Breaking News

বেস্টফ্রেন্ডের অবহেলা । পর্ব - ০১



লিমাঃঠাস্, ঠাস্... কুত্তার বাচ্চা তুই এতো খারাপ আগে জানতাম না।তোকে ভালো মনে করেছিলাম।কিন্তু তুই যে এতো বড় চরিত্রহীন তা আগে জানতাম না।তুই বন্ধু নামে কলঙ্ক। তুই এই রকম জানলে কোনোদিনও তোর সাথে বন্ধুত্ব করতাম না।আসলে এটা তোর দোষ না।

এটা তোর বাবা মায়ের দোষ।তোকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারে নাই।আচ্ছা এতো ভালো মানুষের ঘরে তোর মতো চরিত্রহীনের জন্ম কিভাবে হলো সেটাই বুঝি না। এখন তো তোর জন্ম নিয়েও আমার সন্দেহ হচ্ছে।

আমিঃআর একটাও বাজে কথা বলবি না।যা বলার আমাকে বল।আমার বাবা মাকে নিয়ে একটা কথাও বলবি না।
লিমাঃযা সত্যি তাই বলছি।চোরের আবার বড় গলা।তোর সাথে বন্ধুত্ব করা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।আর কোনো দিনও আমার সামনে আসবি না।যদি কোনোদিন তোর এই নোংরা চেহারা আমাকে দেখাইস তাহলে আমি নিজে আত্মহত্যা করবো।
আমিঃথাক আর তোকে আত্মহত্যা করতে হবে না।আর কখনো তোর সামনে আসবো না। এরপর আর চাইলেও আমার মুখ দেখতে পাবি না।আচ্ছা সত্যি কি আমাকে না দেখে থাকতে পারবি?
লিমাঃপারবো না কেন? তুই আমার কে রে? তোর এই নোংরা চেহারা দেখলে আমার বমি পায়।যতো তারাতাড়ি পারিস তোর এই নোংরা চেহারাটা আমাকে দেখা বন্ধ করিস।তোর এই পাপি চেহারাটা না দেখলেই বাঁচি।
আমিঃআচ্ছা সরি রে এতোদিন তোকে ডিসটার্ব করার জন্য।পারলে আমাকে ক্ষমা করিস।আর ভালো থাকিস।
লিমাঃতোর এই নোংরা চেহারাটা না দেখালেই ভালো থাকবো।

আমিঃআচ্ছা তোর কথাই রাখবো।
এই বলে সাকিবের বাসা থেকে বেড়িয়ে আসলাম।রাস্তায় হাটতেছি আর দু চোখের অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছি।এভাবে হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে দেখি বাবা দরজায় দাড়িয়ে আছে।আমাকে দেখে আমার কাছে আসলো।বললো..
আব্বাঃকোথায় ছিলিস এতোক্ষণ?
আমি চুপ করে আছি।
আব্বাঃঠাস্ ঠাস্.. এতোক্ষণ কই ছিলিস?রাস্তার ছেলেদের মতো এতো রাত বাহিরে কি করিস?আমার মান সম্মানের তো বারো বাজিয়ে দিছিস। তোর বন্ধুরা বুয়েট এ চান্স পাইছে।আর তুই? মেয়েদের সাথে ইভটিজিং করে দিন কাটাইস।তোকে ছেলে বলতেও আমার লজ্জা করে।আচ্ছা রাস্তায় এতো মানুষ মারা যায় তোকে কি আল্লাহ তায়ালা দেখতে পায় না?
আমিঃআব্বা...

আব্বাঃতোর ওই মুখে আর আমার নাম নিবি না।আজ থেকে তোর এই বাড়িতে খাওয়া বন্ধ। কেউ যদি ওকে খাবার দেও তো আমার চেয়ে আর কেউ খারাপ হবে না।
এই বলে বাবা চলে গেল।আর আম্মা দূরে দাড়িয়ে কাদছে।কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে রুমে চলে আসলাম।
কিছুক্ষণ পর সিমি আপু রুমে এসে খাবার দিয়ে গেল।দেখলাম ওর চোখেও পানি।খাবার দিয়েই চলে গেল।
খাবার আর গলা দিয়ে নামলো না।সকালে যেতে হবে নতুন গন্তব্যে।
এতোক্ষণ কি হলো কিছুই বুঝলেন না তো?
আসুন আপনাদের বুঝিয়ে দেই।তার আগে পরিচয় টা দিয়ে দেই।
আমি সালাফি।বাবা মায়ের তৃতীয় ও সবচেয়ে ছোট ছেলে।বাবা মা আর বোনদের চোখের মনি।
বড় বোনের নাম তুলি।মেঝো বোনের নাম সিমি।বড় বোনের বিয়ের সম্বন্ধ চলতেছে।
আমরা ৪ জন বেস্টফ্রেন্ড।বলতে গেলে আমরা চারজন কিন্তু আত্মা ১ টাই।সাকিব, লিমা, সাব্বির, আর আমি।

এখন গল্পে আসা যাক।
কলেজ জীবন আমাদের ভালোই চলছিল।লিমা আমার অনেক কেয়ার করতো।বলতে গেলে ওর সব কথা আমার সাথেই বেশি শেয়ার করতো।প্রথমে বন্ধুত্ব থাকলেও আস্তে আস্তে আমার জীবনে লিমা অনেকটা জায়গা দখল করে নেয়।
কিন্তু জানতাম না এটাই আমার জীবনে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আধার ডেকে আনতে চলেছে।
একদিন কলেজ থেকে বাসায় যাচ্ছিলাম।হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে আনমনে হাটছে।পিছনে একটা গাড়ি আসতেছে।কিন্তু সেদিকে তার কোনো খেয়াল নাই।
রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে মেয়েটার কাছে গিয়ে মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।এতে মেয়েটা ছিটকে গিয়ে রাস্তার পাশের পোলের সাথে বারি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।

মেয়েটার জামার কিছুটা অংশ ছিড়ে গেছে আর মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে।দৌড়ে মেয়েটার কাছে গিয়ে মাথাটা কোলে নিয়ে পাশের মানুষদের সাহায্য চাইলাম।কিন্তু সবাই ভিডিও করা নিয়ে ব্যস্ত।
তাই মেয়েটাকে কোলে নিয়ে ছুটতে লাগলাম।পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো লিমা।সেদিকে আমার খেয়াল নাই।হাসপাতালে নিয়ে মেয়েটাকে ভর্তি করে মেয়েটার ফোন থেকে ওর বাসায় ফোন দিলাম।মেয়েটার আত্মীয় স্বজন আসলে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
বাসায় আসতেই দেখি আব্বা দরজায় দাড়িয়ে আছে।আমাকে আসতে দেখেই কিছু না বলে আমার গালে সজোরে দুইটা থাপ্পড় মারল।এরপর যা বলল তা শুনে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না..
আব্বাঃতুই....
অনেকদিন পর গল্প লিখলাম।সবাই পাশে থাকবেন আাশা করি।

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com