Breaking News

এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন ভাবি । পর্ব - ০২


যদি একা আসে তাহলে তো ভালো আর যদি নিলিমাকে নিয়ে আসে তাহলে তো সমস্যা। হয়তো অনেক কিছু গোলমাল হয়ে যাবে।

নিলিমাকে একা পেয়ে হয়তো কথা বলার ইচ্ছাটা প্রচন্ড বেড়ে যাবে। বলতে পারবো কি? অনেক কথাই তো জমে আছে।
আর কয়েকটা প্রশ্ন যেগুলার উত্তর না জানলে হয়তো জিবনটা এরকম কষ্টের মধ্যেই কাটবে।
এখন আর এসব চিন্তা করে লাভ নেই।
যা হওয়ার তা হবেই৷ দেখাই যাকনা কি হয়। একটা রাত পরই দেখা হচ্ছে।
সিগারেটটা শেষ করে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙতেই খেয়াল করলাম
৮ টা বেজে গেছে।
৯ টায় যেতে হবে। তারাতারি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
তারপর হাল্কা নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
পাশ দিয়ে রিক্সা চলে গেলো কয়টা।
আমি হাটতেছি আর ভাবতেছি যদি সত্তিই ভাইয়ার সাথে নিলিমার বিয়ে হয় তাহলে কি আমি এক বাড়িতে থাকতে পারবো??
নাকি নিজেকে সামলাতে পারবোনা?😩😰
সে কি পারবে সামলাতে? 🤧🤧
তার তো কোনো সমস্যা হবেনা। কারন একটার পর একটা তার লাইফে আছেই।
সেখানে আমি থাকলেই কি আর না থাকলেই কি।

এসব কিছু ভাবতে ভাবতে চলে আসছি জায়গাটায়।
কিন্তু কেউ নাই এখানে। নিরিবিলি একটা জায়গা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি আরো ৬ মিনিট সময় বাকি আছে।
হালকা রোদ্দুর হালকা ছায়া ভালোই লাগছে আজ প্রকৃতিকে। কিন্তু কেনো জানি মনটা উদাস।।
আবার অস্থিরতা কাজ করছে কে আসবে সেটা ভেবে।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯.০১।
কিছুক্ষন পর তাকিয়ে দেখি শাড়ি পড়া দুইটা মেয়ে আসতেছে।
তার মানে নিলিমা ও আছে।
নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করলাম।
মাথা নিচু করে আছি।
দুজনে এসে আমার সামনে দাড়াতেই আমি মাথা নিচু করে ফেললাম।
কি করবো? কি বলবো?
কিছুই বুঝতেছিনা।
মস্তিষ্ক মনে হয় বিকল হয়ে যাবে এবার।

- সানভি ভাইয়া আপু আপনার সাথে কথা বলবে তাই আপনাকে ডাকা।(নিলা)
- কি কথা বলেন ভাবি।(আমি)
- নিলা তুই একটু ওদিকে যা।(নিলিমা)
- আচ্ছা যাচ্ছি(নিলা)
- জ্বি ভাবি বলুন কি বলবেন?(আমি)
- তুমি ভাবি কেনো বলতেছো??(নিলিমা)
- তো কি বলবো? কয়দিন পর তো আপনার বিয়ে আমার ভাইয়ের সাথে তখন তো ভাবি বলতেই হবে তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি আরকি।(আমি)
- হ্যা কয়দিন পর বিয়ে। এখনো তো আর বিয়ে হয়নি তাইনা?(নিলিমা)
- হয়নি তবে খুব শিঘ্রই হবে।(আমি)
- আচ্ছা যেটা বলতে আসছিলাম।(নিলিমা)
- জ্বি ভাবি বলুন।(আমি)
- i am sorry.. i am sorry for everything.. তোমার সাথে অনেক খারাপ করেছি আমি তার জন্য মাফ চাইতে এসেছি।
আমাকে মাফ করে দিয়ো।(নিলিমা)
- আরে ভাবি এটা কোনো কথা? আমি আপনাকে অনেক আগেই মাফ করে দিয়েছি আর আপনি যেহেতু আমার ভাবি তাই আর কিছু মনে রাখার দরকার নেই তাইনা?(আমি)
- দেখো সানভি আমি সত্তিই চাই তোমাকে কিন্তু এখন আর সম্ভব না।(নিলিমা)
- জ্বী ধন্যবাদ। তবে সম্ভব থাকলেও আর আমাকে পাবেন না।(আমি)
- ঠিক অাছে বেশি কথা বলতে পারবোনা নিলা আছে। শুধু এটুকুই বলবো মাফ করে দিয়ো।(নিলিমা)
- জি ভাবি অবশ্যই।(আমি)

দুজন নিজেদের চোখের পানি মুছে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। নিলাকে ডাক দিলাম,
- নিলা এদিকে আসো।(আমি)
নিলা আমাদের কাছে আসলো।
- কথা বলা শেষ?(নিলা)
- হ্যা তোমার আপুও না! বিয়েই হয়নি এখনো আর এখনি ভাইয়ার খোজ নিতে চলে আসছে।ওহ সরি ভাইয়ার নাম্বারটা তো দিলাম ই না।(আমি)
- হুমম।(নিলিমা)
- ০১৮৬৯৪৫২১**(বিঃদ্রঃ এটা আমার নাম্বার লাস্টে ** বসানো ডিজিটাল নাম্বার 😕)😅

- আচ্ছা সানভি ভাইয়া শুনুন আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে(নিলা)
- হ্যা বলো।(আমি)
- আপনি কবে বিয়ে করবেন??(নিলা)
- ভাবতেছি ভাইয়ার সাথে একসাথে বিয়ে সেরে ফেলবো। দেখি ভালো মেয়ে পাই কিনা?(আমি)
- খুজেন পেয়ে যাবেন।(নিলিমা)
- হ্যা দেখি যদি আপনার মতো কাওকে পাই তাহলে তো ভালোই হতো। হাহাহা।(আমি)
- হুমম(নিলিমা)
- আচ্ছা আমি যাই আমার একটা কাজ আছে।(আমি)
- একটা কথা ছিলো।(নিলা)
- কি কথা বলো।(আমি)
- এখন না পরে বলবো।(নিলা)
- আচ্ছা ভাবি আসি তাহলে।(আমি)

বলেই চলে আসলাম। বুঝতে পারলাম নিজেকে সামলে নিতে কোনো সমস্যা হবেনা কারন আমি নিলিমার চোখে ভালোবাসা দেখিনি। তার চোখ আজ কথা বলেনি।
হ্যা সে কেদেছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে মেয়েরা ছিচকাদুনে। অল্পতেই কাদতে পারে। আমরা ছেলেরা পারিনা।
আমাদের ইমোশন মেয়েদের চাইতে বেশি তবে সেটা প্রকাশ করিনা। আমরা কাদি আড়ালে লুকিয়ে কেউ দেখেনা।😣😣😣

হাটতে ইচ্ছা করতেছে না। রিক্সা নিলাম।
সারা রাস্তা ভাবলাম আজকে রাতে বাবাকে বলবো আমি নিলাকে বিয়ে করবো তাদের বাসায় প্রস্তাব দিতে।
আমি একা থাকলে সিওর কিছু একটা ঘটবেই।
যদি নিলা সাথে থাকে তাহলে অনেকটা সামলে নিতে পারবো।
মেয়েটার চোখে ভালোবাসা দেখেছি আমি।
বাসায় ঢুকে আগে আম্মুর রুমে গেলাম।
গিয়ে দেখি আম্মু আর অথৈ বসে অাছে রুমে।
আমি রুমে ঢুকে আম্মুকে বললাম,

- আম্মু ক্ষুদা লাগছে।(আমি)
- টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নে।(আম্মু)
- তোমার হাতে খাবো। খাইয়ে দিবা??(আমি)
- দেখ পাগল ছেলে কি বলে? এতো বড় হয়ে গেছে এখনো আম্মুর হাতে খেতে হবে।(আম্মু)
- তুমি খাইয়ে দিবা কি না বলো??(আমি)

- ভাইয়া তোর জন্য একটা খুশির খবর আছে।(অথৈ)
- কি খবর??(আমি)
- তোকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য একটা লোক আনবো ভাবতেছি। ভাবি বানিয়ে বিয়ে করবি??(অথৈ)
- আগে তোর বিয়ে দিবো তারপর আমি করবো।(আমি)
- আম্মু এবার কিন্তু ওকে মারবো আমি।(অথৈ)
- আম্মু তুমি খাইয়ে দিবা কি না তাই বলো।(আমি)
- আচ্ছা দিতেছি।(আম্মু)।
- আমি কি করলাম তাহলে?? আমাকেও খাইয়ে দিতে হবে।(অথৈ)
- আচ্ছা দুজনকেই খাইয়ে দিবো দাড়া খাবার আনতেছি।(আম্মু)

আম্মু রুম থেকে বের হতেই অথৈর গাল ধরে জোরে টেনে দিলাম।
অথৈর সবচেয়ে অপছন্দের কাজ এটা।
অথৈ রেগে গিয়ে আমার চুল টেনে দিলো।
ভাই বোনের ঝগড়ার মধ্যে মন খারাপ উধাও হয়ে গেলো।
আর আম্মুর হাতে খাবার খেয়ে নিলিমার কথা ভুলেই গেলাম।

আমার মন খারাপ থাকলেই চানাচুর খাই নয়তো আম্মুর হাতে খাবার খাই।
মন খারাপ কোথায় চলে যায় নিজেও জানিনা।
খাওয়া শেষ করে ঘুমালামম একটু।।
বিকেলে ঘুম ভাংতেই দেখলাম নিলা কল দিয়েছিলো।
আমি উঠে ফ্রেস হলাম।
তারপর ছাদে গিয়ে কল দিলাম নিলাকে।
- হ্যালো।(নিলা)

- হ্যা কল দিয়েছিলে দেখলাম।(আমি)
- হ্যা কেনো সমস্যা আছে আপনার??(নিলা)
- সমস্যা কেনো থাকবে?(আমি)
- তাহলে?(নিলা)
- কিছুনা বলো কি বলবে?(আমি)
- না বলবো না।(নিলা)
- কেনো বলবা না?(আমি)

- কারন আপনি তখন আমারর কল রিসিভ করেন নাই। আমি অনেক রাগ করছি তাই এখন বলবো না।(নিলা)
- আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম তাই রিসিভ করতে পারিনি।(আমি)
- আমি জানিনা এতোকিছু আমি রাগ করছি এখন যদি আপনি রাগ ভাঙাতে পারেন তাহলে কথাটা বলবো নয়তো বলবোনা।(নিলা)

- আচ্ছা একটা কথার উত্তর দাওতো।(আমি)
- কি কথা?(নিলা).
- তুমি বিয়ে করবা কবে??(আমি)
- সেটা আব্বু আম্মু জানে।(নিলা)
- আমাকে বিয়ে করবে??(আমি)
- মানে?(নিলা)
- মানে বিয়ে করবে আমাকে? তোমার আপু আর আমার ভাইয়া আমি আর তুমি, করবে বিয়ে??(আমি)
- জানিনা।(নিলা)

- আরে রাগ করলা নাকি? আমিতো মজা করতেছিলাম।(আমি)
- ওহ। রাগ করিনি আমি ভাবছিলাম সিরিয়াসলি বলছেন।(নিলা)
- আরে নাহ। তোমার তো বিয়ের বয়স ই হয়নি।(আমি)
- কিহ? আমার ১৮ বছর হয়েছে আরো দু মাস আগেই।(নিলা)
- তারপরও তুমিতো পিচ্চি এখনো কেমন জানি বাচ্চা বাচ্চা লাগে।(আমি)

- আপনার সাথে কোনো কথা নাই।(নিলা)
- আচ্ছা ঠিক আছে বাচ্চা না বুড়ি ঠিক আছে?(আমি)
- ধুর রাখলাম বাইই।(নিলা)
বলেই কল কেটে দিলো।
হাহাহা মেয়েটাকে রাগিয়ে বেশ মজা পাইলাম।
তবে আরেকটা জিনিস বুঝলাম মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে।
আর বিয়ের প্রস্তাব দিলেও কোনো সমস্যা নাই।
যেহেতু আমিও জব করি তাই কোনো সমস্যা হবেনা।

কথা বলতে বলতে রাত হয়ে গেছে খেয়ালই করিনি।
রাতের আকাশ বরাবরই আমার ভালো লাগে।
কেনো জানি অন্ধকার খুব পছন্দ আমার।
সবাই যেখানে দিনের বেলায় ঘুরাঘুরি করে আমি সেখানে রাতে ঘুরি।
রাতটাই কেনো জানি ভালোলাগে।
পকেট থেকে সিগারেট বের করে কেবলই সিগারেট ধরাইছি এমন সময় অথৈ ছাদে চলে আসছে।

- ভাইয়া তুই আবার সিগারেট খাচ্ছিস?? (অথৈ)
- আচ্ছা ফেলে দিতেছি।(আমি)
- সবকয়টা আমাকে দে।(অথৈ)
- কেনো?(আমি)
- দিতে বলছি দে।(অথৈ)
আমি প্যাকেটটা ওর হাতে দিলাম।
ও সবকয়টা সিগারেট বের করে একটা একটা করে সবকয়টা ভেঙে ফেললো।

- এবার টাকা দে।(অথৈ)
- ধর ১০০ টাকা নে।(আমি)
- উহু ১০০০ লাগবো একটা ড্রেস দেখছি ১০০০ টাকা শর্ট আছে তুই দিবি এখন।(অথৈ)
- কিহ ১০০০ দিতে পারবোনা.(আমি)
- দাড়া আম্মুকে ডাকতেছি। আম্মুুুউউ।(অথৈ)
- আরে থাম থাম দিতেছি।(আমি)
- বিকাশ করলাম?(আমি)
- আচ্ছা খরচ সহ দিবি।(অথৈ)
- আচ্ছা দিতেছি তাও এবারের মতো মাফ কর।(আমি)
- আচ্ছা। আর তোর আর নিলার ব্যাবস্থা আমি করতেছি দাড়া।(অথৈ)
- মানে??(আমি)

- মানে আমি সব শুনছি আর এবার তোর ও একটা ব্যাবস্থা হয়ে যাবে টাকা তো আর এমনি এমনি নিলাম না। সিগারেট খাওয়ার অপরাধে ১০০০ টাকা নিলে হারাম হয়ে যাবে তাই একটা কাজ করে দিয়ে তারপর নিবো.(অথৈ)🤪

বলেই দৌড়ে চলে গেলো।💃💃
আমি মনে হয় এবার গেলাম।
জানিনা কি বলবে ও। সবার আদর পেয়ে একদম মাথায় উঠে গেছে। এখন সিওর আব্বুকে গিয়ে বলে দিবে আমার আর নিলার কথা। 🙁
আল্লাহ এবারের মতো বাচিয়ে দাও।

চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com