মিথ্যা অপবাদে অপরাধী । পর্ব -০৫
বাসার ভিতরে যেতেই লক্ষ করলাম সেদিনের ঐ মেয়েটি। যার বাবাকে মেডিকেল এ ভর্তি করছি।
আমাকে দেখে দৌড়ে আসে লাকি,,,,
-আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ, আমার পায়ে পরে,, আমি সেদিন বুঝতে পারিনি।(লাকি)
-এই এইই কি করছেন ছাড়ুন আমাকে(আমি)
-নাহহহ,,,ছাড়বো না। আগে বলো মাফ করছো?
-আরে আমি সেদিন কিছু মনে করিনি। আপনার বাবা এখন কেমন আছে?
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো। এখন অনেকটাই সুস্থ ডাঃ বলেছে আগামীকালকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো।
-ওহহ আল্লাহ্ তা'আলাকে আসেস ধন্যবাদ।
-কিন্তু আপনার এই অবস্থা কেন? কই থেকে আসলেন?
-মামনি, আবির কে ডাঃ রেস্ট নিতে বলছে। তোমারা পরে কথা বলিও।
আন্কেল আমাকে আমার রুমে দিয়ে আসলো।
-কিরে লাকি তুই ছোটলোক ছেলেটার পায়ে পরে ক্ষমা চাইলি আমি তো আমার নিজের চোখকে ও এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না(অনন্যা)
-তুই তো জানিস আমার আমার বাবা এক্সিডেন্ট করে এখন হাসপাতালে।(লাকি)
-হুম,আন্কেল কেমন কেমন আছে?
-ভালো আছে এখন আজকে হসপিটাল থেকে রিলিজ দিবে।
-কিন্তু আন্কেলের এক্সিডেন এর সাথে চোরটার কি সম্পর্ক।
-তুই যাকে চোর ছোটলোক বলসিছ সে ই আমার বাবাকে বাঁচিয়েছে।
-ওও
-জানিস সেদিন যদি ঠিক সময় মতো হাসপাতালে না যেতো আর নিজের রক্ত ও ৫ লাখ টাকা না দিতো তাহলে হয়তো আজকে আমি এতিম হয়ে যেতাম। লাকীর চোখে পানি ছলছল করছে।
আন্কেল আবিরকে তার রুমে দিয়ে এসে তার রুমে যেতে লাকির কথা গুলা শুনতে পায়,,,,
-তাহলে আবির রহমান সাহেবের জীবন বাঁচিয়েছে।(আন্কেল)
(লাকির বাবার নাম রহমান সাহেব )
-হুম আন্কেল।
-আচ্ছা মামুনি তোমারা কথা বলো। আমি যাই একটু কাজ আছে।(আন্কেল)
-তাহলে ছোটলোক টা আমাদের ৫ লাখ টাকা দিয়ে আন্কেলের চিকিৎসা করিয়েছে।(অনন্যা)
-তোদের মানে? আবির তোর কি হয়?
-আরে কিছু হয় না। আমাদের বাসার ড্রাইভার।
-ওহহহ, ছেলে অনেক কিউট তাইনা।কিন্তু আগে তো কখনো দেখিনি।
-২ দিন হলো কিন্তু বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে যায়। আর অসুস্থ হবেই না কেন পুলিশের যে পিডানি খাইছে।
- কিহহহ ??? পুলিশ মারছে মানে???
-মানে ঐ ৫ লাখ টাকার জন্য আমরা ওরে পুলিশে দেখছিলাম।
-কথাটা শুনে লাকি যেন কান্না করে দিবে দিবে ভাব।
-ভেবেছিলাম পুলিশ সালায় হাড়হাড্ডি ভালো ভাবে ভেঙে দিবে কিন্তু তেমন কিছুই করেনি ছোটলোক টাকে।
-চুপ কর তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না। লাকি কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে যায়। অনন্যা ও লাকি দুজনে বান্ধবী একই কলেজে পরে। বাসায় গিয়ে ভাবতে থাকে ছেলেটা আমার বাবার জন্য কত কষ্ট পেল। বিকালে লাকির বাবা রহমান সাহেবকে বাসায় নিয়ে আসে। লাকি আবির সম্পর্কে হব কিছু বলে। সব কিছু শুনে রহমান সাহেব কেঁদেই ফেলে। -ছেলেটাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।(রহমান সাহেব)
-ওকে,আব্বু কালকে তোমায় অনন্যা দের বাসায় নিয়ে যাবো।
অন্য দিকে আবির তার আম্মু,ভাবি,ভাইয়া সবার কথা ভাবছে। জানিনা আম্মু কেমন আছে। আমি জানি আম্মু ভাল নাই আমাকে ছাড়া আম্মু কি করে ভাল থাকে। অনেক ভালবাসি তোমায় আম্মু।
আম্মুর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে তাই ভাবছি আজকে একবার ফোন দিবো।
সন্ধ্যায় অনন্যা আমার রুমে আসলো,,,,কি যেন দেখে চলে গেল।
কিছুক্ষণ পর আঙ্কেল আমার রুমে আসলো....
-আবির এখন কেমন আছো ?
-অনেকটা ভাল আছি আঙ্কেল।
-ওহ গুড, খাইছো?
-হুম আন্কেল?
-আঙ্কেল একটা ফোন লাগতো। 5 মিনিট কথা বলতাম।
-ওকে আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
আন্কেল অনেক ভালো। তাই খোঁজ খবর নেয়। কিন্তু আন্টি একবার ও আমার সামনে আসলো না। আমার ওপর কি তার মন খারাপ। বাসায় নাই হয়তো?
-মামনি ফোনটা আবিরের রুমে দিয়ে আয় তো।(আঙ্কেল)
-ওকে বাপি।
(ছোট লোকটা আবার কার সাথে কথা বলবে দেখি তো)
-এই মি: আপনার ফোন?
আবির ফোনটা হাতে নেয়,,,,,
অনন্যা গিয়ে দরজায় আরে পেতে থাকে দেখি তো ছোট লোকটা কার সাথে কথা বলে।
আবির আম্মুর নাম্বারে কল করে,,,,
-হ্যালো কে? (ভাইয়ার কন্ঠ,, ভাই ফোন তুলছে কথা না বলে ফোন টা কেটে দিলাম)
মনটা খারাপ হয়ে গেল। দেখি চাচাতো ভাই আরাফাত কে কল দেই,,,,,
-হ্যালো আসসালামু ওলাইকুম (আরাফাত)
-ওলাইকুম আসসালাম,আরাফাত আমি আবির।
-ও ভাইয়া তুমি কই। তোমার বিয়ের কথা শুনে বাসায় আসলাম কি এগুলো কি শুনছি।
-থাক ও সব বাদ দে আম্মু কেমন আছে রে?
-বড় আম্মু ভাল নাই ভাইয়া তুমি যাওয়ার পর থেকে ঠিক মত খায়না। তোমার চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পরে।
- কি বলিস। কথাটা শুনে বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো।
-হুম ভাইয়া তুমি বাসায় ফিরে এসো।
-নাহহহ রে কি করে যাবো বল এই কলঙ্ক নিয়ে যেতে চাই না। আমি যে তোরে ফোন দিছি কাউরে বলিস না প্লিজ। আর মায়ের দিকে একটু খেয়াল রাখিস।
-আমার চোখে পানিতে ভিজে গেছে। (কথা ঠিক ভাবে বলতে পারছি না)
-ভাইয়া তুমি কি কাদছো?
-নাহহহ রে ভালো থাকিস পরে কথা হবে।
অনন্যা আড়াল থেকে আবিরের এভাবে কাঁদতে দেখে নিজের চোখে ও পানি চলে আসে। নিজের রুমে চলে যায় আর ভাবে কে ঐ ছেলেটা। মনে অনেক কষ্টে বাসা থেকে চলে আসে।
আবির আম্মুর কথা ভেবে ঘুমাতে পারেনি। পরের দিন সকালে লাকি ও রহমান সাহেব আবিরকে দেখতে আসে। আবিরে রুমে যেতে দেখে আবির আগে থেকে কাঁদছে চোখ মুখ ফুলে গেছে,
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com