ধনীর মেয়ে বস্তির ছেলে । পর্ব - ০২
আমিঃ মায়া আমাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিবি?
মায়াঃ হুম বল?
মায়াঃ আচ্ছা বল?
আমিঃ আচ্ছা প্রতিদিন তুই কত টাকা খরচ করিস বলতো?
মায়াঃ তুই এই কথা কেনো জিঙ্গাস করছিস?
আমিঃ তোকে না বললাম যে কোনো প্রশ্ন না করতে?
মায়াঃ আচ্ছা?
আমিঃ এবার বল তোর প্রতিদিনের খরচ কতো?
মায়াঃ এই ধর ৩০-৪০ হাজার টাকা মাত্র?
আমিঃ হুম! আর দেখ আমার পকেটে মাত্র ৫৭৭ টাকা? (টাকাগুলো বেড় করে দেখিয়ে বললাম)
আমিঃ আচ্ছ তুই চলাচল করিস কি দিয়ে?
মায়াঃ BMW
আমিঃ হুম আর আমি চলাচল করি পবলিক বাস দিয়ে?
মায়াঃ হুম! তো তুই এসব আমাকে বলছিস কেনো?
আমিঃ তোকে বলছি কারণ!
আমিঃ তোকে বলছি কারণ তোর সাথে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক হয় না। কারণ আকাশ আর জমিন কখনোই এক হয় না। আমি তোর ফ্রেন্ড হওয়ার ওও যোগ্য না! তবে ভাগ্যক্রমে হয়ে গেছি? কিন্তু এখন তুই যেই সম্পর্কের কথাটা বলছিস না! সেটা কখনো হওয়া সম্ভব না!
মায়াঃ আমি তোর কথা বুঝতেছি না!
আমিঃ না বুঝার কি আছে? দেখ আমি সাধারণ আর তুই অসাধারণ। তাই তোর আর আমার মাঝে বন্ধুত্ব থাকাটাই বেশি হয়ে যায়। আর তুই এখন ভালোবাসিস বলছিস!
মায়াঃ দেখ না তুই এমনটা করতে পারিস না আমার সাথে?
আমিঃ আমি তোর সাথে কিছুই করতেছি না! সব ভাগ্যের খেল! আর ভাগ্য হয়তো চায় না আমি কাউকে নিয়ে সপ্ন দেখি? কারণ আমি মধ্যবিত্ত!
মায়াঃ দেখ তুই কি তা নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই? আমি শুধু তোকে চাই?
আমিঃ দেখ পাগলামি করিস না! যা বাসায় যা গিয়ে ঠান্ডা হয়ে নে! তারপর আস্তে-আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে?
তুষার এতক্ষণ দাড়িয়ে শুধু আমাদের কথা শুনতেছে আর নির্বাক এর মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে?
মায়াঃ না কিছুই ঠিক হবে না! তুই ছাড়া কিছুই ঠিক হবে না আমার!
আমিঃ তুষার ওরে একটু বুঝাতো প্লিজ!
তুষার এবার হিলহিল করে হাসতে লাগলো? আমি আর মায়া কিছুটা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম!
তুষারঃ মায়া তুই সত্যই একটা বোকা? হুসাইন হয়তো তুই ঠিকই বলছিস! তবে মায়া তার বোকামির কারণেই আজ এমন পরিস্থিতির হয়েছে?
মায়াঃ কি বলতে চাইছিস তুই?
তুষারঃ আমি অনেক কিছুই বলে দিতাম যদি হুসাইন এখানে না থাকতো?
আমিঃ মানে?
তুষারঃ মানে কিছুই না! এখন চল বাসায়! মায়া তুমিও বাসায় যাও? পড়ে দেখা হবে? (বলে আমাকে নিয়ে চলে আসতে লাগলাম)
তুষার এতক্ষণ কি বললো? তা মায়া ভাবতে লাগলো? আর আমাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো?
চলে আসলাম গেটের বাহিরে এসে তুষারকে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ আমি না থাকলে তুই তানহাকে কি বলতি?
তুষারঃ আরে মায়া হলো অবুঝ একটা মেয়ে ওকে সারাদিন বুঝালেও কাজ হবে না! তাই কথা কাটিয়ে তোকে ঐ খান থেকে নিয়ে আসলাম!
আমিঃ সালা তুই মানুষ হবি না! tnxx
তুষারঃ ওয়েলকাম!
আমিঃ তবে সাকুয়াত ওরে বিকেলে একটু বুঝিয়ে দিস? যেনো ওও আর এরকম কথা না বলে? তাহলে হয়তো বন্ধুত্ব রাখাটাই অসম্ভব হয়ে যাবে?
তুষার কি যেনো ভাবতে লাগলো? কিছুক্ষন পরে ওকে বললো?
আমিঃ দেখ আবার কোনো পেচ করিস না! তোরে দিয়া বিশ্বাস নাই হারামি?
তুষারঃ এই চিনলি আমাকে যা বিশ্বাস করতে হইবো না! যখন মায়ার সাথে কথা বলবো তখন তোকে আমি কল দিবো! তুই শুধু কানে লাগিয়ে রাখবি আর আমার কানে ব্লুথু থাকবে?
আমিঃ ওরে হারামি? ঠিক আছে।
তারপর তুষার বাসায় নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো? আমি গোসল করে! খাওয়া-দাওয়া করে দুপুরের পড়ে হালকা একটু ঘুমিয়ে নিলাম! বিকেলে ঘুম থেকে উঠে তুষারকে কল দিলাম!
তুষার মায়ার সাথে দেখা করার জন্য যাচ্ছে! পাশেরই একটা রেষ্টুরেন্টে এ মায়াকে ফোন দিয়ে আসতে বলেছে? আমিও ফোন রেখে বসে ছিলাম কখন তুষার কল দিবে?
আধাঘন্টা পড়ে তুষারের কল আসলো? তাই সাথে সাথে রিসিভ করলাম!
তুষারঃ হুসাইন মায়া আসতেছে, তুই শুধু চুপ থাকবি ওকে?
আমিঃ ওকে?
মায়াঃ হাই?
তুষারঃ হুম! আয় বস?
মায়াঃ তা এখানে ডাকলি কেনো?
তুষারঃ তুই হুসাইনের ব্যাপারে কি সিরিয়াস?
মায়াঃ হুম!
তুষারঃ কি আছে ওর মাঝে যে তুই ওর পিছনে লেগে আছিস?
মায়াঃ কি আছে জানি না! তবে ওকে ছাড়া আমি শূন্য এতুটুকুই জানি?
তুষারঃ দেখ ওও চায় তুই এই ব্যাপারটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করিস না তাহলে হয়তো ওর সাথে বন্ধুত্বটাও হারাবি?
মায়াঃ ওও বলছে এই কথাটা?
তুষারঃ শুন তুই ওর পরিবেশে কখনো থাকতে পারবি না! তুই ভালো হয় ওর জীবন থেকে সরে দাড়া!
মায়াঃ ঐ তুষার তুই তো একটু বুঝ আমাকে? ওকে একটু বুঝা না! ” প্লিজ তোর পায়ে পড়ি?
তুষারঃ নিজেকে এখন ফাটা বাশের চিপায় পড়ে থাকার মতো লাগতেছে?
মায়াঃ প্লিজ প্লিজ প্লিজ?
আমিঃ সাকুয়াত তুই ওকে আরেকটু বুঝা নাহলে ওও আবার এসব ভূত চেপে থাকবে! (আমি ওপাশ থেকে বললাম)
তুষারঃ মায়া তুই এত পাগলামি করিস কেনো? দেখ ওও হলো বস্তির ছেলে ওর সাথে তোর মতো এত বড় ঘরের মেয়েকে মানায় না!
মায়াঃ তুই এসব বলছিস কেনো?
তুষারঃ বলতেছি কারণ ওও ছোট লোক ওর সাথে তোর যায় না তাই? তুই ওকে ছেড়ে দে?
মায়াঃ দেখ রাগ উঠতেছে আমার! ওকে নিয়ে আর যদি এমন কথা শুনি তাহলে তোকে লাথ্থি মারবো বলে দিলাম!
তুষারঃ ওকে! তুই যেটা ভালো বুঝিস কর? পরে আমাকে বলবি না! ওকে তুই থাক আমি গেলাম?
তার তুষার মায়াকে আঙ্গুল মুখে দিয়ে বুঝালো চুপ হয়ে থাকতে! মায়াও কিছু বুঝতে না পেরে চুপ হয়ে বসে রইলো?
তারপর তুষার আমাকে বলতে লাগলো?
তুষার- হুসাইন সবই তো শুনলি? আচ্ছা তুই ভেবে দেখ কি করবি? (সাকুয়াত)
আমিঃ হুম ওকে? রাখি তাহলে? (বলেই ফোনটা রেখে দিলাম)
আর ঐ দিকে তুষার কান থেকে ব্লুথু খুলে টেবিলে রাখলো তারপর মায়াকে বললো?
তুষারঃ এবার বুঝলি কেনো এতক্ষণ হুসাইনকে পচাইতেছিলাম!
মায়াঃ ওও কি এতক্ষণ সব শুনেছে?
তুষারঃ হুম!
মায়াঃ তোদের কি হয়েছে বলবি একটু?
তুষারঃ কিছুই হয় নাই? তবে তোকে যা বলতেছি তা একটু শুন?
মায়াঃহুম বল কি বলবি?
তুষারঃ আসলে আমিও চাই তুই হুসাইনের হ? কিন্তু হুসাইন সবকিছু ভালো ভাবে চিন্তা বিবেচনা করে কথা বলে তাই আমি ওকে বুঝাতে পারি না। তবে এখানে তোরও একটা ভুল আছে।
মায়াঃ আমার আবার কি ভুল?
তুষারঃ তুই হুসাইনকে প্রপোজ করতে গেলি কেনো? ওকে আগে নিজে জালে ফাসিয়ে তারপর নাহয় প্রপোজ করতি? বলদি কোথাকার?
মায়াঃ ঠিক বলেছিস?
তুষারঃ আচ্ছা আগে এটা বল আঙ্কেল আন্টি জানে যে তুই হুসাইনকে ভালোবাসিস?
মায়াঃ হুম আমি বলে দিয়েছি আব্বু-আম্মুকে?
তুষারঃ কি বলেছে আঙ্কেক – আন্টি?
মায়াঃ ওনারা বলেছে আমি যাকেই পছন্দ করি ওনারা তাকেই মেনে নেবে? আর হুসাইনকে তো ওনারা আরো আগে মেনে নিবে?
তুষারঃ ওকে তাহলে তুই ওর পিছনে লেগে থাক আমি বাকিটা দেখতেছি?
মায়াঃ ওকে! প্লিজ ওকে একটু বুঝিয়ে বল যেনো রাজি হয়ে যায়! প্লিজ তুষার প্লিজ?
তুষারঃ আরে বোকা বললাম না আমি দেখতেছি? ওকে জালে ফেলে হলেও তোর করে দিবো? কথা দিলাম!
মায়াঃ tnxx
তুষারঃ ওয়েলকাম!
মায়াঃ জানিস ওকে না খুব ভালোবাসি না পেলে নিজেকে শেষ করে দিবো বলে দিলাম! (বলেই মায়া কাদো কাদো মুখ করে ফেললো?)
তুষারঃ ঐ ঐ ঐ প্লিজ কাদিস না প্লিজ প্লিজ!
মায়াঃ জানিস ওও এমন আচরণ করবে আমি তা ভাবতেই পারি নি? (মায়া বলেই ফুপিয়ে কাদতে লাগলো)
তুষারঃ মায়া প্লিজ কাদিস না এটা পাবলিক প্লেস তুই কান্নাটা থামা!
মায়াঃ ওকে? (বলেই কান্নাটা থামালো)
তুষারঃ শুন আমি তোকে কথা দিলাম! হুসাইন তোর হবেই? এখন আমি উঠি? কালকে দেখা হবে?
মায়াঃ আচ্ছা! (বলেই দুজন বেড়িয়ে চলে আসলো!)
পরেরদিন সকালে রেডি হয়ে আবার বাসে করে চলে গেলাম কলেজে? কলেজে এসেই তুষারের সাথে দেখা?
তুষারঃ কিরে মামা আজকে এত লেট করে আসলি?
আমিঃ আজকে একটু কাজ ছিলো বাসায় তাই?
তুষারঃ তা কি ভাবলি আজকে সারা রাতে?
আমিঃ দেখ আমি যতই ভাবি না কেনো? আমি ওকে জেনে বুঝে জাহান্নামে আনতে পারি না!
তুষারঃ আচ্ছা তুই আমাকে একটু বলবি যে ওকে মেনে নিতে সমস্যাটা কোথায়?
আমিঃ সমস্যাটা অনেক জায়গায়? দেখ ওও আমার ফ্যামিলিতে এসে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে না! ওর জীবনটা তেজপাতা হয়ে যাবে তা কি তুই বুঝিস?
তুষারঃ দেখ ওও হয়তো তোর জন্য সব করতে পারে! ওও হয়তো তোর ফ্যামিলির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতেও পাড়বে?
জনপ্রিয় পোষ্ট সমূহঃ
আমিঃ প্লিজ এখন এমন হাস্যকর কথা বলিস না প্লিজ! এখন হাসতে পারবো না?
তুষারঃ এখানে হাসির কি বললাম?
আমিঃ আচ্ছা তুষার তুই আমাকে কিছু প্রশ্নের জবাব দে তো?
তুষারঃ হুম বল?
আমিঃ যে মেয়ে নিজের হাতে কফি বানিয়ে খায় না সে নাকি আবার আমাদের সংসারের সব কাজ করবে? এটা কখনো সম্ভব না? আর আমাদের এত টাকা নেই যে ওর জন্য আমি কাজের বুয়া রাখবো?
তুষার এবার চুপ হয়ে গেলো? আর আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে?
আমিঃ শুন আবেগটা থাকে কিছুদিন! তারপর সবকিছু শেষ হয়ে যায়! থাক তোকে এসব বলেও লাভ নেই? তুই কি কখনো বুঝবি না! চল এবার ক্লাসে যাই?
তুষারঃ একটু পড়ে যাবো? চল আগে!
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com