আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ১৮

কলেজে আসার সময় পুরা রাস্তা জিহা ডাইনীটা শুধু প্যারা দিচ্ছে কালকের ওই কথা গুলা নিয়ে,,,,,

ক্লাসে এসে আমাদের সকল ফ্রেন্ডেদের ডেকে নিয়ে আসে জরুরী কথা বলবে বলে,,,

জিহাঃ গাইছ,, তোমরা কি একটা কথা জানো?

জান্নাতঃ জিহা তুই না আস্ত একটা এলিয়েন,,, কি কথা বলার জন্যইই তো ঢেকে নিয়ে আসলি আর এখন বলতেছিস আমরা জানি কি না? আমরা জানলে কি তোর কাছে শুনতে আসতাম?

ফারহাঃ

জিহাঃ এই তুই চুপ থাক মুটকি একটা,,, আর ফারহা হাসো হাসো দাঁত বের করে হাসো,,,,হাসি তো শরীরের জন্য খুব ভালো,,, তোমার হাসি আমি বের করছি,,,

ফারহাঃ

জিহাঃ ওকে শুন না,,, আমাদের ফারহা না অবশেষে,,,,

সবাই একসাথেঃ কি

জিহাঃ অবশেষে,,,

সবাই একসাথেঃ অবশেষে কি?

জিহাঃ ফারহা অবশেষে

তানিয়াঃ জিহা বলবি নাকি অবশেষে সবাই তোরে লাথি মেরে উগান্ডা পাঠাই দিবো!

জিহাঃ দূর বলবোই না,,,,

ফারহাঃ হিহিহি

জিহাঃ না বলবোই,,

ফারহাঃ

জিহাঃ আমাদের ফারহা অবশেষ,,

তাসমিমঃ বইন অবশেষে শব্দটা বাদ দিয়ে বল,,,

জিহাঃ আমাদের ফারহা অবশেষে না মানে ফারহা না প্রেমে পরেছে,,,,

সবাইঃ হোয়াট?

জিহাঃ হুম্মম,,,

জান্নাতঃ বাহ বাহ,,, আজকাল এলিয়েনও প্রেমে পরে?

তাসমিমঃ ফারহা প্রেমে পরেছে,,, ভাবা যায়?

তানিয়াঃ ছেলেটা যদি জানে কোনো এলিয়েন তার প্রেমে পরেছে,,তাই তাকে আর এই দুনিয়াতে খুজে পাওয়া যাবে না,,,

ফাহমিদাঃ তা সে বেচারাটা কে?

জিহাঃ আমাদের কলেজে আছে কিন্তু নাম বলা যাবে না,,,

রাইসাঃ ফারহার নাম শুনলেই মাথার মধ্যে পোকা ঘুরঘুর করে সে নাকি প্রেমে পরছে,,,,

সবাইঃ হাহাহাহাহাহা

ফারহাঃ শুন এই ১৪ ফেব্রুয়ারি আমি ওই ছেলেকে প্রপোজ করবো,,, যদি সে এক্সচেপ্ট না করে তো আমি কখনো ওই ছেলের সামনে যাবো না,,,, প্রমিজ,,

জিহাঃ

তানিয়াঃ আল্লাহ্‌ এই কথা শুনার আগে আমার মরণ হলো না কেন?

জিহাঃ বইন তুই এইটা কি বললি?

ফারহাঃ আর একটা কথা বলবি তো তোদের আমি এমন অবস্থা করবো যে বাপের নাম পর্যন্ত ভুলে যাবি,,,, আর এই যে জিহা তুই যদি আর একটাও কথা বলিস না,,, তোকে আমি বটি দিয়ে কুচি কুচি করে কেটে রোদে শুকিয়ে নদীতে ফেলে দিবো,,,

জিহাঃ আচ্ছা নদীতেই যখন ফেলে দিবি তাহলে শুকাবি কেন?

ফারহাঃ কারণ তুই হচ্ছিস আস্ত একটা শয়তান,, না শুকিয়ে ফেলে দিলে নদীর মাছ সব মরে যাবে তোর দুর্গন্ধে,,,

জিহাঃ ওহ আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে,,,,, কি বললি? আমি শয়তান আমার থেকে দুর্গন্ধ বের হয়?তোকে তো আজকে আমি যেই ধরে যাবো ওকে আর পায় কে দিলো দৌড় পিছন পিছন জিহাও দৌড়াচ্ছে,,, ফারহা দৌড়াতে দৌড়াতে মনে হলো শক্ত দেওয়ালের সাথে বারি খেলাম,,, বিরক্তি নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি রাহাত স্যার আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে,,, আরে এই তো দেখি আমার হিরো কিন্তু ওনি তো দেখি দেওয়ালের মত শক্ত আর একটু হলে মাথাটাই ফেটে যেত,,,

রাহাত স্যারঃ এই মেয়ে তুমি কি বাচ্চা নাকি? এই ভাবে চারপাশ না দেখে দৌড়চ্ছো কেন?

ফারহাঃ স্যার আপনি কি অন্ধ নাকি যে,, না দেখে হাটতেছেন,,,

রাহাত স্যারঃ আবার মুখে মুখে তর্ক করতেছ?

ফারহাঃ স্যার কাটা দিয়ে কাটা তুলতেছি,,,

রাহাত স্যারঃ

হাসি মুখ নিয়ে স্যারের নিয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে আমার অবস্থা শেষ,,, এতক্ষণে আমার মাথা ছিলো না যে আমি কার সাথে কি বলতেছি,,,স্যার পুরা পোড়া লোহার মত গরম হয়ে গেছেন,,,রাক্ষস হলে এতক্ষণে আমায় খেয়ে ফেলতো,,,

ফারহাঃ স্য স্যার,,,

রাহাত স্যারঃ আমার রুমে আসো,,,,দাঁতে দাঁত চেপে

ফারহাঃ কে,, কেন স্যার!

রাহাত স্যারঃ আসো

এইটা বলে স্যার চলে গেলেন,,

আর এই দিক দিয়ে আমার ভয়ে কান্না আসতেছে না জানি ওই দিনের মত আবার কি কাজ করায়,, ভাবতে ভাবতে স্যারের পিছন পিছন গেলাম,,

জিহাঃ এতক্ষণ নিরব দর্শক হয়ে সব দেখতেছিলাম,,, আল্লাহ্‌ জানে ফারহার কপালে আজকে কি আছে,,,

ফারহাঃ ভয়ে ভয়ে ভিতরে ঢুকলাম,,, শয়তানটা দেখি কি আরামে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে,,,, আমাকে ভয় দেখিয়ে নিজে আরাম করছিস তাই না,,,,, দেখবি তোরে আমি কুকুরের ডিম ভাজা করে খাওয়াবে,,, কুমির রান্না করে খাওয়াবে তখন বুঝবি মজা,,, ইয়াক এই গুলা আমি রান্না করবো কি ভাবে,,, থাক বাবা খাওয়াও লাগবে না রান্না করাও লাগবে না,,অন্য কিছু ভাবতে হবে

রাহাত স্যারঃ এই যে মিস বকবক,,, ভাবা শেষ হইছে নাকি আরও সময় লাগবে?

ফারহাঃ শয়তান খালি রাগ দেখায়,,, না না বলেন কি করতে হবে,,,

রাহাত স্যারঃ এই দিকে আসো,,, তোমার প্রথম কাজ হচ্ছে আমার মাথা টিপে দেওয়া,,,যেহেতু তোমার জন্য আমি মাথায় ব্যাথা পাইছি,, তাই তুমি আমার মাথা টিপে দিবা,,,যাতে ব্যাথা কমে

ফারহাঃ স্যার আপনি কি ভাবে মাথায় ব্যাথা পাবেন? আপনি আমার থেকে কত লম্বা,,মাথায় তো ব্যাথা আমি পাইছি,,,আপনার সাথে বারি খেয়ে,,,যে শক্ত বডি আপনার,,

রাহাত স্যারঃ তোমাকে যেটা বলছি ওইটা করবা নাকি আমাকে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে?

ফারহাঃ অন্য কি ব্যবস্থা?

রাহাত স্যারঃ বলবো না ওইটা করে দেখাবো,,,

ফারহাঃ না না অন্য ব্যবস্থা করতে হবে না আমি মাথা টিপে দিচ্ছি,,,,

হাত দিয়ে মাথা টিপতেছি আর মুখ দিয়ে মুখের কাজ চালাচ্ছি,, আমি আবার মুখের কাজ খুব ভালো পারি,,,

শয়তান,, ডেবিল,, হনুমান,, কুমির,, কালা বিল্লি,, নাইজেরিয়ান,, এনাকন্ডা,, বদমেজাজি,, সব সময় শুধু রাগ দেখাবে,,, আর আমাকে দিয়ে কাজ করাবে,,,,অনেক্ষণ ধরে মাথা টিপতেছি,,, কিন্তু শয়তানটা থামনো কথা মুখে নিচ্ছে না,,ইচ্ছা করতেছে মাথাটা ফাটাই দিই,,,

রাহাত স্যারঃ হইছে থাক আর করতে হবে না,,, ব্যাথা কমাতে গিয়ে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছো,,এইগুলা হাত নাকি লাঠি? আচ্ছা যাই হোক তোমার দ্বিতীয় কাজ আমার জন্য এককাপ কপি নিয়ে আসবা ক্যান্টিন থেকে নিজের হাতে বানিয়ে,,,,

ফারহাঃ স্যার আমি কপি বানাতে পারি না,,,শয়তান তুই আমার হাতকে লাঠি বলেছিস... তোকে তো ইচ্ছা করছে পানিতে চুবিয়ে মারি

রাহাত স্যারঃ পারো আর নাই পারো,,এত কিছু শুনতে চাই নাই নিয়ে আসো যাও,,,পাঁচ মিনিট টাইম দিলাম,,,

ফারহাঃ স্যার,,,

রাহাত স্যারঃ যাও

ওরে বাবারে এই দৌড়ে ক্যান্টিনে চলে গেলাম,,, কপি খাবি না খাওয়াচ্ছি তোকে কপি,,, কপিতে ঠিক করে বানিয়ে তার মধ্যে একটু কচুপাতার রস দিলাম যাতে শয়তানটার গলা চুলকায়,,হিহিহি আমায় শাস্তি দেওয়া তাই না,,,বুজবা চান্দু ফারহাকে শাস্তি দিলে তার পরিণাম কি হয়।

জনপ্রিয় পোষ্ট সমূহঃ

সুখ পাখি ( সবগুলো পর্ব )

ভালোবাসি প্রিয় ( সবগুলো পর্ব )

আইসিটি স্যার যখন বর ( সবগুলো পর্ব )

সত্তিকারের ভালোবাসা ( সবগুলো পর্ব )

রাগি মেম ( সবগুলো পর্ব )

সেলিব্রেটি লাভার (সবগুলো পর্ব )

পরিবারের অবহেলা (সবগুলো )

স্যারে রুমের সামনে গিয়ে,,

ফারহাঃ আসবো স্যার?

রাহাত স্যারঃ হুম আসো,,

তারপর কপি নিয়ে স্যারকে দিলাম,,,মুখে দিতেই মুখের এক্সপ্রেশন দেখে বুঝা যাচ্ছে মজা হয়েছে,,,, খাও খাও ভালো করে খাও মজা তো পরে বুজবা,,,

রাহাত স্যারঃ আর তোমার তৃতীয় শাস্তি হচ্ছে আমাকে এখন একটা গান শুনাবা,,,

ফারহাঃ গান?

রাহাত স্যারঃ হুম গান

ফারহাঃ গান শুনাতে আমার কোনো সমস্যা নেই,,কিন্তু স্যার সমস্যা তো অন্য জায়গায়,,,,আসলে আমার ফ্রেন্ডরা বলে আমার গাওয়া গান থেকে নাকি কাকের ডাক অনেক সুন্দর,,,

রাহাত স্যারঃ

চলবে,,,,