Breaking News

মিথ্যা অপবাদে অপরাধী । পর্ব -০৩



লাগেজ টা খুলতেই অবাক হয়ে যাই লাগেজটা টাকা দিয়ে ভর্তি। কিন্তু এগুলা কার টাকা??

দেখি তো লাগেজে কোন কার্ড বা ঠিকানা আছে কি না?
একটা কাগজ দেখতে পেলাম,,,,
- হ্যাঁ তোমাকেই বলছি, সন্ত্রাসীরা আমার পিছু নিচে জানি হয়তো আমাকে মেরে ফেলবে প্লিজ টাকাগুলোও আমার বাসায় পৌঁছে দিও। নয়তো আমার পরিবার রাস্তায় বসবে।
ঠিকানা-1206/2 তেজগাঁও,ঢাকা ।

এখন কি করবো বুঝতেছি না এতো গুলা টাকা🤔🤔
টাকা গুলা নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। আম্মুর জন্য মনটা কাঁদছে জানিনা আমাকে না পেয়ে আম্মু এখন কি করছে। কাগজে লেখা ঐ ঠিকানায় সিএনজি করে যাচ্ছি আর মনে পরছে আম্মুকে । সামনে একটা একটা কার ও পিকআপ মারাত্মক এক্সিডেন্ট হয়। রক্তাক্ত হয়ে গাড়িতে একজন লোক পরে আছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। সিএনজিটিকে থামিয়ে দৌড়ে গাড়িটির কাছে গিয়ে লোকটিকে বের করলাম। অনেক যায়গায় আঘাত পাইছে মাথা ফেটে গেছে পায়ে ও ক্ষতের সৃষ্টি হইছে রক্ত বের হচ্ছে।
-ভাইয়া একটু এদিকে লোকটিকে হাসপাতালে নিতে হবে বেশিক্ষণ এভাবে থাকলে লোকটি মারা যাবে (সিএনজি চালক লোকটিকে বললাম)

-ভাই ছারুন তো এসব আমার আমার আবার আপনাকে নামিয়ে অন্য পেছেন্জার নিতে হবে। এসব পুলিশ দেখবে আপনি গাড়িতে উঠুন। (সিএনজি চালক)
-আপনাকে ডাবল ভাড়া দিবো লোকটিকে নিয়ে আগে হাসপাতালে চলুন।(আমি)
এদিকে লোকটির অবস্থা আরো খারাপ হতে লাগলো। তারাতারি সামনের একটা হাসপাতালে নিয়ে আসলাম। ডাঃ লোকটিকে কেবিনে নিয়ে,,,,,,,,,,,
-প্যার্সেন্ট এর অবস্থা খুবই খারাপ এমারজেন্সি অপারেশন করতে হবে। আপনি ওনার কি হোন?(ডাঃ)
-🤔😟........ছেলে (আমি)
-এখুনি ক্যাশ কাউন্টারে 5 লাখ টাকা জমা দিন আমরা অপারেশন শুরু করে দিচ্ছি নয়তো ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। (ডাঃ)
-,,,,ওকে ডাঃ আমি টাকা জমা দিচ্ছি আপনি অপারেশন শুরু করে দেন।
কি করবো ভাবছি আমার কাছে তো আর ৫০০ টাকাও নাই। এই টাকা গুলা ও তো আমার না।😇😇 সবার আগে জীবন বাঁচানো ফরজ। তাই আর কিছু না ভেবে টাকা জমা দিলাম। লোকটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিল,,,,

একটু পর নার্স এসে 1 টা ফোন হাতে ধরিয়ে দিলো,,,
-এই ফোনটা প্যাসেন্টের কাছে ছিল। আর জরুরী 2 ব্যাগ ও(O-)নেগেটিভ রক্তের ব্যাবস্থা করুন।
-আমি দিব রক্ত, আমার রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ। আপনি তো এক ব্যাগ দিতে পারবেন। আর এক ব্যাগ??? ডাঃ আমার শরীর থেকে ই ২ ব্যাগ নিন প্লিজ। তাছাড়া আমি এখন রক্ত কই পাবো। আমার শরীর থেকে নীন প্লিজ।
-না নাহ তা কি করে হয়।(পাশে থাকা ডাঃ বললো)
-অনেক রিকোয়েস্ট করার পর নিলো।
কিছুক্ষন পর....
রিংটন বেজে উঠলো। লোকটির ফোনে ফোন দিছে । রিসিভ করে সালাম দিলাম ....
-কে আপনি? আমার আব্বুর ফোন আপনার কাছে কেন?(ও পাশ থেকে একটা মেয়ে বলতে লাগলো)
-আপনার বাবা এক্সিডেন্ট করেছেন। হাসপাতালে চলে আসেন।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ও তার মা চলে আসলো। মেয়েটি দেখতে অপ্সরীর মতো।
-আপনি ফোন রিসিভ করেছিলেন তাই না,,,??
-হ্যাঁ (আমি)
-ওনাকে এই হসপিটালে কে এনেছে???(মেয়েটি মা)

-আমি
- এই ফালতু মার্কা হসপিটালে ভর্তি করতে কে বলছে আপনাকে??? বলেই গালের মধ্যে কসে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিল।(মেয়েটি)
এমন সময় নার্স বেরিয়ে আসে,,,
-তারাতারি এই মেডিসিন গুলা নিয়ে আসুন।(নার্স)
-আন্টি এই নেন ফোন ও মেডিসিন গুলা তারাতারি নিয়ে আসেন। আমি চলে যাই।
- ছোটলোকের বাচ্চা যা ভাগ। আম্মু কাগজটা আমাকে দাও আমি নিয়ে আসছি।
হায় রে মানুষ ওনার বাবাকে বাঁচাতে কত কি করলাম আর ওনি আমার গায়ে হাত তুললো অপমান করলো। আমার কপাল টাই হয়তো খারাপ তাই এমন কষ্ট পাই।
বাহিরে এসে কাগজের ঠিকানায় যাওয়ার জন্য সিএনজিতে উঠলাম।
তেজগাঁও এসে সিএনজি থেকে নামলাম। একটা লোক কে জিজ্ঞেস করলাম'
-ভাইয়া এই ঠিকানা একটু দেখিয়ে দিবেন?

- সামনে গিয়ে ডানে যাবেন আশেপাশে খুঁজে দেখবেন পেয়ে যাবেন।
অবশেষে বাসা খুঁজে পাইলাম। কিন্তু এটা কি বাসা নাকি রাজ প্রসাদ। অনেক সুন্দর ফুলের গাছ ও লাগানো।
-ভাই এটা কি 1206/2 বাসা? দারোয়ান কে জিজ্ঞেস করলাম।
-হ্যাঁ আপনি কে ? (দারোয়ান)
-আমাকে চিনবেন না এই বাসার লোকের সাথে কিছু কথা আছে। দেখা করতে চাই।
- ওকে দাঁড়ান । মেডাম একটা লোক আসছে আপনার সাথে দেখা করতে চায়।
-ওকে ভিতরে পাঠিয়ে দিন
-আসসালামু অলাইকুম। এই টাকা গুলা মনে হয় আপনার স্বামীর। এই চিরকুট টা পড়ুন। (পকেটে হাত দিয়ে খুঁজে পেলাম না মনে হয় হারিয়ে ফেলছি।)
কই গেল পকেটেই তো ছিল
- কি হলো কি বীর বীর করছেন? কিসের টাকা? কই দেখি।(আন্টি টা বলল)
-লাগেজের চেন টা খুলে, দেখুন?(আমি)
-ইমির বাবা তো এই টাকা নিয়ে আসার কথা উনি কই?
-আমি জানি না,, আমি তো,,,,

আমাকে কথা বলতে না দিয়ে তুমি আমার বাবাকে খুন করোনি তো। কই সব দারোয়ান ?(আন্টি টা)
- সবাই এসে আমাকে বেধে ফেলে ও মারধর করে মুখে পেছিয়ে রাখে কথা বলতে পারছি না।
-টাকা গোনার পর,,, এখানে তো 95 লাখ আর বাকি 5 লাখ টাকা কোথায়? একটা মেয়ে সিরি দিয়ে নামছে। একি মেয়েটিকে তো আমি ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনে দেখি।
-এই কুত্তার বাচ্চা বল আমার বাবা কই? আটকে রাখছিছ কোথায়? (মেয়েটি)
আম্মু পুলিশ কে ফোন দাও।
একটু পর পুলিশ এসে নিয়ে গেল আমাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে,,,,তাই ইচ্ছা মতো 3rd ডিগ্রি দিচ্ছে
-এই কূতা বল আমান সাহেব কে কই রাখছিস? আর 5 লাখ টাকা বের কর।
এদিকে ডাঃ বললো,,,,
-প্যাসেন্ট আউট অফ ডেন্জার। আপনার ছেলে ঠিক সময় মতো না নিয়ে আসলে হয়তো প্যাসেন্ট সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যেতেন (ডাঃ)

চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com