আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ০১
উফফ আম্মি কি শুরু করলা?? সকাল সকাল তোমার এই
আম্মিঃ সকাল সকাল তাই না? এখন কয়টা বাজে জানিস?
আমিঃ হুম জানি তো। এই ছয়টা অথবা সাড়ে ছয়টা হবে আরকি!
আম্মিঃ স্বপ্নে দেখলি নাকি যে এখন ছয়টা বা সাড়ে ছয়টা বাজে? এখন সাড়ে নয়টা বাজে। আজকে কলেজ যাবি না নাকি?
আমিঃ কি!!!!! আম্মি সাড়ে নয়টা বেজে গেছে আর তুমি আমাকে এখন ডাকতেছ?
আম্মিঃ জি না নবাব কন্যা আপনাকে এই পর্যন্ত আমি তিন তিনবার ডেকে গেছি,, আপনার তো উঠার নামি নেই।
আচ্ছা আম্মি তুমি যাও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে আসতেছি!
আচ্ছা তাড়াতাড়ি অায় আমি তোর জন্য নাস্তা রেডি করছি।
আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে জামা চেইঞ্জ করে নিচে এসে দেখি
ডাইনিং টেবিলে আম্মিজান আমার জন্য কত সুন্দর করে খাবার
পরিবেশন করে বসে আছেন।
কিন্তু আমার হাতে যে একদম সময় নেয়।
তাই জোরে জোরে খাওয়া শুরু করলাম,, মুখের মধ্যে ঢুকতেছে না তাও ঢুকাচ্ছি।
আম্মিঃ আরে ফারহা এই রকম করতেছিস কেন? আটকে যাবে তো,, আস্তে আস্তে খাওয়া শেষ কর।
আমিঃআরে আম্মি তুমি বুঝতেছনা না আজকে এমনিতে অনেক দেরী হয়ে গেছে।
তারমধ্যে প্রেন্সিফেল স্যার বলেছেন আজকে ৯.৪৫ এর মধ্যে উপস্থিত হতে।
কারণ আজকে আমাদের নতুন স্যার আসবে উনারে টেলকাম জানাতে হবে।
আম্মিঃ টেলকাম আবার কী?
ফারহাঃ উফ আম্মি তুমিও না,, টেলকাম বুঝো না? রহিমার থেকে জেনে নিও।
এখন তোমাকে টেলকাম বোঝাতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
তার থেকে ভালো আমি কলেজ যাই। বাই
আম্মিঃ সাবধানে যাস। এই রহিমা টেলকাম কিরে?
রহিমাঃ আরে খালাম্মা টেলকাম বুঝেন না? ওই যে ফুল দিয়া
নয়া লোকজনরে আপ্যায়ন করে না?
হেইডারে টেলকাম কয়। আপা তো টেলকাম
ইংরাজি টা আমার থেইক্যা শিখেছে।
আম্মিঃ
ফারহাঃ দূর রাস্তায় তো একটা রিকসাও তো নেই,,, কি যে করি?
আর মাত্র ৪ মিনিট সময় বাকী আছে।
আরে ওই যে গাড়ী একটা আসতেছে। লিফট চেয়ে নিব।
যদি লিফট চাইলে না দেয়??
তাহলে তো আরও দেরি যাবে। না না কিছু একটা করতে হবে ।কি করি কি করি???
পাইছি রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে থাকি তাহলে তো আর আমার
উপর দিয়ে গাড়ী নিয়ে যেতে পারবে না। তা না হলে দেখা যাবে
লিফট না দিয়ে উল্টা আমায় ছক্কা মেরে চলে যাবে।
কিন্তু একি ড্রাইবারটা কি দেখতেছে না আমি রাস্তা মাঝে দাড়িয়ে আছি,,,
গাড়ীটা একদম আমায় সামনে এসে ব্রেক করল। আমার তো ভয়ে হার্ট এ্যার্টাক হওয়ার অবস্থা।
আরেকটু হলে স্বর্গের টিকেট টা ওকে হয়ে যেত। রাগ ফুলতেছি
এমন সময় গাড়ী থেকে একটা লোক বের। লোকটারে দেখে তো আমি পুরাই ক্রাশ।
কিন্তু আবার মনে পরলো ঝগড়া করা তো বাকি রয়ে গেল ক্রাশ না হয় পরে খাবো । তাই রেগে লোকটার সামনে গেলাম,,
এই মিয়া চোখ কি পকেটে রাখেন নাকি আপনার চোখ
গুলা বন্ধক দিয়া এই চশমাটা কিনছেন? আর একটু হলে তো আমার উপরে পাঠাই দিচ্ছিলেন।
আচ্ছা কোনো ভাবে কি আপনি দিনকানা নাকি?
মিস্টার দিনকানাঃ What the.... তুমি জানো তুমি কার সাথে কথা বলতেছ?
একেতো রাস্তার মাঝখানে ধারিয়ে ছিলে এখন আবার গায়ে পরে ঝগড়া করতেছ।
ফারহাঃএইযে মিস্টার দিনকানা আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আমি ঝগড়াটে?
লোকটাঃ আরে না না শুধু ঝগড়াটে নয়,, পাগল ও।
ফারহাঃ কি আমি পাগল? আপনি পাগল,,লালবাদর,,,হনুমান,,, হাতি,, বিল্লি,,সাদা কুমির,, বজ্জাত,,রাক্ষস,, ডেবিল,, আরো কি কি যেন ছিল? আচ্ছা আপাতত এইগুলাই।
লোকটাঃ stupid girl.. পাগল আমি নয় তুমি। পাগল না হলে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে ছিলে কেন?
ফারহাঃ মনে মনে আরে তাই তো,,, আমি রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে ছিলাম কেন?
উফফফ লেইট হয়ে যাচ্ছে। লোকটার সাথে ঝগড়া না করে একটু পাম দিই।
না হলে আজকে আমার আর কলেজ যাওয়া হবে না
লোকটাঃ আপনার ভাবা কি আজকে শেষ হবে?
ফারহাঃ না আসলে ভাইয়া আমার না একটু লিফট চাই
কলেজের দেরী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো একটা রিকসা ও পেলাম না। আমায় একটু লিফট দেন না প্লীজ
লোকটিঃ no way... কখনওই না। তোমার মতো ঝগড়াটে মেয়েকে আমি লিফট দিবো না।
আর আমি তোমার কোন জন্মের ভাই হই হুম? একদম ভাইয়্যা বলবে না বলে দিচ্ছি।
ফারহাঃ আচ্ছা ভাইয়্যা আর কখনওই আপনাকে ভাইয়া বলব না ঝগড়াও করব না আপনার দিব্বি।
লোকটিঃ। আচ্ছা লিফট দিতে পারি তবে একটা শর্তে।
ফারহাঃ শর্ত? সামনেই তো নেমে যাবো আবার শর্ত কেন দিচ্ছেন।
একটা নিরিহ ভদ্র মেয়ের সাথে আপনার এমন করতে কষ্ট হবে না?
লোকটিঃ হুহ!!! নিরিহ আবার ভদ্র??
এত কথা না বলে শর্তে রাজি কি না সেটা বলো।
ফারহাঃ কি শর্ত সেটা তো বলেন?
লোকটিঃ yes or no?
ফারহাঃ আরে,,,,,
লোকটিঃ yes or no
ফারহাঃ yes yes
লোকটিঃ গুড। শুনো সারা পথ কান ধরে রাখবা আর বলবা সরি
রাহাত সরি রাহাত বলবা। বুঝেছ?
ফারহাঃ হুম।।।তার মানে এর নাম রাহাত।
শয়তান তুই আমারে শাস্তি দিচ্ছিস তাই না। একবার
সুযোগে পাই দেখবা তোমারে আমি কি করি চান্দু।
আমার নাম ও ফারহা,, হুহ।।।।।
রাহাতঃ ওকে তবে শুরু করা যাক।
আমি সারা রাস্তা কান ধরে সরি রাহাত সরি রাহাত করতেছি
কিন্তু মনে মনে ঠিকি ওরে ওয়াশ করতেছি।
আর বজ্জাত ডেভিলটা আড়চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতেছে।
অবশেষে গন্তব্য এসে পৌছালাম। গাড়ী থেকে নেমে উনাকে একটা ভেংছি কেটে চলে আসি ।
যথা টাইমে পৌছাতে পারলাম না কারণ তখন অলরেডি ১০ টা বেজে গেছে।
কিন্তু কপাল ভালো কারণ আমার শাঁকচুন্নি বান্ধুবী বললো স্যার নাকি এখনো পৌঁছায় নাই ।
তাতে আামার কি? আমার জন্য তো ভালোয় হয়েছে মানে
মানে এ যাত্রায় বেছে গেলাম। খুশিতে নাগীন ডান্স দিতে ইচ্ছা করতেছে।
কিন্তু সেই খুশি আর বেশিক্ষণ থাকলো না। সামনে তাকিয়ে যা দেখলাম তার জন্য
আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com