মাথা ব্যাথা করছে তাই সে লম্বা একটা শাওয়ার নিলো ...
ওয়াস রুম থেকে বের হতেই দরজায় কারো কড়া নাড়ার আওয়াজ এলো ,,
শীতলের আত্নায় পানি চলে এলো .
বোধ হয় রাজ এসেছে .রাজের কথা ভাবতেই তার ভয় করছে আরো বেশি .
রাজ না জানি তাকে কি করবে আবার .
হয়তো আজকেই চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে তাকে জানোয়ারের মতো .
শীতল ভয়ে ভয়ে দরজার সামনে গেলো ,,,,,
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com