মন্ত্রী যখন এক্স বউ । পর্ব - ০২
কলেজের গেটে ঢুক্তেই দেখি মিম আর কিছু ছেলে-মেয়েরা একটা ছেলেকে র্যগিং করছে।
মিম আজ একটা জিন্স আর টাইট ড্রেস যার ফলে তার দেহটা বলতে গেলে দেখাই যাচ্ছে।আমি সেদিকে বেশি নজর না দিয়ে আমি আমার ক্লাসে চলে এলাম। কিছুক্ষন পর মিম আর তার সাথে কিছু মেয়ে ক্লাসে ঢুকলো। হয়তো নতুন বন্ধু পেয়েছে। টাকা থাকলে সব হয়।
*তখন স্যার ক্লাসে প্রবেশ করলেন। আমি মনযোগ দিয়ে ক্লাস করতে লাগলাম।
ক্লাস শেষ করে আমি টিউশনি করাতে গেলাম। আমি পরাচ্ছি এমন সময় আন্টি নাস্তা নিয়ে আসলেন আর আমার হাতে বেতনটা ধরিয়ে দিলো।
*আমি ভাবছিলাম য"আমি আবার কোন ভুল করলাম নাতো যে মাস শেষ হওয়ার আগেই আমাকে টাকা দিচ্ছে। আমি বললাম,
-আন্টি এই টা কি কারনে। আমি কি... আমাকে বলতে না দিয়ে
-না বাবা, তুমি ভুল বুঝচ্ছো। আসলে তুমি যেভাবে আমার মেয়েকে পড়িয়েছো তাতে ও এবার খুব ভালো রেজাল্ট করছে। তাই আমরা ভাবলাম একটু কোথা ও থেকে ঘুরে আসি। এজন্য তোমার বেতনটা আগেই দিয়ে দিলাম।{আন্টি}
-ঠিক আছে আন্টি।আপনারা ঘুরে আসেন। আমাকে ফোন দিয়ে বলে দিয়েন কবে আসবেন তাহলে আমি আবার পড়ানো শুরু করবো।{আমি}
*আন্টি চলে গেলো। আমিও পড়ায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম। বাকি টিউশনি করিয়ে বাড়ি ফিরে আসলাম।
রুমের তালা খুলতে যাবো তখন বাড়িওয়ালা চাচা আসলেন। আমি সালাম দিয়ে বললাম, চাচা কেমন আছেন??
-আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো??{চাচা}
-আমি আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। {আমি}
*চাচার সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বলে তিনি চলে গেলেন আর আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে একটু বিশ্রাম নিলাম।
মাগরিবের আজানে ঘুম ভেঙে গেলো। তাই আর না ঘুমিয়ে ফ্রেশ হয়ে অজু করে নামায পরতে গেলাম।
নামায শেষ করে বাড়ি ফিরে আসলাম। কিছু সময় নিজের পড়া পরে ঘুমিয়ে পরলাম।
-তোকে নিজের ছেলে বলতে ও আমার ঘৃনা করে। বেরিয়ে যা এখান থেকে তোর এই মুখ আর কোন দিন দেখাবিনা আমাদের। যা চলে যা।
*ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে পরি। ফ্যান চলছে তাও সম্পুর্ণ শরীর ঘামে ভিজে গেছে। পাশে রাখা গ্লাসের পানি এক ঢোকে খেয়ে নিলাম।
-আমি তোমাকে কখন ক্ষমা করবোনা। তোমার কারনে আজ আমি একা নিশ্ব এই পৃথিবীতে।তোমাকে আমি কখনোই মাফ করবো না।{খুব রাগ নিয়ে আমি}
সারারাত তেমন আর ঘুম হলো না।আমি মাঝে মাঝেই এই সপ্নটা দেখি। এটা আমার জিবনে ঘটে জাওয়া সব থেকে বিসাদময় ঘটনা। বেলকনির সামনের চেয়ারটাতে বসে রাত টা পার করে দিলাম।
অন্যদিকে,
নিলা তার সম্পুর্ণ পাওয়ার দিয়ে পাগলের মতো খুঁজে বেরাচ্ছে চারদিকে, কিন্তু প্রতিবারই তাকে হতাশার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। কি করবে বুঝতে পারছে না সে।
-{নিজের বিছানায় শুয়ে শুয়ে কান্না করে যাচ্ছে নিলা।সে কোন ভাবেই খবর পাচ্ছে না সে }
তুমি কি কখন আমার কাছে ফিরে আসবে না। হে আল্লাহ তুমি আমার কাছে ফিরিয়ে দাও তাকে। {কান্নায় ভেঙে পরে নিলা}।
*রাতভর ঘুম না হওয়ায় চোখদুটোর নিচে কালো হয়ে গেছে আর মাথাটাও হাল্কা ব্যাথা করছে। কলেজে যেতে ইচ্ছে নেই কিন্ত ১ সপ্তাহ বাদে পরিক্ষা, এখন ক্লাস মিস দেওয়া ঠিক হবে না।
তাই কোনমতে খাওয়া দাওয়া করে কলেজে গেলাম। ক্লাসে ঢুকবো ঠিক তখন কারোর সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে গেলাম। উঠতেই যাবো,, ঠাসসস,ঠাসসস। হ্যা চড় দুইটা আমার গালেই পরেছে আর যে আমাকে মারলো সে আর কেউ না মিম।
-এই ফকিন্নির বাচ্ছা চোখে দেখে হাটতে পারিস না। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই খালি ধাক্কা মারতে মন চায় তাই না।
-দেখো আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেইনি। হঠাৎ এ হয়ে গেছে।
-আমার তোদের মত গরিবদের ভালো করে চেনা আছে। আমাদের মাঝে কথা হচ্ছিলো তখন সেখানে রকি চলে আসে।
*রকি হচ্ছে এই কলেজের ভিপি সাথে ওর ভাই এই এলাকার বড় মাস্তান।তাই সবাই ওকে ভই পায়।
ও আমাদের কাছে এসে, "কি হয়েছে মিম।
-দেখো না এই ভিক্ষারীর বাচ্চা আমাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা মেরেছে আবার বড় বড় কথা বলছে।{মিম}
-কি এতো বড় সাহস এখনি দেখাচ্ছি মজা,এই বলে রকি আমার শার্টের কলার ধরে ফেলে আর তার ছেলেপেলেরা আমাকে ঘিরে ধরে।
*তারা আমাকে ক্লাসের সামনে মাটিতে ফেলে দিয়ে মারতে থাকে।
আমি শুধু মার খাচ্ছি আর একটা কথাই ভাবছি যে ক্ষমতা থাকলে মানুষ কিনা করতে পারে।আমার যদি আসল পরিচয় জানতি তাহলে আমার পা ধরার ও সময় পেতি না।
ওদের মারের কারনে আমি সেন্সলেস হয়ে পরি।যখন নিজের চোখ খুললাম তখন নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করলাম। পাশে দেখি রাকিব আর তাঞ্জিম বসে আছে। আমার চোখ খুলতেই তারা আমার কাছে আস্লো।
-এখন কেমন আছিস বন্ধু{তাঞ্জিম}
-আমি ভালো আছি। আমাকে এখানে আনলো কে???
-আমি আর রাকিব ক্লাসে ঢুকছিলাম তখন দেখি রকি আর তার লোক তোকে মারছে। আমরা ওদের অনেক রিকোয়েস্ট করার পর তোকে ছেরে দেই পরে তোকে হাস্পাতালের নিয়ে আসি।{তাঞ্জিম}
-আমি কতক্ষন অজ্ঞান ছিলাম।
-তুই প্রায় ৩ ঘন্টা অজ্ঞান ছিলি।{রাকিব}
*আমি উঠতে যাবো, " এই কি করছিস??{রাকিব}
-নারে বন্ধু আমাকে পড়াতে যেতে হবে।
-একদিন না পড়ালে কোন ক্ষতি হবে না।তুই আজ রেস্ট নে। কাল থেকে যাস।
*কি আর করার ওদের কথা মতো আর পড়াতে গেলাম না। কিছুক্ষন পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে চলে এলাম।আমার সাথে রাকিব আর তাঞ্জিম এসেছিলো আমি ওদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি।
*বিছানায় শুয়ে পরলাম। মানুষ একটু ক্ষমতা পেলেই নিজেকে রাজা মনে করতে শুরু করে দেই,কিন্তু তারা ভুলে যায় যে তাদের উপরেও কেউ আছে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল করিনি।
*বিকেলে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গেলাম দেখার জন্য কিছু আছে কিনা।তেমন কিছু নেই শুধু একপ্যাকেট বিস্কুট আছে।এটা দিয়ে এখন আগে পেটকে ঠান্ডা করি। খাওয়া দাওয়া করে ছাদে গেলাম হাটাহাটি করতে। কিছুক্ষন ছাদে থেকে রুমে চলে আসলাম।
এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেলো। কাল থেকে আমার পরিক্ষা শুরু তাই একবার রিভিশন দিয়ে ফোন এলার্ম দিয়ে যলদি ঘুমিয়ে পরলাম।
*সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে নামায পরে এসে কিছুক্ষন পরে খাওয়া দাওয়া করে পরিক্ষা দিতে চলে গেলাম।
*দেখতে দেখতে সব কইটা পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলো।আল্লাহর রহমতে পরিক্ষা খুব ভালো হলো।
কইদিন পর রেজাল্ট দেবে তাই এখন ক্লাসে তেমন চাপ নেই বলে কিছুদিন ক্লাস না করে শুধু টুইশনি করাই আর বাসায় থাকি।
রেজাল্টের ২ দিন আগে কলেজে গেলাম। কলেজ খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে।আমি ক্লাসে চলে এলাম।তাঞ্জিমকে বললাম,"বাইরে এতো সাজানোর কারন কি???
-আরে তুই তো এই কইদিন কলেজ আসিস নাই তাই জানিস না।কলেজে নাকি রেজাল্টের দিন অনেক বড় বড় লোক আসবে তাই এতো সাজানো।
আমি সেদিকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে ক্লাস করে সবগুলো টুইশনি শেষ করে বাড়ি ফিরে আসি।
এভাবে দুইদিন কেটে গেলো। আজ রেজাল্ট দেবে তাই সকাল সকাল তৈরি হয়ে কলেজে গেলাম।
কলেজ গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখি সম্পুর্ণ কলেজ সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে।স্টেজটা অনেক সুন্দর লাগছে।সামনের চেয়ারে এই শহরের টপ বিজনেস ম্যানদের জন্য বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
সামনে দেখলাম মিম বসে আছে আর তার পাশে যে বসে আছে সে নিশ্চয় তার বাবা।
আমি রাকিব আর তাঞ্জিম এর সাথে পেছনে গিয়ে বসলাম। তখন প্রিন্সিপাল স্যার সামনে মঞ্চে এসে কিছু কথা বলতে লাগলেন।
*৫ মিনিট পর কলেজের গেট দিয়ে ১০-১২ টা দামি দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি ঢুকলো। সবাই গাড়ি গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে কারন এই রকম গাড়ি বাংলাদেশে চালানো ভাগ্যের ব্যাপার।
তবে সব গুলো গাড়ির ভেতরে কইটা গাড়ি আমার খুব পরিচিত মনে হলো।
তখন প্রিন্সিপাল স্যার বললেন, "আপনারা যার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি এখন আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি হলেন........
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com